পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : টালা বারোয়ারি
নমস্কার বন্ধুরা,
মহা ষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলায় পুজো পরিক্রমা শুরু করেছি উত্তর কলকাতার টালা বারোয়ারির পুজো দিয়ে। ১০৪ বছরে পদার্পণ করা টালা বারোয়ারির এবছরের পুজোর থিম, 'জোড়া ঠাকুর'। বাঙালির মননে দুর্গা পুজোর থিম এক প্রকারের শিল্প প্রদর্শনী। এবারে সেই থিমের মধ্য দিয়ে শিল্পীর সৃষ্টি ফুটিয়ে উঠিয়ে টালা বারোয়ারি। জগতজননী মা দুর্গার পাশাপাশি মন্ডপে স্থান পেয়েছে শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি।
টালা বারোয়ারি পুজোকমিটির উদ্যোক্তারা জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির নানান ব্যক্তিত্বের শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলেছে তাদের মণ্ডপ সজ্জাতে। মণ্ডপে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন ছবি তুলে ধরা হয়েছে নানান জল রঙের ক্যানভাসে। এছাড়াও নানাবিধ কাঠের কাজ, দেওয়াল চিত্র, কোলাজ, আলপনাও স্থান পেয়েছে মন্ডপ জুড়ে। মাতৃ বন্দনা এবং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি দুই নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন টালা বারোয়ারির পুজোর ভাবনাতে 'জোড়া ঠাকুর'। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছিলেন 'ভারতমাতা'-র চিত্র। যা ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ ও সংঘবদ্ধ করে। অবন ঠাকুরের ভারতমাতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন দেশ মানে শুধুমাত্র একটি মানচিত্র নয়, দেশ হলো আমাদের মা।
সন্ধ্যের ভক্তদের ভীড়ে যখন মন্ডপের ভেতরে প্রবেশ করলাম তখন চারপাশে শুধুও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানান সৃষ্টি নজরে এলো। মন্ডপ জুড়ে নানাভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অবন ঠাকুরের শিল্প। ধীরে ধীরে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে মন্ডলের অন্দরে প্রবেশ করলাম, তারপরই থিমের যে মূল ধারণা সেটা চোখের সামনে পরিষ্কার হয়ে গেল। টালা বারোয়ারির পুজোর মূল যে আকর্ষণ একজোড়া ঠাকুর। তার ছোঁয়া রয়েছে থিম ও মণ্ডপ দুয়ের মধ্যেই।
মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশ করতেই থিমের ভাবনা আরো পরিষ্কার হয়ে গেল। মণ্ডপের গর্ভগৃহ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি দিয়ে সাজানো তার মধ্যিখানে জগৎজননী দুর্গা ঠাকুর স্বয়ং বিরাজিত রয়েছেন। মা দুর্গাকে প্রদক্ষিণ করে মন্ডপটা ঘুরতে হয়েছিল। মায়ের প্রতিমার ঠিক পেছন দিকটায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য সৃষ্টি ভারত মাতার প্রতিমাও ছিলো, যা সাহায্যে থিমের ভাবনা পূর্ণতা পায়।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
টালা বারোয়ারি তো দেখছি অনেক আগে থেকেই দূর্গাপূজার আয়োজন করে থাকে। তাদের সম্পূর্ণ আয়োজন একেবারে চোখ ধাঁধানো ছিলো। প্রতিমা গুলোও দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। প্রতিটি ফটোগ্রাফি এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। সবমিলিয়ে বেশ উপভোগ করলাম বরাবরের মতো এই পোস্টটিও। দাদা দূর্গাপূজার সময় আপনি তো দেখছি বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন পূজা দেখতে। আর সেজন্য আপনার পোস্ট গুলোর মাধ্যমে আমরাও দেখার সুযোগ পাচ্ছি। যাইহোক এতো সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।