জীবনে প্রথম রক্ত দান সম্পন্ন করলাম

আসলামু আলাইকুম আমার স্টিম বন্ধু গন আশা করি আপনারা অনেক ভালো আছেন । আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @kibreay001 আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি জীবনে প্রথম রক্ত দান করার অভিজ্ঞতা। বেশ কিছুদিন আগে আমাদের পাশের কয়েক গ্রাম পর একজন ব্যক্তি খুবই অসুস্থ ছিল। তার নাতির সাথে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। আমাদের বড় ভাই কয়েক বছরের বড় হতে পারে। লোকটি কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। বড় ভাই জানতো যে আমি বেশ কয়েক মাস ধরে কুষ্টিয়াতে আছি। কয়েকদিন আগের ঘটনা। দুপুর বেলায় আমি রুমের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে দেখি বড় ভাই আমার কাছে ফোন দিয়েছে। তারপরে ভাইয়া বলল আমার দাদা খুব অসুস্থ এক ব্যাগ রক্ত লাগবে। বলছে রক্তের গ্রুপ হচ্ছে এ পজেটিভ। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই রক্ত আমি দিতে পারবো। তারপরে আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হাসপাতালে উদ্দেশ্যে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি সবাই আমার জন্য সেখানে অপেক্ষা করছে। তবে চলুন আজকের পোস্ট বিষয় শেয়ার করা যাক.........

তারপরে সেখানে যাওয়ার পরে আমি আর ভাইয়া সরকারি হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক রুমে চলে গেলাম। যাওয়ার পরে সেখানে একজন ডাক্তার এবং একজন নার্স বসে রয়েছে। তারপরে আমাকে একটি চেয়ারে বসালো। বসানোর পরে আমার হাতে একটি ফিতা বেধে দিল। তারপরে আমার হাত থেকে ইনজেকশন এর মাধ্যমে কিছু রক্ত বের করে নিল। তারপরে রক্ত ডাক্তার অনেক ভালোভাবে পরীক্ষা কর। পরীক্ষা করার পরে ডাক্তার বলল কোন সমস্যা নেই রক্ত নেয়া যাবে। তারপরে ডাক্তার একটি খাতা কলম বের করে আমার নাম বাবা মায়ের নাম সবকিছু লিখে নিল।

তার কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে একজন লোক আমাকে নিয়ে আসলো আসার পরে অন্য আরেকটি রুমের মধ্যে নিয়ে গেল। তারপরে ওই লোকটা আমাকে জিজ্ঞেস করল তোমার কি এবার প্রথম রক্ত দেওয়া। আমি বললাম জি এবার আমার প্রথম রক্ত দেওয়া। তারপরে ওই লোকটি আমাকে বলল ভায়ের কোন কারণ নেই। আবারো আমার হাতে একটি ফিতা বেধে দিল। তারপরে হাতের মধ্যে শক্ত একটি গোল বল দিল বলল এই বলটা বারবার চাপ দিবা। আমি তখন বললাম আচ্ছা ঠিক আছে। তারপরে ওই লোকটা অনেক সুন্দরভাবে আমার হাত থেকে রক্ত নেওয়া শুরু করলো।

এবার আপনার উপরের ছবি দুটির দিকে লক্ষ্য করে দেখতে পারবেন। রক্তের ব্যাগ অর্ধেক লোড হয়ে গিয়েছে। আসলে ওই লোকটি আমাকে শুধুমাত্র রক্তের ব্যাগের দিকে তাকাতে নিষেধ করেছিল। বলছে প্রথমবার তো একটু ভয় ভয় লাগছে তোমার আমি বুঝতে পারছি তাই তুমি রক্তের ব্যাগের দিকে তাকাও না। তাই ঐ লোকটির কথামতো আমি আর রক্তের ব্যাগের দিকে তাকিয়ে ছিলাম না।

এবার আপনারা দেখতে পারছেন শুধুমাত্র রক্তের ব্যাগের ছবি তুলে আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হয়েছে। আসলে রক্তের ব্যাগ পরিপূর্ণ লোড হতে আর অল্প কিছুক্ষণ সময় লাগবে। যখন আমার শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হচ্ছিল তখন ওই লোকটি আমাকে বলছে তোমার শরীর থেকে অনেক দ্রুত রক্ত চলে আসলো। প্রায় চার মিনিট সময় লেগেছিল।

এবার আপনার দেখতে পারছেন রক্ত নেওয়ার প্রায় শেষ। রক্ত পরিপূর্ণভাবে এক ব্যাগ লোড হয়ে গিয়েছে। আসলে যখন রক্ত দেওয়া শেষ হলো নিজের কাছেই খুব ভালো লেগেছিল। তারপরে কিছুক্ষণ হাতে তুলা দিয়ে ওখানে শুয়ে থাকতে বলল। তারপরে আমার ভাইয়া অনেক সুন্দরভাবে একটি বোতলে গ্লুকোজ নিয়ে এসে আমাকে দিল আমি সেখানে শুয়ে খেয়ে নিলাম। আমি তারপর থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেক চার মাস পর পর রক্ত ডোনেট করব। আশা করি আমার রক্তের গ্রুপ আপনারা সবাই জানতে পেরেছেন। আমার রক্তের গ্রুপ হচ্ছে এ পজেটিভ । যদি কখনো আমার বাংলা ব্লগের কোন ইউজারের রক্ত প্রয়োজন হয় আমাকে জানাবেন অবশ্যই দেওয়ার চেষ্টা করব। সবাই ভাল থাকবেন সবার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল।

আমি মোঃ কিবরিয়া হোসেন। আমি বাংলাদেশ খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি বর্তমানে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে এবং লিখতে অনেক ভালোবাসি। সব থেকে আমি বেশি পছন্দ করি ফটোগ্রাফি করতে। আমি বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে থাকি। কয়েকটি শখের মধ্যে আমার প্রধান শখ হচ্ছে ঘোরাঘুরি করা। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার নিজের পরিচয় শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।