নাটক রিভিউ // গো টু হেল
আসসালামু আলাইকুম/আদাব আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধু গন আমি @kibreay001 বাংলাদেশ থেকে বলছি আজ (১১-০৮-২০২৩)
নাটকের নাম | গো টু হেল |
---|---|
পরিচালক | এমআই জুয়েল |
অভিনয় | জোভান ও কেয়া পায়েল |
দৈর্ঘ্য | ৪১ মিনিট ১১ সেকেন্ড |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ইং |
নাটকের শুরুতে নায়ক এবং নায়কা একটি রাস্তা দিয়ে দুজন হাঁটতেছিল। পিছন দিক দিয়ে একটি রিকশাওয়ালা এসে তাদেরকে বলেছিল আপনারা কোথায় যাবেন। এই কথা শোনার পরে নায়ক অনেক রেগে যায়। কারণ এই নাটকটিতে নায়কের অভিনয় ছিল অনেক কিপটে। আসলে নাটকটি দেখতে আমার কাছে বেশ দারুন লেগেছিল প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। নায়ক নায়কাকে সেই দিনও রিক্সায় চড়াতে রাজি হয়েছিল না। তারপরে হঠাৎ করে একদিন নায়কাকে দেখতে আসে ছেলে পক্ষের কিছু লোক। নায়কার বাবা তখন নায়কার সম্বন্ধে অনেক মিথ্যা কথা বলছিল। নায়কা পরবর্তীতে সেই কথাগুলো সব সত্য বলে দেয়। বলছে আমি রান্নাবান্না কোন কিছুই করতে পারি না। আমার বাবা সব কথাগুলো মিথ্যা বলছে। আজকে যে রান্নাটা হয়েছে আমাদের বাড়িতে সকাল বেলায় বুয়ি রান্না করে গিয়েছে। আসলে নাটকের কাহিনী গুলো কিন্তু আমার কাছে বেশ দারুন লেগেছে।
নায়কাকে যেইদিন ছেলে পক্ষ দেখতে আসে সেই দিন নায়ক নায়কাদের বাড়ির সামনে গিয়ে শুধু নায়কাকে মেসেজ দিতে থাকে। নায়কা সেখান থেকে উঠে বাড়ির ছাদে এসে দেখে নায়ক গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নায়ক সেখানে এসে একটি প্রবাদ বাক্য বলেছিল চাঁদ যেমন সূর্যকে ভালোবাসে আমিও তেমন তোমাকে ভালোবাসি আসলে এটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। তারপরে নায়কা সেখান থেকে এসে বিয়ে ভেঙে দেয় বলে আমি একটা ছেলেকে ভালবাসি আমি তাকে বিয়ে করবো। তারপরে নায়িকার বাবা তাকে অনেক বকাবকি করে। এবার দেখতে পারছেন নায়কের মা কিছু তরকারি কাটাকাটি করছে। নায়ক এতটাই কিপটা ছিল যে বাজার থেকে বাজার করার সময় সব পঁচা এবং নষ্ট জিনিস কিনে নিয়ে এসেছে। তার মা তাকে বকাবকি করছে এবং বলছে এইসব কাটার সময় তো আমার বুমি চলে আসে। নায়কের মা বলছিল আমাদের এত টাকা পয়সা খাবে কে। নায়ক তখন বলছিল দার্শনিক এরিস্টটলের একটি সংজ্ঞা বলেছেন । যৌবনকালে অর্ধেক খাওয়ার অর্ধেক সঞ্চয় করো যৌবনকালের সঞ্চয় বৃদ্ধ কালের অবলম্বন। তারপরে নায়ক বলছিল এটা তো কিপটা নামা এটা হচ্ছে সঞ্চয়। আসলে নাটকটি বেশ আমার কাছে মজা লেগেছিল।
একদিন সন্ধ্যার দিকে নায়ক এবং নায়কা যখন মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। তখন নায়কা তার বিপদের কথা নায়ক কে বলছিল আর তার মন পরীক্ষা করছিল। নায়কা যদি কোন বিপদে পড়ে নায়ক সাহায্য করবে কিনা নায়ক বলেছিল অবশ্যই আমি সাহায্য না করলে কে করবে। অনেক কথাবার্তা বলার পরে তারা ফোন রেখে দেয়। তারপরে নায়কের বন্ধু এসে হাত থেকে ফোন কেড়ে নেয় এবং টাকা চাই। নায়ক তখন টাকা দিতে রাজি হয় না বলে কালকে নিবি। আসলে নায়ক এতটাই কিপটা ছিল যে তার একটা মোবাইল ফোনও ছিল না গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলার জন্য। অবশেষে বন্ধুর কথা মত একটা মোবাইল ফোন কিনতে রাজি হয় তাও আবার বলে নোকিয়া ১১০০ মডেল কি মার্কেটে আছে নাকি। তখন বন্ধু বলে ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একটু স্মার্টনেস শেখ। আসলে নাটকটি দেখতে দেখতে আমার হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা ছিল।
নায়ক ও নায়কা একদিন ঘুরতে বের হয়েছিল। আসলে সেই সময় একটি ভিখারি এসে তাদের কাছে ভিক্ষা চেয়েছিল। নায়ক ভিক্ষা দিলোই না কিন্তু সেই ভিখারিকে অনেক কথা শুনিয়েছিল। অবশেষ নায়কার কথামতো যদিও ভিক্ষা দিতে রাজি হয় পকেট থেকে দুই টাকা বের করে দিয়ে আবার বলে এক টাকা ফেরত দেন। ভিখারি বলেছিল আপনি একটা চকলেট কিনে খেয়ে নিয়েন। তারপরে দুজন রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসে। সেখানে নায়ক একটি হিসাব করে বলে আমি যদি প্রত্যেকদিন ১৫ জন লোককে ৫ টাকা করে ভিক্ষা দিয়ে তাহলে আমার জীবনে আমি ১৬ লক্ষ বিশ হাজার টাকা যদি ভিক্ষা দিয়ে ফুরিয়ে ফেলি তাহলে আমার তো একটা ফিউচার আছে। আসলে সেই সময় নায়কা অনেক মন খারাপ করেছিল। তারপরে সেই দিন নায়কা একটি স্মার্ট ফোন উপহার দেয় নায়ক কে। বলে আজকে আমাকে ট্রিট দাও আমি তো তোমাকে উপহার দিলাম নায়ক তখন দুইটা পানি অর্ডার করে নায়কা আবার অবাক হয়ে যায়। আসলে নাটকটিতে নায়ক অনেক কিপটের পরিচয় দিয়েছে তাই নাটকটি দেখতে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে।
এবার নায়কার বাবা কিছু ছেলে পাত্রের ছবি ম্যানেজ করেছে তারপরে সেই ছবিগুলো তার মেয়েকে দেখাচ্ছে কোন ছেলেটা তার বিয়ের জন্য পছন্দ হয়। একজন ছেলে বিসিএস ক্যাডার আরেকজন ছেলে ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার আরেকজন ছেলে বুয়েট থেকে পাস করেছে প্রত্যেকটি বেশ ভালো ছেলে ছিল। তারপরে নায়কা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় বান্ধবীর সাথে শপিং করার জন্য। শপিং করে বাড়ি ফেরার পথে নায়ক তাদের ফলো করতে থাকে। তারপরে নায়কা সে রিকশা দাঁড় করিয়ে বলে আমি না তোমাকে বলছি তোমার সাথে আমার রিলেশন কন্টিনিউ করা সম্ভব না। নায়ক তখন হাতজোড় করে মাফ চায় বলে আমি আর কখনো কিপটামি করবো না আমি এখন থেকে দুহাত ভরে টাকা রাস্তায় ওড়াবো । আসলে গার্লফ্রেন্ড এর কাছে মাফ চাওয়া যে কতটা মজার বিষয় যদি কেউ কখনো মাফ চেয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টা হয়তো বুঝতে পারবেন।
নায়কা এবং নায়কার বান্ধবী তার বিয়ের জন্য শপিং করার জিনিস গুলো গায়ে পরছিল এবং দেখছিল দেখতে কেমন লাগে। আসলে সেই সময় হঠাৎ করে নায়ক দুই তিনবার নায়কার মোবাইল ফোনে ফোন দেয় কিন্তু মোবাইল ফোন রিসিভ করেনা। তারপরে হঠাৎ নায়কার বান্ধবীর কাছে ফোন দেওয়া শুরু করে। নায়কার বান্ধবী তখন ফোন ধরে । নায়ক বলেছিল রাইসার সাথে আমার একটু কথি বলাই দাও না। তারপরে নায়কা এবং নায়ক দুজন কথা বলে এবং নায়কা তার বিয়ের সামগ্রী জিনিসগুলো নায়কে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখাতে থাকে। আসলে নিজের ভালোবাসার মানুষের পাশে যদি অন্য কাউকে দেখা যায় সত্যি অনেক খারাপ লাগে। তাই নায়ক সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। আসলে এর আগে কখনো আমি এত কিপটা নাটক দেখিনি এই প্রথম দেখলাম।
বিয়ের দিন সকাল সকাল নায়ক এসে হাজির হয়ে যায় নায়কাদের বাড়িতে। তারপরে নায়কার সাথে অনেক কথা বলে এবং নায়কার হাতে হাত দিতে যায় তখন নায়কা হাত ঝাটকা মেরে সরিয়ে নাই বলে আর কিছুক্ষণ পরে আমি অন্য জনের বউ হয়ে যাব তোমার আমার গায়ে টাচ করার কোন অধিকার নেই। নায়ক বলে এখনো তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড এখনো তুমি অন্য কারোর বউ নাই। তারপরে নায়ক সেখান থেকে নায়কাকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসে এবং একটা গাড়ি উপহার দেয়। নায়ক বলছে আমি যে এতদিন কিপটামু করছি শুধুমাত্র তোমার বিয়ের দিন গাড়ি উপহার দেবো বলে। নায়ক গাড়িটা উপহার দেওয়ার পরে বলে শুধুমাত্র তুমি আর একটা বার আমাকে সুযোগ দাও এবার বিয়েটা ভেঙে ফেলো। তখন নায়কার বাবা এসে দেখে ফেলে বলে এই কিপটার সাথে কি আমার মেয়ের বিয়ে দেবো। এই বলে নাটকটির সমাপ্তি ঘটে।
এই নাটকটিতে আমি আমার ব্যক্তিগত রেটিং পয়েন্ট দিতে চাই ১০/৯.০০
Link
আমি মোঃ কিবরিয়া হোসেন। আমি বাংলাদেশ খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি বর্তমানে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে এবং লিখতে অনেক ভালোবাসি। সব থেকে আমি বেশি পছন্দ করি ফটোগ্রাফি করতে। আমি বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে থাকি। কয়েকটি শখের মধ্যে আমার প্রধান শখ হচ্ছে ঘোরাঘুরি করা। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার নিজের পরিচয় শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
"গো টু হেল" নাটকটি যদিও আমার দেখা হয়নি কিন্তু আপনার রিভিউ পড়ে মনে হল নাটকটি বেশ মজার হবে। তাছাড়া এত কিপটা মানুষ এর সাথে থাকা আসলেই সম্ভব নয়। কিপটা মানুষ কিপ্টামি করে জীবনে কখনো উন্নতি করতে পারেনা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক বলেছেন আপু আপনি কিপটা মানুষ সব সময় কিপটামি করে কিন্তু জীবনে কখনোই কিপটা মানুষর উন্নতি করতে পারে না। ধন্যবাদ মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।
https://twitter.com/GKibreay/status/1689833310443438080?s=20
আপনি অনেক সুন্দর একটা নাটক রিভিউ পোস্ট করেছেন। আপনার এই নাটকটার রিভিউ পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর করে আপনি সম্পূর্ণটা লিখেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। 'গো টু হেল'এখনো পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি, যার কারণে আপনার রিভিউর মাধ্যমে সর্বপ্রথম নাটকটির সম্পূর্ণ কাহিনী পড়ে ভালো লেগেছে। নায়ক নায়ক তো কিপটামি করেছিল নায়িকা কে তার বিয়ের দিন একটা গাড়ি উপহার দেওয়ার জন্য এই বিষয়টা ভালো লেগেছে। সময় পেলে নাটকটা দেখব।
যেহেতু এখনো আপনি নাটকটি দেখেননি অবশ্যই সময় পেলে নাটকটি দেখার চেষ্টা করবেন । আসলে নাটকটি বেশ দুর্দান্ত ছিল আপু।
আপনার নাটকটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে এই নাটকটি আমি দেখিনি। তবে নাটকটি পড়ে বুঝতে পারলাম নায়ক অনেক কিপটে ছিল। নাটকটি পরে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। আমি সময় পেলে অবশ্যই এই নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।
অবশ্যই সময় পেলে আপনি নাটকটি দেখার চেষ্টা করবেন। আসলে এই নাটকটিতে নায়কের অভিনয় ছিল অনেক কিপটামি। আসলে কিপটা মানুষ কখনো তার জীবনে উন্নতি করতে পারে না।
মাঝেমধ্যে ভালোই লাগে নাটক দেখতে। যদিও এ নাটকটি দেখা হয়নি। তবে পুরো নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। মূলত এখানে নায়ক এত কিপটামি করেছে নায়িকাকে তার বিয়েতে গাড়ি উপহার দেওয়ার জন্য। তবে আসলে এতো কিপ্টেমি করা উচিত না। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু আপনি আসলে নায়ক কিপটামি করে অনেক টাকা জমিয়ে ছিল নায়কার বিয়ের দিন গাড়ি উপহার দেবে বলে। ধন্যবাদ মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।
আমি এরকম অনেকগুলো নাটক দেখেছি যেখানে নায়ক অনেক বেশি কিপটে থাকে। কিন্তু সেই নাটকটার শেষে তার কিপ্টেমির আসল ব্যাপারটা জানা যায়। এই বিষয়টা অনেক ভালো লাগে। এই নাটকটিতে ও নায়ক অনেক বেশি কিপ্টেমি করেছে দেখছি। কিন্তু শেষে অনেক সুন্দর একটা উপহার দিয়েছে তার গার্লফ্রেন্ডকে। তবে এ নাটকটা অনেক মজার নাটক যা দেখেই বুঝতে পেরেছি। আমি তো অবশ্যই দেখবো নাটকটা।
ঠিক বলেছেন ভাই আপনি নায়ক যে কিসের জন্য এত কিপটামি করছিল নাটকের শেষের দিকে আমরা সবাই তা বুঝতে পেরেছি। নায়ক একটি গাড়ি কিনে নায়কার বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য এত কিপটামি করে চলত। ধন্যবাদ মতামত শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া প্রথম নাটকের নামটি শুনে তো আমি খুব চমকে গেলাম। নাটক দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে আমি অবসর সময় নাটক দেখি। আপনি যে নাটকের শেয়ার করেছেন এর কাহিনী অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর ভাবে আপনার গঠনমূলক মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।