বৃষ্টি ভেজা সকাল||৩০-০৫-২০২২||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
শুক্রবার এবং শনিবার ব্যাংক ছুটি থাকার কারণে ভাইয়া বাড়ি এসেছিল আর ছুটি শেষ পর ভাইয়াকে কুমারখালী পর্যন্ত ভোর বেলায় এগিয়ে দিয়ে আসতে হয়। ভোর বেলায় রাস্তায় তেমন গাড়ি চলাচল করে না যার কারণে আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দিয়ে আসি। সকালবেলা হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছিল আর ভোররাতে মোটামুটি একটু বৃষ্টি হয়েছিল যার কারণে রাস্তা ভেজা ছিল তাই খুব দ্রুত বাইক চালাতে পারিনি। তবে সকালে ঠান্ডা ওয়েদার খুব উপভোগ করেছি। গরমের দিনে এমন আবহাওয়া আমার কাছে বেশ ভাল লাগে। বৃষ্টি ভেজা সকালের পুরোটা সময় কিভাবে কেটেছে সেটা আমি আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। চলুন তাহলে বিস্তারিত বিষয়গুলো দেখে আসা দরকার।

20220529_141332-COLLAGE.jpg

ভাইয়ের সাথে আমি অনেক ফ্রেন্ডলি। আমরা যখন একসাথে থাকি আর আমাদের কথাবার্তা শুনে কারো বোঝা কষ্টকর যে আমরা দুজন ভাই। আর এই জন্যই আমি আমার ভাইকে অনেক ভালোবাসি। ভাইয়া দুপুরবেলায় কুষ্টিয়া গিয়ে ফুফুর বাসায় থাকতে চাইলো কিন্তু আমি বললাম তার আর দরকার নেই আমি ভোর বেলায় বাইক নিয়ে তোমাকে কুমারখালী পৌঁছে দিয়ে আসবো। ভোরবেলায় উঠে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে ভাইয়া রেডি হয়ে নিল আর আমি ঘর থেকে বাইক বের করে যাত্রা শুরু করার প্রস্তুতি নিলাম। যদিও মাঝখানে সামান্য একটু বৃষ্টি আমাদেরকে বাধা দিয়েছিলো তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বৃষ্টি একটু কমে যাওয়া মাত্রই আমরা যাত্রা শুরু করি। আকাশে একটু একটু মেঘ ছিল বুঝতে পারছিলাম হয়তো আবার বৃষ্টি নামবে তবে আমাদের সন্দেহটা একদম ঠিক ছিল। কিছু পথ যাওয়ার পরেই আবার একটু গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হলো আর আমরা ছোট্ট একটি দোকানের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। ৫-৭ মিনিট গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার পরে আবার বৃষ্টি থেমে গেল। আমি বাইকের উপর বসে বৃষ্টি ভেজা সকাল বেলার রাস্তার একটা ছবি তুলেছিলাম। পরবর্তীতে আমরা আমাদের গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

20220529_062727.jpg

20220529_062724.jpg

যাত্রা পথে।

what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding

20220529_064308.jpg

20220529_064721.jpg

20220529_064152.jpg

20220529_064056.jpg

20220529_064048.jpg

নদীর ধারে কিছু সময়।

what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding

ভাইয়াকে কুমারখালী নামিয়ে দিয়ে গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। গাড়ি আসার পরে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিলাম এবং আমি সিদ্ধান্ত নিলাম কুমারখালী শহরের বাম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীর পাড়ে গিয়ে কিছু সময় ঠান্ডা বাতাস উপভোগ। বাইক নিয়ে সোজা গড়াই নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম। সকালবেলা হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পরিবেশ টা একদম ঠান্ডা তেমন বাতাস নেই বা নদীতে যেমন ঢেউ নেই শুধু হালকা স্রোত বয়ে চলেছে। নদীর পাড়ে সকালবেলা আবহাওয়া টা অনেক ভালো লেগেছিল। ভাবলাম সকালবেলায় গড়াই নদীর ধারের কিছু ছবি তুলি আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে নদীর কিছু ছবি তুললাম। বাইকের উপর বসে বসে আমার তোলা ছবিগুলো আবার পুনরায় দেখলাম। ভাবলাম ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করতে হলে একটা নিজের ছবি দিতে হয় আর সেটা ভেবেই মোটরসাইকেলের লুকিং গ্লাসে নিজের মিরর ছবি তুলেছিলাম। আকাশে হালকা মেঘ ছিল আর ইদানিং আকাশে তো সব সময় মেঘ থাকে আর বৃষ্টি নিয়মিতই হচ্ছে মেঘলা আকাশের নিচে নদীর তীরে বসে থাকতে বেশ ভালোই লাগছিল আর নদীর কূলে হালকা ঠান্ডা বাতাস নিজের মনের অনুভূতি গুলো যেন নতুন করে আবার জাগিয়ে তুলছিলো। আসলে এই অনুভূতি বলে শেষ করা যায় না।

20220529_064520.jpg

20220529_064515.jpg

20220529_064455.jpg

20220529_064424.jpg

20220529_064413.jpg

গড়াই নদী।

what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding

কিছু সময় বাইকের উপর বসে ছিলাম আর পেছনে একটি চায়ের দোকান ছিল ভাবলাম এই হালকা ঠান্ডা আবহাওয়ার সাথে এক কাপ চা হলে মুহূর্তটা একদম কানায় কানায় পূর্ণতা পেয়ে যেত। তবে দুঃখের বিষয় চাহতে অনেক দেরি হবে, দোকানদার বলল মামা সবে পানি গরম হতে দিলাম একটু সময় লাগবে। আমি ভাবলাম একটু নিচে নেমে ঘুরে আসি মূলত নদীর পাড়ে একজন লোক বরশি দিয়ে মাছ ধরছিল আর তার পাশেই একটি নৌকা পাড়ে ভেড়ানো ছিল। আমার শেয়ার করে ছবি তে যে পাথরের তৈরি ব্লক দেখতে পারছেন সেগুলো মূলত নদীর ভাঙ্গন রোধ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। যখন গড়াই নদী পানিতে ভরে ওঠে তখন অনেক স্রোত থাকে আর এই স্রোতের কারণে নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই মূলত এই পদক্ষেপগুলো নেয়া হয়েছে। নদীর তীরে থাকা ব্লকের উপর কিছু সময় বসেছিলাম আর অপেক্ষা করছিলাম লোকটি একটি মাছ ধরতে পারলে সেটার ছবি তুলব কিন্তু অনেক সময় বসে থাকার পরেও কোন মাছ ধরা পড়ল না যার কারণে আমার ইচ্ছেটা আর পূরণ হয়নি। যাইহোক কিছু সময় পর উপরে এসে বাইক নিয়ে ভাবলাম একটু সামনের দিকে এগিয়ে যাই।

20220529_065846.jpg

20220529_065824.jpg

20220529_065713.jpg

20220529_065637.jpg

20220529_065625.jpg

20220529_065546.jpg

20220529_065517.jpg

20220529_065511.jpg

বালু চর।

what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding

গড়াই নদী কুমারখালী শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে আর তাই নদীর পাশ দিয়ে অনেক সুন্দর রাস্তা আছে আর বাইক নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখতে পেলাম গড়াই নদীর উপর দিয়ে নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। তখন ইচ্ছে হলো নির্মাণাধীন সেতুর পাশে গিয়ে দৃশ্য গুলো একটু দেখবো কিন্তু দুঃখের বিষয় বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেতুর পাশে যে রাস্তা আছে সে রাস্তায় অনেক কাদা জমে আছে মূলত ভারী ট্রাক যাতায়াত করার কারণে রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে তবে যখন সেতু উদ্বোধন করা হবে তার আগেই রাস্তাগুলো আবার মেরামত করা হবে। গড়াই নদীর উপরে নির্মাণাধীন সেতুর বাম পাশে ছোট্ট একটি বালুচর আছে আমি বাইক নিয়ে সেখানে গেলাম আর বালুচর এর উপর থেকে সেতুটির ছবি মোটামুটি দেখা যাচ্ছিল। বৃষ্টি হওয়ার কারণে বালি অনেকটাই শক্ত হয়ে গিয়েছে আর বালির উপরে থাকা শামুকের খোসাগুলো পরিষ্কার হয়ে উজ্জ্বল বর্ণ ধারণ করেছে। শামুকের খোলস গুলো দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিল আর তাই আমি কিছু ছবি তুললাম তাছাড়া বালি উত্তোলনের জন্য কৃত্রিম উপায়ে যে পাইপ ব্যবহার করা হয় সেগুলো এই বালুচরে রাখা হয়েছে যেটা আমার শেয়ার করা ছবি দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন। বালুচর এর মধ্যেও আবার একটি সবুজ উদ্ভিদ জন্মেছে সকালবেলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে সবুজ পাতার উপর থেকে সব ধুলা ময়লা ধুয়ে পড়েছে আর সবুজ পাতাগুলোর সতেজতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আমি আরো কিছু সময় জায়গাটির সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এবং মনের কিছুটা প্রশান্তি মেলার পরে ভাবলাম এখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় হয়েছে।

বন্ধুরা, এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই আমার ভ্রমণ কাহিনীটি ভালো লেগেছে।আপনাদের মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

ধন্যবাদ

@kazi-raihan

Sort:  
 2 years ago 

বাংলাদেশের নদী পাড়ের প্রকৃতি প্রায় সব জেলাতেই একই রকম। আসলে নদী আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে সে যেখানেই হোক। সকালের প্রকৃতির মধ্যে আলাদা এক সৌন্দর্য থাকে। বড় ভাইকে নিয়ে আপনার এই বাইকে ভ্রমণ ভালই লাগলো। ধন্যবাদ

 2 years ago 

তবে ভাইয়া অন্যান্য জেলার তুলনায় আমাদের কুষ্টিয়া জেলায় নদীর সংস্পর্শ বেশি।

 2 years ago 

বৃষ্টি ভেজা সকালে খুবই সুন্দর কিছু মুহূর্ত পার করেছেন আপনি এবং ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টে সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।

 2 years ago 

🥰🥰🥰

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার বৃষ্টি ভেজা সকালের ফটোগ্রাফি গুলো সত্যিই খুব সুন্দর হয়েছে। আসলে বৃষ্টির পর সবকিছু এত সুন্দর ও সতেজ দেখা যায়। তা আপনি আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। খুবই ভালো লাগলো ভাই আপনার বৃষ্টি ভেজা সকালের ফটোগ্রাফি আর সেইসাথে উপস্থাপনা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু বৃষ্টির পরে সতেজ হাওয়া উপভোগ করা যায়। আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ভাই নদীর ধারে খুবই সুন্দর সময় পার করেছেন, আসরের নদীর ধারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি সাথে সুন্দর বর্ণনা, সত্যিই অসাধারণ হয়েছে।

 2 years ago 

আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনার এই পোস্টে নদীর ছবিগুলো দেখে মনে হল আমাদের এখানকার পদ্মা নদীর ছবিগুলি একদম দেখতে একই রকম। সকালবেলায় নদীর পাড়ে সময় কাটাতে আসলেই অসম্ভব ভালো লাগে। আমি সকাল বেলায় অনেকসময় নদীর পাড়ে কাটিয়েছি। আপনার লেখাটা পড়ে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

নদীর সৌন্দর্য অনেক সময় একই রকম হয়।
আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

বৃষ্টি ভেজা সকালের অসাধারণ কিছু নদীর পাড়ের ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে আসলে নদীর পাড়ে ঘোরাঘুরি করার মজাটাই অন্যরকম যা বলে বোঝানোর মত নয়

 2 years ago 

সকালের ঠান্ডা বাতাসে নদীর পাড়ে ঘুরাঘুরির মজাটাই যেন বেশি উপভোগ করেছি।

 2 years ago 

আপনার ভাইয়ের সাথে এত সুন্দর সম্পর্ক জেনে বেশ ভালো লাগলো।ভাই ভাইয়ার সাথে এরকম সম্পর্ক গুলোই থাকা দরকার। তাছাড়া গরমের সময় এর এইরকম বৃষ্টির দিন খুব ভালোই লাগে। আপনি বৃষ্টির সকলের খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন । আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে। এমনকি আপনি ফটোগ্রাফি সম্পর্কে অনেক কিছু লিখেছেন। এরকম একটা সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

গরমের সময় একটু বৃষ্টি হলে ঠান্ডা আবহাওয়ায় মনে স্বস্তি মিলে যায়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে বৃষ্টির দিন গুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আর আপনি নদীর ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন সেগুলো দেখতে আসলে খুবই সুন্দর লাগছিল। সকাল বেলা নদীর পাড়ে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছেও বেশ ভালো লেগেছিল তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 59281.33
ETH 2982.58
USDT 1.00
SBD 3.74