সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলাম বাইরের আবহাওয়া ভালো না। বাইরে গিয়ে দেখলাম আকাশে মেঘ আর ঠান্ডা বাতাস বইছে। মেঘের অবস্থা দেখে বুঝতে পারলাম এখনই হয়তো বৃষ্টি নামবে। ভাবতে ভাবতে অলৌকিক ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আমি দৌড়ে রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে দেখলাম বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে।

আপনাদের তো একটা কথা বলা হয়নি,আমি গত সোমবারের বাসা থেকে থেকে খুলনা বোনের বাসায় গিয়েছিলাম এবং সেখানে ৩দিন কাটানোর পর ৩ তারিখ রাতে আমার ভাইয়ের বাসায় আসি। আমার ভাই চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থাকে। ভাইয়া মেহেরপুর সদর উপজেলার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে চাকরী করে আর ভাবী জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করে। ভাইয়ের বাসায় মূলত ভাবীর দেওয়া দাওয়াত রক্ষার্থে আসা হয়েছে। ভাবী আমাকে কিছু দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে নিয়ে যাবে আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে জীবননগর আসা।

আগে থেকেই ভাবীর সাথে কথা হয়েছিল আমরা বিকালে ঘুরতে বের হবো। সকালের বৃষ্টি দেখে মনে হলো হয়তো বিকালের আগেই বৃষ্টি থেমে যাবে আর আমরা বিকালে ঘুরতে বের হবো।৩ জন বসে গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। কিন্তু তবুও বাইরে ফোঁটায় ফোঁটায় বৃষ্টি হচ্ছেই। গোসল খাওয়া দাওয়া শেষ করে ভাবলাম একটা ঘুম দিই আর বিকাল হতে হতে তো বৃষ্টি থেমেই যাবে।এই ভেবে ঘুমাতে গেলাম।

আনুমানিক ৪টার দিকে ঘুম থেকে উঠলাম এবং জানালা খুলে দেখতে পেলাম বাইরে সেই একই ভাবে বৃষ্টি পড়ছে আর বাতাস বইছে। আমি সত্যি ঘুম থেকে উঠে এমন আবহাওয়া দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।যাই হোক আবহাওয়া দেখে একদম মনটা খারাপ হয়ে গেল।কত প্লান করে রেখেছি বিকালে ঘুরতে যাবো কিন্তু সব যেন বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেল।

কী আর করার ছিল?? ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ফোন নিয়ে বসলাম। কিছু সময় ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করার পর ভাবী আমাকে জিজ্ঞেস করলো রায়হান কী খাবা? আমি বললাম তেমন কিছু খাবো না,এই আবহাওয়া একদম ভালো লাগছে না।

কিছু সময় পর দেখি ভাবী আমার জন্য নুডুলস রান্না করে নিয়ে আসছে।এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় সন্ধ্যা বেলায় গরম গরম নুডুলস এর টেষ্ট উফ্ মন ভালো হয়ে গেল। আমরা ৩ জন একসাথে বসে নুডুলস খেলাম আর বিভিন্ন গল্পের সাথে মেতে উঠলাম। আমাদের আড্ডা বেশ ভালোই জমেছিল।আড্ডা শেষে ভাবী রান্না ঘরে রাতের খাবার তৈরির জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর আমি বাইরে আবার উঁকি মারতেই দেখলাম বৃষ্টি শেষ হয়ে গিয়েছে। সারাদিন বাসায় বসে থেকে বোরিং ফিল হচ্ছিল তাই ভাবলাম একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি।রেডি হয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য বের হলাম।

বাইরে গিয়ে দেখলাম একদম জনমানবহীন নিস্তব্ধ শহর। রাতের বেলায় শহরটা বেশ সুন্দর লাগছিল।তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি কিছু ছবি তুলেছিলাম যেগুলো এখন আপনাদের দেখাবো।

জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর প্রধান ফটক।ভাবী জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করে বলে সেখানের সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। রাতের বেলায় বাইরে বের হতে হলে প্রধান গেইট দিয়ে বের হতে হয়।আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই ছবি তোলা।

বৃষ্টির দিনে রাস্তাঘাটে লোকজন কম থাকায় খুব সকাল সকাল দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।বাইরে বের হয়েছিলাম কিছু কোমলপানীয় জাতীয় খাবার কেনার জন্য।সব দোকান বন্ধ দেখে ভাবলাম গোলীর মাঝে যদি কোন দোকান খোলা পাই। কিছু সময় এগোতেই দেখলাম একটি দোকান খোলা রয়েছে। সেখান থেকে কিছু শুকনা খাবার আর কোমলপানীয় কিনে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই।

নীরব শহরের নীরবতা উপভোগ করতে করতে বাসার দিকে এগোতে থাকি। ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে শীত শীত অনুভূতি। তবে কষ্টের মধ্যে রাস্তায় বৃষ্টির জন্য পানি জমে আছে যার জন্য চলাফেরায় একটু সমস্যা হচ্ছিল। সারাদিনের বৃষ্টির কারণে ঘরে বন্দী ছিলাম কিন্তু সন্ধ্যা বেলায় একটু বাইরের মুক্ত খাওয়া মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট ছিল। তবে সব শেষে রাতের সময়টা মোটামুটি ভালোই কেটেছে।

এই ছিল আমার বৃষ্টির দিনের মুহূর্ত এবং নিরব অভিজ্ঞতা।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

পোস্ট বিবরণ

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম@kazi-raihan। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালো লাগে, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

|| Join the Discord Server for more Details ||

---