মেহেরপুর ভ্রমণ (পর্ব-০১) ||১০-০১-২০২৪|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago (edited)

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।



বাইক নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই তবে অনেকগুলো বাইক ট্যুরের পোস্ট কমিউনিটিতে শেয়ার করেছি। আজকেও আবার একটি বাইক ট্যুরের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত কমিউনিটিতে পোস্ট শেয়ার করি তারই মাঝে এই বাইক ট্যুরের গল্পটা বাদ পড়ে গিয়েছে। তাই অনেকদিন পরে বাইকটির এই গল্পটা নিয়ে লিখতে বসলাম। বাইকে যাওয়ার পরে যে ছবিগুলো তোলা ছিল সেগুলো পুরাতন অ্যালবামে রেখে দিয়েছিলাম কেননা এই ছবিগুলো তোলা ২০২৩ সালের মে মাসে। তখন কিন্তু একদম পুরো আম কাঁঠাল সহ লিচুর মৌসুম ছিল। যাই হোক শীতের মৌসুমে সর্বশেষ বাইক ট্যুর হয়েছিল তারপরে আর কোন বাইক ট্যুর হয়নি তাই মে মাসে আমরা আবার নতুন একটি বাইক ট্যুরের প্ল্যানিং করেছিলাম।সব শেষে পাশের জেলা মেহেরপুরে যাওয়ার প্লানিং হলো।



20240109_141439_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



মূলত ট্যুরে যাওয়ার আগের দিন রাত থেকেই মনের মধ্যে আলাদা একটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করে। যার জন্য রাতের বেলায় ঠিকমতো ঘুম হয় না এটা কিন্তু সবার ক্ষেত্রেই হয়। আর আমরা মূলত ট্যুরে যাওয়ার আগের দিন নতুন একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে নিই আর ওই গ্রুপে সব ধরনের কথাবার্তা হয়। সবাই গ্রুপে মজার মজার সব কথা লিখছিল বেশ ভালোই লাগছিল। এক পর্যায়ে সবাইকে ঘুমানোর কথা বলে আমি নিজেও ঘুমিয়ে পড়লাম। ভোর চারটার সময় এলার্ম দেওয়া ছিল এলার্ম বাজার সাথে সাথেই ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। যেহেতু এক দিনের ট্যুর ছিল তাই ব্যাগসহ বাড়তি কোন জামা কাপড় নেয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে গোসল করে নিলাম কারণ তখন গরমের সময় ছিল গোসল করতে আরো বেশি ভালো লাগতো। গোসল শেষে নিজে নিজেই গ্যাসের চুলায় হালকা নাস্তা তৈরি করে মোটামুটি সকালের নাস্তা কমপ্লিট করে নিলাম। তারপর বেরিয়ে পড়লাম। সকালে সবাই সোহাগ ভাইয়ের বাড়ির সামনে এসে হাজির হলাম। তারপরে আবার সাগর ভাইয়ের বাড়ির সামনে থেকে তাকে নিয়ে আমরা সবাই মিলে যাত্রা শুরু করলাম। আমরা প্রথমে ঝিনাইদহ হয়ে চুয়াডাঙ্গা ঢুকবো এবং সেখান থেকে মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হব। যাত্রার শুরুতেই কুমারখালী গিয়ে তেল পাম থেকে আমরা বাইকের তেল ফুল করে নিলাম যেহেতু সারাদিনের বাইক ট্যুর ছিল। তারপরেই আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম।

20230529_064943.jpg

20230529_064955.jpg

20230529_073941.jpg

20230529_073946.jpg

যাত্রা শুরু।

what3words address.
https://w3w.co/partied.refrained.kidney

20230529_074145.jpg

20230529_081503.jpg

20230529_074459.jpg

ঢাকা-ঝিনাইদহ হাইওয়ে।

what3words address.
https://w3w.co/arenas.sandblast.shampoo

কুমারখালী থেকে কুষ্টিয়ার দূরত্ব ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। এই ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সবাই কুষ্টিয়া সদরে গিয়ে একটি হোটেলে নাস্তা করলাম। যদিও আমি বাড়ি থেকে হালকা নাস্তা করেছিলাম আপাতত সকাল দশটা পর্যন্ত থাকতে পারতাম তবে অন্যরা আর বাড়ি থেকে তেমন কিছু খাওয়া দাওয়া করে আসেনি তাই সবাই মিলে কুষ্টিয়া শহরে গিয়ে নাস্তা করলো। সবাই নাস্তা শেষ করে বিল পেমেন্ট করে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম আর তখনই সবাইকে বললাম কুষ্টিয়া থেকে সোজা ঝিনাইদহে পৌঁছানোর পর আমরা আমাদের যাত্রার দ্বিতীয় বিরতি নিব। যারা অবশ্য ঢাকা ঝিনাইদহ হাইওয়ে রাস্তায় এসেছেন তারা অবশ্য এই রাস্তার সৌন্দর্য সম্পর্কে জানেন কেননা রাস্তার দুই পাশের গাছের সৌন্দর্য সবাইকে আকৃষ্ট করে। আমিতো প্রতিনিয়ত ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলাম কারণ আমি সোহাগ ভাইয়ের পিলিয়ন ছিলাম যেটা ছবি তুলতে আরো সুবিধা হয়েছিল। উপরের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন আসলে হাইওয়ে রাস্তাটা কতটা সুন্দর ছিল।

20230529_120828.jpg

20230529_140206.jpg

প্রথম বিরতি।

what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze

ঝিনাইদহে পৌঁছানোর পর আমরা একটি স্টলে বসে চা আর বিস্কিট খেয়ে কিছুটা আড্ডা দিলাম। যদিও সেখানে আমাদের এলাকার এক বড় ভাই আসলো তার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করেছিলাম যাইহোক অনেক সময় পরে তিনি আসলেন তিনি আমাদের সাথে কিছু সময় কথা বললেন আর আমরা চায়ের দোকানে যে খাওয়া-দাওয়া করেছিলাম সেটার বিল দিলেন। আমরা ঝিনাইদহ থেকে ভেতরের রাস্তা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম কেননা চুয়াডাঙ্গায় গিয়ে আমরা আমাদের এক বন্ধুর সাথে দেখা করব। চুয়াডাঙ্গা সদর থেকে আরেকটু ভিতরে যেতে হয় তাই বেশ খানি ভিতরের লোকাল রাস্তায় যেতে হলো। আমরা গিয়ে একটা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে দাঁড়ালাম আর আমাদের সেই বন্ধু আসলো তারপর আমরা তাদের বাড়িতে গিয়ে হালকা-পাতলা খাওয়া দাওয়া করলাম। তবে তখন আমের মৌসুম ছিল বলে আম খেয়েছিলাম তাই আমের ছবিটাও তুলে রেখেছিলাম যদিও অন্যান্য খাবারের আইটেম ছিল তবে সেগুলোর আর ছবি তোলা হয়েছিল না। তবে সেই বন্ধুদের বাড়ির পাশে যাওয়ার একটা কারণ ছিল। যেহেতু আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম তাই বন্ধুদের বাড়ির পাশে কাজী নজরুল ইসলামের চার চালা একটি ঘর রয়েছে সেই জায়গাটা দেখা হবে এই ভেবে গিয়েছিলাম তবে দুর্ভাগ্যবশত সেদিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় আর ভিতরে প্রবেশ করা হয়নি।

20230529_145842.jpg

20230529_145924.jpg

20230529_150811.jpg

20230529_150506.jpg

IMG-20240109-WA0000.jpg

ভারত বাংলাদেশ বর্ডার।

what3words address.
https://w3w.co/mailorder.monotype.lambskin

যেহেতু সেখানে সবকিছু বন্ধ ছিল তাই আমরা সেখান থেকে দ্রুত মেহেরপুর চলে আসলাম। মেহেরপুর এসে আমরা সোজা বর্ডারের পাশে চলে গেলাম আর দেখলাম কয়েকজন বিজিবি সদস্য সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। একটু সাইডে বাইক রেখে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। উনারা বিস্তারিত জিজ্ঞেস করলেন আমরা সুন্দরভাবে তাদের প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলাম এবং একজন বড় ভাইয়ের আব্বু বিজিবিতে চাকরি করে তার পরিচয় দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলাম। মজার বিষয় হচ্ছে ভাইয়া যখন বলল আমার আব্বু বিজিবিতে চাকরি করে আর যখন লোকেশন বললো তখন তিনি বললেন, তাহলে তো তোমরাও আমাদের ভাতিজা সমস্যা নেই ভেতরে যাও তবে নির্দিষ্ট এরিয়া দেখিয়ে দিল আর বলল এই এরিয়া পার হবে না। ছবিতে একটি লোককে দেখতে পাচ্ছেন যে অনেকগুলো ছাগল দিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে আসলে সেটা ছিল ভারতের এরিয়া। তাছাড়া পথের শেষে যে গাছ গুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো ভারতের এরিয়ার মধ্যে।



বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন।আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏


আমার পরিচয়


20231103_120723-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 8 months ago 

বাইকে করে ঘোরাঘুরির ব্যাপারটা ছেলেদের জন্য যতটা সহজ মেয়েদের ক্ষেত্রে কিন্তু অতটা সহজ নয়। আসলে আমিও যখন কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্লান করি তার আগের দিন রাতে ঘুমই হয় না বললেই চলে। তাছাড়া এই ছোট ছোট অর্থাৎ একদিনের ট্যুর প্লানগুলো অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং হয়। বর্ডার এলাকায় সাধারণত ওইভাবে প্রবেশ করতে দেয় না, তবে যেহেতু আপনার বড় ভাইয়ের বাবা বিজিবিতে চাকরি করে এজন্য হয়তো এই সুযোগ সুবিধা টা পেয়েছেন। যাইহোক যেহেতু ইন্ডিয়া চলেই এসেছিলেন প্রায়,তাহলে এদিকে একটু ঘুরে যেতে পারতেন। হা হা হা...

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

ঘুরতে যাওয়ার আগের দিন রাতে আসলে সবার ক্ষেত্রেই একই অবস্থা হয় ঘুম আসে না। তবে হ্যাঁ আপনি যদি আগে থেকে দাওয়াত দিতেন আর বিএসএফ যদি আমাদের না ধরতো তাহলে আপনাদের বাসা থেকে ঘুরে আসতাম হি হি হি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 8 months ago 

ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে একটি ভ্রমন কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার সকালে নাস্তা করা থেকে সবটাই আমি উপভোগ করেছি। আমিও ভ্রমন বিলাসী। আমিও বাইক চালানো উপভোগ করি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা আর চাকুরী সব মিলিয়ে আর হয়ে উঠেনা। আপনার লেখাটা পড়ছিলাম আর আমার মন হচ্ছিল আমিও আপনাদের মাঝে আছি। সুন্দর লেগেছে। শুভকামনা রইল। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 8 months ago 

ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56586.53
ETH 2392.96
USDT 1.00
SBD 2.30