📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৪৩|| প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

এই সপ্তাহের শুরুর দিক থেকে আবার ধারাবাহিকভাবে কাজ শুরু করেছি তবে গত সপ্তাহেও আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করেছিলাম আর সেটা ছিল ৪২ তম ফটোগ্রাফি পর্ব। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইদানিং সকালবেলায় একটু হাটাহাটি করতে যাওয়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ ছবিগুলোই সকালবেলা ক্যাপচার করা তাছাড়া মাঝে কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম আর সেই মুহূর্তে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে আর সেগুলো খুব সহজেই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আর আজকে আবার নাইট ফটোগ্রাফি অ্যাড করেছি কারণ বর্তমানে আবার লোডশেডিং শুরু হয়েছে আর আবহাওয়া এত পরিমানে গরম যেটা আসলেই বলার না। কালকে রাত্রেও প্রায় একটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে ছিলাম। মাঝরাতে দেখলাম দারুন চাঁদ উঠেছে তাই সেই ছবিটাও এখানে তুলে ধরেছি। যাই হোক সব বিবরণ এখানে না দিয়ে ছবিগুলো গিয়ে দেখে আসা যাক আর সেই ছবিগুলোর সম্পর্কে ছোট্ট যে বর্ণনাটা সেটা পড়ে আসা যাক চলুন তাহলে।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• আমাদের পাশের দেশ ভারতে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে এমনকি সেদিনের নিউজে দেখলাম ৪৭ বছরের মধ্যে ভারতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত আর বন্যা হয়েছে। তবে সেই তুলনায় আমাদের দেশে কিন্তু নদীতেও তেমন পানি নেই দেখুন উপরের যে ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন সেটা কিন্তু পদ্মা নদী আর পদ্মা নদীতে এই সময়ে পানিতে ভরপুর থাকার কথা কিন্তু পদ্মা নদী একদম শান্ত রয়েছে কারণ নদীতে তেমন একটা পানি আসেনি এখনো। সকালবেলা নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম তাই সেখানকার ছবি তুলে পুরাতন অ্যালবামে রেখে দিয়েছিলাম বলে আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম । কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই মন্তব্য করে বলবেন।

• গত পর্বের ফটোগ্রাফি পড়বে মিষ্টি কুমড়া ফুলের ফটোগ্রাফির নিচে বর্ণানায় লিখেছিলাম যে রাস্তার পাশ দিয়ে ছোট্ট ফুলের ছবি তোলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলাম আসলে সেদিনে তেমন কোন ফুল চোখে পড়েনি তবে পরবর্তীতে রাস্তার পাশ থেকে এই ফুলের ছবিটা ক্যাপচার করেছিলাম। তবে ছোট্ট ঘাসের উপরে এই ফুলটা ফুটেছিল আর বেগুনি কালারের ফুলটা দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। যদিও একটু বৃষ্টি হলে এই ফুলের সৌন্দর্যটা আরো বৃদ্ধি পেত কারণ প্রচন্ড রোদে গাছগুলো কেমন যেন একটু গুছিয়ে গিয়েছে তারপরেও এই ফুলটা বেশ সুন্দর লাগছিল। আর সকালের আবহাওয়াটায় যে কোন ফুলের ছবি অনেক বেশি ভালো লাগে তাই ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে ম্যাক্রো লেন্সে এই ছোট্ট ফুলের ছবি তুলেছিলাম।

• হঠাৎ করেই আজ তিন দিন যাবত প্রচন্ড গরম পরছে আর লোডশেডিং তো গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। কালকে রবিবারের আড্ডা ঘরে সময় আড্ডা চলার পরে রাত প্রায় পৌনে এগারোটার দিকে ঘুমানোর আগে ভাবলাম একটু গোসল করে আসি কারণ এত পরিমানে গরম পরছিল আর গা ঘেমে কেমন যেন অসহ্য লাগছিল তাই ভাবলাম গোসল করে সুন্দর একটা ঘুম দিব। গোসল শেষে ঘুমাতে যাওয়ার কিছু সময় পরেই লোডশেডিং হলো যার কারণে আর রুমে বেশি সময় টিকতে পারলাম না এত পরিমাণে গরম লাগছিল। ফোন হাতে নিয়ে আবার রুমের বাইরে গিয়ে দেখলাম এত সুন্দর চাঁদের সৌন্দর্যটা অবশ্য রুমে থাকলে উপভোগ করা সম্ভব হতো না। অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে ছিলাম আর সূর্য যেমন দুপুরবেলায় মাথার উপরে চলে আসে ঠিক তেমনি মাঝ রাতে চাঁদের অবস্থানটাও ঠিক মাথার উপরেই থাকে। চারিদিকে চাঁদের আলোটা এত পরিমানে ছড়িয়ে পড়েছিল মনে হচ্ছিল এখন যেন দিন যাই হোক সেই মাথার উপরে চাঁদের অবস্থানটা আম গাছের আড়াল থেকে ক্যাপচার করে তুলে ধরেছি।

• এই ছবিটা আজ থেকে তিন দিন আগে তোলা। মোটামুটি গরমের প্রভাবটা শুরু হওয়ার পরেই লোডশেডিং শুরু হয়েছে তাই দিনে তিন চারবার গোসল করি। দুপুরে গোসল শেষে যখনই অনলাইনে আসলাম তখন দেখলাম সবাই গ্রুপে মাছ শিকারের ছবি দিচ্ছে। তখন আবার গ্রুপ থেকে এক বড় ভাই ভিডিও কল দিল তখন ভিডিও কলে দেখলাম সেই ভাইয়ের বাসায় সবাই মাছ শিকার করার জন্য এসেছে। যদিও তখন তারা তিনজন এসেছিল পরবর্তীতে আমরা ভিডিও কলে আমাদের আরও বন্ধুদেরকে ডাকলাম। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে আমরা পুকুরে মাছ শিকার করেছিলাম আর মাছ শিকার করার পাশাপাশি মুড়ি আর চানাচুরের মজাদার খাবারটাও বেশ উপভোগ করেছিলাম। বরশি দিয়ে মাছ শিকার অনেকদিন পরে করলাম তাই মাছ ধরার পরে মাছের ফটোগ্রাফি করেছিলাম আর সেটাই এখন আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।

• ছবিটা দেখে সবাই অবশ্য মনে করতে পারেন হয়তো প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছে আসলে তেমন বৃষ্টি হয়নি। শেষ বিকেলের দিকে প্রচন্ড মেঘ জমে ছিল আকাশে ভেবেছিলাম হয়তো বেশ ভালোই বৃষ্টি হবে কিন্তু তেমন বৃষ্টি হয়নি। আসলে প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এমন আকাশে প্রচন্ড মেঘ জমেছে কিন্তু বৃষ্টির দেখা মিলছে না বললেই চলে। প্রচন্ড মেঘশেষে হালকা বৃষ্টি হয়েছিল আর বৃষ্টির পরবর্তী সময়ে আকাশে এরকম লাল মেঘ লক্ষ্য করা যায়। শেষ বিকেলে লাল মেঘ আর আকাশে আষাঢ়ের হালকা কালো মেঘটা বেশ ভালোই লাগছিল তাই ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে ক্যাপচার করে রেখে দিয়েছিলাম যে কোন এক সময় আপনাদের সাথে ছবিটা শেয়ার করতে পারব।

• আগে উল্লেখ করেছি ইদানিং সকালবেলায় শরীরচর্চার জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি হাঁটাহাঁটি করা হয়। মূলত শরীর কন্ট্রোল করার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি। কিছুদিন আগে আমি আর একজন বড় ভাই হাঁটতে হাঁটতে পদ্মা নদীর পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। পদ্মা নদী বলতে সেটা ছিল পদ্মার একটি শাখা নদী আর সেই শাখা নদীর পাশেই ছোট্ট পরিসরে একটা পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে সে পার্কের কাজ এখনো শেষ হয়নি কিছু কিছু কাজ করা হয়েছে আর বাকি কাজগুলো চলমান রয়েছে। আমরা যখন সেই পার্কে পৌছালাম তখন নদীর উপরে সূর্য উঁকি দিয়েছিল যদিও আকাশে হালকা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছিল বলে হুট করে সূর্য দেখা যাচ্ছিল আবার হঠাৎ করেই সূর্য ডুবে যাচ্ছিল। নদীর পাড়ের ছোট্ট ঘরটি যেন সূর্যকে আড়াল করে রাখছিল আর সেই সুবাদেই ফটোগ্রাফি করেছিলাম যেটা এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।

• এই ছবিটা আমার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। ঈদের পরে আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম আর আমাদের লোকেশন ছিল আমাদের পাশের উপজেলার নতুন উদ্ভাবন করা গড়াই নদীর উপর দিয়ে তৈরি হওয়া ব্রিজ। ব্রিজ পার হয়ে আমরা সবাই ঠান্ডা শরবত খাওয়ার জন্য সাইডে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ালাম। শরবতের দোকানদার শরবত তৈরি করছিল আর ডান দিকে তাকাতেই আমি লক্ষ্য করলাম একটা ছিল অনেকগুলো দেশগুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর আমিও সেদিকে এগিয়ে গেলাম সেই দৃশ্যটার ফটোগ্রাফি করার জন্য। উপরে আকাশে নীল মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে আর ছেলেটা তার গ্যাস বেলুন গুলো বিক্রি করার জন্য রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। এই ফটোগ্রাফিটা কিন্তু আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।