সাতক্ষীরা ভ্রমণ (পর্ব-০১) ||২০-০২-২০২৪|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।



গত বছর বর্ষার মৌসুমে আমরা সাতক্ষীরা বাইক ট্যুর দিয়েছিলাম আজকে বাইক ট্যুরের প্রথম পর্ব শেয়ার করব। কুষ্টিয়া থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার আর এই দূরত্ব আমরা বাইক নিয়ে অতিক্রম করব। তাই আগে থেকেই আমাদের বড় প্ল্যান ছিল। চারিদিকে দিনের আলো ছড়িয়ে পড়ার আগে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম তাই ফজরের আযানের সময় ঘুম থেকে উঠে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে সব কিছু রেডি করে নিলাম। যেহেতু অনেক দূরের পথে যাবো তাই ভর পেট ভাত না খেয়ে ডিম শসা কলা এই জাতীয় শক্তিশালী কিছু খাবার খেয়ে নিলাম আর যাত্রাপথে যেখানে বিরতি নিব সেখানেই গিয়ে খাওয়া দাওয়া করব। যেহেতু আমার আর সোহাগ ভাইয়ের বাড়ি পাশাপাশি তাই আমরা দুজন এক বাইকে থাকবো। সবকিছু রেডি করে যখন বের হলাম তখন দেখলাম চারিদিকে সবে দিনের আলো ছড়াতে শুরু করেছে অনেকটা অন্ধকার ভাব এখনো রয়ে গিয়েছে। বাইক নিয়ে আমি আর সোহাগ ভাই সোজা সাগর ভাইয়ের বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।



20240219_105101_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



সেখানে গিয়ে দেখলাম সাগর ভাই রেডি হয়ে সকালের নাস্তা করছে। সেখানে গিয়ে আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল যাইহোক অপেক্ষার সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই একসাথে বেরিয়ে পড়লাম। মূলত সাগর ভাই সবার সিনিয়র তাই তার ডিরেকশন অনুযায়ী আমরা সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। গুগল ম্যাপ দেখে কোন পথে গেলে স্বল্প সময়ে যাওয়া যাবে সেই পথগুলো দেখে নিলাম। যেহেতু আমরা দূরের পথে বের হয়েছি তাই প্রথমে আমরা কুমারখালী তেল পাম্প এ গিয়ে আমাদের বাইকে পর্যাপ্ত তেল নিলাম। একদম দুই বাইকে টাংকি ফুল করে নিলাম। আমাদের বাসা থেকে কুমারখালীর দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার আর বাসা থেকে বের হওয়ার ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পরেও সূর্যের কোন দেখা পেলাম না। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন আমরা কত সকালে বের হয়েছিলাম। যদিও বর্ষার মৌসুম ছিল তাই আকাশে কিছুটা মেঘ থাকার কারণে সূর্যের দেখাটা একটু দেরিতেই পাওয়া গেল। তাছাড়া একটু ভোর বেলায় পথে তেমন লোকজনের আনাগনাও ছিল না তাই পাম্প এ গিয়ে যখন তেল নিলাম তখন সেখানে কোন লোক ও দেখলাম না, ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন।

20230811_053813.jpg

20230811_055933.jpg

20230811_060017.jpg

20230811_060026.jpg

20230811_060408.jpg

কুমারখালী।

what3words address.
https://w3w.co/trampling.cohort.festers

20230811_060821.jpg

20230811_060819.jpg

20230811_060815.jpg

20230811_060832.jpg

20230811_060826.jpg

20230811_060904.jpg

শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু, কুমারখালী।

what3words address.
https://w3w.co/cuisine.browsed.hatches

আমাদের প্লান অনুযায়ী আমরা কুমারখালী থেকে শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু পার হয়ে পান্টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে সোজা ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ হয়ে উঠবো সেক্ষেত্রে আমাদের প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ সেইভ হবে। আমরা সোজা কুমারখালী শহরের মধ্য দিয়ে শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু পার হয়ে যাত্রা শুরু করলাম। তবে মজার বিষয় হচ্ছে বর্ষার মৌসুমে গড়াই নদীর পানি পুরোটা থৈথৈ অবস্থা হয়ে যায়। তাছাড়া ভোর বেলায় নদীর উপরের দৃশ্যটা বেশ দারুন লাগছিল সেই সাথে ঠান্ডা বাতাসে দারুন একটা অনুভূতি মনে জাগ্রত হচ্ছিল। যদি ছবিগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন নদীর পানি কতটা বেড়েছিল। তাছাড়া গতবছর সেই সময়ে নতুন শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। ছবিগুলো দেখলেও বোঝা যাচ্ছে সেতুর চারপাশ দিয়ে সবেমাত্র সাদা রং দেওয়া হয়েছে।

20230811_061934.jpg

20230811_062628.jpg

20230811_063501.jpg

20230811_064422.jpg

পান্টি ইউনিয়ন।

what3words address.
https://w3w.co/invents.provoking.crackling

শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু পার হয়ে কিছুটা পথ অতিক্রম করার পরেই পান্টি বাজার এলাকায় পৌঁছে গেলাম। তখন থেকেই রাস্তায় লোকজনের আনাগোনা দেখতে পেলাম। দেখলাম বাজারের দোকানপাট গুলো খোলা হচ্ছে সেই সাথে সকালবেলায় হোটেলের পরোটা ভাজার ঘ্রানটাও বেশ পাচ্ছিলাম। সোহাগ ভাই তো আমাকে বলছিল রায়হান পরোটা ভাজার ঘ্রাণ পাচ্ছো নাকি?? আমি তখন পেছনে বসে হাসছিলাম আর বলছিলাম ভাই এখনই খাওয়া দাওয়ার কথা চিন্তা করার দরকার নেই সবেমাত্র তো সকাল হলো তাছাড়া আমরা সবাই তো বাসা থেকে হালকা নাস্তা করে বের হয়েছি। সোহাগ ভাই তখন বলছিল হ্যাঁ আমরা ঝিনাইদহে গিয়ে সকালের নাস্তা করব। যাই হোক এভাবে গল্প করতে করতেই আমরা পর্যায়ক্রমে পান্টি ইউনিয়নের এরিয়া পার হয়ে ঝিনাইদহ জেলায় প্রবেশ করলাম। পান্টি ইউনিয়ন পার হয়ে ছোট্ট একটা নদীর পাশ দিয়ে একটি রাস্তা বয়ে চলেছে তবে নদীর নামটা জানার খুব ইচ্ছা জেগেছিল তাই গুগল ম্যাপ থেকে জানতে পারলাম সেটা কুমার নদী। নিচে যে একটা ছবি দেখতে পাচ্ছেন সেটা মূলত কুমার নদীর ছবি।

20230811_064650.jpg

20230811_065021.jpg

20230811_064645.jpg

গাড়াগঞ্জ লোহার ব্রিজ ভিউ পয়েন্ট।

what3words address.
https://w3w.co/armrests.windfalls.rougher

দীর্ঘ সময় একটানা আমাদের যাত্রা কন্টিনিউ করলাম তারপরে হঠাৎ করে আবার একটি লোহার ব্রিজ সামনে আসলো সেটা মূলত সেই কুমার নদীর উপর দিয়েই তৈরি করা হয়েছে। ব্রিজটা অনেক আগে তৈরি করা হয়েছে আর পুরোটাই লোহার ব্রিজ। সোহাগ ভাই আবার আমাকে বলছিল রায়হান দেখতো এই নদীর নাম কি?? আমি আবার গুগল থেকে দেখে সোহাগ ভাইকে বললাম ভাই আগে আমরা যে কুমার নদী ধরে আসলাম এটাই সেই কুমার নদী তখন আমাদের ডান পাশে ছিল এখন আমরা সেই নদী পার হয়ে ঝিনাইদহে প্রবেশ করব। মূলত ঝিনাইদহ জেলার গাড়াগঞ্জ শহরের প্রবেশ করতে হলে এই কুমার নদীর উপর দিয়ে যে লোহার ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে সেটাই পার হতে হয়। গাড়াগঞ্জ শহর পার হয়ে আমরা কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ হাইওয়ে রাস্তা হয়ে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে যাত্রা কন্টিনিউ করলাম। বাকিটা পরবর্তী পর্বে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।



বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন।আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏


আমার পরিচয়


20231103_120723-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

বাইক টুর মজাই আলাদা ৷ কয়েকজন মিলে এভাবে করে ঘোরাঘুরি করার আনন্দ টা অন্যরকম ৷যা হোক আপনি গত বছর বর্ষার সিজনে গিয়েছিলেন ৷ ৩০০ কিলো রাস্তা অতিক্রম করে সাতক্ষিরা ৷সবমিলে দারুন ভালো লাগলো ব্লগটি পড়ে ৷
গাড়াগঞ্জ লোহার ব্রিজ ভিউ পয়েন্ট। আবার শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু, কুমারখালী সেতু দেখলাম আপনার পোষ্টের মাধ্যমে ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই

 6 months ago 

আপনার সুন্দর মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 6 months ago 

প্রতিবছরের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাতক্ষীরায় অনেক মানুষ ভ্রমণ করে থাকেন। যদি এই সাতক্ষীরা ভ্রমণ কর আমার এখনো হয়নি তবে আমার ফ্রেন্ডরা গিয়েছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পারি জায়গাটি খুবই সুন্দর। তবে আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে এই সাতক্ষীরা ভ্রমণের প্রথম পর্ব দেখে বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ
আপনাকেও শেয়ার করার জন্য।
জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

হ্যাঁ পর্যায়ক্রমে সাতক্ষীরা ভ্রমণের অনেকগুলো পর্ব শেয়ার করব।

 6 months ago 

সাতক্ষীরা ভ্রমণ এর অসাধারণ একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন আপনি৷ যেভাবে আপনারা সকলে বাইকে করে এই জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন তা দেখে খুব ভালো লাগলো৷ আসলে বাইকে করে ঘোরার মজাই আলাদা৷ বাইকে করে ঘুরতে গেলে সব জায়গাগুলো খুব ভালোভাবেই দেখা যায় এবং আপনারা সকলে এই জায়গায় খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

আসলেই বাইকে ঘোরার মজাই আলাদা কারণ বাইক একটা স্বাধীন বাহন।

 6 months ago 

বাইক ট্যুরের মজাই আলাদা।আপনারা সবাই মিলে সাতক্ষীরা গিয়েছিলেন সেখানকার কিছু সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।কুমারখালী সেতু টি বেশ সুন্দর করেছে।আপনার পোস্টের মাধ্যমে সুন্দর কিছু স্পট দেখতে পেলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

হ্যাঁ আসলেই কুমারখালীর শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু টা অনেক সুন্দর।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61119.19
ETH 2615.15
USDT 1.00
SBD 2.65