মেহেরপুর ভ্রমণ (পর্ব-০২) ||১২-০২-২০২৪|| by @kazi-raihan
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।
এর আগে আমরা সবাই মিলে মেহেরপুর বাইক ট্যুর দিয়েছি সেটা নিয়ে অবশ্য প্রথম পর্ব শেয়ার করেছি তাই আজকে আবার দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। মূলত আলমডাঙ্গা হয়ে আমরা মেহেরপুর প্রবেশ করেছিলাম তাই প্রথম পর্বে শুধু আলমডাঙ্গা হয়ে মেহেরপুর যাওয়ার কিছু অংশ শেয়ার করেছিলাম আর আজকে মেহেরপুরের মুজিবনগর সহ ফেরার পথে আলমডাঙ্গা হয়ে যে স্থানগুলো দর্শন করেছিলাম সেটা নিয়ে কিছু কথা লিখব এবং কিছু ছবি শেয়ার করব। প্রথম পর্বে আমরা আলমডাঙ্গা থেকে সরাসরি মেহেরপুরের মুজিবনগর চলে আসি। আলমডাঙ্গায় যে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে মোটামুটি দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে গন্তব্য ঠিক করলাম মেহেরপুর মুজিবনগর।
মেহেরপুর প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই আমার চাচাতো ভাইকে ফোন দিয়েছিলাম কারণ আমার চাচাতো ভাই তখন মেহেরপুরে চাকরি করতো তবে তার অফিস অন্যরুটে হওয়ার কারণে তার সাথে আর দেখা করা হয়নি আমরা সোজাসুজি মুজিবনগর গিয়ে রেস্ট করলাম। মূলত আমরা গিয়েছিলাম পুরোপুরি গরমের সিজনে তাই দীর্ঘ জার্নি শেষে ঠান্ডা জুস বা শরবত খাওয়ার খুবই প্রয়োজন ছিল তাই সোজাসুজি মেনগেট দিয়ে প্রবেশ করার পরে সেখান থেকে সবাই একগ্লাস করে শরবত অর্ডার করলাম।সরবত খাওয়ার পরে পর্যায়ক্রমে সেখানকার দৃশ্যপট গুলো দেখছিলাম। মুক্তিযোদ্ধার সময়ে এই মুজিবনগরকে অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল আর সেখানে গিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের অনেক কিছুই দেখতে পেলাম তবে দুঃখের বিষয় ফোনের একটু সমস্যা হওয়ার কারণে অনেকগুলো ছবি হারিয়ে গিয়েছে তাই সেই ছবিগুলো খুব বেশি শেয়ার করতে পারিনি। যেগুলো ছবি অবশিষ্ট ছিল তার মধ্যে থেকে ছবিগুলো শেয়ার করেছি।
মুজিবনগর।
what3words address.
https://w3w.co/prototype.held.demos
জার্মপ্লাজম সেন্টার, মুজিবনগর।
what3words address.
https://w3w.co/prototype.held.demos
জার্মপ্লাজম সেন্টার, মুজিবনগর এই জায়গাটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে কারণ সেখানে পুরো বাংলাদেশের মানচিত্র তুলে ধরা হয়েছে আর কোন জেলা কত নম্বর সেক্টরে ছিল সেটাও সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যারা সেখানে গিয়েছে তারা অবশ্য সেই জায়গাটার সৌন্দর্য সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছে। যদি উপরের ছবিগুলো দেখান তাহলে বুঝতে পারবেন কিছু কিছু জায়গায় পাকহানাদার বাহিনীর ঘাঁটি আবার কিছু কিছু জায়গায় বড় অট্টালিকা সেই সাথে বয়ে যাওয়া নদী গুলো কেউ মানচিত্র আকারে সেখানে সরাসরি তুলে ধরা হয়েছে। আমরা তো সবাই মিলে মানচিত্রে আমাদের বাড়ি খুঁজতে ছিলাম কারণ কুষ্টিয়ার হার্ডিং ব্রিজ পার হয়েই পাবনা আর কুষ্টিয়া জেলার মাঝা মাঝি অবস্থানে আমাদের বাসা।আর সেই মানচিত্রে হার্ডিং ব্রিজের দৃশ্য একদম পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন।
what3words address.
https://w3w.co/lioness.binds.consoling
মেহেরপুর থেকে বিকেলের দিকে রওনা হলাম। মেহেরপুর থেকে সোজা আলমডাঙ্গা এসে আমরা প্রথম যাত্রা বিরতি নিলাম। মূলত সেখানে সোহাগ ভাইয়ের এক বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য যাত্রা বিরতি নেওয়া সেইসাথে কিছু সময় চা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়া হল। পরবর্তীতে আমরা আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের উপরে গেলাম তবে আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের উপরে যাওয়ার পরে বুঝতে পারলাম হাইওয়ে রাস্তা থেকে রেলওয়ে স্টেশনটা অনেক উপরে। রেলওয়ে স্টেশনের উপর থেকে নিচে তাকালে মনে হবে হাইওয়ে রাস্তা থেকে রেলওয়ে স্টেশন দুই তলা উঁচু। সেখানে দিয়ে সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে হাইওয়ে রাস্তা থেকে মানুষ সিঁড়ি দিয়ে রেলওয়ে স্টেশনে ওঠে মূলত আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা হয়েছিল যার কারণে হাইওয়ে রাস্তা থেকে অনেকটা উঁচু। সেখানে বসে আমরা অনেক সময় গল্প করলাম। দেখছিলাম সূর্য ধীরে ধীরে হেলে পড়ছে তখন সোহাগ ভাইয়ের বন্ধু বলল পাশেই একটি বদ্ধভূমি আছে। চলো সেখান থেকে তোমাদেরকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি তাই স্টেশনে বসে না থেকে আমরা ভাবলাম শেষ পর্যায়ে এসে বদ্ধভূমিটা দেখা যাক।
আলমডাঙ্গা বদ্ধভূমি।
what3words address.
https://w3w.co/lioness.binds.consoling
আমরা স্টেশন থেকে নেমে আলমডাঙ্গা স্টেশন পার হয়ে লোহার লাল ব্রিজের নিচ দিয়ে সোজা বদ্ধভূমির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তবে তখন সূর্যের আলো অনেকটাই কমে গিয়েছিল তাই খুব বেশি ছবি তোলা হয়েছিল না। সেখানে কিছু সময় থাকতেই ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছিল তাই ভাবলাম আর দেরি না করে এখন বাসার দিকে রওনা হওয়া যাক। তবে সেই বদ্ধভূমিতে গিয়ে জানতে পারলাম ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী লাল ব্রিজের উপরে ট্রেন থামিয়ে সমস্ত ট্রেনের যাত্রীদেরকে সেখানে নিয়ে এসে গুলি করে হত্যা করা হয় আর পরবর্তীতে গণকবর দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই জায়গাটা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এই তথ্যটা জানতে পেরে অনেক খারাপ লাগলো, নিরীহ বাঙ্গালীদের ওপরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাহলে কতটা বর্বরতা চালিয়েছিল একটু চিন্তা করে দেখুন। যাই হোক সেখান থেকে আমরা সোজা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আর আলমডাঙ্গা থেকে আমাদের বাসায় আসতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা সময় লাগে।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন।আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে সেদিনের ট্যুরটা বেশ মজার ছিল হুটহাট করে এমন ট্যুর প্লান করলে মন্দ হয় না। সারাদিনের জার্নি বাইক নিয়ে এবং এদিক সেদিকে ঘুরাঘুরি সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালো এটাই ছিল সময়টা।
হ্যাঁ আবার নতুন একটা প্লান করতে হয়।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মেহেরপুর ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্ব। আসলে আপনি আমাদের জেলাতে ঘুরতে এসেছিলেন জানতে পেরে সত্যি বেশ ভালো লাগলো ভাই। আসলে মুজিবনগরে দেখার মত কিছু ঐতিহাসিক স্মৃতি রয়েছে সেগুলো দেখেছেন জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ জায়গা গুলো ভ্রমণ করতে পেরে বেশ ভালোই লেগেছিল কারণ সবগুলোই ঐতিহাসিক জায়গা।
মেহেরপুর ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলে ভ্রমণে গিয়ে। ফটোগ্রাফিগুলো দেখতে বেশ দারুন হয়েছে বন্ধু। খুবই সুন্দর একটি ভ্রমণ পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু।
মেহেরপুরে খুব সুন্দর একটি এই মুহূর্তে শেয়ার করেছেন আপনি৷ এর মাধ্যমে মেহেরপুর সম্পর্কে খুব একটা বেশি ধারণা নেই তারা আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে নিতে পারবে৷ যেমন আমি এই পোস্টের মাধ্যমে মেহেরপুরের অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর জায়গা দেখে নিতে পারলাম ও জানতে পারলাম৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
আপনার সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।