📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৫১ || প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতি সপ্তাহেই একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করি সেই ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহেও আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব। আর এটা আমার ৫১ তম ফটোগ্রাফি পর্ব। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইদানিং সকালবেলায় একটু হাটাহাটি করতে যাওয়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ ছবিগুলোই সকালবেলা ক্যাপচার করা তাছাড়া মাঝে কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম আর সেই মুহূর্তে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে আর সেগুলো খুব সহজেই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আর আজকে আবার নাইট ফটোগ্রাফি অ্যাড করেছি কারণ বিগত কয়েকটি ফটোগ্রাফি পর্বে রাতের সৌন্দর্যটা তুলে ধরেছি তাই ফটোগ্রাফির ভিন্নতা ধরে রাখতে এই পর্বেও একটি নাইট মুড ফটোগ্রাফি শেয়ার করছি। তবে আজকের এই ফটোগ্রাফি পর্বে পুরাতন অ্যালবাম থেকে কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেছি সেই সাথে নাইট মুডের যে ফটোগ্রাফিটা এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটাও আমার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। নিয়মিত ফটোগ্রাফি করে ছবিগুলো আলাদাভাবে সেভ করে রাখি যেটা পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্বে তুলে ধরি।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• ইতিমধ্যে শীতের প্রভাব টা শুরু হয়ে গেছে কেননা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেই দেখা যায় চারদিকে কেমন টা কুয়াশায় অন্ধকার আবার ঘাসের উপরে এতটাই কুয়াশা জমে থাকে যেন মনে হয় বৃষ্টি হয়েছে। তবে আমার কাছে এই আবহাওয়াটা বেশ ভালো লাগে সকালে খালি পায়ে ঘাসের উপরে হাটার মজাই আলাদা হালকা শিশির ভেজা স্পর্শ লাগে যেটা অন্যরকম একটা অনুভূতি প্রকাশ হয় মনে। সকাল বেলায় খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই ভাবলাম শিশির ভেজা কিছু ছবি তুলব তবে শিশির ভেজা ছবি তুলতে গিয়েই সকালের কুয়াশায় ঘেরা সূর্যের ছবি তুলেছিলাম। মোটামুটি ভালোই কুয়াশা ছিল এজন্য সূর্য স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না তবে ছোট্ট ডিমের কুসুমের মত সূর্যটা আন্দাজ করা যাচ্ছিল।

• ঝাকে ঝাকে পাখি একসময় দেখা যেত কিন্তু পরিবেশের বিদ্রুপের কারণে এখন আর এরকম ঝাকে ঝাকে পাখি খুব কমই দেখা যায়। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাড়ির পেছনে বেশ বড় একটি বাঁশবাগান ছিল আর সন্ধ্যার পর থেকেই সেই বাঁশ বাগানে পাখিদের কোলাহল শুরু হতো দলে দলে পাখিরা সেখানে আসতো আর সকালবেলা সেখান থেকে বিদায় নিত তবে এখন বাঁশ বাগানটা অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে আর পাখিদের কলা হলো তেমন দেখা যায় না। ভোর বেলায় হাঁটতে বের হয়েছি আর দেখলাম বাজারের এক কারেন্টের খুঁটির পাশে অনেকগুলো পাখি বসে আছে মূলত সেখানে হোটেল থেকে পাখিদের খাবার দেওয়া হয় আর খাবারের আগে তারা কারেন্টের তারের উপরে একের পর এক বসে ছিল আর আমিও সেই সুযোগে ছবি তুলেছিলাম।

• ফটোগ্রাফি তে থাকা ছবিটা দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন হয়তো দূর থেকে কোন আলোর প্রতিফলনের ছবি তুলেছি আসলে এটা কোন আলো নয় যদিও দেখতে অনেকটাই আলোর মত লাগছে তবে এটা মাছ রাতের চাঁদের দৃশ্য। ভর দুপুর বেলা সূর্য যেমন একদম পুরোপুরি মাথার উপরে অবস্থান করে ঠিক তেমনি মাঝ রাতে চন্দ্র একদম মাথার উপরে এসে অবস্থান করে। ছবিটা অনেকদিন আগে ক্যাপচার করেছিলাম যখন ভরপুর লোডশেডিং শুরু হয়েছিল। প্রচন্ড গরমে লোড শেডিং এর কারণে আর রুমে থাকতে পারছিলাম না তাই মাঝরাতে বাইরে এসে দেখলাম ধীরে ধীরে ঠান্ডা বাতাস বইছে আর আকাশে ফুটফুটে চন্দ্র যার আলোতে মাঝরাতের সৌন্দর্যটা সত্যি অনেক ভালো লেগেছিল। চাঁদের আলো মনে হচ্ছিল এখন যেন দিন। তবে মাঝে মাঝে আকাশটা মেঘে ঢেকে যাচ্ছিল হয়তো বৃষ্টি হবে।

• কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করছি সকালবেলায় মোটামুটি ভালোই কুয়াশা পড়ে। সকালবেলা তো প্রতিদিনই হাঁটতে যাওয়া হয় তো কিছুদিন আগে সকালবেলা হাটাহাটি শেষ করে বাড়ির সামনে এসে চেয়ার পেতে বসলাম আর হালকা সূর্যের রশি এসে গায়ে লাগছিল আর সূর্যরশী থেকে তখন ভিটামিন ডি' গ্রহণ করছিলাম। লক্ষ্য করলাম রাস্তার পাশেই ঘাসের পাতায় কিছু শিশির জমে আছে আর সেটা ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে একটি বড় শিশির ফোটায় পরিণত হয়েছে। হাতে ফোন ছিল তাই ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে এই দৃশ্যটাকে বন্দী করলাম পরবর্তীতে দেখলাম মোটামুটি ভালোই হয়েছে তবে সামনে যেহেতু শীতের মৌসুম এমন সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করতে পারব।

• এই ছবিটা আজকে সকাল বেলায় তোলা। সকালের দিকে মাঠের দিকে যেতে ভালোই লাগে হালকা কুয়াশা ভিজে থাকে তবে আজকে গিয়েছিলাম মূলত এই মাকড়সার ছবি তোলার জন্যই কারণ এর আগে একদিন হাটতে গিয়ে দেখলাম ধানি জমিতে মাকড়সা জাল বুনেছে আর সেখানে শিশির ফোটা গুলো ভেজা ভাবে জড়িয়ে আছে দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল। কিন্তু সেদিন আর সাথে ফোন ছিল না তবে আজকে সকাল বেলায় মূলত এই ধরনের ছবি তোলার জন্য গিয়েছিলাম তবে সেরকম মাকড়সার জাল পেয়েছিলাম কিন্তু সেখানে আর তেমন শিশির জড়িয়ে ছিল না তবে ছোট্ট একটি মাকড়সা টির ছবি তুলেছিলাম।

• বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হয় আর যদি কোন লোকের সাথে দেখা করার কথা হয় আর সে যদি একটু অপেক্ষা করতে বলে তাহলে সাধারণত মানুষ কোন চায়ের দোকানে গিয়ে বসবে। চায়ের দোকানে বসে চা খাওয়া আর কোন মানুষের জন্য অপেক্ষা করা সেটা স্বাভাবিক তবে বেশিরভাগ সময়ে আমি রং চা খেয়ে থাকি। ভাইয়ার অফিসে গিয়েছিলাম অফিস শেষে ভাইয়া যখন আমার সাথে বাড়ি আসবে তখন বলল চায়ের দোকানে গিয়ে চা খাওয়ার কথা তো রাজি হয়ে গেলাম। সাথে ভাইয়ার কলিগও ছিল আমাকে জিজ্ঞাসা করল ছোট ভাই কি চা খাবে তো অনেকদিন দুধ চা খাওয়া হয় না তাই ভাবলাম একটা দুধ চা হলে বেশি ভালো হয় তাই তাকে দুধ চায়ের কথাই বললাম। তবে শহরাঞ্চলের কিছু কিছু দোকানে দুধ চা বেশ ভালো তৈরি করে তার মধ্যে আমাদের উপজেলার পাশে একটি দোকান আছে সেখানে বেশ ভালো দুধ চা পাওয়া যায় আর সেই দোকানের দুধ চা বেশ মজার বলেই বুদ্ধি করে দুধ চায়ের অর্ডার দিলাম। দুধ চা রেডি হওয়ার পরে যখন আমাকে দেয়া হলো তখন ছবি তুলে রেখেছিলাম আর এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।

• আমি সপ্তাহের শুরু থেকেই একটি একটি করে ফটোগ্রাফি গুলো আলাদা আলাদা ভাবে ক্যাপচার করতে থাকি কারণ সপ্তাহ শেষে যাতে ফটোগ্রাফি পর্ব টি শেয়ার করতে আর বাড়তি কোন প্রেসার নিতে না হয় তাই সেদিনে এই ফটোগ্রাফিটা করেছিলাম যদিও এটা সপ্তাহের প্রথম দিকে ক্যাপচার করা হয়েছিল। সকালের দিকে বেশ কুয়াশা পড়ে আর যার কারণে সব ধরনের জমিতেই কম বেশি শিশির ফোঁটা লক্ষ্য করা যায়। সেখানে ছবি তুলতে গিয়ে লক্ষ্য করলাম ধানের পাতার উপরের অংশে বড় একটি শিশির ফোঁটা তৈরি হয়েছে যদিও একটু নড়লেই শিশির ফোটে নিচের দিকে চলে আসবে তাই আমি খুব সাবধানতার সাথে ধানের পাতার উপরের অংশ থেকে শিশির ফোটার ছবি তুলেছিলাম।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।