📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৪২|| প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

এই সপ্তাহের শুরুর দিক থেকে আবার ধারাবাহিকভাবে কাজ শুরু করেছি তবে গত সপ্তাহেও আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করেছিলাম আর সেটা ছিল ৪১ তম ফটোগ্রাফি পর্ব। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইদানিং সকালবেলায় একটু হাটাহাটি করতে যাওয়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ ছবিগুলোই সকালবেলা ক্যাপচার করা তাছাড়া মাঝে কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম আর সেই মুহূর্তে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে আর সেগুলো খুব সহজেই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আসলে বয়সের সাথে সাথে ব্যস্ততা একটু বেড়ে যায় তাই আগের মত এখন আর অতটা ঘুরাঘুরি করা হয় না তাই ফটোগ্রাফিও সংগ্রহ করা অনেক কমে গিয়েছে তবে কাজের তাগিদে অনেক সময় বাধ্য হয়ে বের হতে হয়। যেহেতু কমিউনিটিতে টিকে থাকতে হলে নিজের এক্টিভিটি বজায় রাখতে হবে আর এক্টিভিটি বজায় রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে ধারাবাহিকভাবে পোস্ট করতে হবে। প্রতি সপ্তায় বিভিন্ন ধরনের পোস্ট তুলে ধরার জন্য কখনো ফটোগ্রাফি কখনো রেসিপি আবার কখনো ভ্রমণ কাহিনী তুলে ধরতে হয় আর আজকে সেই ধারাবাহিকতায় আমি আপনাদের মাঝে ৪২ তম ফটোগ্রাফি পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আসলে বর্ষার ছবি নিয়ে একটি ফটোগ্রাফির প্রতিযোগিতা চলছে কিন্তু আমার কাছে তেমন কোন বৃষ্টি ভেজা বর্ষার ফটোগ্রাফি নেই। সত্যি বলতে বর্তমানে বর্ষার মৌসুম হলেও আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছে না যে এখন বর্ষার মৌসুম। দীর্ঘদিন কোন বৃষ্টি নেই প্রতিদিন মেঘ আকাশে ভিড় করে কিন্তু বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায় না তাই বাধ্য হয়ে আজকে ধারাবাহিক পর্ব নিয়েই হাজির হয়েছি।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• আজকে যে ফটোগ্রাফিটি প্রথমে দেখতে পাচ্ছেন সেটি হচ্ছে ইংরেজ আমলের একটি গাছ। আসলে গাছ তো অনেক আছে কিন্তু কিছু কিছু গাছের দৃশ্য দূর থেকেই লোকজনকে আকৃষ্ট করে । আপনি এমন একটি জায়গায় গিয়েছেন যেখানে দীর্ঘ এরিয়া জুড়ে ১০০ বছর পূরণ একটি গাছ রয়েছে নিশ্চয়ই আপনি সেই গাছটা দেখার প্রতি অন্যরকম একটি আগ্রহ প্রকাশ করবেন। হ্যাঁ এই গাছটি দেখার জন্য আমিও আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম তবে শুধু এই গাছটা দেখার জন্য নয় আমরা মেহেরপুর ঘুরতে গিয়েছিলাম আর মেহেরপুরের আম ঝুপি যখন গেলাম তখন সেখানে এরকম অনেক পুরনো বেশ কয়েকটি গাছ দেখতে পেলাম। সেই পুরনো গাছগুলোর মধ্যে যে কাজটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছিল তার মধ্যে উপরের ফটোগ্রাফিতে থাকা গাছ একটি।

• যেহেতু আবার নিয়মিত কাজ শুরু করেছি সেহেতু প্রতিটা মুহূর্তেই আমার বাংলা ব্লগ নিয়ে কমবেশি চিন্তাভাবনা মাথায় থাকে। ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে হলে এটা খুবই জরুরি আর আমি একদিন আগে থেকেই সিলেক্ট করে রাখি যে আগামীকাল কি পোস্ট করব। যেহেতু আগে থেকেই ফটোগ্রাফি করার একটা অভ্যাস আছে আবার সিলেক্ট করে রেখেছিলাম যে ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব তাই রাস্তার পাশ দিয়ে কিছু ফুলের ছবির সন্ধান করেছিলাম কিন্তু এই বর্ষার সময় হওয়া সত্বে ও তেমন কোন বৃষ্টি নেই বলে রাস্তার আশপাশে তেমন কোন ফুলের আনাগনাও দেখিনি তাই বাধ্য হয়ে আমাদের বাড়ির পাশে যে মিষ্টি কুমড়া গাছের ফুল ছিল সেটার ছবি তুলেছিলাম।

• ঈদের পরেই আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলের অর্থাৎ আমার ভাতিজার সুন্নতে খাৎনা হয়েছিল। ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন এমনিতেই বাসায় ছিল তারপর অনুষ্ঠান হওয়ার কারণে অন্যরাও বাসায় ভিড় জমিয়েছিল। আমাদের বাড়ির পাশে যে ফাঁকা জায়গা আছে রাত্রে বেলায় সব ছেলেমেয়েরা একসাথে সেখানে গিয়ে ছোট বড় সবাই মিলে বাজি ফোটাচ্ছিলাম। তবে জ্যোৎস্না রাত হওয়ায় আমাদের আড্ডাটা আরও বেশ ভালোই জমে উঠেছিল। তবে যখন একটু দীর্ঘরাত হয়ে গেল তখন সবাই ঘুমানোর জন্য চলে গিয়েছিল। সবাই বাসায় চলে যাওয়ার পরে আমি একা একা বসে যখন চাঁদের সৌন্দর্য দেখছিলাম ঠিক তখনই এই ফটোগ্রাফি টা করেছিলাম।

• এর আগে আমরা সবাই মিলে বাইক ট্যুরে বের হয়েছিলাম আর আমাদের টার্গেট ছিল ঝিনাইদহ হয়ে আমরা মেহেরপুর এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা ঘুরবো। আমরা ভোর পাঁচটার সময় বাসা থেকে বের হয়েছিলাম আর কুষ্টিয়া গিয়ে সকালের নাস্তা করি। কুষ্টিয়া থেকে নাস্তা করে আমরা যখন ঝিনাইদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম তখন কুষ্টিয়া আর ঝিনাইদা হাইওয়ে রাস্তার আসল সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। যদিও আগে কয়েকবার যশোর গিয়েছিলাম কিন্তু তখন এই হাইওয়ে রাস্তাটা এতটা সুন্দর ছিল না। যদি উপরের ফটোগ্রাফি টা লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝতে পারবেন আসলে হাইওয়ে রাস্তাটা কতটা সুন্দর আর রাস্তায় তেমন গাড়িও ছিল না যার কারণে আসল সৌন্দর্যটা ক্যামেরায় তুলে ধরতে পেরেছিলাম।

• ছবিটা দেখে সবাই অবশ্য মনে করতে পারেন হয়তো প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছে আসলে তেমন বৃষ্টি হয়নি। আমাদের পাশের উপজেলায় নতুন একটি ব্রিজ তৈরি হয়েছে আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম। বিকেল থেকেই আকাশে মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছিল কিন্তু বৃষ্টির দেখাতো দীর্ঘদিন নেই বললেই চলে। শেষ বিকেলের দিকে আকাশে প্রচন্ড মেঘ জমে। যদিও ফোন ক্যামেরায় সেই কালো মেঘের পুরোপুরি দৃশ্যটা তুলে ধরতে পারেনি তবে যতটুকু সম্ভব ক্যাপচার করেছিলাম আর সেটাই উপরে তুলে ধরেছি। তবে মজার বিষয় হচ্ছে ব্রিজের উপর থেকে লক্ষ্য করতে পারছিলাম আমরা যে এলাকায় ছিলাম সেই এলাকা থেকে অল্প একটু দূরে প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু ব্রিজের উপরে কোন বৃষ্টি ছিল না এটা কিন্তু আষাঢ় মাসে খুবই নরমাল ব্যাপার।

• আগে উল্লেখ করেছি ইদানিং সকালবেলায় শরীরচর্চার জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি হাঁটাহাঁটি করা হয়। মূলত শরীর কন্ট্রোল করার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি। কিছুদিন আগে আমি আর একজন বড় ভাই হাঁটতে হাঁটতে পদ্মা নদীর পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। পদ্মা নদী বলতে সেটা ছিল পদ্মার একটি শাখা নদী আর সেই শাখা নদীর পাশেই ছোট্ট পরিসরে একটা পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে সে পার্কের কাজ এখনো শেষ হয়নি কিছু কিছু কাজ করা হয়েছে আর বাকি কাজগুলো চলমান রয়েছে। আমরা যখন সেই পার্কে পৌছালাম তখন নদীর উপরে সূর্য উঁকি দিয়েছিল যদিও আকাশে হালকা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছিল বলে হুট করে সূর্য দেখা যাচ্ছিল আবার হঠাৎ করেই সূর্য ডুবে যাচ্ছিল। সূর্য রশি যখন নদীর পানিতে পড়ছিল তখন সেখানে থাকা নদীর পাড়ে ছোট ঘরের উপর থেকে ফটোগ্রাফি করেছিলেন আর সেটাই এখন আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।

• এই ছবিটা তোলা ছিল অনেক আগে কারণ আমি আগেই বলেছি ছবিগুলো ক্যাপচার করার পরে আমি পুরাতন অ্যালবামে রেখে দেই আর সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে ধীরে ধীরে আপনাদের সাথে শেয়ার করি। বিকেলবেলা আমার বন্ধুরা হুট করে প্ল্যান করল আজকে রাতে আমরা পুকুর পাড়ে পিকনিক করবো। মজার বিষয় হচ্ছে রান্না হবে পুকুরপাড়ের যে পাকা সিরিয়া আছে সেই সিঁড়িতে বসে সব রান্নাবান্না হবে। যেহেতু পিকনিক হবে মাঝরাতে তাই আমরা সেখানে দুইটা লাইট সেট করে নিলাম যাতে গভীর রাতেও কোন সমস্যা না হয়। যখন রাত দশটা বাজে তখন বাসা থেকে মুড়ি নিয়ে সবাই একসাথে পেঁয়াজ মরিচ কেটে মাখিয়ে ঝাল মুড়ি আকারে হালকা খেয়ে নিলাম কারণ সবারই কম বেশি ক্ষুধা লেগেছিল। সেই খাওয়ার মুহূর্তেই আমি এই ফটোগ্রাফিটি করেছিলাম।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।