এই গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব অনেকেই হয়তো পড়েছেন। যারা প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় পর্বই পড়েছেন তাদের এই গল্পটি পুরোপুরি পড়ার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি কারণ আপনি যে কোন গল্পই একটু পড়ার পরে পরবর্তী কাহিনীটুকু জানার প্রতি আলাদা একটা আগ্রহ থাকে। যাইহোক ২য় পর্বে মন্ত্রীর চক্রান্ত রাজা বুঝতে না পেরে ভন্ড সাধু বাবার কথামতো রাজা তার মেয়েকে ৮ মন স্বর্ণ সহকারে একটি সিন্দুকের মধ্যে নদীতে ফেলে দেয় আর সেই সিন্দুকটি একটি জেলে দেখতে পেয়ে পাড়ে তোলে। সিন্দুকের তালা ভাঙার পরে ই সিন্দুকের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে ৮ মন স্বর্ণ আর রাজকুমারী।

জেলে রাজকুমারীর মুখে সব কথা শুনল। রাজকুমারী আর স্বর্ণগুলোকে জেলে তার বাড়িতে নিয়ে যায় আর সিন্দুক টিকে পাথর দ্বারা ভর্তি করে সেটা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পাথর ভর্তি সিন্দুকটি নদীতে ভাসতে ভাসতে সেই ভন্ড সাধুর কাছে পৌঁছে যায়। সিন্দুকটি দেখেই ভন্ড সাধু অনেক খুশি হয় কারণ সে চিন্তা করে আমি এখন অনেক ধনী হয়ে যাব সিন্দুক ভর্তি শুধু স্বর্ণ সেগুলো এখন আমার হয়ে যাবে। ভন্ড সাধু সিন্দুক টি খুলে দেখতে পেল তার ভেতরে শুধুই পাথর রয়েছে। মন্ত্রীকে তখন সাধু বলে এবার তাহলে রাজা কে এখানে নিয়ে আসো তাই মন্ত্রী রাজাকে আবার সেই ভন্ড সাধুর কাছে নিয়ে আসে। রাজাকে সেই ভন্ড সাধুর হাতে ছেড়ে দিয়ে মন্ত্রী রাজ্যে ফিরে যায় এবং রাজ্য দখল করে আর সিংহাসনে বসে। ভন্ড সাধু রাজাকে মারার চেষ্টা করে কিন্তু কোনভাবে রাজা তার বুদ্ধি খাটিয়ে পালিয়ে যায় এবং প্রাণে বেঁচে যায়। এদিকে ভন্ড সাধুর সহযোগিতায় মন্ত্রী রাজা হয়েছিল বলে সে খুশি হয়ে সাধুকে আরো দশ মন সোনা উপহার দেয়। রাজা রাজ্য থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে আর যার কারণে রানী দাসীর কাজ করে সেই রাজপ্রাসাদে জীবন যাপন করছে। কিছুদিন পরে হঠাৎ রাজা তার রাজ্যে ফেরত আসে। তবে সেই অবস্থা দেখে তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। মন্ত্রীর মিথ্যা আর বানোয়াট কথাগুলো প্রজারা বিশ্বাস করে রাজাকে অনেক মেরে রাজ্য থেকে বের করে দেয়।

Source

রাজা গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে হাঁটতে হাঁটতে যেতে থাকে। দীর্ঘ সময় হাটতে হাঁটতে রাজা সেই জেলের গ্রামে পৌঁছে যায় আর সেই গ্রামেই ধীরে ধীরে একের পর এক দিন কাটতে থাকে অসহায় রাজার। রাজা হঠাৎ তার রাজ্য হারানোর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু সে পথের মধ্যে পড়ে থাকার কারণে কেউ তাকে কোন রকম সাহায্য করে না এমনকি সবাই তাকে ঘৃণা করে আর কেউ তার কাছেও পর্যন্ত যায় না। অসুস্থতা দিন দিন বাড়তে থাকে আর রাজা দিন দিন আরো ভেঙে পড়ছিল। একদিন হঠাৎ রাজার কন্যা রাজাকে দেখে তার কাছে এসে বলে বাবা তোমার এই অবস্থা কেন আর এই কথা বলেই রাজাকে জড়িয়ে ধরে। রাজাকে তার মেয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায় আর দিনের পর দিন রাজাকে সেবা করে আর তার সেবা যত্নের কারণেই রাজা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যায়। রাজা তখন তার ভুল বুঝতে পারে সে তার কন্যা সন্তানের কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে আর কাঁদতে থাকে। কিন্তু রাজকুমারী তার বাবাকে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বারণ করে এবং রাজকুমারী তার বাবাকে কথা দেয় যে সে তার পিতার রাজ্যকে ফিরিয়ে দিবে। রাজকুমারী তার ঘোড়া নিয়ে রাজ্যে ফিরে যায় আর নকল রাজা অর্থাৎ মন্ত্রী কে তার তীর দ্বারা আঘাত করে। ঠিক তখনই মন্ত্রী গর্জন ছেড়ে সিংহাসন থেকে উঠে বলে কার এত বড় সাহস যে আমার গায়ে তীর মারতে চায়। তখনই রাজকুমারী বলতে থাকে এই রাজ্যকে ফিরিয়ে দাও কেননা এখন এই রাজ্যের রাজকুমারী ফিরে এসেছে। কিন্তু তাদের কথাবার্তা দেখে সেখানকার প্রজারা বলতে থাকে দুজনের মধ্যে যুদ্ধের আয়োজন করা হোক আর এই যুদ্ধে যে বিজয় লাভ করবে তাকেই প্রজারা এই রাজ্যের নতুন রাজা হিসেবে গ্রহণ করবে।

Source

রাজকুমারী তার বাবার রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর সাথে অর্থাৎ নকল রাজার সাথে যুদ্ধের শর্তে রাজি হয়। হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ। রাজকুমারী ছিলেন একজন চৌকস যোদ্ধা যে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিছু সময় যুদ্ধ চলার পরে রাজকুমারী তলোয়ার দিয়ে আমাত করে রাজার তলোয়ার ফেলে দিল। তারপর নকল রাজার বুকের উপর তলোয়ার বসিয়ে নকল রাজাকে হত্যা করল এবং রাজকুমারী যুদ্ধে জিতে গেল। রাজকুমারী তার নিজের রাজ্য ফিরে পেল এবং তার বাবাকে অর্থাৎ রাজা কে তার রাজ্য উপহার দিল। প্রজারা সবাই তাদের ভুল বুঝতে পেরে এবং সবাই খুশিতে রাজকুমারীর জয়ধ্বনি গাইতে লাগলো। রাজা তার সিংহাসন ফিরে পেল রাজা সমস্ত প্রজাদের সামনে তাঁর রাজ্যের ভার রাজকুমারীর উপরে দিয়ে দিলেন। এবং তাকে রাজ্যের সিংহাসনে বসিয়ে দিলেন। ঠিক তখনই জয়ধ্বনি আসতে থাকলো জয় মহারানী অমর অম্বার জয়। রাজা আর রানীর সংসারে শান্তি ফিরে এলো আর সেইসাথে রাজার অহংকারের পতন হলো। সে বুঝতে পারলেন ছেলের চেয়ে মেয়েই যথেষ্ট কেননা তার মেয়ে একাই তার রাজ্যকে রক্ষা করতে পারবে।

আর এভাবেই রাজা তার মেয়েকে নিয়ে তার রাজ্যের মানুষের সাথে সুখে দিন পার করতে থাকলো আর এখানেই গল্পের অবসান ঘটে।

এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan

আমার পরিচয়

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Follow @amarbanglablog for last updates

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

Posted using SteemPro Mobile