চালের রাজ্যে খাজানগর। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৯ই জ্যৈষ্ঠ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বৃহঃস্পতিবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
কুষ্টিয়ার খাজানগর যেটা চাউলের জন্য সারা বাংলাদেশে বিখ্যাত। সেখানে অনেক চাউল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধান থেকে অটো মেশিনের মাধ্যমে চাউল উৎপাদন করা হয়। সেখানে গেলেই দেখা যায় প্রতিনিয়ত ট্রাকভর্তি ধান বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সেখানে আসছে আর সেই ট্রাক ভর্তি ধানগুলো নামিয়ে আবার ট্রাকে চাউল নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে। রাস্তার দুপাশ দিয়ে শুধু অটোমিল তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে ধান থেকে চাউল উৎপাদন করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে চাউল কিনতে আসে আবার বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন এখানে ধান বিক্রি করতে আসে। জানলে আশ্চর্য হবেন এই জায়গার ধুলা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ধান থেকে যখন চাউল উৎপাদন করা হয় তখন এক ধরনের ধুলা বের হয় যেটা বিক্রি হয়। আমাদের চাউলের ব্যবসা আছে যার কারণে মাঝে মাঝেই খাজা নগরে যাওয়া হয়। কুষ্টিয়া বাইপাস থেকে চুয়াডাঙ্গার রাস্তায় খাজানগর অবস্থিত। কুষ্টিয়ার আশপাশের সব জেলার মানুষ খাজানগর এর লোকেশন টা ভালোভাবেই চিনে। যাইহোক সকালবেলা আব্বুর সাথে বাসা থেকে বের হলাম খাজানগরের উদ্দেশ্যে। আমাদের বাসা থেকে বাইক নিয়ে খাজানগর যেতে ৫০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা সময় লাগে। সকাল সকাল খাজা নগর পৌঁছে গেলাম। যেহেতু সেখানে গিয়ে আমরা চাউল কিনব তাই কয়েকটি অটো মিলে গিয়ে চাউলের কোয়ালিটি এবং দাম জানার চেষ্টা করলাম।
কয়েকটি অটো মিলের সাথে কম বেশি ব্যবসা চলে তাই তাদের সাথে কথা বলে চাউলের মান এবং দাম সম্পর্কে অবগত হলাম। তবে সাধারণত আমাদের তানিয়া অটো রাইস মিল থেকে মাঝে মাঝেই চাউল নেয়া হতো কিন্তু সেখানকার চাউলের কোয়ালিটিটা তুলনামূলক একটু নরমাল হয়েছে তাই আবার অন্য মিলে গিয়ে চাউল দেখলাম। যেখানে চাউল দেখলাম সেটা নতুন সবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে তবে ভেতরে অটো মিলের কাজ পুরোপুরি কমপ্লিট করা হয়েছে। অটো মিলের এরিয়াটা বেশ বড়, অনাসে ট্রাক ভেতরে ঢুকে ধান আনলোড বা চাউল লোড করতে পারবে। সেখানে গিয়ে আমরা যে চাউল দেখলাম সেটা মোটামুটি পছন্দ হলো আবার চাউলের দামটাও সাধ্যের মধ্যে ছিল তাই সেখান থেকে কিছু চাউল নেওয়া হল। যেহেতু তারা নতুন অটোমিল করেছে তাই আমাদের সাথে বেশ ভালোই খায় খাতের জমানোর চেষ্টা করল। সেখান থেকে চাউলের স্লিপ সংগ্রহ করে টাকা পেমেন্ট করে ডেলিভারি স্লিপ টা আমাদের গাড়ি ওয়ালার কাছে দিয়ে আমরা পরবর্তী চাউলের মিলের দিকে রওনা হলাম।
আমাদের কুষ্টিয়া জেলার মধ্যে আহাদ এগ্রো ফুড অনেক নামকরা। বড় মাপের একটা ব্র্যান্ড বলা চলে চাউলের মধ্যে। পুরো কুষ্টিয়া সহ আশপাশের জেলাগুলোতে আহাদের চাউল বেশ ভালোই চলে। তাদের চাউলের মান যেমন ভাল তেমনি দাম ও বেশ চড়া। তাদের সার্ভিসটা অনেকটাই শোরুমের মতো। তাদের অফিস রুমে চাউলের স্যাম্পল থাকে সেটা দেখে লিস্ট অনুযায়ী চাউলের দাম নির্ধারণ করা থাকে সেই অনুযায়ী চাউল ক্রয় করতে হয়। যেহেতু তাদের চাউলের ডিমান্ড বেশি আবার চাউলের ভাত ভালো হয় তাই যারা একটু ভালো কোয়ালিটির চাউল কিনতে চায় তারা একবারেই আহাদ এগ্রো ফুডে গিয়ে চাউল কেনার চেষ্টা করে। সেখান থেকে আমরা ২০০ বস্তা চাউল দিলাম। তবে অনেক রিকোয়েস্ট করার পরে বস্তায় পাঁচ টাকা করে কমালো। তাদের সাথে কথা বলে সবকিছু ঠিকঠাক করতেই অফিসের একজন কর্মচারী আমাদেরকে চা দিলো। বাইরের গরম আবহাওয়া থেকে এসির মধ্যে এসে চা খেতে বেশ ভালোই লাগছিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই আমাদের গাড়ির ড্রাইভার সেখানে চলে আসলো। ডেলিভারি স্লিপ ড্রাইভারকে দেওয়ার পরেই চাউল লোড দেওয়া শুরু হয়ে গেল। আমি এদিক সেদিক ঘুরে কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম মূলত ভেতরের দিকে ছবি তোলা নিষেধ কারণ এখানটা পুরোটাই সিসি ক্যামেরায় আবদ্ধ। যে চাউল গুলো দেখতে পাচ্ছেন সেটা অটো মেশিন থেকে বের করে প্যাকেট করে রাখা হয়েছে প্রতিনিয়ত যারা চাউল ক্রয় করতে আসবে তারা এগুলো গাড়িতে করে নিয়ে যায়। গেটের বাইরে বাইক রেখেছিলাম যখন বাইক নিতে গেলাম দেখলাম পর্যায়ক্রমে ট্রাক ভর্তি ধান এসে সিরিয়াল দিচ্ছে।
খাজানগরের কাজ শেষ করে আমরা কুষ্টিয়া শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কারণ যে পরিমাণে চাউল কেনার কথা ছিল সেটা কেনা শেষ করে এখন বাসায় ফিরতে হবে তবে বাসায় ফেরার আগে আমাদের কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সামনে একটু কাজ ছিল তাই সেখানে যেতে হবে। মূলত ছোট ভাই কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে লেখাপড়া করে আর সে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সামনের একটা মেচে থাকে। সেখানে গিয়ে ছোট ভাইকে কিছু টাকা দিয়ে কুষ্টিয়া শহরের মধ্যে একটু কাজ ছিল সেই কাজের উদ্দেশ্যে বের হলাম। মূলত আব্বু কুষ্টিয়া মাছের বাজার থেকে কিছু মাছ কেনার জন্য গেল আর আমি বাইক নিয়ে মাছের বাজারের সামনেই অপেক্ষা করছিলাম। ধীরে ধীরে যেন মেঘ চারিদিক থেকে কালো হয়ে আসছিল। বুঝতে পারছিলাম হয়তো বৃষ্টি হবে, আবার গরমের প্রভাবটাও বৃদ্ধি পাচ্ছিল তাই দ্রুত বাসায় পৌঁছানোর ইচ্ছে ছিল। হঠাৎ করেই লক্ষ্য করলাম রাস্তার মাঝখান দিয়ে যে গাছগুলো লাগানো হয়েছে সেই গাছগুলোতে পানি দেওয়ার জন্য পৌরসভার একটি গাড়ি আসছে আর গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে। শহরের মধ্যে রাস্তার মাঝ দিয়ে এরকম গাছগুলো রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে আব্বু কাজ কমপ্লিট করে চলে আসলো তখন আমরা কুষ্টিয়া শহর থেকে সোজা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। তবে আসার পথে লক্ষ্য করলাম কুষ্টিয়া শহরের দিকে বৃষ্টি না হলেও আমাদের এলাকায় বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়েছে একদম রাস্তায় পানি জমে গিয়েছে। তবে বৃষ্টি হলেও আবহাওয়াটা খুব একটা ঠান্ডা হয়নি কারণ প্রচন্ড রোদের কারণে আবহাওয়াটা এখনো গরম আছে। আর যদি একবারে সারাদেশেই বৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে আবহাওয়া টা ঠান্ডা হওয়ার চান্স থাকে।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | মে,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
![Banner.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmV44ipDFZ9PNUMtyufYoaoMvPW4QZqAZUvWi9TkCh9NWx/Banner.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
https://x.com/KaziRai39057271/status/1793572004857262458
ভাই খাজা নগর চালের রাজ্যের পাশাপাশি মাছের খাবারের একটি রাজ্য। আমি মাঝেমধ্যে খাজানগর থেকে মাছের খাবার ক্রয় করি। তবে ওখানে অনেকগুলো রাইস মিল রয়েছে। আর এ কারণে হয়তো মাছের খাবার ওখানে অর্থাৎ খাজানগরে সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। যাহোক অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি।
খাজানগর চাউলের জন্য যেমন বিখ্যাত তেমন গুড়োর জন্য বিখ্যাত। পাঙ্গাস মাছের খাবার বানানোর জন্য আমরা এখান থেকে গুড়ো এবং পালিশ সংগ্রহ করে থাকি। তবে এটা ঠিক এখান থেকে বাংলাদেশের অনেক জায়গার মানুষ এখান থেকে চাল ক্রয় করে থাকে। আমি অনেক বার গিয়েছি এই খাজানগর।