গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে তুলনামূলক একটু ব্যস্ততা রয়েছে তাই আজকের গল্পটি একটু দ্রুত শেষ করব যদিও এই গল্পটার একটি অংশ আমার ডায়েরিতে লেখা আছে তবে সেখান থেকেই এই গল্পটা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরি নি। আসলে মানুষের জীবন তো আর নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ না তাছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি পারিবারিক কিছু কাজকর্ম থাকে যেগুলো শত ব্যস্ততার মাঝেও সামলাতে হয়। তাছাড়া বাবা-মা ভাই-বোনসহ সবার কাজেই টুকটাক সাহায্য করতে হয়। আসলে এটাও একটা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে আর আপনি অবশ্যই চাইবেন না কোন দায়িত্বের উপরে অবহেলা করুন। তবে আমি যদি নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলি তাহলে আমি নিজের কাজের চেয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের দায়িত্ব পালন করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি কারণ যখন একজন আপনাকে একটা কাজে পাঠাবে তখন কিন্তু সে আপনার প্রতি ভরসা করে পাঠাবে। এই যে মাঝে কিছুদিন আমি ইনঅ্যাক্টিভ ছিলাম এর অবশ্য একটা কারণ আছে যদিও বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না তবে এর প্রধান কারণ ছিল পারিবারিক ব্যস্ততা। যেহেতু আমাদের যৌথ পরিবার তাই সার্বিক দিক দিয়ে চিন্তা করে সামনের দিকে এগোতে হয় কেননা দিনশেষে সবার মন রাখতে হয়। আচ্ছা যাই হোক এখন মূল প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলি। গল্পের প্রথম পর্ব ইতিমধ্য শেয়ার করেছি আর এখন দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথম পর্বে কালো বউ ফর্সা বউয়ের ছেলেকে হত্যা করে। ফর্সা বউ বাইরে কাজ করছিল আর সেই সুযোগে কালো বউ এসে ফর্সা বউয়ের ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করে আর কাজ শেষ করে যখন ফর্সা বউ ঘরে এসে দেখল তার ছেলে এখনো শুয়ে আছে তখন সে বলতে থাকলো বাবা ঘুম থেকে ওঠো আর কত সময় ঘুমাবে??

ফর্সা বউ তার ছেলেকে ডাকতে ডাকতে যখন কাছে গিয়ে লেপ উঠিয়ে ছেলেকে তুলতে গেল তখন সে যে দৃশ্যটি দেখল সেটা ছিল অবিশ্বাস্যকর। বাচ্চাটির মা অর্থাৎ ফর্সা বউ যখন লেপ উঁচু করলো তখন দেখতে পেল ছোট নির্মম শিশুর রক্তাক্ত দেহ লেপের নিচে পড়ে আছে। আর ছেলের এই দৃশ্য দেখে এক চিৎকার দিয়ে এসে উঠানের উপরে মাথা ঘুরে পড়ে গেল। বাড়িতে যারা ছিল তারা চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখল ফর্সা বউ উঠানের উপরে পড়ে আছে। শশুর শাশুড়ি পাড়া-প্রতিবেশী সবাই এসে ছোট বউয়ের মাথায় পানি দিতে থাকলো। কিন্তু অনেক সময় হয়ে যায় জ্ঞান ফিরে না। অনেক সময় পরে জ্ঞান ফিরলো কিন্তু ঘরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ইশারায় বলতে গিয়ে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। এভাবে কয়েকবার হওয়ার পরে সবাই বুঝতে পারে যে ফর্সা বউ কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। আবার জ্ঞান ফিরে আবারো ঘরের দিকে কিছু একটা ইশারা করে আবার অজ্ঞান হয়ে যায় তখনো কেউ বুঝতে পারেনি আসলে কি ঘটনা ঘটেছে। হঠাৎ একজন লোক বলে ওঠে যে বারবার ঘরের দিকে ইশারা করে কি বলছে চলো তো ঘরে গিয়ে দেখি কি হয়েছে ঘরের মধ্যে??

Source

ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখতে পেল ফর্সা বউয়ের ছেলের রক্ত মাখা শরীর পড়ে আছে আর এই দৃশ্য দেখে সবাই তো একদম অবাক হয়ে যায়। যখনই এই দৃশ্য দেখে সবাই কান্না শুরু করে তখনই মাকে রেখে সবাই ছেলের কাছে এসে ভিড় করে আর সবাই বলতে থাকে আহারে কে এমন নিষ্ঠুর কাজ করলো। ইস এতোটুকু একটা নিষ্পাপ বাচ্চাকে কিভাবে কেউ এমন নিষ্ঠুর ভাবে মারতে পারে। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে লোকজন বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকে আবার পুলিশ চলে আসে। এমন ঘটনার কারণে বাড়িতে দুখের কালো ছায়া নেমে আসে। অন্যদিকে ঘটনা অনেক দূর গড়ানোর পরে কালো বউ খুব ভয়ে থাকে। পরিস্থিতি দেখে কালো বউ অনেকটাই ঘাবড়ে গিয়েছিল আর সে শুধু এর ওর দোষ দিয়ে যাচ্ছিল নিজেকে এই অপরাধ থেকে লুকানোর জন্য। যখন কালো বউ বিভিন্ন লোকজনকে দোষারোপ করছিল তখন তারা সবাই রেগে গিয়ে কালো বউকেই বলছিল এমন জঘন্যতম কাজ তোমার মত অহংকারী মেয়েই করতে পারে এই কাজ তুমিই করেছো। কালো বউ বিভিন্ন জনকে দোষ দিচ্ছিল আর আবোল-তাবোল কথা বলছিল তখনই সবাই অনেকটা বুঝতে পারে। হঠাৎ করেই কালো বউয়ের শাশুড়ি কালো বউকে জিজ্ঞাসা করে বসে বৌমা তুমি তো সকালে অন্য কাপড় পড়ে ছিলে তাহলে এখন নতুন কাপড় পড়েছ কেন আগের কাপড় গুলো কোথায়??

Source

এই কথা জিজ্ঞাসা করার পরে কালো বউ হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দেয়। কালো বউ তখন কান্না করছিল আর বারবার বলছিল আমি মারিনি আমি খুন করিনি তোমরা আমায় দোষ দিও না। যখনই এই কথা কালো বউয়ের মুখ দিয়ে বের হলো তখনই সবাই আরো বেশি সন্দেহ করতে শুরু করল। কিছু সময় পরে পুলিশ চলে আসলো আর সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ গিয়ে কালো বউয়ের ঘরে তল্লাশি শুরু করে। কিছু সময় তল্লাশি চালানোর পরে একটি বাক্সের মধ্য থেকে সেই রক্তমাখা জামা কাপড় গুলো পেয়ে যায় আর তাকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ কালো বউকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানোর পরে সে কিভাবে ছোট্ট শিশুকে হত্যা করেছে সেই বর্ণনা দেয়। নিজের মুখে সবকিছু স্বীকার করার কারণে তার যাবজ্জীবন কারাগার হয় যদিও কালো বউয়ের বাবার বাড়ির লোকজনের অনেক টাকা পয়সা জমি জায়গা ছিল তাই তাকে জেল থেকে বের করার জন্য অনেক জমি বিক্রি করে অনেক টাকা পয়সা খরচ করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন কাজে আসেনি কারণ সে কিভাবে হত্যা করেছে সেটা পুলিশকে জানিয়েছিল এবং নিজে মুখে স্বীকার করেছে সে ছোট্ট শিশুটিকে বটি দিয়ে হত্যা করেছে। সবশেষে কালো বউয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনও তাকে জেল থেকে বের করার জন্য যে চেষ্টা করছিল সেই হাল ছেড়ে দেয়। কালো বউ তার অহংকার আর মনে হিংসা থাকার কারণে সবকিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে সহজ সরল ফর্সা বউ তার ছোট ছেলে হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়ে। কিছুদিন পরে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায় কিন্তু কালো বউয়ের রেখে যাওয়া ছোট্ট ছেলে সন্তানটি সবসময় মায়ের জন্য কান্নাকাটি করত আর ফর্সা বউ সেই ছেলেটিকে নিজের ছেলের মতো লালন পালন করতে থাকে কেননা তার মনে কোন হিংসা ছিল না আর যার কারণে সে আবার সুখে শান্তিতে জীবন শুরু করতে পারব।

এই গল্প থেকে আমরা এতোটুকু শিক্ষা নিতে পারি, যে কোন পরিস্থিতিতেই হুট করে কোন ডিসিশন নেয়া যাবে না আর বিশেষ করে মন থেকে অহংকার মুছে ফেলতে হবে। কারো প্রতি হিংসা করা যাবে না সহজ সরলভাবে জীবন যাপন করলে তার জীবনে সুখ আসবেই।

এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan

আমার পরিচয়

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Follow @amarbanglablog for last updates

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

Posted using SteemPro Mobile