ফাহাদ (পর্ব-০২)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২১শে মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শীতকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
একটি গ্রামের শিক্ষিত পরিবারের ফাহাদের জন্ম আর ফাহাদ ছোট থেকেই একটু স্বাধীনভাবে চলতে পছন্দ করত সে সবসময় ছেলেমেয়েদের সাথে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতো যদিও তার লেখাপড়ার দিকে খুব একটা মনোযোগ ছিল না কিন্তু পরিবারের স্বপ্ন ছিল তাকে মাদ্রাসায় পড়াবে। তার বাবা তাকে শহরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেয় কিন্তু সে সেখানে একদমই থাকতে চায় না তাই সেখান থেকে সে বাসায় ফেরার জন্য পালিয়ে যায়। আসলে সে যে বাসে চড়েছিল সে বাস কোথায় যাবে সে সম্পর্কে তার কোন ধারণা ছিল না। প্রথম পর্বের এই পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম এখন দ্বিতীয় পর্বে তার পরবর্তী ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য উপস্থিত হলাম।
ফাহাদের কাছে বাসের কোন টিকিট ছিল না বা তার কাছে কোন টাকা ছিল না তাই সে বাসের একদম পিছনের সিটে গিয়ে বসেছিল। যারা বাসের টিকেট কেটে বাসে উঠেছিল তাদের সংখ্যা খুব কম ছিল তাই বাসের অর্ধেকটা বলতে গেলে ফাঁকা ছিল। কন্টাকটার সামনের টিকিটগুলো সবার থেকে চেক করে নিল কিন্তু পেছনে ফাঁদ সিটের ওপরে ঘুমিয়ে ছিল সেটা আর কন্টাকটার বুঝতে পারেনি তাই বাস নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পরে ফাহাদের ঘুম ভেঙে যায় আর বাস তখন যাত্রা বিরতিতে একটি খাবার হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে। এদিকে ফাহাদেরও খুব ক্ষুধা পেয়েছে রাত তখন প্রায় দশটা বাজে। বাস থেকে সবাই নেমে টুকটাক খাওয়া দাওয়া করছে কিন্তু ফায়াদের কাছে খাওয়ার মত কোন টাকা নেই তাই সে বাস থেকে নেবে চারিদিকে দেখছিল আসলে সে কি করবে আর সে কোথায় এসেছে সে নিয়ে টেনশন করছিল। হোটেলের মধ্যে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বসতেই সে যে বাসে এসেছিল সে বাস কে ছেড়ে দিতে দেখে তখন দৌড়ে এসে দেখল বাসটি চলে গিয়েছে। তখন ফাহাদ নিজেকে আরো অসহায় মনে করছিল।
অন্যদিকে ফাহাদ যে মাদ্রাসায় থাকতো সেখানে ফাহাদকে খোঁজ করা হচ্ছে শহরের চারিদিকে খুঁজে দেওয়া হচ্ছে আর সবগুলো মসজিদের মাইকে ফাহাদের বিবরণ দিয়ে খোঁজ করা হচ্ছে কিন্তু কেউ ফাহাদের খোঁজ দিতে পারছে না। পরের দিন সকালে ফাহাদের বাড়িতে ফোন দেওয়া হলো আর বিস্তারিত সবকিছু বলা হলো তখন ফাহাদের বাবা আরো টেনশনে পড়ে গেল। সকালবেলা ফাহাদের বাবা এসে মাদ্রাসায় উপস্থিত হলো কিন্তু তার ছেলের এরকম হারিয়ে যাওয়ার গল্প শুনে ফাহাদের বাবা নিজেকে আর স্বাভাবিকভাবে রাখতে পারলেন না তিনি কান্না শুরু করে দিলেন কেননা তার একমাত্র ছেলে। তাহাদের মা এই ঘটনা শুনে চিৎকার করে কান্না শুরু করলো তার বাবাকে বলতে লাগল যেভাবেই হোক না কেন তুমি আমার ছেলেকে এনে দাও। ফাহাদ তার বাবার নম্বরে ফোন করতে ভয় পাচ্ছিল কেননা সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়েছে। প্রায় এক দিন হল ফাহাদ কিছুই খায়নি তার পরনে সাদা পাঞ্জাবি আর মাথায় টুপি দেখে হোটেল মানুষ জিজ্ঞাসা করল বাবা তোমার বাসা কোথায়?? ফাহাদ কিছুই বলছে না চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে তখন হোটেল মালিক বুঝতে পারল কোন সমস্যা হয়েছে হয়তো। কাছে ডেকে নিয়ে সবকিছু জিজ্ঞেস করায় ফাহাদ হোটেল মালিক কে সবকিছু বলল সে কিভাবে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এসেছে। হোটেল মালিক ফাহাদ কে বলল বাবা তুমি তোমার এলাকা থেকে তো অনেক দূরে চলে এসেছো এখান থেকে তোমার বাড়ি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। ফাহাদ এ কথা শুনে আরো ভয় পেয়ে গেল আর কান্না শুরু করে দিল তখন হোটেলের মালিক ফাহাদের কাছে তার বাবার নাম্বার জানতে চাইল।
ফাহাদের দেওয়া নাম্বারে হোটেল মালিক ফোন করে বিস্তারিত সবকিছু খুলে বলল এবং ফাহাদ বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে সেই লোকেশন তার বাবার কাছে জানিয়ে দিল। লোকটির ফোন পেয়ে ফাহাদের বাবা যেন অনেকটাই স্বস্তি পেল সে ফোনে ফাহাদের সাথে কথা বলতে চাইলো কিন্তু ফাহাদ ফোনে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে কেননা সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়েছে তার জন্য তার বাবা যদি তাকে রাগ করে সে ভয়ে তার বাবার সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। হোটেল মালিক ফাহাদের মনে সাহস জাগিয়ে বলল তোমার বাবা তোমার সাথে কথা বলবে তখন ফাহাদ তার বাবার সাথে কথা বলতে ফাহাদের বাবা কান্না শুরু করে দিল সেই সাথে ফাহাদ ও কান্না কান্না শুরু করে দিল আর বলছিল বাবা আমি আর কোনদিন মাদ্রাসা থেকে পালাবো না তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দাও। ফাহাদের এই কথা শুনে ফাহাদের বাবা আরো জোরে জোরে কাঁদতে লাগল আর ফাহাদকে বলতে লাগলো বাবা তুমি থাকো আমি তোমাকে নিতে আসতেছি। হোটেল মালিক ফাহাদকে খাবার দিল আর ফাহাদ ক্ষুধা নিবারণের জন্য পেট পুরে খেলো। দীর্ঘ সময় পরে ফাহাদের বাবা আসলো আর ফাহাদকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলল তুমি কেন এমন করলে?? ফাহাদ কান্না করছিল আর বলছিল বাবা আমি আর কোনদিন এরকম কাজ করবো না। ফাহাদের বাবা হোটেল মালিক এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।
ফাহাদ তার ভুল স্বীকার করল তার বাবার কাছে বলল আমি এখন আবার মাদ্রাসায় যাব মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করব আর তোমার স্বপ্ন পূরণ করব। ঠিক তিন বছর পরে ফাহাদ সেই মাদ্রাসা থেকে হাফিজিয়া কমপ্লিট করল এবং তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করল। সে নিজেকে পরিবর্তন করে জন্য আর তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয় এবং পরবর্তীতে বড় মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পায়।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://x.com/KaziRai39057271/status/1754119670154838079?s=20
হোটেলের ঐ লোকটা কিন্তু অনেক বেশি ভালো ছিল। তাই তো ফাহাদকে সবকিছু ভালোভাবে জিজ্ঞেস করে, তার বাবার নাম্বার নিয়ে তার বাবাকে কল করেছিল। আর প্রথমে সে তার বাবার সাথে কথা বলতে ভয় পেলেও, পরবর্তীতে সে তার বাবার সাথে কথা বলেছিল। আপনি অনেক সুন্দর করে ফাহাদের এই গল্পটার দ্বিতীয় পর্ব তুলে ধরেছেন, যেটা পড়তে পেরে আমার কাছে ভালো লেগেছে। এটা সবার মাঝে ভাগ হওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার পোস্টটি পড়ে প্রথম একটু খারাপ লাগলো লাস্ট পর্যন্ত পড়ে খুব ভালোই লাগলো। তবে অনেকেই মাদ্রাসা পড়লে প্রথম অবস্থায় এরকম করে ফাহাদ এর মত। এবং মাদ্রাসায় পড়তে চাই না রাতে পালিয়ে যাই এরকম আমাদের আত্মীয়ের মধ্যে একজনের হয়েছে। তবে শুনে ভালো লাগলো লাস্ট পর্যন্ত ফাহাদ আবার মাদ্রাসা গিয়ে পড়ালেখা করলো এবং হাফিজিয়া কমপ্লিট করলো। আসলে ফাহাদ তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে সত্যি এটি গর্বের বিষয়। এবং পরবর্তীতে সেই মসজিদে ইমামতি করতেছে শুনে আরো বেশি ভালো লাগলো। সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এরকম ভুল করলে অনেক সময় ছোট বাচ্চারা অনেক বিপদে পড়ে যায়।ফাহাদ রাত্রেবেলা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গাড়ি করে অন্য জায়গায় চলে গেল। তবে ওখানে হোটেলের লোকটি ভাল ছিল বিদায় ফাহাদ তেমন সমস্যা হয় নাই। তবে এটি শুনে খুব ভালো লাগলো ফাহাদ তার বাবা স্বপ্ন পূরণ করেছে। ফাহাদের চেষ্টা আছে বিদায় সে তার বাবা লক্ষটি পূরণ করতে পারল। বাস্তব একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ফাহাদ মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরেও কোনো বিপদ হয়নি, এটা জেনে সত্যিই ভীষণ ভালো লেগেছে। আসলে ফাহাদকে হারিয়ে তার মা বাবার মনের অবস্থা তখন কেমন হয়েছিল, একমাত্র তারা নিজেরাই সেটা জানে। যাইহোক অবশেষে ফাহাদকে খুঁজে পেয়েছে তার বাবা এবং ফাহাদ তার মা বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে, এটা সত্যিই খুব আনন্দের বিষয়। এভাবেই প্রতিটি সন্তান তার মা বাবার স্বপ্ন পূরণ করুক, সেই কামনা করছি। গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।