সোনা মিয়া (পর্ব-০১)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ১লা মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | শীতকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
বেশ কিছুদিন হল কোন গল্প লেখা হয় না তাই অনেকদিন পরে আজকে আবার একটি ছোট গল্প লিখেছি। বলতে গেলে কমিউনিটির জন্যই টুকটাক গল্প লেখার অভ্যাস তৈরি হয়েছে আর পুরোটাই কবিতা লেখা শুরু করেছি তো কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার পর থেকে। প্রতিটা গল্পেই যদি কোন আকর্ষণ থাকে তাহলে পাঠক গল্প পড়ার প্রতি একটা আগ্রহ দেখায় তাই আজকের এই গল্পে আকর্ষণীয় কিছু কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করব। যাই হোক কথা না বাড়িয়ে সরাসরি গল্পের মূল পর্বে চলে যাই।
সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট্ট একটি নদী আর নদীর তীরে দেখা যায় ছোট্ট একটি কুঁড়েঘর যে ঘরের মালিক সোনা মিয়া। সোনা মিয়ার ঘরবাড়ি দেখলেই বোঝা যায় তিনি আসলে কতটা দরিদ্র। সোনা মিয়ার চারটি মেয়ে আর এই চার কন্যা সন্তানকে নিয়েই তার পরিবার। জোয়ারের সময় সোনা মিয়ার বাড়ির উঠানে পুরোপুরি পানি চলে আসে আবার যখন জোয়ার শেষ হয়ে যায় তখন সোনা মিয়ার বাড়ি জেগে ওঠে। যদি জোয়ারের পানি বেশি বেড়ে যায় তাহলে সোনা মিয়ার ঘরের মধ্যেও পানি ঢুকে যায়। এভাবেই নানান অসুবিধা মধ্য দিয়ে সোনা মিয়ার জীবন পার হচ্ছিল। তবে সোনামিয়ার মেয়েগুলো বড় হচ্ছে তাই তাদেরকে বিয়ে দেওয়া নিয়ে সোনা মিয়ার মাথায় আস্তে আস্তে একটি টেনশন নেমে আসে। সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন অনেক দরিদ্র আর সেখানকার লবণাক্ত পানির কারণে তেমন কোন ফসল জন্মে না তাই সোনামিয়া চাইলেও কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে না বাধ্য হয়ে তাকে সুন্দরবনে কাঠ কাটতে যেতে হয় আবার কখনো মৌমাছির মধু সংগ্রহ করার জন্য মৌয়ালদের সাথে যেতে হয়। তাছাড়া তার ঘরে চারটা মেয়ে আছে যার কারণে সে চাইলেও দূরে কাজে যেতে পারে না। সোনামিয়া যে অর্থ আয় করে সেটা দিয়ে তাদের পরিবারের খরচ মিটে না তাই সোনামিয়ার স্ত্রী রাহেলা বেগম বাড়ির পাশের ছোট নদীতে গলদা চিংড়ির পোনা ধরে আর সোনামিয়া দিনশেষে সেগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করে কিছু টাকা পায় এভাবেই অভাব অনাটনে তাদের দিন পার হচ্ছিল।
সোনা মিয়া সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়ে নৌকা চালাবেন আর সেখানে যে সকল পর্যটক ঘুরতে আসে তাদেরকে সুন্দরবনের আশপাশের এলাকা ডিঙ্গি নৌকায় ঘুরিয়ে দেখাবেন। সেখানকার একটি সংস্থা থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে সোনা মিয়া একটি নৌকা কিনে। প্রথম কিছুদিন বেশ ভালোই টাকা-পয়সা রোজগার করছিল আর কিছু টাকা তার বড় মেয়ের বিয়ের জন্য গোছাতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করোনার কারণে পর্যটক আশা বন্ধ হয়ে যায় আর সোনামির টাকা-পয়সা রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে কিছুদিন থাকার পরে সোনা মিয়া তার নৌকা বিক্রি করে দেয় আর কিছু টাকা দিয়ে সেই সংস্থার টাকা পরিশোধ করে আর যে টাকা অবশিষ্ট থাকে সেটা তার মেয়ে বিয়ের জন্য রেখে দেয় তবে যে টাকা গুছিয়ে ছিল সেটা তার মেয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে এই কথা ভেবে সোনা মিয়া সিদ্ধান্ত নিল এই করোনা কালীন সময়ে সুন্দরবনের মাঝে মৌয়ালদের সাথে আবারো মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহের কাজে যাবে। করোনা কালীন সময়ে পর্যটক আসা-যাওয়া বন্ধ ছিল তাই সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকা অনেকটাই নিরিবিলি হয়ে পড়ে যার কারণে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা সেই এলাকাতেও আসতে শুরু করে। অনেক সময় বিভিন্ন গাড়ির শব্দ বা নৌকার শব্দের কারণে বন্যপ্রাণীরা সুন্দরবনের জন মানব এলাকায় আসতে ভয় পেত তবে করোনা কালীন সময়ে পর্যটনের সব নৌকা জাহাজ বন্ধ ছিল আর এই নিরিবিলি সময়ে বন্যপ্রাণী না মানুষ বসবাসযোগ্য এলাকাতেও দেখা যেতে শুরু করল।
সোনামিয়ার মেয়েরা অবশ্য সোনামিয়াকে একদিন বলেছিল বাবা তোমার আর সুন্দরবনের যাওয়ার দরকার নেই যে টাকা গুছিয়েছো এই টাকা দিয়েই আমরা কোন মত বিয়ের খরচটা বহন করে নিব। কিন্তু সোনামিয়া চাইছিল তার আদরের সন্তানের বিয়েতে একটু যেন আনন্দের কমতি না হয় তাই সে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের জন্য যেতে। সোনা মিয়া তার সঙ্গীদের সাথে একদিন সিদ্ধান্ত নিল তারা সুন্দরবনের গভীরে যাবে তাই সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী যে নদী বয়ে চলেছে সেই নদীর মোহনা হয়ে সুন্দরবন প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা অনেক ভোরবেলায় মোহনা পার হয়ে সুন্দরবনের প্রবেশ করে আর সেখানে গিয়ে অনেকগুলো মৌমাছির চাক দেখতে পায়। যখন অনেকগুলো মৌমাছির চাক দেখতে পেল তখন সবাই অনেক খুশি হল কেননা আজকে তারা যে লক্ষে এসেছে সেই লক্ষ পূরণ হবে অনেক মধু সংগ্রহ করতে পারবে আর সেটা বাজারে বিক্রি করে অনেক টাকা হবে। সোনামিয়া স্বপ্ন দেখছিল তার মেয়ের বিয়ে ধুমধাম ভাবে দিবে। দুপুর নাগাদ তাদের মৌমাছির চাক কাটা শেষে মধু নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পালা। সুন্দরবনের গহীন থেকে যখন তারা নদীর পাড়ে আসছিল তখন তারা লক্ষ্য করল একদল হরিণ দৌড়াচ্ছে সেই সাথে গাছের উপর থেকে বানরের দল চিৎকার করছে। তখন সবাই বুঝতে পারলো হয়তো আশপাশেই বাঘ আছে। তারা সবাই নিজেদেরকে লুকানোর চেষ্টা করল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বাঘের গর্জন শুনতে পেল। তারা সবাই আরো ভয় পেল।
এই পর্ব এখানেই শেষ করছি। তারা সবাই লুকিয়ে পড়ার পরে যে বাঘের গর্জন শুনেছিল তার পরবর্তী সময়ে কি হয়েছিল সেটা জানার জন্য দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকুন।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি কবিতা লিখতে ভালবাসি, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ভালোবাসি। তবে বাইক নিয়ে নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
![Banner.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmV44ipDFZ9PNUMtyufYoaoMvPW4QZqAZUvWi9TkCh9NWx/Banner.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
প্রতিটি বাবা-মায়ের চায় তার সন্তানদের বিয়েতে সর্বোচ্চ আয়োজন করার। এ জন্য সোনামিয়া আরো টাকা সংগ্রহের জন্য সুন্দরবনের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল মধু সংগ্রহের জন্য। সবকিছু তো ভালোই চলছিল। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা বাঘের কবলে পড়েছে। যাই হোক ভাইয়া পরবর্তীতে সোনা মিয়ার কি হয়েছিল জানার অপেক্ষায় রইলাম।
পরবর্তী পর্বে সব পুরো বিষয়টি জানতে পারবেন।
মা বাবা একেবারে গরীব হলেও, নিজের সন্তানদের বিয়ে ধুমধাম করে দিতে চায়। তাইতো সোনা মিয়া কতো কষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। নৌকা চালিয়ে কিছু টাকা উপার্জন করলেও,করোনার জন্য পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে গেল। নিরুপায় হয়ে নৌকা বিক্রি করে দিতে হলো। তবে জঙ্গলের এতো গভীরে যাওয়া ঠিক হয়নি তাদের। আমার তো মনে হচ্ছে বাঘ সোনা মিয়াকে খেয়ে ফেলবে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। গল্পটি পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।