গ্রাম্য মেলা। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -১০ই বৈশাখ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
প্রতি সপ্তায় ধারাবাহিক পোস্ট করার মাঝেও কিছু কিছু টপিক গ্যালারিতে চাপা পড়ে যায়। আজকে পুরাতন অ্যালবাম থেকে একটি পোস্ট সংগ্রহ করেছি সেটাই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এক বছর আগে শীতের মৌসুমে আমাদের এলাকায় মেলা হয়েছিল আর সেই মেলাতে আমরা সবাই গিয়েছিলাম অনেক মজা করেছিলাম সেই বিষয়গুলোই আজকে তুলে ধরব। সাধারণত প্রতিবছরই শীতের মৌসুমে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে আর বড় ছুটি পাওয়া যায় যার কারণে যারা শহরে থাকে তারা গ্রামে ছুটি কাটাতে আসে। আমার ফুফাতো ভাই-বোনেরা সবাই শীতের ছুটিতে আমাদের বাসায় এসেছিল। সেই দিনগুলো আমরা বেশ উপভোগ করেছিলাম রাতদিন সব সময় এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি আর আড্ডায় মেতে ছিলাম। তবে এই বছরে তারা ছুটি পায়নি বলে আসতে পারিনি তাছাড়া বড় আপুর ঢাকায় ট্রেনিং ছিল বলে সে আসতে পারেনি। মূলত বড় আপুই সবগুলো প্ল্যান করে। সে সময় শীতের মৌসুমে বেশ কয়েকদিন ধরেই বড় আপু বলছিল তোদের বাড়িতে আসবো অর্থাৎ তারা তাদের নানা বাড়িতে আসবে। হুট করেই একদিন চলে আসলো তবে সেদিন আমি একটু বাড়ির বাইরে ছিলাম তারা দুপুরে এসে বারবার আমাকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু আমার কাজ শেষ হতে হতে বিকেল হয়ে গিয়েছে। বিকেলে বাড়ি আসলাম, তারা বলল আজকে রাতেই পিকনিক হবে তো বাড়ি এসে গোসল খাওয়া-দাওয়া কমপ্লিট করে আমি আবার বাজারে চলে গেলাম পিকনিক করার জন্য কিছু বাজার সংগ্রহ করতে। মাংস সহ কিছু বাজার করে বাসায় ফিরে খিচুড়ি ভাতের সাথে মুরগির মাংসের রেসিপি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। বাড়িতে অনেক লোকজন আমার তিনটা ফুপি এসেছে সেই সাথে অনেকগুলা ফুফাতো বোন আবার চাচাতো ভাই বোন সবাই তো আছেই। আমরা অল্প একটু কাজ করে ফুফুদের হাতে রান্নার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে মেলায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমাদের এলাকার আমবাড়ীয়া স্কুল মাঠ এরিয়ায় ১৬ই ডিসেম্বর উপলক্ষে মেলা হচ্ছিল। মেলায় নাগরদোলা এসেছিল আবার অনেকগুলো দোকান বসেছে সেই সাথে ১৬ই ডিসেম্বর উপলক্ষে সেখানে নাটকের আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় যে নাটক হবে অর্থাৎ ১৬ই ডিসেম্বর নিয়ে যুদ্ধের কাহিনীগুলো হবে সেটা সম্পর্কে মানুষ নতুন করে আবার অবগত হতে পারে। সিদ্ধান্তটা আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছিল। আমরা দুইটা গাড়ি ভাড়া করে সবাই মেলায় গেলাম। সব মিলিয়ে আমরা প্রায় ২০ জন মত ছিলাম। প্রথমে মেলায় গিয়েই আমার ছোট চাচার সাথে দেখা সে আবার আমাদের প্রশ্ন করল তোমরা মেলায় এসেছ কেন?? বড় আপু আবার বলে ফেলল মামা আপনাকে দেখতে আসলাম হা হা হা। প্রথমে আমাদের নাগরদোলায় চড়ার কথা বলল তবে আমরা যারা ছিলাম সবাই ভয় পেতে লাগলো যার মধ্যে থেকে তিনজন রাজি হল। আমার নাগরদোলায় চড়ার কোন ইচ্ছা ছিল না তবে নাইমা আপু জোর করে বলল তোকে তো চড়তেই হবে একজন ছেলে মানুষ লাগবে না হলে আমরা ভয় পাব। বাধ্য হয়ে উঠলাম, অনেকদিন পরে নাগরদোলায় উঠে বেশ ভালোই লেগেছিল যাইহোক নাগরদোলা থেকে নেমে আবার যারা জুনিয়র ছিল তাদেরকে উঠার সুযোগ করে দিলাম আর সেই সুযোগেই ছবি তুলেছিলাম। নাগরদোলা থেকে নেমে সেখানে যেসব দোকান বসে ছিল সেগুলো দেখছিলাম আর কোন দোকানে কি খাবার বিক্রি হচ্ছে সেগুলো ফোন ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছিলাম কারন আগে থেকে ইচ্ছা ছিল এটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
বিভিন্ন খাবার গুলো দেখে সবাই বলছিল প্রথমে ফুচকা খাবো। সেই সময় বড় আপু সবেমাত্র এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে চাকরিতে জয়েন করেছে তাই তার কাছে কম বেশি ভালোই টাকা আছে। তারপর সে ছিল সবার চেয়ে বড় তাই অন্য কাউকে আর টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি, যে যেমন পারছিল ফাস্টফুড সহ ফুচকা খাওয়া শুরু করল। আমার ছোট ফুপুর মেয়ে আছে নাম তামান্না সে ফুচকা এতটাই পছন্দ করে যে বসে বসে তিন প্লেট ফুচকা খেয়ে ফেলল হা হা হা। মজার বিষয় হচ্ছে তিন প্লেট ফুচকা খাওয়ার পরেও সে বলছিল আরো খাব কিন্তু আমরা বলছিলাম বাসায় যে পিকনিকের জন্য খাবার তৈরি হচ্ছে সেটা কিভাবে খাবি?? তখন আপাতত খাওয়া বন্ধ দিল। মোটামুটি সবমিলে ভালোই খাওয়া দাওয়া হল তারপরে নাটকের মঞ্চের দিকে যেতেই এশার আযান শুরু হল। আজানের বিরতিতে নাটক বন্ধ করে দেওয়া হলো। মাইকে বলে দেওয়া হচ্ছিল আযানের বিরতি নেওয়া হয়েছে আপনারা কিছু সময় পরে আবার স্টেজের সামনে চলে আসবেন। মূলত আমরা ঘুরতে গিয়েছি আমরা তো আর সেখানে নাট্যমঞ্চে নাটক দেখতে যাইনি। তাই সেখানে দেরি না করে আবার সামনের দিকে চলে আসলাম যেখানে অনেক শখের আসবাবপত্রের জিনিসের দোকান বসেছে।
দোকান গুলোতে ছোট ছেলেমেয়েদের খেলনা আবার মেয়েদের আংটি সহ বিভিন্ন আসবা পত্র ছিল। সবাই দোকানে দোকানে ঘুরে সব কিছু দেখছিল এদিকে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে যার কারণে আমি বলছিলাম বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা। এখানে যদি পুরোটা সময় নষ্ট করি তাহলে বাসায় গিয়ে সবাই একসাথে খাওয়ার মজাটা পাবো না। বড় আপু আবার বলছিল সবে মাত্রই তো অনেক কিছু খাওয়া হলো এখন আবার এত তাড়াতাড়ি বাসায় গিয়ে খাওয়া সম্ভব নাকি, তাই বড় আপুর কথা মত আবার একটু দেরি করছিলাম তারা পর্যায়ক্রমে সবগুলো দোকান ঘুরে ফিরে দেখছিল আর আমি শুধু তাদের পিছে পিছে দোকানগুলোর ছবি তুলছিলাম। ঘোরাঘুরি শেষে আমরা আবার দুইটা গাড়ি নিয়ে সবাই বাড়িতে চলে আসলাম। সবচেয়ে মজার বিষয় বাড়িতে আসার পরে মনে হচ্ছিল আমাদের ছোট্ট ভাগ্নির জন্য কিছু একটা কেনার দরকার ছিল। নাঈমা আপু আবার বলল চল তাহলে আবারো মেলায় যাই ওর জন্য ছোট্ট একটা খেলনা কিনে নিয়ে আসি। যেখানে মেলা হচ্ছিল সেখান থেকে আমাদের বাসায় যেতে বাইক নিয়ে সর্বোচ্চ ৩-৪ মিনিট সময় লাগে। আমি আর নাইমা আপু আবার হুট করেই মেলায় চলে আসলাম আর কিছু খেলনা কিনে আবার বাসায় গেলাম। তবে বাসায় যাওয়ার পরে পিকনিকের খাওয়া দাওয়া নিয়ে বেশ মজা হয়েছিল এক বছর পরে প্রায় ২০ জন ভাইবোন একসাথে হয়ে রাতের খাবার খাওয়া নিয়ে অনেক মজা হয়েছিল। আজকের এই পোস্ট করতে গিয়ে সেই আনন্দের মুহূর্তটা নতুন করে মনে পড়ে গেল।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | এপ্রিল,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1782705630203330870
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে গ্রামের মেলা হলে রাতের বেলায় যদি মেলাতে ঘুরতে যাওয়া যায় সত্যি বেশ ভালো লাগে। রাতের বেলায় মেলাতে ঘুরতে গিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি আপনার মোবাইলের ক্যামেরাবন্দি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে ভাই অনেক ছোট বয়সে নাগর দোলনায় চড়েছিলাম এখন বেশ মন চায় কিন্তু আমাদের এলাকাতে আর দেখা যায় না এই নাগরদোলনা। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে ভাইয়া যখন বাড়িতে মামাতো ফুফাতো চাচাতো সব ভাই-বোনেরা একসঙ্গে হয় তখন অন্যরকম একটা আনন্দের মেলা বয়ে যায়। আপনাদের বাড়িতেও তেমনটি হয়েছিল বুঝতে পারছি। সবাই মিলে পিকনিকের আয়োজন শুরু করে ফুফীদের হাতে দিয়ে সবাই মেলায় চলে গেলেন ব্যাপারটা সত্যি ভীষণ মজার ছিল। আর মেলায় গিয়ে আপনারা বেশ আনন্দ করেছেন ছবিগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ফুচকা আসলে মেয়েরা সবাই ভীষণ পছন্দ করে ।আপনার বোনের ফুচকা খাওয়ার ব্যাপারটিও বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ মাঝে মাঝে দেখি আপনারাও এরকম হুটহাট করে ঘুরতে যান বিশেষ করে তৌহিদা আপুর সাথে বেশি ঘোরাফেরা হয় মনে হয়।
গ্রাম্য মেলায় সময় কাটিয়ে চমৎকার একটি অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এরকম গ্রাম্য মেলায় বিভিন্ন প্রকারের জিনিসপত্র বিক্রয় করার জন্য অনেক দোকান বসে। গ্রাম্য মেলার গুরুত্বপূর্ণ ফটোগ্রাফি গুলো আপনার পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। গ্রাম্য মেলায় সময় কাটানোর চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ গ্রামের এই মেলার মুহূর্তগুলো আমার কাছেও দারুন লাগে কিন্তু দিনের পর দিন যেন এই ঐতিহ্য গুলো হারিয়ে যাচ্ছে।
তাই বলেন এগুলো বছরখানেক আগের কথা। আমিও তো তাই বলি এখন মেলা তো কোথাও হচ্ছে না। আপনি মেলায় কীভাবে গেলেন। মেলায় গিয়ে সময় টা বেশ দারুণ কাটিয়েছিলেন ভাই। কথাটা ঠিক যদি চাকরি করা বড় ভাই বোন থাকে তাহলে কোথাও ঘুরতে গেলে পুরো খরচ টা তারাই নিজ দায়িত্বে বহন করে থাকে। মেলায় দেখছি খুব একটা লোকজন নেই।
যারা পোস্ট না পড়ে কমেন্ট করে তারা কিন্তু ভেবে নিতে পারে এটা এখনকার ঘটনা হা হা হা।
ঠিক বলছেন ফোনের গ্যালারিতে অনেক কিছু পুরাতন থেকে যায়। মাঝে মধ্যে আমিও চেষ্টা করি সেই পুরাতন বিষয়গুলো তুলে ধরার। গত বছরের সেই শীতের দিনের মুহূর্তে আপনি আজকে শেয়ার করলেন। বাড়িতে যখন ফুফুরা আসে ফুফাতো ভাই বোনেরা আসে একদম ঘর ভরে যায়। তো আপনারা পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন। সব কাজ মুরুব্বীদেরকে দিয়ে আপনারা মেলাতে ঘুরতে গেছিলেন। খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি তুলে ধরলেন অনেক ভালো লাগলো।
আমি ভেবেছিলাম আমার মত ফোনের পুরাতন গ্যালারিতে শুধু পোস্টগুলো আমারই পড়ে থাকে কিন্তু এখন বুঝতে পারলাম অনেকেরই এরকম হয়।
গ্রাম্য মেলাগুলোতে সব থেকে বেশি মজা হয়ে থাকে। তোমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই মেলার আয়োজন করেছিল এটা তো বেশ দারুন ব্যাপার বন্ধু। তোমরা সবাই মিলে মেলাতে গিয়ে দেখছি অনেক ঘোরাঘুরি খাওয়া-দাওয়ার করেছো। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ বন্ধু।
হ্যাঁ আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দারুণ একটু উদ্যোগ নিয়েছিল বেশ ভালো লেগেছিল আমার কাছে।