গ্ৰাম্য মেলা। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -১৬ই জ্যৈষ্ঠ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
হঠাৎ করেই প্রচন্ড গরম বেড়েছে কাল থেকে এতো পরিমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে যেটা বলার মত না। আকাশে টুকটাক মেঘ জমলেও বৃষ্টি নেই, ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন হবে সেটা হয়তো বুঝতে পারিনি। বাতাসে গাছের পাতা নড়ছিল কিন্তু গরমের প্রভাবে মনে হচ্ছে বাতাস যেন শুধু উপর দিয়েই যাচ্ছে। নিচে কোন বাতাস নাই এমনটা মনে হচ্ছে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে সারাদিন রুমের বাইরে ছিলাম এখন বাধ্য হয়ে পোস্ট লেখার জন্য রুমে আসলাম। তবে গোসল করেও যেন শান্তি নাই গরমের প্রভাবে অনবরত গা ঘামছেই। যাই হোক মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি, আজকে আবার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা একটি টপিক আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যেহেতু পুরোটা সময় গ্রামে থাকা হয় তাই গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করার চেষ্টা করি তবে কিছু কিছু সময় গ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া গ্রাম্য মেলার সৌন্দর্যটাও শেয়ার করার চেষ্টা করি। আজকের যে টপিকটি শেয়ার করব সেটা অনেকদিন আগের কথা তখন রতন মামা দেশে ছিল। আমাদের গ্রুপে একমাত্র রতন মামাই সিনিয়র পারসন। সে আমাদের সাথে অনেকটাই বন্ধুর মত মেলামেশা করত আর তাকে নিয়ে আমরা সবাই মেলায় গিয়েছিলাম সেই গল্পটাই আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
মাসিক ছুটিতে ঢাকা থেকে বন্ধুরা সবাই বাড়িতে আসলো, সন্ধ্যাবেলায় একজন বড় ভাই বলল পাশের গ্রামে মেলা হচ্ছে সেখানে গিয়ে গরম জিলাপি খাওয়ার খুব ইচ্ছে জেগেছে। আসলে গরম জিলাপি আমারও খুব পছন্দ তাই বড় ভাইয়ের কথার সাথে আমিও সহমত প্রকাশ করে সবাই আমাদের পাশের গ্রামে জয়ন্তীহাজরা স্কুল মাঠে যে মেলা হচ্ছিল সেখানে যাওয়ার পরামর্শ করলাম। তখন আবহাওয়াটা খুবই সুন্দর ছিল। না ছিল গরম না ছিল শীত একদম পারফেক্ট আবহাওয়া। সবাই সন্ধ্যার পরে বাইক নিয়ে বাজার থেকে বের হলাম। সাধারণত বাজারে রতন মামার দোকানে আমাদের স্থায়ী ঠিকানা। তার দোকানের ভেতরের অংশে আমাদের বসার মতো একটি জায়গা ছিল সেখানেই সবাই মিলে কমবেশি বসে আড্ডা দিতাম। যদিও বাজারের দিকে খুব একটা ভালো লাগে না বেশিরভাগ সময় নদীর পাড়ে থাকতে ভালো লাগে। যাই হোক চারটা বাইক নিয়ে আমরা সবাই বেরিয়ে পড়লাম মেলায় গরম জিলাপি খাওয়ার উদ্দেশ্যে।
মেলায় গিয়ে জানতে পারেনা এখানকার চেয়ারম্যান এই মেলার আয়োজন করেছে যদিও গ্রামের মধ্যে একদম ছোট পরিসরে মেলার আয়োজন হয়েছে তবে বেশ ভিন্ন ভিন্ন দোকান বসেছে। আমরা সবাই বাইক নিয়ে সোজা স্কুল মাঠে বাইক রাখলাম। যেহেতু প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জিলাপি খাওয়া তাই সোজা মেলায় যে দুইটা জিলাপির দোকান ছিল সেখানে গেলাম। একটা দোকানদার জিলাপি তৈরির সরঞ্জাম সহ সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছে। আরেকটি দোকানে গরম গরম জিলাপি তৈরি করা হচ্ছে আমরা সেখানে গিয়ে সেই জিলাপি খাবারে অপেক্ষায় রইলাম। তবে এমন একটা ঘটনা ঘটলো যেটার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। জিলাপির দোকানদার আমাদেরকে জিলাপি না দিয়ে প্রাইভেটকার থেকে নেমে আসা আরেক লোককে জিলাপির প্যাকেটটা ধরিয়ে দিল। আমরা আগে গরম জিলাপি খাব এই অপেক্ষায় সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু আমাদেরকে না দিয়ে প্রাইভেট কার থেকে নেমে আসা লোকটিকে জিলাপি দেওয়ার কারণে আমাদের সবারই একটু রাগ হলো তাই বললাম আজকে জিলাপিই খাব না। আমরা এতগুলো লোক জিলাপি খাওয়ার জন্য তার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আর আমাদেরকে না দিয়ে বাইরের লোকটিকে দিয়ে দিল। আমাদেরকে আরো কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারলাম না তাই এখান থেকে চলে এলাম। আমরা যখন চলে আসছিলাম জিলাপির দোকানদার আমাদের সবাইকে বারবার ডাকছিল তখন আমরা বললাম আপনার দোকানের জিলাপি আমরা খাব না। এত সময় দাঁড়িয়ে থাকার পরে যদি সেই জিলাপি অন্যজনকে দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেই দোকানের জিলাপি কি আর খেতে মন চায় বলেন??
আমরা সবাই কিছু ফাস্টফুড কিনে স্কুল মাঠে চলে এলাম। সেই সাথে একজন বাদামওয়ালা আমাদেরকে কিছু বাদাম দিল সেগুলোই বসে খাচ্ছিলাম আর বিষয়টা নিয়ে কথা বলছিলাম। ঠিক এমন মুহূর্তে জিলাপির দোকানদার আমাদের কাছে এসে বলছিল আপনাদের কি হল আপনাদের জন্য জিলাপি রেডি করলাম না খেয়ে চলে আসলেন তখন আমরা লোকটিকে বললাম আপনি যেহেতু আমাদেরকে ওভারটেক করে অন্য লোককে জিলাপি দিয়েছেন সেহেতু আপনার দোকানের জিলাপি খাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। লোকটি তখন বিষয়টা বুঝতে পারল এবং চলে গেল। আমি আবার তার পাশে থেকেই প্যাকেট ভর্তি পপকর নিয়ে এলাম। আমরা সবাই একসাথে ছবি উঠেছিলাম সেই মুহূর্তে লোকটি আমাদেরকে দেখছিল আর যখন পপকন কিনে আনলাম সেই মুহূর্তে দোকানদার বলছিল মামা আমার ছবি তুললেন না হা হা হা। বুঝলাম দোকানদার বেশ মজার মানুষ তাই দোকানদার মামারও ছবি তুলেছিলাম।
আপাতত খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ এখন মেলার কিছু দৃশ্য দেখা বাকি, গ্রামের সব মেলাতেই ভিন্ন রকমের পানের আইটেম থাকে যেটা বিভিন্ন মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় যদিও সেটার ছবি তোলা হয়নি। সেখানে গিয়ে মজার ছলে কয়েকজন পান খেল। তারা পান খাচ্ছিল আর আমি সামনে আসতেই লক্ষ্য করলাম টেবিলের উপরে কিছু সরঞ্জাম রাখা হয়েছে আর গোল বালা দিয়ে অনেকেই সরঞ্জামগুলো আবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। মূলত নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মালা দিয়ে সরঞ্জাম গুলো আবদ্ধ করতে পারলে সেটা নিয়ে নিতে পারবে খেলাটা বেশ কিছু সময় উপভোগ করলাম তবে খুব কম সংখ্যক লোকই সার্থক হতে পেরেছিল। যেহেতু মেলার এরিয়াটা একদম ছোট ছিল তাই খুব অল্প সময়েই কভার করে ফেললাম এবং সবাই বাইক নিয়ে আবার বাড়িতে ফিরে আসলাম।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | মে,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
![Banner.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmV44ipDFZ9PNUMtyufYoaoMvPW4QZqAZUvWi9TkCh9NWx/Banner.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আসলে ঠিক বলেছেন, গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভীষণ ভালই লাগে। আপনারা চারটা বাইক নিয়ে দেখছি বেরিয়ে পড়লেন। গরম গরম জিলাপি খাওয়ার কথা শুনে আমারও খেতে ইচ্ছে করতেছে। কিন্তু আপনাদের তো দেখছি জিলাপি টা খাওয়াই হলো না। আসলে ঠিক বলেছেন যারা আগে থেকে অপেক্ষা করছে তাদেরকে না দিয়ে অন্য আরেকজনকে দিয়ে দেওয়ার বিষয়টা একদমই ভালো লাগলো না। আপনারা চলে এসে ঠিক করেছেন। তবে এরপরেও দেখছি আরো অনেক খাওয়া-দাওয়া করলেন। সময়টা ভীষণ ভালো লাগলো।
সত্যি ভাইয়া আমরা অন্য মিষ্টি যতই খায় না কেন জিলাপি খাওয়ায় মজাই আলাদা। আর গ্রামের মেলার তুলনা হয় না। গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করে। আর জিলাপি না খেয়ে অনেক ভালো করেছেন। সত্যি মাঝে মাঝে এই সব লোকদের এভাবে শাস্তি দেওয়া উচিত। যাই হোক সবাই মিলে ফাস্ট ফুড খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এই ধরনের গ্রাম্য মেলা এখন হারিয়ে যাবার পথে। আসলে এগুলো বাঙালির একটা ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু এই ঐতিহ্যগুলো দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ থেকে। আসলে আপনার এই গ্রাম্য মেলার পোস্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। এছাড়াও আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আমি গ্রাম্য মেলার অনেক কিছু দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে ছুটি পেলে সবাই বাড়িতে ছুটে আসে, আর বাড়িতে আসার পর মন চায় এদিকে সেদিকে বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরা করতে যাই। ঠিক তেমনি একটা অনুভূতিতে পাশের গ্রামের মেলাতে আপনারা উপস্থিত হয়েছেন। সেখান থেকে গরম গরম জিলাপি খাওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর সেই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন,তাই অনেক কিছু জানার সুযোগ হল।
আমাদের দেশে এখন ক্রমেই এই গ্রাম্য মেলাগুলো আয়োজন হওয়া কমে যাচ্ছে। ব্যাপার টা বেশ দুঃখজনক। বন্ধুরা সবাই মিলে মেলায় জিলেপি খেতে বাহ ব্যাপার টা বেশ দারুণ। পরবর্তীতে ফাস্টফুড এবং বাদাম নিয়ে স্কুল মাঠে চলে এসেছিলেন। দারুণ কেটেছিল আপনাদের সময় টা। ধন্যবাদ একটু দেরিতে হলেও আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
মাসিক ছুটিতে সবাই বাড়ি এলে সবার সাথে দেখা হলে ভালো ই লাগার কথা।এক ভাই বলল,পাশের গ্রামে মেলা হচ্ছে।আর সবাই মিলে গেলেন।গরম গরম জিলাপি খাবেন বলে দোকানে গেলেন।সত্যি খথা বলতে এমনিতে মিষ্টি খাবার কম পছন্দ হলেও গরম গরম জিলাপি কিন্তু আমার ও ভীষণ পছন্দ। এরপর সবাই ফাস্ট ফুড ও বাদাম নিয়ে মাঠে গেলেন।সময়টা বেশ ভালোই উপভোগ করলেন।গ্রাম্য মেলায় আমার কখনও যাওয়া হয়নি।ভালো ই উপভোগ করলেন।এই মেলাটি যদিও অনেক আগেই সংঘটিত হয়েছিল।ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে।
এটাই খারাপ লাগে আমার কাছেও। সবাই পয়সার কাছে মাথা পাতে!! আপনাদের জায়গায় আমি হলেও একই কাজ করতাম ভাই। উনি দোকান দিয়েছেন, সিরিয়াল মেইনটেইন করেই পণ্য দেয়া উচিত ছিল। তবে তাকে দেখিয়ে অন্য জিলাপি ওয়ালার থেকে জিলাপি কিনে খেতেন, তখন আরও ভালো বুঝতো কেমন লাগে!! যাই হোক, রিজিক বলে একটা ব্যাপার তো রয়েছেই! আপনাদের রিজিকে সেদিন অন্যকিছুই ছিল, যেগুলো খেয়েছেন।
বন্ধুদের সাথে গ্রাম্য মেলায় খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। তবে জিলাপি খেতে গিয়ে জিলাপি খাওয়া হলো না। আসলে গরম গরম জিলাপি খেতে দারুন লাগে। যায়হোক জিলাপির পরিবর্তে তো আরো অনেক কিছু খেলেন। জিলাপি অন্য একদিন খাবেন। আপনার অনুভূতি দারুন ছিল। ধন্যবাদ।