ক্রিকেট খেলার মজার গল্প। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৬ই ফাল্গুন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | বসন্ত-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আজকে আমি আপনাদের সাথে ক্রিকেট খেলার একটা মজার গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি মূলত আমি ছোট থেকেই ক্রিকেট খেলাটা বেশি পছন্দ করি। যখন হাইস্কুলে পড়তাম তখন বিকেল হলেই অর্থাৎ স্কুল ছুটির পরে বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করেই ক্রিকেট খেলার জন্য বেরিয়ে পড়তাম যদিও যখন নবম এবং দশম শ্রেণীতে পড়েছি তখন বিকেল বেলায় প্রাইভেট থাকার কারণে আর নিয়মিত বিকেল বেলায় ক্রিকেট খেলা হতো না। তবে ঠিকই শুক্রবার বিকেল বেলা এবং যেদিনে প্রাইভেট ছুটি থাকতো সেদিনে ক্রিকেট মাঠে উপস্থিত হতাম। ছোট থেকে যেমন ক্রিকেট খেলার প্রতি আলাদা একটা আগ্রহ সে আগ্রহটা এখনো রয়ে গিয়েছে।
বয়সের সাথে এখন ব্যস্ততাও বেড়ে গিয়েছে তাই বিকেল বেলায় আর তেমন সময় হয় না যে মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলব। শীতের মৌসুমে সবাই কিন্তু ছুটি কাটাতে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে আর যাদের নানাবাড়ি বেশি আসা যাওয়া থাকে কেউ কেউ তো নানা বাড়িতে চলে যায়। বাজারে আমাদের দোকানের সামনের অংশে কিছুটা ফাঁকা জায়গা আছে আর তার পেছনে একটা মেহগনি গাছের বাগার আছে। মূলত মেহগনি গাছের বাগানটি আমার মামাদের তাই সেখানে কিছু ছেলেদের ক্রিকেট খেলা দেখে আমি এগিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখতে পেলাম সবাই পরিচিত তাই প্রথমে আমি ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে তাদেরকে বললাম এক ওভার বল কর আমি খেলব। তো প্রথমে তারা আমাকে এক ওভার বল করলো তারপরে বলছিল ভাইয়া এখন আপনি তাহলে যান আবার কালকে আপনাকে বল করব আমরা এখন খেলবো। আমিও ভাবলাম তারা যেহেতু সবাই ছোট ছোট তাই আজকে আর খেলব না এক বার ব্যাট করেছি এটাই যথেষ্ট। এরকম পর্যায়ক্রমে কয়েকদিন সেখানে গিয়ে এক ওভার করে ব্যাটিং করতাম। আমি সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বুঝতে পারত আমি এক ওভার বল খেলার জন্য সেখানে এসেছি আর তাদের মধ্যে যে ব্যাটিংয়ে থাকতো সে আমাকে ব্যাট দিয়ে দিত।
এরকম কয়েকদিন যাওয়ার পরে একদিন গিয়ে দেখলাম একটা ছেলে নতুন ব্যাট নিয়ে এসেছে তবে ব্যাট দূর থেকে দেখে বুঝতে পারলাম অনেকটা হালকা শুধু ছোট ছেলেদের খেলার জন্য এই ব্যাটটা চলে আর কি। তারা নিজেদের মধ্যে দল ভাগাভাগি করে টুর্নামেন্ট খেলছিল তাই আমি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই মিলে আমাকে রিকোয়েস্ট করল ভাইয়া আর এক ওভার হলেই আমাদের ইনিংস শেষ হয়ে যায় আপনি একটু অপেক্ষা করুন তো আমি সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের খেলা দেখছিলাম আর চিন্তা করছিলাম আজকে তো ছেলেপেলেরা নতুন ব্যাট নিয়ে এসেছে আজকে এক ওভারের পরিবর্তে দুই ওভারে বল করতে বলবো। মজার বিষয় হচ্ছে আমি সেটা ভাবতে ভাবতেই যে ছেলে ব্যাটিং করছিল সে যখনই বল মেরেছে তখনই ব্যাটের মাঝখান থেকে ভেঙে গিয়েছে। ব্যাট দুই খণ্ড হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই অবাক হয়ে গিয়েছে আর যে ছেলের ব্যাট সে তো রীতিমতো কান্না শুরু করে দিয়েছে। আমি তখন মনে মনে চিন্তা করতে ছিলাম আল্লাহ বাঁচাইছে এই যদি ব্যাটটা নিয়ে ব্যাটিং করতে যেতাম তাহলে আমার কাছ থেকেই ব্যাটটা ভেঙ্গে যেত আর কি একটা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তাম। সেখানে আমাদের একজন ছোট ভাই ছিল সে তখন আমার কাছে এসে বলছিল ভাইয়া তুমি তো অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছো তুমি তো এসেছিলে ব্যাটিং করার জন্য কিন্তু ইনিংস এর এক ওভার বাকি থাকার কারণে অপেক্ষা করছিলে। যার জন্য আর তোমার কাছ থেকে ব্যাটটা ভাঙলো না। ওদের কাছ থেকে ভেঙেছে তোমার আর ভয় নেই হা হা হা। যার ব্যাট সে কান্না করছিল আর বলছিল আমি এই ব্যাট নিয়ে বাড়িতে গেলে আমার আব্বু রাগ করবে আমার নতুন ব্যাট কিনে দাও আর আমি সেটা শুনে আবারো চিন্তা করছিলাম অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি আজকে।
পরবর্তীতে আমি তাদেরকে বললাম কাঠের আঠা আর কাঠের গুড়া একসাথে সংমিশ্রণ করে ব্যাটের সাথে লাগিয়ে যদি সুতা দিয়ে ভালোভাবে পেঁচিয়ে বেঁধে রাখা হয় তাহলে ব্যাট ঠিক হয়ে যাবে। তারা যেহেতু সবাই ছোট তাদের পক্ষে তো আর নতুন ব্যাট কেনা সম্ভব না তাই আমি তাদেরকে বললাম আঠা নিয়ে আসার কথা এমনকি আমি নিজেও তাদেরকে আঠা আনার জন্য টাকা দিয়ে দিলাম। আমি যখন আঠা আনার জন্য টাকা দিলাম তখন সবাই হাসছিল বুঝতে পারছিলাম তারা অনেক খুশি হয়েছে। পরের দিন আঠা আর কাঠের গুড়া একসাথে করে সুতা দিয়ে তাদের ব্যাটটা সুন্দর করে বেঁধে দিয়েছিলাম যদিও তারপর থেকে আর সেখানে ক্রিকেট খেলতে যাওয়া হয়নি তবে ব্যাট ভেঙ্গে যাওয়ার সময়ের মুহূর্তটা মজার ছিল কেন না যখন ব্যাট ভেঙ্গেছিল তখন তো আমার ব্যাট করার কথা। যেহেতু তারা আমার থেকে ছোট তাদের কাছ থেকে ব্যাট ভেঙ্গে গিয়েছিল তাহলে আমার কাছে তো আরো আগে থেকে ভেঙে যেত।
তবে যদি আমার সেই রকম টাকা-পয়সা থাকতো তাহলে তাদের আমি একটা সুন্দর ব্যাট গিফট করতাম কেননা একটা সময় যখন আমরা ক্রিকেট খেলতাম তখন এই ক্রিকেট ব্যাটের অভাবটা বুঝতে পারতাম। আমার এখনো মনে আছে আমরা ছোট্ট কাঠের অংশ কাটারি দিয়ে কেটে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করতাম। যদিও স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার পরে যখন নতুন কলেজে ভর্তি হই তখন অনেক টাকা দিয়ে শখের একটি ব্যাট কিনেছিলাম সেটা এখনো আছে।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ক্রিকেট খেলা নিয়ে বেশ চমৎকার একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্যিই আপনার এই গল্পটা জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আসলে আমাদের জীবনে সবারই না কম বেশি এমন ঘটনা রয়েছে। যদি এভাবে প্রকাশ করা যায় একে অপরের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারা সম্ভব। আর সময় সাপেক্ষে সত্যি সেই বিকেলের মুহূর্ত আমরা আর খেলাধুলার কাজে লাগাতে পারি না ব্যস্ততার ফলে। সেম অবস্থা আমারও হয়েছে যেন বিকেল টাইমে মাছের খাবার দেওয়া এই সেই কাজেই পার হয়ে যায়।
https://x.com/KaziRai39057271/status/1759850932492447786?s=20