এই গল্পের প্রথম পর্ব ইতিমধ্যে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি আর সেই গল্প পড়ে অনেকেই অনেক রকমের মন্তব্য করেছেন আর তাদের ধারাবাহিক সেই মজাটা উপহার দেওয়ার জন্য আজকে আমি আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্বটি নিয়ে হাজির হয়েছি। গল্পের প্রথম পর্বে রাজা এবং রানীর রাজ্যে একটা পুত্র সন্তানের খুবই দরকার ছিল কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে প্রথম কন্যা সন্তান দান করে কিন্তু রাজা সেই কন্যা সন্তানকে মেনে নিতে পারে না তাই তার নিজের কন্যা সন্তানকে মাটি চাপা দিয়ে হত্যা করে আর এভাবে চলতেই থাকে। পরবর্তী রানী তার কন্যা সন্তানকে জন্ম দেয়ার পরে রাজাকে জানায় যে তার পুত্র সন্তান হয়েছে আর রাজাকে একটি মিথ্যা স্বপ্নের কথা বলে যে আমাদের এই সন্তান যদি ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত এই রাজ্যের বাইরে না রাখে তাহলে সে মৃত্যুবরণ করবে। একইভাবে রাজা এটা বিশ্বাস করে তার সন্তানকে বাইরে পাঠায় এবং ১৬ বছর পর যখন ফিরে আসে তখন সে কতটা ভালো যুদ্ধ শিখেছে সেটা দেখার জন্য যুদ্ধের আয়োজন করে। যুদ্ধে বেরিয়ে আসে আসলে সে ছেলে নয় সে ছিল রাজকন্যা।

যুদ্ধে যখন প্রমাণ হয় এতদিন তার ভুল ধারণা ছিল যে তার একজন ছেলে সন্তান আছে তখন সে তার কন্যা সন্তানকে হত্যা করতে চায়। কিন্তু রানী রাজার পা ধরে তার কন্যা সন্তানের প্রাণ ভিক্ষা চায় কেননা মা চায় তার সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক যেন বেঁচে থাকে তবে সেই সময়ে এতটা সভ্যতা আসেনি বলে অনেকেই মেয়ে সন্তানকে মেরে ফেলত। যাইহোক রাজা বিষয়টি জানার পরে প্রচন্ড রেগে যায় এবং চিৎকার করে বলতে থাকে আমি রাজা আমি কোন কন্যা সন্তানের পিতা হতে চাই না। রাজা চেয়েছিল আমার একটা ছেলে সন্তান হবে আর সেই ছেলে সন্তান এই রাজ্যের দায়িত্ব নেবে। যদিও রাজা অনেক অহংকারী ছিল তাই সে কোন কিছুতেই এই বিষয়টি মেনে নিতে চাইছিল না।

Source

অহংকারী রাজার যে মন্ত্রী ছিল তিনি ছিলেন প্রচণ্ড লোভী। মন্ত্রী প্ল্যান পেতে রেখেছিলেন যে সময় মত রাজাকে মেরে সে রাজার সিংহাসনে বসে সেই রাজ্যকে রাজত্ব দিবে। তার কন্যা সন্তান যদি রাজা রাগের বশতে খুন করে ফেলে তাহলে রাজার রাজ্যকে হাল ধরার মতো আর কেউ থাকবে না আর সেই সুযোগে মন্ত্রী রাজাকে হত্যা করে সিংহাসনে বসবে। যদিও মন্ত্রী বারবার রাজাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু একবারও সফল হতে পারেনি আর যখন জানতে পারলো যে এই সেই রাজকুমারী যার জন্য মন্ত্রী রাজাকে হত্যা করতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আর এক সাধুর থেকে জানতে পারে যে রাজার কোনদিন পুত্র সন্তান হবে না তাই কোনোভাবে রাজাকে বলে বুঝিয়ে যদি এই রাজকুমারীকে হত্যা করানো যায় তাহলে তার সিংহাসনে বসা আরও সহজ হবে এই ভেবে মন্ত্রী বারবার রাজাকে উস্কানি দিচ্ছিল। মন্ত্রী বার বার বলছিল আপনার সাথে এমন ধোঁকা করা হয়েছে আপনি এর কঠিন শাস্তি দিবেন এই বলে রাজাকে বারবার উস্কানি দিতে থাকে। তবে রানীর আকুতি মিনতের কারণে রাজা সেই সময় রাজকুমারীকে ছেড়ে দেন। অন্য দিকে মন্ত্রী রাজ্য দখল করার জন্য নতুন এক ষড়যন্ত্র করেন। তিনি রাজাকে বলে বুঝিয়ে একজন সন্ন্যাসীর কাছে নিয়ে যান আর সেই সন্ন্যাসী ছিল ভন্ড সাধু যে কিনা মন্ত্রীর সাজানো নাটক ছিল। মন্ত্রী ভন্ড সাধু বাবাকে ভয় দেখিয়ে তাকে পুরো বিষয়টি বলে নতুন ফন্দি পাকাতে থাকে।

Source

যখন মন্ত্রী রাজাকে সাধুর কাছে নিয়ে গেল তখন সাধু রাজাকে বলল আমি জানি তোর কি হয়েছে আর আমি এটাও জানি তোর এই সমস্যার সমাধান কিভাবে দিতে হবে। রাজা তখন সমস্যার সমাধানের কথা শুনে সাধুকে বলে ফেলল কিভাবে সমাধান দিবেন আমাকে দ্রুত বলুন। সাধু তখন বলল এত তাড়াহুড়া করলে চলবে না কারণ এই সমস্যার সমাধান শুধু আমার কাছেই আছে। রাজা বুঝতে পারল না যে তার সাথে নতুন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সাধু বাবা রাজাকে একটি সিন্দুকের মধ্য আট মন সোনা, আর তার মেয়েকে আটকে সিন্দুকটি নদীতে ফেলে দিতে বলল। আর বলতে থাকলো যদি এই কাজটি রাজা করতে পারে তবেই রাজার পুত্র সন্তান লাভ করা সম্ভব। রাজা কথাটি শুনেই চিন্তা করতে থাকলো যে এই কাজের ফলে যদি আমার পুত্রসন্তান হয় তাহলে আমি এখন গিয়েই আট মন সোনা আর আমার কন্যা সন্তানকে বাক্সে বন্দী করে নদীতে ফেলে দিব। রাজা সাধুর কথা মত কাজ করার জন্য বাড়ি ফিরে গেল। সাধুর কথা মতোই ৮ মন স্বর্ণ একটি সিন্দুকের মধ্যে রাখা হলো আর রাজকুমারীকে ধরে এনে সেই সিন্দুকের মাঝে বন্দী করে নদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হল। রাজা সিন্দুকটি নদীতে ভাসিয়ে দিলেন আর সিন্দুকটি যখন ভাসতে ভাসতে মাঝ নদীতে এলো তখন একজন জেলে সেই সিন্দুকটি দূর থেকে দেখতে পায়। ছেলেটি সিন্দুকটিকে দূর থেকে দেখতে পেয়ে সিন্দুকের কাছে এগিয়ে আসে। সে সিন্দুক টিকে অনেক কষ্টে নদীর এক কিনারে নিয়ে আসে, সিন্দুকটি অনেক ভারী ছিল তাই তীরে নিয়ে আসতে জেলের অনেক কষ্ট হলো। সিঁদুরটি পারে তোলার পরে দেখতে পেল মুখে বড় তালা দেওয়া আছে তাই সে তালা ভেঙে ফেলানোর জন্য নৌকা থেকে কিছু অস্ত্রপাতি এনে তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করল। দীর্ঘ পরিশ্রমের পরে জেলে সিন্দুকের তালা ভেঙে ফেলল।
জেলেটি যখনই তালা ভেঙে ফেলার পরে সিন্দুক টি খুলল তখন দেখতে পেল সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে অনেক সোনা আর ফুটফুটে একটি সুন্দরী মেয়ে।

আজকে এই পর্যন্তই রাখছি আবার বাকি কাহিনী পরবর্তী পর্বে তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।

এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan

আমার পরিচয়

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Follow @amarbanglablog for last updates

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

Posted using SteemPro Mobile