জন্মদিনের কেক|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -২৪শে ভাদ্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বর্ষাকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



Made by @kazi-raihan_20230908_065820_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



পোষ্টের টাইটেল দেখে সবাই কী কেক খুঁজছেন নাকি?? চাচাত ভাইয়ের মেয়ের জন্মদিন ছিল যার কারণে তার আবদার মেটাতে জন্মদিনের কেক কিনতে গিয়েছিলাম সেটাকে কেন্দ্র করে আজকে এই পোস্ট শেয়ার করছি। বিকেল বেলায় চাচাতো ভাই এসে জিজ্ঞেস করল আমার কোন ব্যস্ততা আছে কিনা তো সেদিন বিকেলে আসলে তেমন কোন কাজ ছিল না যার কারণে বললাম বিকালে আর তেমন কাজ নেই। আমার চাচাতো ভাইয়ের মেয়ের নাম মুশফিকা মাহা, অর্থাৎ ভাতিজির নাম মুশফিকা মাহা। চাচাতো ভাই এসে বলছিল আজকে মাহার জন্মদিন আর সে বায়না ধরেছে তাকে কেক কিনে দিতে হবে জন্মদিন উপলক্ষে সে কেক কাটবে। হুট করে কেক কিনতে হলে অবশ্যই বেকারীতে যেতে হবে। আর যে কোন রেস্টুরেন্ট থেকে কেক কিনতে গেলে আগের দিন অর্ডার দিতে হয় তাহলে পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে আমাদের পাশের এলাকায় নতুন একটি রেস্টুরেন্ট উদ্ভাবন হয়েছে আর মাইকে সেই রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে সবাইকে অবগত করছিল আর বলছিল সেখানে জন্মদিনের কেক পাওয়া যায় তাই আমরা দুজন প্রথমে সেখানে গেলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম আগের দিনে অর্ডার করলে সেখানে কেক পাওয়া যায় তাছাড়া তারা কেক তৈরি করে না। রেস্টুরেন্ট থেকে এক কিলোমিটার দূরেই ছোট্ট একটি বেকারী ছিল সেখানে খোঁজ নিতে গেলাম কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম তারা শুধু বিস্কিট রুটি এগুলো তৈরি করে তাদের কেক তৈরি করার কোন কর্মচারী নেই এজন্য তারা কেক তৈরি করে না। ধীরে ধীরে আমরা উপজেলা শহরের দিকে রওনা হলাম। যদিও উপজেলা শহরে যাওয়ার আগেই আরো একটি রেস্টুরেন্টে খোঁজ নিয়েছিলাম কিন্তু তারাও সেই একই কথা বলল যদি অর্ডার করে তাহলে তারা তৈরি করে তাছাড়া কেক তৈরি করে না আর তারা বলল একবারে বেকারিতে চলে যান তাহলে কেক পেয়ে যাবেন। আর সময় নষ্ট না করে সোজা একবারে বেকারিতে গিয়ে কেক নিয়ে চলে আসব।



20230905_184444.jpg

20230905_184545.jpg

20230905_184604.jpg

20230905_184609.jpg

20230905_184622.jpg

20230905_184656.jpg



আমরা বেকারিতে যেতে যেতে প্রায় রাত হয়ে গিয়েছিল কারণ সন্ধ্যার একটু আগেই বাসা থেকে বের হয়েছি তাছাড়া পথে বেশ কয়েক জায়গায় সময় নষ্ট হয়েছে যার কারণে আরো বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। বেকারি তে গিয়ে অফিস রুমে বসে থাকা লোকটির কাছে জিজ্ঞেস করলাম কেক কত করে পাউন্ড?? লোকটি বলল জন্মদিনের কেক ২৫০ টাকা পাউন্ড। অফিস রুমে অনেক রকম বিস্কিট সহ রুপি কেক রাখা ছিল তবে আমরা নতুন টাটকা কেক নেওয়ার কথা বললাম তখন অফিসে বসে থাকা ম্যানেজার বলল তাহলে কিছু সময় অপেক্ষা করুন ভেতরে জন্মদিনের কেক রেডি করা হচ্ছে তখন ভাবলাম যাই তাহলে ভিতরে গিয়ে বিষয়গুলো দেখি কিভাবে কেমন কি তৈরি হয়। ম্যানেজারের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম ভিতরে কি আমরা যেতে পারবো তখন তিনি বললেন যান সমস্যা নেই। প্রথম দেখতে পেলাম সেখানে অনেকগুলো রুটি তৈরি করে রাখা হচ্ছে আর একদিক থেকে সেগুলা প্যাকেট করছে। আর এই রুটিগুলো একসাথে ছয়টি করে এক প্যাকেটে প্যাকেটিং হচ্ছে। আবার তার সাইডে দেখতে পেলাম বিস্কিট সহ কিছু আইটেম র‍্যাকের মধ্যে তৈরি করে রাখা হয়েছে আর সেই রাগগুলো ২০ মিনিটের জন্য হিটারের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে ছবিতে যে বড় বক্স আকারে ঘর মত দেখতে পাচ্ছেন সেটা আসলে একটি হিটার যার মধ্যে এই রেকগুলো ঢুকিয়ে দিয়ে বিস্কুট গুলোকে ভাজি করে নেওয়া হয়। তবে আমি সেখানে অনেক সময় অপেক্ষা করছিলাম কারণ ইচ্ছা ছিল সেই গরম বিস্কুট খাব কিন্তু যখন বের করা হলো তখন এতটাই গরম ছিল যা খাওয়ার অনুপযোগী ঠান্ডা হতে অনেক সময় লাগবে বলে আর বেশি সময় সেখানে অপেক্ষা করিনি। তবে সেখানে যারা কর্মচারী ছিল তারা বেশ ভালো আমরা যাওয়ার পরে তারা বারবার বলছিল ভাইয়া যে বিস্কিট ভালো লাগে খেতে পারেন চাইলে গরম রুটিও খেতে পারেন তবে রুটিগুলো একটু টেস্ট করেছিলাম বেশ মজার ছিল।



20230905_184724.jpg

20230905_184743.jpg

20230905_184801.jpg

20230905_185030.jpg

20230905_185743.jpg

20230905_191453.jpg

20230905_191627.jpg



তারপরে আসলাম যেখানে জন্মদিনের কেক তৈরি করা হয় সেই জায়গায় এসে দেখলাম একজন কর্মচারী কেক তৈরি করছে। একটি বক্সের মধ্যে কেক তৈরি করে রাখা হয়েছে আর সেটা গোল বাটি দিয়ে কেটে নিয়ে চারপাশের ক্রিম লাগিয়ে জন্মদিনের কেক আকারে আকৃতি দিচ্ছে। তবে কেক অনেক মজার ছিল লোকটি কেক তৈরি করছিল আর আমি সেটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম আর পাশে থাকা ট্রে থেকে ছোট ছোট টুকরো কেকগুলো নিয়ে টেস্ট করছিলাম বেশ ভালই লাগছিল যদিও লোকটি যখন কেকের উপরে ক্রিম দিয়েছিল তখন সেখান থেকে ক্রিম আর কেক একসাথে নিয়ে টেস্ট করছিলাম বেশ মজা লাগছিল। আর যেখানে কেক তৈরি করেছিল তারে ঠিক পিছনেই টোস্ট বিস্কুট প্যাকেট করা হচ্ছিল। বিস্কিট একপিস খেয়ে দেখলাম বেশ টাটকা আর মচমচে সাধারণত দোকান থেকে আমরা টোস্ট বিস্কুট নিলে সেটা একটু পুরাতন হয়ে যায় আর এরকম গরম টোষ্ট বিস্কুট দোকানে পাওয়া যায় না তাই টোষ্ট বিস্কুটের স্বাদ অন্যরকম ছিল। পরবর্তীতে লোকটি জন্মদিনের কেক কিভাবে তৈরি করেছিল সেটা আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম কিছু সময় পরে কেক তৈরি হওয়া কমপ্লিট হলে একটি বক্স নিয়ে এসে সেই বক্সের মধ্যে কেক বসিয়ে দেয়া হলো আর অফিস রুমে থাকা ম্যানেজারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হল। চকলেট ফ্লেভার এর একটি ক্রিম দিয়ে ম্যানেজার কেক এর উপরে নাম লিখে দিল। আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করল কি নামে হবে তখন আমরা নাম বললাম এবং ইংরেজি অক্ষরগুলো বললাম সে অনুসারে তিনি নাম লিখে দিলেন। সেখান থেকে বিস্কিট গুলো খেয়ে বেশ ভালো লেগেছিল তাই বাসায় আসার পূর্বে কয়েক প্যাকেট বিস্কুট সাথে নিয়েছিলাম সবমিলিয়ে এক পাউন্ড কেক ২৫০ টাকা আর ১২০ টাকার বিস্কিট নিয়েছিলাম।



20230905_175815.jpg

20230905_192141.jpg

20230905_192145.jpg



সেখান থেকে আবার আমরা সোজা খোকসা বাস স্ট্যান্ডে আসলাম এবং জন্মদিনের জন্য কিছু সামগ্রী কিনলাম যেমন চাকু, টুপি সহ কিছু শখের জিনিস। ভাইয়া বলল হালকা কিছু নাস্তা করে যাই কারণ বাস স্ট্যান্ডের পাশেই একটা মিনি চাইনিজের দোকান আছে সেখানে মোটামুটি ভালো মানের নুডুলস পাওয়া যায় আর মজার বিষয় হচ্ছে সেই দোকানে সবকিছু মাটির প্লেট মাটির গ্লাস ব্যবহার করা হয়। ভাবুন আপনি কোন রেস্টুরেন্ট বা মিনি চাইনিজ দোকানে খেতে গিয়েছেন আর তারা আপনাকে একটি মাটির প্লেটে খাবার পরিবেশন করেছে আর একটি মাটির গ্লাসে পানি দিয়েছে তাহলে বিষয়টা কিন্তু অন্যরকম লাগবে। সেই খাবারের টেস্ট যেমনই হোক খাবার পরিবেশনের বিষয়টা কিন্তু ভালো লাগার কথা কারণ অন্যরকম একটা ব্যাপার। হালকা নুডুলস খেয়ে সেখান থেকে সোজা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। নুডুলস এর টেস্ট খুব ভাল ছিল তেমন না আবার একদম বাজে ছিল তাও না মোটামুটি ছিল।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়সেপ্টেম্বর,২০২৩



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 11 months ago 

আপনার লেখা পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। জন্মদিনের কেক কিনতে গিয়ে দেখছি অনেক দোকানে ঘুরতে হয়েছিল। আপনারা ব্যাকারিতে গিয়ে ভালোই করেছেন। জন্মদিনের কেক যখন তৈরি করা হচ্ছিল আপনি তাহলে টেস্ট করেছিলেন তখন। যাই হোক সম্পূর্ণটা বেশ ভালোই উপভোগ করেছি। নিশ্চয়ই আপনার ভাতিজি জন্মদিনের কেক পেয়ে অনেক খুশি হয়েছিল।

 11 months ago 

ভাইয়া আপনার ভাতিজির জন্মদিনের কেক কিনতে গিয়ে আপনাকে বেশ ঘুরতে হয়েছে। আসলে বর্তমানের বাচ্চা বলে কথা। আর আপনি কেক বানানো দেখেছেন।আর কিছুটা খেয়ে টেস্ট করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। আপনার ভাতিজর জন্য শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি কেক তৈরি করার জন্য।

 11 months ago 

অনেক ঘোরাঘুরি করার পরে তাহলে কেক কিনতে পেরেছিলেন আপনার ভাতিজির জন্য। আসলে জন্মদিনের সময় সবার কেক কাটতে ইচ্ছে করে। তেমনি আপনার ভাতিজির ও ইচ্ছে করেছিল কেক কাটবে তার জন্মদিনে। আপনি ওখানে কেক টেস্ট করেছিলেন তাহলে। যাইহোক সব মিলিয়ে পুরোটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59596.75
ETH 2659.83
USDT 1.00
SBD 2.45