ছোট বেলার মজার গল্প || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৩রা আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আজকে আমি আমার ছোটবেলার একটি মজার কাহিনী আপনাদের সাথে শেয়ার করব। একসময় নানাবাড়ি আর খালা বাড়িতে প্রতিনিয়ত যাওয়া হত আজকের গল্পটা আমার খালা বাড়িতে ঘটে যাওয়া মজার একটি ঘটনা নিয়ে। আমার আম্মুরা তিন বোন যার মধ্যে আম্মু সবার ছোট। আর আমার বড় খালার বাসা আমাদের পাশের গ্রামেই আর ছোট খালার বাসা একটু দূরে। খালাতো ভাইবোন গুলোর মধ্য ছোট খালার মেয়েদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা বেশি ক্লোজ বলতে গেলে একদম আপন ভাই বোনের মত। আমার ছোট খালার বড় মেয়ের নাম ফারজানা সেতু। আমার থেকে ৫-৬ বছরের সিনিয়র হবে। প্রতি মাসেই ছোট খালার পরিবার আমাদের বাসায় ঘুরতে আসত আমাদের বাসা আর নানাবাড়ি খুব বেশি দূরে নয় এই জন্য আমাদের বাসায় প্রতিমাসেই আসতো। তখন ছিল শীতের মৌসুম, শীতের পিঠা খেতে আমাদের বাড়িতে ছোট খালার পরিবারের সবাই এসেছে।ছোট খালার পরিবার সকাল বেলায় আসলো আর বিকেল বেলায় আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন রকমের শীতকালীন পিঠা তৈরি হচ্ছে। আম্মু আর ছোট খালা অনেক রকম পিঠা তৈরি করছে। পিঠাগুলো তৈরি করার পরে বিকেলের দিকে আমাকে আর সেতু আপুকে পাঠানো হলো বড় খালার বাড়িতে কিছু পিঠা পৌঁছে দেয়ার জন্য।
ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগের কথা। আমি তখন সম্ভবত ক্লাস এইটে পড়ি আর সেতু আপু সম্ভবত তখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়তো। ছোট থেকেই সেতু আপু আমাদের বাসায় আসলে আমি তার পিছু পিছু ঘুরঘুর করে বেড়াতাম। সে যেখানে যেত আমাকে সাথে নিয়ে যেত একদম আপন ভাই বোনের মতো। যাই হোক একটি বড় বাটির মধ্যে অনেকগুলো পিঠা দেওয়া হল আর আমরা সেগুলো নিয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে বড় খালার বাসায় যাচ্ছি। ছোট্ট একটি মাঠ আর মাঠ পেরোলেই বড় খালার বাড়ি। তখন শীতের মৌসুম ছিল সারা মাঠ একদম পরিষ্কার মাঠে বড় ধরনের কোন ফসল নেই। জমিতে নতুন ফসল চাষের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে আর শুধু এটেল মাটিটাই জমিতে দেখা যাচ্ছে একদম বলতে গেলে সাদা এঁটেল মাটি দেখা যাচ্ছে। মাঠের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে কি আছে সেটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যদিও আমাদের বাসা থেকে খালার বাসা দেখা যাচ্ছিল। আমরা হাঁটতে হাঁটতে মাঠ পাড়ি দিয়ে খালার বাসায় পৌঁছে গেলাম।
খালার বাসায় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খালা আমাদেরকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে লাগলো আর বিভিন্ন প্রশ্ন করতে লাগলো আমি তখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আর সেতু আপু সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। খালার বাড়ি থেকে অল্প একটু গেলেই আবার বড় খালার মেয়ের বাড়ি। বড় খালা আবার আমাদেরকে সেখানে পাঠালো তো সেখানে যাওয়ার পথে মাঠের মধ্যে ছোট্ট কয়েকটি আম গাছ ছিল। একদম ছোট হবে তেমন টাও না বলতে গেলে মাঝারি টাইপের। তখন ছোট ছিলাম আমি যাওয়ার পথে দৌড়ে গিয়ে আম গাছের ডাল ধরে দোল খাচ্ছিলাম। সেতু আপু তখন বলছিল আচ্ছা আমি যদি ডাল ধরে ঝুলতে যাই তাহলে কি ভেঙ্গে যাবে আমি তখন আর কি বলব আমি তাকে বললাম বাড়ি ফেরার সময় একবার ঝুলে দেখবি। খালাতো বোনের বাড়িতে গিয়ে আবার হালকা নাস্তা করলাম তত সময়ে প্রায় সন্ধ্যা সন্ধ্যা ভাব হয়ে আসছে। শীতের সময়ে তাড়াতাড়ি সন্ধানেমে পড়ে আর হালকা কুয়াশা ভাবে তাড়াতাড়ি রাত হয়ে যায় তাই আমরা আর সেখানে দেরি না করে খালাতো বোনের বাড়ি থেকে সোজা আমাদের বাড়িতে আসার জন্য রওনা দিলাম। যেত সেতু আপু অনেকদিন পর আমাদের বাড়িতে আসছে তাই বড় খালার বাড়ি এবং খালাতো বোনের বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে দেখা করে আসলো যাইহোক আমরা আবার দুজন হাঁটতে হাঁটতে প্রায় সেই আমগাছ গুলোর কাছে চলে আসলাম। সেতু আপু বড় হলেও সে তখনও ছোট্ট মত হাসির কাজ করতো। একটু একটু সন্ধানে নেমে আসছে তাই সে আমাকে মাঠের মধ্যে থেকে ভয় দেখাচ্ছিল তো আমি একটু একটু ভয় পেয়ে সেতু আপুর পিছে পিছে দৌড়াচ্ছিলাম।
সেতু আপু সামনে ছিল আর আমি তার পিছে পিছে দৌড়াচ্ছিলাম যখন আমরা দুজন প্রায় আম গাছের কাছে চলে আসলাম তখন সেতু আপু দৌড়ে গিয়ে আম গাছের নিচের দিকে একটি ডাল ধরে ঝুলতে গিয়েছে আর তখনই বেশ বড় একটি ডাল ভেঙে পড়ে গিয়েছে। এই দৃশ্য দেখে আমি পেছন থেকে জোরে জোরে হাসতে শুরু করেছি আর তার বিপরীত দিক থেকে একজন মহিলা এই দৃশ্য দেখে আমাদের দিকে ছুটে আসছিল। চিৎকার করে মহিলাটি আমাদেরকে বকা দিচ্ছিল আর দাঁড়াতে বলছিল আমরা তো দুজনই অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সেতু আপু উঠে দিলে দৌড় আমি তার পিছনে দৌড়াচ্ছি। আমি দৌড়াচ্ছি আর পেছনের দিকে তাকাচ্ছি যে মহিলাটি আমাদের পেছনে আছে নাকি। অনেক সময় দৌড়ানোর পরে দেখলাম মহিলাটি এসে আমের ডালটি ধরে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে আর আমাদেরকে রাগ করছে। মহিলাটি যে চিৎকার করে আমাদেরকে বকা দিচ্ছিল সেটা আমরা প্রায় মাঝ মাঠে এসেও শুনতে পারছিলাম। এখনো সেতু আপু আমাদের বাড়িতে আসলে বা আমি তাকে ফোন দিলে সেই কথাগুলো মনে পড়ে আর আমরা সেই কথাগুলো আবার মনে পড়ে হাসাহাসি করি।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
https://x.com/KaziRai39057271/status/1703663320606322949?s=20
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
গল্পটি পড়ার মাঝ পথেই বুঝে গিয়েছি আপনার সেতু আপু গাছের ডালে ঝুলতে গিয়ে ভেঙে ফেলেছিল। এই ধরনের ঘটনা ছোটবেলা অনেক ঘটেছে আমার সাথেও অনেক দুষ্টু ছিলাম। সেজন্য মানুষের কাছে অনেক দৌড়ানি খেয়েছি ভালো লাগলো যখন মহিলাটি পিছু নিয়েছিল সেই মুহূর্তে ভয় অনেক কাজ করে সেই সুন্দর মুহূর্ত হারিয়ে ফেলেছি।
হা হা আসলেই ভাই শেষ দিকের বিষয়টা হাস্যকর ছিল। ছোটবেলার এই স্মৃতিগুলো কখনো ভুলে যাওয়া যায় না। ঐসময় যেটা নিয়ে ভয় পেয়েছিলেন এখন সেটা হাস্যকর মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে আপনার ছোটবেলার স্মৃতিটা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
ভাই আপনার ছোটবেলার মজার গল্পটি সত্যি অনেক মজার। ছোটবেলায় একটি বড় বোন অথবা ভাই থাকে যাদের পিছন পিছন আমরা বেশিরভাগ সময়ই ঘুরঘুর করি বা তাদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করতাম। যেমন আপনি আপনার সেতু আপুর পিছন পিছন ঘুরঘুর করতেন। তবে আপনার আপু দৌড়াতে দৌড়াতে আম গাছের নিচে গিয়ে ডাল ধরে ঝুলতে গিয়ে ভেঙে পড়ে গিয়েছে সত্যি ব্যাপারটা বেশ মজার। ধন্যবাদ ভাই এরকম ছোটবেলার একটি মজার গল্প আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
আপনার ছোট বেলার মজার ঘটনা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।আপনার সেতু আপু ডাল ধরে ঝুলতে গিয়ে ডাল ভেঙে পড়ে যায়।আসলে কিছু কিছু বিষয় আছে যা আমাদের মাথায় অনেকদিন থেকে যায়।আর সেই বিষয় গুলো হঠাৎ মনে পড়লে হাসি পায়।ভালো লেগেছে ভাইয়া পোস্টটি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।