আখের গুড় || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৩রা অগ্রহায়ণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | হেমন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
এর আগে আমি আপনাদের সাথে আখের রস খাওয়ার বিষয়টি শেয়ার করেছিলাম আর আজকে আমি আপনাদের সাথে আখের গরম গুড় খাওয়ার বিষয়টি শেয়ার করার জন্য আজকে হাজির হয়েছি। আখের রস খেতে গেলে সকালের দিকে যেতে হয় আর যদি আপনি আখের গরম গু খেতে চান তাহলে আপনাকে দুপুরের পরে অথবা সন্ধ্যার পরবর্তী সময়ে যেতে হবে তাহলে আখের গরম গুড় খেতে পারবেন। শুনেছি আখের গুড় হয়ে যাওয়ার আগে তার মধ্যে আলু সিদ্ধ করে খেলে সেটাও নাকি অনেক মজা লাগে তবে আমি কখনো খাইনি। ভাবছি একদিন গিয়ে এরকম আলু সিদ্ধ করে খেয়ে ট্রাই করব তবে পুরোপুরি শীতের আগমন ঘটলেই ট্রাই করবো ভাবছি। তাছাড়া শীতের ছুটিতে প্রায় সবাই গ্রামের বাড়িতে আসবে আর সবাই মিলে একসাথে গিয়ে ট্রাই করবো। যদি আলু সিদ্ধ করে খাই তাহলে সেটা অবশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাই হোক এখন আর কথা না বাড়িয়ে তাহলে মূল পর্ব নিয়ে আলোচনা করা যাক। আগের দিন গিয়ে আখের রস খেয়েছিলাম আর তখনই আখের গুড় খাওয়ার দাওয়াত পেলাম তো কাজের ব্যস্ততার কারণে সে দিনে আর যাওয়া হয়নি ফোন নাম্বার দিয়ে এসেছিলাম যেন আমাকে সময়মতো ফোন করে বলে দেয় কোন সময় আসতে হবে।
ঘড়ির কাটায় তখন বারোটা বাজে আমাকে ফোন দিয়ে বলা হলো আমি যেন দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাই কেননা আমি আগেই বলে রেখেছিলাম আখের গুড় নামানোর মুহূর্তটা যেন আমি দেখতে পারি। যেহেতু আখের রস খাওয়ার বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করেছি তাই আখের গুড় খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পোস্ট না করলে কেমন হয়ে যায় অনেকের কাছেই তো এটা নতুন লাগবে যদিও আগের পোস্টে আখের রস খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই তাদের অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেছে। যাই হোক ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি বাইক নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেলাম সাথে ছোট্ট একটি কলসি নিয়ে যার মধ্যে গরম গুড় নিয়ে আসবো। গিয়ে দেখলাম আখের গুড় চুলা থেকে নামিয়ে ফেলার প্রস্তুতি চলছে। আখের গুড় চুলা থেকে নামানোর পরে সেটা নেড়ে নেড়ে কিছুটা ঠান্ডা করা হলো। কিছু সময় পরে সামান্য পরিমাণে একটু চিনি দিয়ে সেটাকে গরম কড়াইয়ের উপরেই গুলিয়ে আখের গুড়ের সাথে মিশিয়ে দেয়া হলো। আমি জিজ্ঞেস করার পরে জানতে পারলাম আসলে এই সামান্য পরিমাণে চিনি দেওয়ার কারণে আখের গুড়টা নাকি ভালোভাবে জমে যাবে। যাই হোক আমি সেই কার্যপ্রণালী গুলোর ছবি তুলতে ছিলাম আর অপেক্ষায় ছিলাম কখন এই গরম গুড় খেতে পারব। আখের গুড় কিছু সময় নাড়ার পরে ঠান্ডা হয়ে গেল আগের চেয়ে একটু তখন আলাদা পাত্রে ঢেলে রাখার কথা বলল। আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় এই পাত্রকে ভরণ বলা হয়।
গরম আখের গুড়ের কড়াই চুলা থেকে নামিয়ে সেটা ঠান্ডা করে হালকা চিনি মিশ্রণ করে ভরণের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হল। প্রথমে ভরন টিকে একটু নিচু জায়গায় রাখা হলো যদিও আগে থেকেই সেখানে কিছুটা মাটি খুঁড়ে গর্ত করে রাখা হয়েছে যাতে সেটা একটু নিচে রেখে কড়াই থেকে গরম গুড় তার মধ্যে ঢেলে দেওয়া যায়। দুজন মিলে কড়াইয়ের সমস্ত গরমগুড় সেই ভরণের মধ্য ঢেলে দেওয়া হল। তারপরে আবার কলার গাছের একটা অংশ দিয়ে কড়াই এর গরম অংশ থেকে লেগে থাকা গরম গুড় টুকু নিয়ে নেওয়া হল আর তারপর কড়াই আবার চুলার উপর বসিয়ে দেওয়া হল। যখনই চুলা আলগা করা হয়েছিল তখনই দূর থেকে চুলার তাপ পাওয়া যাচ্ছিল তাহলে বুঝুন কি পরিমানে তাপ দেওয়া হয়। যাইহোক যখনই কড়াইটি আবার চুলায় বসিয়ে দেয়া হলো ঠিক তখনই আবার কিছু আখের রস সেখানে দিয়ে দেয়া হলো তা না হলে কড়াই নাকি নষ্ট হয়ে যায়। অপেক্ষা করছিলাম কখন এই ছোট্ট কলসির মধ্যে কিছু গরম গুড় নিব আর সেটা টেস্ট করব।
দুজন মিলে ভরণ ধরে সাইডে রেখে দেওয়া হল আর তারা চুলার মধ্যে আবার কিছু জ্বালানি দিয়ে চুলা জ্বালিয়ে দিয়ে দিল সেই সাথে গরম কড়াই এর মধ্যে আখের রস গুলো দিতে থাকলো। যদিও আমাকে বলেছিল কিছু সময় সেখানে অপেক্ষা করতে কেননা আখের গুড়টাও একটু ঠান্ডা হবে আর তাদের কাজটাও একটু এগিয়ে যাবে। কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে আমি আবার সাইডে লেগে থাকা গরম গুড় আঙ্গুল দিয়ে একটু টেস্ট করলাম বেশ ভালই লাগতেছিল প্রথম যখন মুখে দিলাম তখন তো মনে হচ্ছিল আমি এই গুড়ের টেস্ট নিতে নিতে স্বর্গে চলে যাব হা হা হা। যাই হোক কিছু সময় পরে তারা তাদের কাজ কমপ্লিট করে আমার ছোট কলসির মধ্যে গুড় দিয়ে দিল। তারা তখন সেখান থেকে বলে দিল যে এই গরমগুড় যেন দ্রুত বাড়িতে গিয়ে মুড়ির সাথে খাই তাহলে আরো বেশি মজা পাব। বাইকের সাথে কুলসি বেঁধে নিয়ে আমি সোজা বাড়িতে চলে আসলাম আর আম্মুকে কলসিটা হাতে দেওয়ার পরেই আম্মু আলাদা আলাদা প্লেটে গরম গুড় দিয়ে দিল। আমিও ছবিটা শেয়ার করবো বলে প্রথমে প্লেটে পরিবেশন করা গরম গুড়ের ছবি তুললাম তারপর আবার সেই গরম গুড়ের উপরে যখন মুড়ি দিলাম তখন সেটার ছবি তুললাম। দেরি না করে সোজা খাওয়া শুরু করে দিলাম যদিও কারো গরম গুড় খাওয়ার ইচ্ছা করে তাহলে আমাদের এলাকায় আসতে পারেন। তবে আমাদের আখের চাষ নেই তারপরও আমি নিঃসন্দেহে তাকে বেশ ভালোভাবে আপ্যায়ন করতে পারব হা হা হা।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | নভেম্বর,২০২৩ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
![Banner.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmV44ipDFZ9PNUMtyufYoaoMvPW4QZqAZUvWi9TkCh9NWx/Banner.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আজকে প্রথম দেখলাম কীভাবে আখের রস থেকে গুড় তৈরি করা হয়, এর আগে আমি কখনো দেখিনি। সুগার মিলে চিনি তৈরি করা দেখছিলাম কিন্তু আজ আখের রস থেকে গুড় তৈরি করার কিছু ফটোগ্রাফী আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো।
আখের রস এবং গুড় খাওয়ার দরকার। তাহলে কবে আসব বলেন ভাই। একসময় আখের রস থেকে গুড় এই প্রসেস অনেক দেখেছি। তবে আমাদের এলাকায় এখন এটা বন্ধ বলা যায়। আখের গুড় নামানোর প্রক্রিয়া টা বেশ দারুণ। বেশ চমৎকার লাগল আপনার পোস্ট টা ভাই। তবে আশাকরি শীতের ছুটিতে সবাই বাড়ি আসলে একসঙ্গে আলু পুড়িয়ে খেতে পারবেন।
এর আগে আখের রস খাওয়ার পোস্ট টি দেখেছিলাম। আজকে আখের গুড় খাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আপনাদেরই ভালো সবকিছু একদম চোখের সামনে থেকে দেখে খেতে পারেন। আমার তো এসব চোখের সামনে দেখা দূরের কথা কবে খেয়েছি মনেও নেই। আখের গুড় তৈরির প্রসেস টা দেখে ভালো লাগলো। গুড়ের টেস্ট নিতে গিয়ে স্বর্গে চলে গেলে তো আমাদের আর এসব দেখাতে পারতেন না। বুঝে শুনে খাওয়া শুরু করবেন তো নাকি 😆
খুবই দারুন মুহুর্ত এটি এবছর এখনো আখের রস খেতে যায়নি।দেখি সামনে সপ্তাহে যাব।খুব সুন্দর হয়েছে আপনার পোস্ট টা দারুন ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।শুভ কামনা রইলো।
https://x.com/KaziRai39057271/status/1725680244869447911?s=20
গরম গরম আখের গুড় মুচমুচে মুড়ি দিয়ে খেতে সত্যিই অসাধারণ লাগে আমার তো খুবই প্রিয়। যদিও এ বছর এখনো খাওয়া হয়নি।
আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি এবং কথাগুলো পড়ে আমারও খুব লোভ হচ্ছে গরম গুড় মুড়ি খাওয়ার জন্য।
একা একা খেলে দাওয়াত তো দিলে না আমি যেদিন খাব অবশ্যই তোমাকে দাওয়াত দিব।
বন্ধু গরম গরম আখের গুড় খেতে অনেক মজা তাই না? এবছর অনেক কিছু মিস করলাম। আসলে ভাগ্যে না থাকলে যা হয়। আখের রস খাওয়ার পোস্ট টা দারুন ছিল। গুড় খাওয়ার পোস্ট দেখে তো গরম গুড় খাওয়ার প্রতি আগ্রহ জাগল। কিন্তু কিছুদিন ওয়েট করতে হবে বাড়ি গিয়ে খাব আবার একসাথে।
খুবই ভালো লাগলো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে আপনি শেয়ার করেছেন দেখে। যেখানে কিভাবে আখের গুড় তৈরি করতে হয়, কিভাবে কৃষক ভাইরা তৈরি করে। সে সমস্ত কার্যক্রমের অসাধারণ ফটোগ্রাফি করে শেয়ার করেছেন এই পোস্টে। আর এই থেকে দেখার সৌভাগ্য হলো আমার।
এর আগে আখের রস খাওয়ার মুহূর্তটা আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন আজ আবার আখের গুড় খাওয়ার মুহূর্তটা তুলে ধরছেন দেখছি। দুপুর বেলা আখের গুড় খেতে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে আর সেই মুহূর্তটা যদি সন্ধ্যেবেলা হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। যাইহোক আখের গুড় প্রস্তুত করার সময় আপনি অবশ্যই সেখানে সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আর মুড়ি দিয়ে আখের গুড় কতটা সুস্বাদু লাগে উফফফ। জিভে জল এসে গেল। যাইহোক আখের গুড় খাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।