ভূতুড়ে গল্প|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -১৮ই শ্রাবণ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | বুধবার | বর্ষাকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



png_20230802_221226_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



আজকে সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরেই দেখলাম আকাশটা বেশ মেঘলা হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামবে। প্রথমে মনে হল এমন মেঘ তো ইদানিং প্রতিদিনই হচ্ছে কিন্তু বৃষ্টির দেখা তো একটুও পাচ্ছিনা হয়তো একটু পরেই আকাশে রোদ উঠবে। তবে সকালবেলা হুট করেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হল বুঝতে পারলাম হয়তো আজকের দিনটা বেশ ভালো কাটবে কারণ সকালটা বৃষ্টিতে শুরু হয়েছে আর আকাশে চারদিকে মেঘ ঘনিয়ে আসছে ভাবলাম হয়তো আজকে সারাদিনই বৃষ্টি হবে আর খাল বিল সব বৃষ্টির পানিতে একদম সাদা হয়ে যাবে কিন্তু কিছু সময় বৃষ্টি হওয়ার পরে আর তেমন বৃষ্টি হয়নি তবে পরিবেশটা অবশ্য ঠান্ডা ছিল। জানতে পারলাম আমাদের গ্রাম থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছে হয়তো সেদিকে বৃষ্টি হয়েছে বলেই আমাদের এলাকাও ঠান্ডা হয়েছে অনেকটাই আবহাওয়াটা। আবহাওয়া ঠান্ডা হওয়ার কথা বলছি এই জন্যই কারণ তিন থেকে চার দিন এত পরিমানে গরম পড়েছে যার কারণ ঠিকমতো ঘুমোতে পারিনি তবে আজকে সারাদিন আবহাওয়া টা খুবই ঠান্ডা ছিল আবার বিদ্যুৎ ছিল তাই বেশ ভালোই ঘুম হয়েছে সারাদিন। মনে হচ্ছিল এই তিন থেকে চার দিনের ঘুম যেন আজকে একবারে কভার করে নিব। যদিও সকালবেলা ভেবেছিলাম যদি ভরপুর বৃষ্টি হয় তাহলে অনেকদিন পরে কাথামোড়া দিয়ে ঘুমাবো কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি। যাইহোক এখন তাহলে মূল পর্ব নিয়ে আলোচনা শুরু করি। প্রতিটা মানুষের জীবনেই কিছু কিছু বাস্তব গল্প থাকে যেগুলো অনেকটাই গল্পের মত।

এখন যে গল্পটি শেয়ার করতে যাচ্ছি সেটা আজ থেকে ১৫-১৬ বছর আগের ঘটনা। তবে অনেকেই ভাবতে পারেন ভুতুড়ে গল্প যেহেতু সেহেতু নিজে বানিয়ে লিখেছি আসলে তেমনটা না এটা একটা বাস্তব ঘটনা। আমি তখন খুবই ছোট। গল্পটা অবশ্য আমার এখনো মোটামুটি মনে আছে তবে সেই ছোট্ট বয়স থেকে এখনো মনে রাখার প্রধান কারণ হলো এটা ভুতের গল্প আর ছোট বয়স থেকেই ভুতুড়ে গল্পগুলো ছেলেমেয়েরা সহজে মনে রাখতে পারে কারণ সে গল্প থেকে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। আমার ছোট মামার বিয়ে উপলক্ষে নানাবাড়িতে অনেক লোকজন তখন তো মামারা সবাই একসাথে ছিল যার কারণে অনেক বেশি আনন্দ হতো যদিও এখন মামারা সবাই আলাদা হয়ে গিয়েছে বলে নানা বাড়িতে আর এখন তেমন মজা লাগেনা। যাই হোক মামার বিয়ে উপলক্ষে নানা বাড়ির সবাই বাড়িতে ফিরে আসে। বিয়ের আয়োজন চলছিল অনেক জমজমাট ভাবে কারণ ছোট মামার বিয়ে বলে কথা। বিয়ের আয়োজনে বিয়ে মোটামুটি সব ঠিকঠাক ভাবেই সম্পূর্ণ হলো। যেদিনে বিয়ে হল সেদিন নানা বাড়িতে সবাই একসাথে বসে গল্প করছিল আর আমি তখন বয়সে অনেক ছোট তাই একটু রাত হওয়ার পরেই আব্বুর কোলের উপরেই শুয়ে আছি। বিয়ের পরের দিন যেহেতু বরের বাড়িতে অনুষ্ঠান হয় আর সেই অনুষ্ঠান নিয়েই আব্বু সহ আমার কয়েকজন মামা আর খালু মিলে পরের দিনের অনুষ্ঠানের প্ল্যানিং করছিল।



gost-6525810_1280.png

Source



অনুষ্ঠানে মেয়ে পক্ষ থেকে অর্থাৎ আমার মামীদের বাড়ি থেকে যারা আসবে তাদেরকে কিভাবে আপ্যায়ন করা হবে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছিল। সেই বিষয়টা আলোচনা করার পরে আমার খালু নতুন একটি টপিক তুলে ধরল। আমার আব্বুর কাছে জিজ্ঞেস করল আচ্ছা ভাইয়া আপনাদের বাড়ির পেছনে কি কোন সমস্যা আছে?? আব্বু তখন খালুকে জিজ্ঞাসা করল কি রকম সমস্যার কথা বলছ তুমি একটু খুলে বলো। খালু তখন পুরো বিষয়টা খুলে বলল। তিনি বললেন কালকে মাঝরাতে আমি হাটতে হাঁটতে আপনাদের বাড়ি পার হয়ে যে ফাঁকা জায়গায় গেলাম সেখানে গিয়ে আমার চোখে কিছু অদ্ভুত দৃশ্য ধরা পড়েছে যদিও আমি নিজেও অনেক ভয় পেয়েছি। বিয়ের আগের দিন রাত্রে নানা বাড়িতে অনেক নাচ গান চলছিল আর গরমের সময় বিয়ে হয়েছিল বলে খালু হাঁটতে হাঁটতে আমাদের বাড়ি পার হয়ে যে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে গিয়ে ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করছিল। সেখানে গিয়ে খালু দেখতে পায় মাঠের মধ্যে দুইটা মহিষ লড়াই করছে। আর জমিতে থাকা ফসল গুলো খেয়ে ফেলছে। হঠাৎ দেখতে পেল একটা বড় আলো এসে মহিষ দুইটাকে তাড়া করছে। আর মহিষ দুইটা খালুর দিকেই এগিয়ে আসছে। খালু তখন বিষয়টা বুঝতে পেরে সে জায়গা ত্যাগ করে দ্রুত বাড়িতে ফিরে আসে। আসলে বলা হয়নি আমার নানা বাড়ি আর আমাদের বাড়ি পাশাপাশি। আমাদের বাড়ি থেকে নানা বাড়িতে হেঁটে যেতে পাঁচ মিনিটেরও কম সময় লাগে।



flower-7658558_1280.jpg

Source



মাঝরাতে তখন খালু রুমে এসে একবারে ঘুমিয়ে পড়েছে যদিও তখন কারো সাথে কিছুই শেয়ার করেনি। আর সকাল থেকেই বিয়ের আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে ব্যস্ততার কারণে আর কারো কাছে বলা হয়ে ওঠেনি তাই সেই সময়ে খালু আব্বুর কাছে এই কথাটি বলল। খালু যখন কথাগুলো বলছিল তখন আমি তো অনেক ভয় পাচ্ছিলাম আর আব্বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলাম। যদিও আব্বু ভেবেছিল আমি হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছি এসব কথা কিছুই শুনতে পারছি না। খালু পুরো বিষয়টি বলার পরে আব্বু আবার বলতে শুরু করল যে আমাদের বাড়ির পিছন সাইডে এরকম অনেক কিছুই নাকি ঘটে তবে আব্বুর অনেক সাহস সে বেশ কয়েকবার দেখেছে কিন্তু তেমন ভয় পায়নি। রাতের বেলায় বাজার থেকে আসার সময় এমন অনেক দৃশ্যই নাকি আব্বুর চোখে পড়েছে তবে তখন বিদ্যুতের প্রচন্ড লোডশেডিং হতো সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ থাকতো না আর আমাদের বাড়ির আশপাশে শুধু দুইটা বাড়ি ছিল তাই ফাঁকা জায়গাগুলোতে এ ধরনের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো চোখে পরতো মাঝে মাঝে। তবে মহিষের মত যে পশুগুলো খালু দেখেছিল যে তারা ফসল খেয়ে ফেলছে আসলে সকালবেলা গিয়েছে জায়গাটি একদম ঠিকঠাক দেখতে পেলেন। রাতে মনে হচ্ছিল সেখানে দুইটা মহিষ মারামারি করছে আর ফসল খাচ্ছে আসলে সকালবেলা তেমনটা কিছুই লক্ষ্য করতে পারেননি তখন তিনি বুঝতে পারলেন আসলে রাতের বেলায় সে যেটা দেখেছে সেটা ভয়ংকর কিছু ছিল। আর সে তখন থেকেই বুঝতে পারে এই জায়গাটা মোটেও সুবিধার না আর এখানে এত রাত করে একা একা আসা মোটেও ঠিক না। যদিও আব্বু তখন বলেছিল মহিষের রূপ ধরে যারা থাকে তারা গদান আসলে এই সম্পর্কে বড় হয়ে ইউটিউবে অনেক কিছুই সার্চ করেছি তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি জিন সম্প্রদায় এরকম বিভিন্ন ধরনের রূপ ধরে মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।

আসলে আমি কখনো এমন পরিস্থিতির সাথে সম্মুখীন হয়নি তবে এখন হয়তো চারিদিকে বেশি লাইটিং থাকে ঘনবসতি সহ জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই বিষয়গুলো এখন আর আগের মত দেখা যায় না। তবে এরকম অনেক ঘটনা আমি আমার দাদীর মুখে শুনেছি। আবার অন্যদিন এমন একটি ঘটনা আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করব।





🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

আপনার খালু তো দেখছি একেবারে ভয়ংকর কিছু দেখেছে। আসলে আগে যখন লাইট বেশি ছিল না আশেপাশে, আর ঘরবাড়ি ও তেমন একটা ছিল না, যার কারণে এরকম ঘটনাগুলো বেশি দেখা যেত। আপনার আব্বু যেহেতু সাহসী ছিল তাইতো তিনি বেশ কয়েকবার দেখার পরেও ভয় পাননি। আপনার খালু তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে ফিরে এসেছেন এটাই ভালো করেছেন। আগে কিন্তু এরকম ঘটনা অনেক বেশি ঘটতো, আর দাদুদের কাছে শুনতে খুব ভালো লাগতো।

 last year 

হ্যাঁ আমি এখনো আমার দাদি কাছে থেকে এমন ভুতুড়ে সব গল্প শোনার চেষ্টা করি।

 last year 

গ্রামের দিকে কিন্তু এরকম ভুতুড়ে ঘটনাগুলো অনেক বেশি দেখা যেত। এটা সত্যি যে এখন লোক সংখ্যা বাড়ার কারণে এবং প্রত্যেকটা জায়গায় ঘর বাড়ি হওয়ার কারণে এরকম ঘটনাগুলো দেখা যায় না। তবে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে বাস্তবিক এরকম ভুতুড়ে একটা ঘটনার কথা শুনে আমি তো অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছি। এমনিতে ঘটনাগুলো শুনতে ভালো লাগে তবে মাঝে মাঝে ভয়ও করে। আপনি এত সুন্দর করে এটি শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লেগেছে।

 last year 

হ্যাঁ একসময় এমন ঘটনা প্রায় ঘটতো তবে এখন আর তেমন শোনা যায় না।

 last year 

এটা ঠিক বলছেন ভাই আপনি। একটা সময় শোনা যেত।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44