চড়ে পিকনিক। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৪ঠা ফাল্গুন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বসন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
গত বছর আমরা পদ্মা নদীর চড়ে পিকনিক করেছিলাম তবে সেটা নানা পোষ্টের মাঝে গ্যাপ পড়ে গিয়েছিল যার কারণে তখন শেয়ার করা হয়নি। আজকের সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে এখন পোস্ট শেয়ার করতে এসে সিলেক্ট করতে পারছিলাম না আসলে কি পোস্ট করব। যদিও আজকে দুপুরবেলায় রাহুলের সাথে কথা বলছিলাম আর চড়ে পিকনিক করার কথা বলছিলাম তাই হঠাৎ করে মনে আসলো গত বছর তো পদ্মা নদীর চরে পিকনিক করেছিলাম সেটা শেয়ার করা হয়নি তাই ভাবলাম এখন সেটা নিয়েই একটি পোস্ট শেয়ার করি। অনেকেই হয়তো জানেন আমরা যে গ্রুপ আছি তারা অনেক ঘোরাঘুরি করি সেই সাথে টুকটাক পিকনিকে করা হয় তবে আগের চেয়ে এখন খুব কমই পিকনিক করা হয়। আজকে রাহুল ও সেটাই বলছিল আগে তো অনেক পিকনিক করতাম কিন্তু এখন আর সেরকম পিকনিক করা হয় না। যাই হোক এখন মূল প্রসঙ্গে আসি, পিকনিকের আগে থেকেই আমাদের একটা প্রস্তুতি থাকে, তো যেদিন পিকনিক করার কথা ছিল সেদিন সকাল থেকে আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম। গ্রুপে সকালবেলায় সবাইকে বলে দেয়া হয়েছিল আর দুপুর ২ টার সময় বাসা থেকে বের হওয়ার কথা ছিল। তবে সব প্রোগ্রাম এই আমি নিজের ব্যস্ততার কারণে সঠিক সময়ে বের হতে পারি না তাই বরাবরের মতো আমি লেট করেই বের হয়েছিলাম।
বাজারে এসে আমি ফোন দিয়ে জানতে পারলাম তারা পিকনিক স্পটে পৌছে গিয়েছে। এখন পদ্মা নদীর এরিয়া তো অনেক বড় কোন এলাকায় গিয়েছে সেটা আমি জানিনা আর তারা বললেও আমি সেই এলাকায় যেতে পারবো না কারণ সেই এলাকাটা আমার কাছে নতুন। বন্ধু রিপন তখনো বাড়িতে ছিল আর তার বাড়ি থেকে কড়াই নিয়ে সেখানে যেতে হবে তাই ফোনে যোগাযোগ করে আমি রিপনের বাড়ির সামনে গেলাম আর রিপনের বাড়ি থেকে কড়াই নিয়ে সোজা পিকনিক স্পটে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম। মূলত এলাকাটা রিপন ভালোমতো চিনে এর জন্য রিপন যেভাবে যেতে বলল সেই অনুযায়ী আমি পিকনিক স্পটে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখলাম পিকনিকের সব সরঞ্জামসহ রান্নাবান্নার টুকটাক প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই। তবে খুব বেশি অ্যারেঞ্জমেন্ট নয় কারণ মেনুতে থাকবে শুধু খিচুড়ি ভাত আর শুকনা মরিচের আলু ভর্তা। যাইহোক মজার বিষয় হচ্ছে আমরা যখন বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন বাইকের লুকিং গ্লাসে দেখলাম পেছনে ধুলায় একদম অন্ধকার। পরবর্তীতে সেই ধুলায় অন্ধকারের কিছু ছবিও তুলেছিলাম যেগুলো উপরে শেয়ার করেছি।
আমরা যেখানে রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম জায়গাটা একটু খোলামেলা তাই বাতাসে চুলার আগুনটা সাইডে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ করেই আইডিয়া আসলো বাইকগুলো সামনে দিয়ে রাখতে হবে আর কিছু কলার পাতা দিয়ে জায়গাটা ঘিরে ফেলতে হবে যাতে বাতাসে চুলার আগুনের তাপ বাইরে চলে না যায়। মূলত আমরা যেখানে পিকনিক করছিলাম তার পেছন সাইডে অনেক বড় কলার বাগান ছিল তাই কলার পাতা সংগ্রহ করতে কোন কষ্টই হচ্ছিল না। পিকনিকের শুরুতে যে যার মত পারছিল টুকটাক কাজে সহযোগিতা করছিল তবে সাগর ভাই রান্নাবান্নায় এক্সপার্ট তাই তাকেই রান্নার পুরো দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আর সোহাগ ভাই তো প্রতি পিকনিকে যেরকম চুলার জ্বাল দেওয়া সে একই কাজ করছিল। আমরা সব প্রস্তুতি নিতেই হঠাৎ লক্ষ করলাম একটা মহিষের গাড়িতে কিছু ফসল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেগুলো মূলত সরিষা গাছ ছিল। অনেক আগে থেকেই তো অভ্যেস আছে কিছু দেখলেই ছবি তোলা তাই মিস না করে সেই মহিষের গাড়িরও ছবি তুলেছিলাম। আমরা সেখানে পিকনিক করছিলাম আর সেটার চেঁচামেচি শুনে পাশের কলার বাগান থেকে একজন চাচা বেরিয়ে আসলো আর আমাদেরকে বলছিল তোমরা এখানে পিকনিক করছ নাকি?? তো আমাদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠল আরে দাদা তুমি কোথা থেকে আসলে?? যেহেতু আমাদের মাঝ থেকে একজনের দাদা সম্পর্ক হয়েছে তাই আমরা সবাই তাকে দাদা বলে ডাকতে থাকলাম আর সেও আমাদের সাথে বেশ ভালোভাবে মিশতে থাকল। মজার বিষয় হচ্ছে পেঁয়াজের শর্ট পড়েছিল আর কলার বাগানের মাঝখানে দাদার ছোট্ট একটি ঘর আছে সেখানে পেঁয়াজ ছিল আর দাদা আমাদেরকে ডেকে নিয়ে বলল যতগুলো পেঁয়াজ লাগে এখান থেকে নিয়ে যাও। আমরা আবার দাদার কাছ থেকে পেঁয়াজ নিয়ে রান্না করছিলাম আর দাদাও আমাদের পাশেই বসে বসে আমাদের সাথে গল্প করছিল। শেষ বিকেলের মুহূর্তে এরকম পদ্মা নদীর পাড়ে ফাঁকা জায়গায় পিকনিক করার যে একটা অনুভূতি সেটা আসলে আমি বলে প্রকাশ করতে পারবো না শুধু এমন অনুভূতিগুলো উপভোগ করা যায়।
রান্না শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে আসলো আর চারিদিকে শেয়ালের ডাক কেমন যেন একটা নিস্তব্ধ পরিবেশ আর আমরা সবাই গরম খিচুড়ির ঘ্রাণ পাচ্ছি সেই সাথে শুকনা মরিচ গুলো যখন সরিষার তেলে দিয়ে কড়াইয়ের মধ্য ভাজি করা হচ্ছিল তখন ভিন্ন রকম একটা ঘ্রাণ আসছিল। যদিও আলু ভর্তার সাথে আলাদা শুকনা মরিচের ব্যবস্থা ছিল। উপরে যে দাদার কথা বলছিলাম তিনি বাড়িতে চলে গেলেন আর আমরা তাকে রিকোয়েস্ট করার সময় আমাদের কে বললেন তোমাদের দাদী আমার জন্য খাবার রান্না করে রেখেছে সেটা যদি না খাই তাহলে তোমার দাদী আমার উপর রাগ করবে এই বলে সে হাসতে হাসতে চলে গেল। আমরা কিছু কলার পাতা কেটে নিয়ে এসে সেটা টিউবয়েল থেকে পানি নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিলাম আর তার উপরে খিচুড়ি গুলো ঢেলে দিয়ে খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তত সময়ে সাগর ভাই শুকনো মরিচ গুলো তেলে ভাজি করে আলু ভর্তা করে ফেলল আর সেগুলো আলাদা আলাদা বল আকারে সবাইকে দিয়ে দেওয়া হলো। আহ যখন খিচুড়ি ভাত আর আলু ভর্তা একসাথে মুখে দিলাম কি যে একটা অনুভূতি ছিল সেই সাথে লোভনীয় একটা স্বাদ। মূলত সেই সময় পিকনিকের আসল মজাটা ফিল করছিলাম। এখন কথা হচ্ছে এই পোস্ট পড়ার পরে যদি কারো মনে এই অনুভূতিটা জাগ্রত হয় তাহলে সোজা আমাদের এলাকায় চলে আসুন খুব শীঘ্রই আমাদের চড়ে নতুন একটি পিকনিকের প্রোগ্রাম আছে চাইলে আপনারা যে কেউ আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন অনেক মজা হবে।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | ফেব্রুয়ারি,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আমার শ্বশুরবাড়ি এলাকাতে নদী আছে। মাঝেমধ্যে মাঝরাতে সেখান থেকে গানের আওয়াজ ভেসে আসত।পরে একদিন জানতে পারি নদীর পাড়ে কিংবা চড়ে মাঝে মধ্যেই পিকনিক করা হয়। আপনার পিকনিকের অনুভূতি করে বেশ ভালো লাগলো। মাঝ রাতে খিচুড়ি এবং আলু ভর্তার কম্বিনেশন অসাধারণ। যাইহোক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
মাঝে মাঝে এমন হয় যে ছবি তুলে রাখে কিন্তু সময়ের অভাবে হয়তো বা কোন একটা কারণে পোস্ট করা হয়ে ওঠে না। মাঠে পিকনিক করার মাঝে যে আনন্দটা রয়েছে সেটা অন্য কোথাও নেই। পদ্মা নদীর কাছে দারুন একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন যদিও এই মুহূর্তটা আমি মিস করে গিয়েছিলাম তবে যদি কখনো সময় হয় এরকম মুহূর্ত আর কখনো মিস করতে চাই না। খিচুড়ি আলু ভর্তা বোঝাই যাচ্ছে পেট পুড়ে খেয়েছিলেন সেদিন। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে গত বছর এই দিনটি আমাদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই বছর এরকম পিকনিক করার সময় বাড়িতে ছিল । আসলে সেটা হয়তো পূরণ হবে সেই দিনগুলো খুবই মিস করি। পোস্টের মাধ্যমে সেই দিনের পুনরাবৃত্তি হলো। আশা করি সবাই সম্মিলিতভাবে আবার পিকনিক করব খুবই ভালো মুহূর্ত কাটবে।
https://x.com/KaziRai39057271/status/1759388714562879578?s=20
ভাইয়া গত শুক্রবারে আমিও পদ্মার চরে পিকনিক করে এসেছি। দারুন মজা হয়েছে। বন্ধুরা সবাই এক থাকলে মরভূমিতেও পিকনিক করে মজা পাওয়া যায়। আমরাও জানিনা আমরা যে এলাকায় গিয়েছি সেটা কোন জেলার আওতায় ছিল। যায়হোক আপনার অনুভূতি দারুন ছিল। ধন্যবাদ।