ছোট গল্প : রাজকুমারী অমর অম্বা (পর্ব-০১) || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৮ই শ্রাবণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বর্ষাকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
এক দেশে এক রাজা ছিল আর রাজা রানী একসাথে রাজ্য ভালোই পরিচালনা করছিল। রাজা একটি পুত্র সন্তান সর্বদাই কামনা করত কিন্তু রাণীর হল কন্যা সন্তান। রাজা তার কন্যা সন্তানের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে সেই কন্যা সন্তানকে জীবিত কবর দিয়ে এলো। রানী রাজাকে কিছুতে বোঝাতে পারল না যে এটা সৃষ্টিকর্তার নিয়ামত। এভাবে রাজার তিনটি কন্যা সন্তান হল এবং রাজা তিনটি কন্যা সন্তানকেই হত্যা করল। রাজা রানী কারো মনেই শান্তি ছিল না আবার কিছুদিন পরে রানীর আরও একটি সন্তান হল, এবার রানী রাজাকে খবর পাঠালেন যে তার কন্যা সন্তান নয় পুত্র সন্তান হয়েছে। রাজা এবার এই খুশির সংবাদ শুনে হাসতে শুরু করলেন আর ঢাকঢোল পিটিয়ে রাজ্যের সব মানুষকে জানিয়ে দিলেন যে সে পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছেন। রাজ্যের সমস্ত লোকজনকে তার রাজপ্রাসাদে আমন্ত্রণ করলেন এবং সবাইকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করলেন।
সবাই খুব খুশি হল রানী রাজাকে কোনভাবেই বুঝতে দিলেন না যে তার কন্যা সন্তান হয়েছে। রাজা মহা খুশিতে ভালোবেসে পুত্রের নাম রাখলেন অমর আর রানী তার কন্যা সন্তান কে নাম রাখলেন অম্বা। দুজনে মিলে হল "অমর অম্বা" তাদের দিনগুলো কিছুদিন এভাবেই কেটে গেল। রানি রাজাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখলেন যে রাজা জানতে পেরে গিয়েছেন যে এটা তার পুত্র সন্তান নয় এটা তার কন্যা সন্তান। আর রাজা তাকেও হত্যা করলেন দুঃস্বপ্ন দেখে রাণীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। রানী তার ছোট কন্যা সন্তান অম্বাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে আর এভাবেই সারারাত কেটে গেল।
পরদিন সকালে রাজার কাছে গিয়ে রানী মিথ্যা বললেন যে তিনি দুঃস্বপ্ন দেখেছেন যে কেউ তাকে বলেছে যে যদি রাজকুমার অমর অমবা এখানে তার বাবার কাছে থাকে তাহলে তার বিপদ হবে। তাই ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত তাকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হোক তাহলেই রাজকুমার বিপদমুক্ত থাকবে। রাজা রাজকুমারের কথা ভেবে তাকে তার নানা বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং ১৬ বছর পর্যন্ত তার সাথে দেখা না করার কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে থাকে সমস্ত অস্ত্রশিক্ষা বিদ্যা শিক্ষা পাশাপাশি সব বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় কিন্তু একটি বিষয় গোপন রাখা হয় যে সে আসলে ছেলে নয়। তবে এই বিষয়টি রানী গোপন করতে বাধ্য করে যার কারণে রাজা এই বিষয়টি আর জানতে পারে না। রানী মাঝে মাঝে ই তার কন্যা সন্তানের সাথে দেখা করার জন্য তার মায়ের বাড়িতে যেত। তার কন্যা সন্তানকে ছেলে সাজিয়ে বাড়ির বাইরে বের করতেন যাতে এই সংবাদটি রাজার কাছে পৌঁছাতে না পারে। এভাবে দিনের পর দিন পার হতে লাগলো আর অন্যদিকে রাজার কন্যা সন্তান বড় হতে শুরু করল।
দেখতে দেখতে ১৬ বছর কেটে যায় রাজা প্রজা সবাই রাজকুমারকে দেখার জন্য উতলা হয়ে পড়ে কারণ ১৬ বছর পার হলেই রাজা তার সন্তানকে দেখতে পারবে। আর দীর্ঘ এতটা বছর রাজা শুধু ষোলটা বছর পার হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। রাজা রাজপ্রাসাদকে নতুন করে সাজিয়ে নিল কারণ আজকে তার সন্তান দীর্ঘ ষোল বছর পর তার রাজপ্রাসাদে ফিরবে। অন্যদিকে রাজকুমারী রাজকুমার সেজে তার রাজ্যে ফিরে আসেন। এদিকে প্রজা সকল তার অস্ত্র চালানোর তীক্ষ্ণতা দেখতে চায় আর মহারাজ তার ব্যবস্থা করে দেন কারণ তাকে এখন এই রাজ্যের দায়িত্ব বুঝে নিতে হবে। রাজার কন্যা রাজকুমার বেশে সেনাপতির সাথে অস্ত্র যুদ্ধে নেমে পড়ল। শক্তিশালী সেনাপতিকে হারিয়ে দিলেন আর এই দৃশ্য দেখে সবাই তো একদম পুরোপুরি অবাক হয়ে গেল। শেষ পর্যায়ে এসে হঠাৎ করে সেনাপতির তলোয়ারের আঘাতে রাজকুমারের মাথার পাগড়ী খুলে যায় আর বেরিয়ে আসে তার লম্বা কালো চুল। আসলে যে লড়াই করছিল সে যে রাজার কন্যা সেটা সবাই বুঝতে পেরে গেলেন। রাজা রানী সবাই আসল থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে রানী এদিকে প্রচন্ড ভয় পায় আবার মনে মনে ভাবতে থাকেন এত বছর পর হয়তো তিনি তার মেয়েকে দেখে খুশি হবেন।
রানী ভাবতে থাকেন হয়তো তার মেয়েকে বাকি মেয়েদের মত হত্যা করবেন না তাকে মেনে নিবেন। এই ভেবে রানী রাজার কাছে পুরো বিষয়টা খুলে বললেন কিন্তু না রাজা তা মেনে নেন না। প্রজারা সবাই বলেন তাদের সাথে ছলনা করেছে তাদের রাজা, পুজারা সবাই এই কথা বলে বাড়ি চলে যান। রাজা একদম নিরব হয়ে তার কন্যা সন্তান আর রানীকে নিয়ে ভেতরে চলে যান। অন্যদিকে মন্ত্রী রাজাকে উস্কানি দিতে থাকেন যার কারণে রাজা আরও রেগে যায়। রাজা তার কন্যা সন্তানকে হত্যা করতে চায় কিন্তু রানী তা রাজার পা ধরে তার কন্যা সন্তানের প্রাণ ভিক্ষা চাইতে থাকে।
আজকে এই পর্যন্তই রাখছি আবার বাকি কাহিনী পরবর্তী পর্বে তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই রাজা রানীর এই গল্পটা পড়লাম বেশ ভালো লাগলো। আসলে প্রতিটা রাজা চায় তার জমিদারিত্ব বজায় রাখার জন্য একটা পুত্র সন্তান। আর এজন্যই হয়তোবা সে তিন তিনটা কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছে। পরের বারে রানের বুদ্ধিমত্তার জন্য চতুর্থ মেয়েটা বেঁচে রয়েছে। বুদ্ধির জোরে তাকে ১৬ বছর ধরে রেখেছিল। তা না হলে হয়তো বা এই সন্তানকে হত্যা করতো। যাক যুদ্ধের সময় তার মুখ খুলে যাওয়াই চুল দেখা যায় এবং সবাই বুঝতে পারে যে এটা আছে রাজার কন্যা সন্তান। তাকে হত্যা করার জন্য উঠে পড়ে লাগে কিন্তু রানী তার পা ধরে তার জীবন ভিক্ষা চাই। গল্পটা এখানে শেষ করলেন গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ আপনাকে।
একটু অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্ব আরও ইন্টারেস্টিং।
ভাইয়া আপনার গল্প পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম। ছোট বেলায় যখন বিদুৎ চলে যেত তখন এমন রাজা রানীর গল্প শুনতাম। আর আজ আপনার গল্পটি পড়তে পড়তে সেই ছেলেবেলায় চলে গিয়েছিলাম। যাক গল্পটি পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম রাজার স্ত্রীর চিকন বুদ্ধির কথা। কিন্তু একটু আকর্ষণ কিন্তু রয়েই গেল যে কি ঘটতে যাচ্ছে রাজার এই মেয়ের ভাগ্যে? বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে গল্পটি লিখেছেন।
একদম মনের কথাটাই বলেছেন ছোটবেলায় বিদ্যুৎ চলে গেলেই এরকম মজার মজার গল্প শুনতাম।
এতদিন ধরে রানী তার কন্যা সন্তানের কথা গোপন রাখলেও অবশেষে রাজা জানতে পেরে গিয়েছে। আসলে এরকম গল্প গুলো ছোটবেলায় আগে শোনা হতো প্রচুর পরিমাণে। আমার কাছে কিন্তু এই ধরনের গল্প খুবই ভালো লাগে। এখন তো এটাই দেখার বাকি রাজকুমারীর জীবনে কি রয়েছে। সে অনেক শক্তিশালী এটা তার লড়াই এর কথা শুনেই বুঝতে পেরেছি। পরবর্তীতে কি হয় তা দেখার জন্য এই অপেক্ষায় থাকলাম এখন।
হ্যাঁ ভাইয়া আবার খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
এরকম একটি গল্প এবং কাটুন দেখেছিলাম সেই রকম একটি অনুরূপ গল্প লিখেছেন আপনি। যাই হোক দারুন ছিল ভালো লাগলো এমনিতেই গল্প পড়তে অনেক ভালো লাগে সেখান থেকে অনেক কিছু জানতে পারা যায়।
বাহ্ আমার গল্প তাহলে কাকতালীয় ভাবে সেই কার্টুনের সাথে মিলে গিয়েছে।
আগের যুগের রাজারা সবসময় চাইতো যেন পুত্র সন্তান হয়। আসলে বলতে গেলে এখন বেশিরভাগ ফ্যামিলিতেও পুত্র সন্তানের জন্য সবাই এরকম করে। রাজার কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে তিনি জীবন্ত তাদেরকে কবর দিয়েছিল এটা শুনে আমার শরীর একেবারে শিউরে উঠেছে। আসলে মোবাইলের মধ্যে এরকম গল্প গুলো দেখেছি অনেকবার। রাজকুমারী অমর অম্বার জীবনে পরবর্তীতে কি হয়েছে তা তো জানতে পারলাম না। সেই বিষয়টা জানার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ জেগেছে। সেই পর্যন্ত তাহলে অপেক্ষায় থাকলাম।
মানুষ কতটা নৃশংস হলে তার জীবিত সন্তান কে কবর দিতে পারে।
রাজা, রানী, রাজকুমারী এই রিলেটেড গল্প গুলো অনেক আগে শোনা হতো কিন্তু অনেকদিন হয়েছে এই টাইপের গল্প পড়া অথবা শোনা হয় না। অনেকদিন পর এই টাইপের একটি গল্প পড়ার সুযোগ পেয়ে বেশ ভালো লাগছে। যেহেতু গল্পের প্রথম পর্ব তাই গল্পের শেষটা কি হবে সেই জন্য অনেকটা অপেক্ষা করতে হবে। খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব দেখতে পাবো সেই প্রত্যাশা রইল ভাই।
আসলে সময় অনেক আপডেট হয়ে গিয়েছে বলে এখন আর শোনা যায় না