আমেনার জীবন (পর্ব-০৪)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২৮শে জ্যৈষ্ঠ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
গত পর্বে আমেনা অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছিল সেই পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম। আসলে আমেনা এক বিরল রোগে আক্রান্ত যার কারণে সে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। যদিও আগে থেকে অনেকটা অলৌকিকভাবে অটোমেটিকলি সুস্থ হয়ে গিয়েছে তবে তার প্রভাব কিছুটা এখনো তার মধ্যে মাঝে মাঝে দেখা যায়। যেহেতু তার বাবা-মা একদম হতদরিদ্র তারা দিন এনে দিন খায় তাই এইসব বিষয় নিয়ে আমেনা কিছু বলতে গেলেও তারা খুব একটা গুরুত্ব দেয় না তাছাড়া তারা এতটাই দরিদ্র যে টাকা দিয়ে আমেনার চিকিৎসা করাবে সেরকম সামর্থ্য নেই। যেহেতু আমেনা আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ তাই এই বিষয়টা একদম আমেনার বাবা-মা ভুলে গিয়েছে বললেও চলে। রাতের বেলায় আমেনা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে হঠাৎ মনে পড়ল কালকে সে যখন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল তার আগ মুহূর্তে ছেলেটি তাকে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল। আমেনা চিন্তা করছিল আসলে আমি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাওয়ার পরে তাকে দেখলাম না কেন সে কোথায় চলে গিয়েছিল। আবার নিজের কাছেই প্রশ্ন করছিল আমি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাওয়ার আগেই কি ছেলেটা সেখান থেকে চলে গিয়েছিল নাকি আমাকে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতে দেখে ছেলেটা সেখান থেকে চলে গিয়েছে এরকম নানান রকম প্রশ্ন নিজের মনের কাছে শুয়ে শুয়ে করছিল। হঠাৎ কখন যেন আমেনা ঘুমিয়ে গিয়েছে সেটা বুঝতে পারেনি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া শেষ করে তার বাবা-মা দুজনই অন্যের বাড়িতে কাজ করতে বেরিয়ে পড়ল আর আমেনা ঘুম থেকে উঠে সকালে বাড়ির ছোট খাটো কিছু কাজ কমপ্লিট করে সে তাদের বাড়ির পাশের বাগানে গিয়ে ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ছেলেটার কোন খোঁজ পাচ্ছিল না সে হাঁটতে হাঁটতে তাদের জমির কাছে গেল কিন্তু সেখানেও ছেলেটার কোন খোঁজ পেল না। সকাল পার হয়ে দুপুর হয়ে গেল এদিক সেদিক খোঁজ নেওয়ার পরেও ছেলেটার কোন সন্ধান পেল না কোথায় গিয়েছে সে তার মনে এমন কৌতুহল সৃষ্টি হল। বাগানের পাশের জমি থেকে আমেনা ফটক নামক গাছ থেকে কিছু ফল সংগ্রহ করছিল আর সেই মুহূর্তে পেছন থেকে কেউ একজন বলছিল তুমি ঠিক হয়ে গিয়েছো। আমেনা কন্ঠ শুনেই বুঝতে পারল ছেলেটি চলে এসেছে সে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো ছেলেটা তার দিকে চেয়ে আছে।
আমেনা উঠে এসে গাছের নিচে বসলো আর ছেলেটিকে বলছিল তোমাকে সকাল থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলাম তুমি কোথায় ছিলে? কালকে হঠাৎ চলে গেলে আর তোমার কোন খোঁজ পেলাম না। ছেলেটা তখন আমেনাকে বলছিল কালকে আমি তোমাকে একটা কথা বলতে গেলাম আর তখনই তুমি হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম আসলে হঠাৎ করে এরকম কখনো বিপদের মুখে পড়িনি তাই ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম। আসলে আমার উচিত ছিল তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেয়া কিন্তু আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম এর জন্য পালিয়ে গিয়েছিলাম, ছেলেটা এরকম নানান কথা বলতে থাকলো তখন আমেনা বলছিল তুমি চুপ করো আমার তো কিছু হয়নি। ছেলেটা তখন আমেনাকে আবারো জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছিল আমার কাছে কি বলা যায় না?? আমেনা অনেকটা সাদামাটা টাইপের একটা মেয়ে ছিল সে বিস্তারিত সবকিছু ছেলেটাকে খুলে বলল। আমেনা এক বিরল রোগে আক্রান্ত যার ট্রিটমেন্ট এই দেশে নেই তবে সে আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে গিয়েছে মাঝে মাঝে তার সাথে এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটে যায় তাছাড়া সে এখন মোটামুটি সুস্থ বলা চলে। ছেলেটা এইসব কথা শুনে আমেনার কাছে আর নিজের মনে লুকিয়ে থাকা কথাটা বলতে চাইল না। তবে ছেলেটা যেহেতু আমেনাকে পছন্দ করত তাই আমেনার মনে শক্তি যোগানোর জন্য কিছু উপদেশ মূলক কথা বলতে থাকলো। আমেনা বয়সে ছোট হওয়ায় কথাগুলো খুব একটা গুরুত্ব না দিয়ে হেসে উড়িয়ে দিল। যদিও আমেনা বারবার ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করছিল কালকে কি বলতে চেয়েছিলে এখন বলো কিন্তু ছেলেটা বিষয়টা বলতে চাচ্ছিল না তাই কোনভাবে এড়িয়ে যাচ্ছিল।
দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরে ছেলেটা আমেনাকে বলছিল আমাকে এখন একটু জমিতে যেতে হবে তাই আজকে আর তোমার সাথে সময় দিতে পারছি না। আমেনা সেই বাগানের মধ্যেই বসে থাকলো আর ছেলেটি তাদের জমির দিকে হাঁটতে হাঁটতে যেতে থাকলো। আমেনা ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে আর ছেলেটি কিছু পথ যাচ্ছে আর পেছন ফিরে আমেনার দিকে তাকাচ্ছে। আমেনা কিছুটা বুঝতে পারল ছেলেটা কালকে তাকে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল সেটা আজকে সে কেন বলতে চাইছে না। হয়তো তার অসুস্থতার কারণে ছেলেটি বিষয়টা গোপন রাখছে। তবে আমেনার মনে সেই কথাটা জানার বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হল আসলে ছেলেটি তাকে কি বলতে চেয়েছিল সেটা জানার জন্য আমেনার মন উতলা হয়ে উঠলো। কিন্তু কিভাবে ছেলেটির মুখ থেকে কথাটা শুনবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছিল না।
আমেনা বাড়িতে ফিরে গেল বসে বসে চিন্তা করছিল আসলে কিভাবে ছেলেটির মুখ থেকে আসল কথাটা জানা যায়। আমেনা চিন্তা করলো যেহেতু ছেলেটা প্রতিদিন তার সন্ধানে আসে তাই সে নিজেকে কিছু সময়ের জন্য আত্মগোপন রাখবে যাতে ছেলেটা বাধ্য হয়ে তাকে কথাগুলো বলে দেয়। আমেনা জানত ছেলেটা যখন বিকেল বেলায় তাদের জমি থেকে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরবে তখন তার খোঁজ করবে তাই সে আগে থেকেই নিজেকে আত্মগোপন করে রাখছিল যাতে ছেলেটি তাকে দেখতে না পেয়ে কিছুটা অতিষ্ঠ হয়ে যায়। আমেনা লুকিয়ে লুকিয়ে ছেলেটিকে দেখছিল আর ছেলেটি এদিক সেদিক তাকিয়ে আমেনাকে খুঁজ ছিল কিন্তু তাকে পাচ্ছিল না। এরকম প্রথম দিন পার হয়ে গেল দ্বিতীয় দিন ঠিক একই ভাবে আমেনা দূর থেকে ছেলেটাকে দেখছিল কিন্তু ছেলেটা আমেনাকে খুঁজে পাচ্ছিল না। ছেলেটা সাহস করে হাঁটতে হাঁটতে আমেনার বাড়ির দিকে আসছিল। যখন ছেলেটা আমেনার বাড়ির পাশে চলে এসেছে তখন হঠাৎ আমেনার বাবা বাড়িতে চলে আসলো।
(..........চলবে)
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1800542524140081632