ফাহাদ (পর্ব-০১)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ১৪ই মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শীতকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
ফাহাদ গ্রামের একটি শিক্ষিত পরিবারের জন্ম নিয়েছে আর ফাহাদের বাবা ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ায় ছোট থেকেই ইচ্ছা তার ছেলেকে মাদ্রাসায় পড়িয়ে ইসলামিক শিক্ষা দিবে। ফাহাদ দিনের পর দিন বড় হতে লাগলো আর ফাহাদের বাবা তার স্বপ্ন পূরণের জন্য তার ছেলেকে কোন আবাসিক মাদ্রাসায় দিবে সেটা নিয়ে ভাবতে লাগলো। কিন্তু ফাহাদ ছিল অনেকটাই চঞ্চল আর সে সব সময় খেলাধুলা করে বেড়াতে চায় গ্রামের মুক্ত পরিবেশে নিজেকে তুলে ধরতে চায়। ফাহাদ সারাদিন গ্রামের ছেলেমেয়েদের সাথে খেলাধুলা করে বেড়ায় আর লেখাপড়ার দিকে তার কোন মনোযোগ নেই। সে খাওয়া-দাওয়া করবে আর খেলাধুলা করবে তাহলেই সে খুশি থাকবে। কিন্তু ছোটবেলায় সবাই তো এমনই থাকে মা বাবা তার পরেও সন্তানের ভালোর জন্য শিক্ষা দেয়। ফাহাদ কে প্রথমে স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হল। সে লেখাপড়ার দিকে দিয়ে অনেকটাই অমনোযোগী ছিল তাই ঠিকমতো স্কুলে যেত না। বাবা-মা শিক্ষিত হওয়ায় তাকে সন্ধ্যার পরে বাড়িতে জোর করে পড়তে বসাতো আর নিজেরাই হাতে-কলমে সবকিছু শেখাতো।
ফাহাদ মোটামুটি লেখাপড়ায় কিছুটা মনোযোগী হতে লাগলো। প্রাইমারি স্কুল শেষ করে সে মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করলো আর ফাহাদের বাবাও তার এমন রেজাল্ট করায় অনেক খুশি হল। ফাহাদের বাবা অনেকটাই চিন্তা মুক্ত হলো কেননা তার ছেলে লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়েছে আর তাকে মাদ্রাসায় দিলে সে ভালো করবে এই ভেবে শহরের একটি মাদ্রাসায় ফাহাদ কে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিল। ফাহাদকে না জানিয়ে তার বাবা সবকিছু ঠিক করে আসলো আর বাড়িতে এসে ফাহাদ কে বলল তোমাকে মাদ্রাসায় থাকতে হবে। ফাহাদ প্রথমের দিকে কিছুতে রাজি হলো না তার মা-বাবা তাকে বোঝানোর পরে সে রাজি হলো।
মাসের শুরুতে ফাহাদের বাবা আর ফাহাদের মা ফাহাদকে নিয়ে শহরের মাদ্রাসায় উপস্থিত হলো। ভর্তির কার্যক্রম শেষ করে ফাহাদ কে মাদ্রাসায় রেখে আসা হলো। কিন্তু ফাহাদ ছোট থেকেই মুক্ত পরিবেশে থেকে অভ্যস্ত ছিল তাই বদ্ধ পরিবেশ তার একদমই পছন্দ হচ্ছিল না সে সবসময় তার বাবা-মায়ের কথা চিন্তা করত আর গ্রামের ছেলে মেয়েদের কথা চিন্তা করত যাদের সাথে সে সবসময় খেলাধুলা করত। ফাহাদের বাবাও ফাহাদকে দেখার জন্যই প্রতি সপ্তাহে যেত। যেহেতু নতুন নতুন মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছে তাই ছেলেকে দূরে রেখে তার ও মনের কাছে খুব একটা ভালো লাগে না। ফাহাদের মা ফাহাদের জন্য অনেক মজার মজার খাবার রান্না করে পাঠাতো কিন্তু ফাহাদের একটাই ইচ্ছা ছিল সে বাড়ি ফিরে যাবে আবার মুক্ত পরিবেশে স্বাধীনভাবে থাকবে। বেশ কিছুদিন যাওয়ার পরে ফাহাদ সিদ্ধান্ত নিল সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাবে। বিকেল বেলায় মাদ্রাসার ছেলেমেয়েদের নিচে খেলতে দেওয়া হয় আর সেই সুযোগে ফাহাদ মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেল। কিন্তু কিছু দূরে যাওয়ার পরে সে আর বুঝতে পারছিল না তার বাড়ি যাওয়ার রাস্তা কোনটা তাই সে বাধ্য হয়ে আবার মাদ্রাসাতে ফিরে গেল। সন্ধার পরে ফাহাদ মাদ্রাসায় যাওয়ার পরে মাদ্রাসার শিক্ষক তাকে অনেকটাই রাগ করল। ফাহাদ নিরিবিলি থাকে আর চিন্তা করে সে মাদ্রাসা থেকে কিভাবে বাড়িতে চলে যাবে। তার আর এই মাদ্রাসার বদ্ধ জীবন ভালো লাগছে না।
হঠাৎ মাদ্রাসার নতুন শিক্ষক আসলো আর সেই শিক্ষক লেখাপড়ার প্রতি অনেক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সময়মতো ঘুমাতে হয় ভোররাত্রে উঠতে হয় পড়াশোনা করতে হয় আর এই বিষয়গুলো ফাহাদের কাছে মোটেই ভালো লাগতো না। ফাহাদ তার বাড়িতে ফোন করে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে আর বলতে থাকে সে মাদ্রাসায় আর থাকবে না কিন্তু ফাহাদের বাবা কোনমতেই রাজি হয় না আর বলতে থাকে তুমি বাজে চিন্তা মাথায় না এনে লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ দাও সব ঠিক হয়ে যাবে। ফাহাদের এরকম কান্নাকাটি দেখে ফাহাদের মা অনেকটাই ভেঙে পড়ে। কিন্তু ফাহাদের বাবা তার ছেলেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আর নিজের স্বপ্ন পূরণ করার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসাতেই থাকতে বাধ্য করে। একদিন বিকেল বেলায় ফাহাদ আবার সিদ্ধান্ত নেয় সে যেভাবেই হোক না কেন বাড়িতে চলে যাবে। সে আর মাদ্রাসাতে থাকবে না। ফাহাদ মাদ্রাসার এরিয়া থেকে পালিয়ে শহরের একটি বাস স্ট্যান্ডে চলে আসে। কারো কাছে কিছু জিজ্ঞেস না করেই ফাহাদ একটি বাসে উঠে পড়ে। বাসের যাত্রা কোথায় ছিল সে সম্পর্কে ফাহাদের কোন ধারনা ছিল না।
সর্বশেষ পরিস্থিতিতে ফাহাদ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছিল সেটা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://x.com/KaziRai39057271/status/1751625278252855526?s=20
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি শিক্ষামূলক গল্প শেয়ার করেছেন। সত্যি অতি ছোটবেলায় লেখাপড়ার জন্য মানুষকে চাপ দিলে একটু ক্ষতি হয় ভালোর থেকে। অবশেষে ফরহাদ মাদ্রাসার এরিয়া থেকে পালিয়ে একটি বাস স্ট্যান্ডে চলে গিয়েছিল। ধন্যবাদ ভাই পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম গল্পটি পড়ার জন্য।
আসলে এই ধরনের ঘটনাগুলো পড়লে একটি বিষয় উপলব্ধি করতে পারি ।একটি শিশুর লক্ষ্য থাকে যেদিকে আমাদের পরিবার চেষ্টা করে তার লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে নিজেদের লক্ষ্য অনুযায়ী তাকে অগ্রসর করাতে। মাদ্রাসায় পড়ানো সেটা ভালো দিক কিন্তু তার লক্ষ্য খেলাধুলা সে যদি খেলাধুলাকে ভালোবাসে সেই বিষয়ে আমি মনে করি তাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যাই হোক ফাহাদের জীবনের লেখাপড়ার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো।
ভাইয়া আপনার গল্প পড়ে খুব ভালো লেগেছে। তারজন্য বলে বাচ্চাদের উপর নিজের ইচ্ছে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। তারা যেভাবে চায় আমাদের উচিত সেভাবেই চলা এতে করে তাদের কোমল মনের উপর কোনো আঘাত পড়ে না। তবে আবার অতিরিক্ত আদর করাও ঠিক নয়। ফাহাদ যেভাবে বড় হতে চেয়েছিলো তাকে সেভাবেই রাখা উচিত ছিল। তবে কোনো বাবা মা চায় না তার সন্তানের জীবন নষ্ট হয়ে যাক। সেজন্য হয়তো আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এত কিছু করে কিন্তু আমরা তা বুঝি না। ফাহাদ বাসে উঠে কোথায় যাচ্ছে আর কোথায় গিয়েছে জানার জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
অনেক ভালো লাগলো আপনার সুন্দর গল্পটি পড়ে। আসলে ছোট বাচ্চাদের উপর পড়াশোনার বেশি চাপ দিলে ছোট বাচ্চারা সেগুলো নিতে পারেনা। তখন তারা পালিয়ে যায়। আমাদের এখানেও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। আমার সামনে অনেক ছাত্র এই মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কারণ তাদেরকে এতটাই পড়াশোনার চাপ দেওয়া হতো যে তারা সহ্য করতে পারত না। এখানে এই গল্পের মধ্যে ফরহাদ মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বাস স্ট্যান্ডে চলে গিয়েছিল। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম। অনেক ধন্যবাদ।
ফাহাদের বাবার অনেক বেশি ইচ্ছা ছিল, নিজের ছেলেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার। কিন্তু ফাহাদ এর পড়াশোনার প্রতি তেমন কোন মনোযোগ ছিল না সারাক্ষণ খেলাধুলা করত। পরবর্তীতে বাড়িতে পড়ানোর পর সে কিছুটা মনোযোগী হয়েছিল, এবং প্রাইমারি স্কুলটা শেষ করে। আর সে মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করেছিল তখন, এটা শুনে ভালো লাগলো। আর মাদ্রাসায় যাওয়ার পর দেখছি তার মাথায় বাড়িতে চলে আসার ভূত চেপেছে।
বাবা মায়ের অনেক স্বপ্ন থাকে নিজের সন্তানকে নিয়ে। ফাহাদ যেহেতু ছোট থেকেই চঞ্চল স্বভাবের, তাই সে সব সময় খেলাধুলা করতে এবং এদিক সেদিক যেতে পছন্দ করত। পড়ালেখায় প্রথম প্রথম মনোযোগী না হলেও, পরবর্তীতে মনোযোগী হয়েছিল। আর প্রাইমারি টা শেষ করেছিল। তবে মাদ্রাসায় দেওয়ার পর দেখছি, চলে আসার জন্য একবার বের হয়েছিল তবে বাড়ির রাস্তা চেনে না বলে চলে গিয়েছিল। আমার দেখছি নতুন হুজুর আসার পর নতুন নিয়ম চালু হয়েছিল। তাই সে আরো বেশি বিরক্তি হয়ে গিয়েছিল। এবং কি আবারো বের হয়ে গিয়েছিল। একটা বাসের মধ্যে উঠে গিয়েছিল তবে বাসটার গন্তব্য সে জানেনা।
আসলে যারা ছোটবেলা চঞ্চল প্রকৃতির থাকে, তারা ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে থাকতে পারে না। আর ছোটবেলা বাচ্চাদেরকে পড়াশোনার এতো চাপ দিলে এমনিতেও সেই চাপ নিতে পারে না। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা বা ভিন্ন ধরনের বিনোদনের সুযোগ থাকলে, পড়াশোনার প্রতি বাচ্চাদের আগ্রহ অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। ফাহাদ আবারও যেহেতু পালিয়েছে মাদ্রাসা থেকে, এবার মনে হচ্ছে বড় কোনো বিপদে পরবে। আশা করি পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো। যাইহোক গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা একদম সঠিক কথা ভাই যারা ছোটবেলা মুক্ত পরিবেশে বড় হয়ে ওঠে তারা হঠাৎ করেই নিজেকে এতটা নিয়ম-কানুনের মধ্যে মেনে নিতে পারে না তাই বাধ্য হয়ে সেই পরিবেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করে।