সেদিন সকালে ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -২২শে পৌষ | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শীতকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



png_20230106_123759_0000-01.jpeg

Canva দিয়ে তৈরি



যারা সাধারণত শহরে থাকে তাদের কাছে গ্রামের সৌন্দর্য অনেক ভালো লাগে। গ্রামের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যে কারো কাছে ভালো লাগবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। শহরের চার দেওয়ালের মাঝে বন্দী জীবন কখনোই কারো ভালো লাগার কথা না আর কৃত্রিম সব সৌন্দর্য খুব বেশিদিন ভালো লাগেনা। গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে পরিবর্তন ঘটে যেমন ঋতুর পরিবর্তনের পাশাপাশি কখনো সবুজ ফসল আবার কখনো সোনালি ধান আবার কখনো শিশির ভেজা সবুজ ফসল। এজন্যই সবার কাছে গ্রামের সৌন্দর্যটাই ভালো লাগে। আর এখন তো মাঠে সরিষা ফুলের সৌন্দর্যটা সবার কাছে বেশি প্রিয়। শহর থেকে যদি কেউ গ্রামে আসে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করে আশপাশে সরিষা ফুলের মাঠ কোথায় আছে। কেননা সরিষা ফুলের মাঠে গিয়ে সবাই ছবি উঠতে চায়। আচ্ছা আপনাদের কাছে শহরের সৌন্দর্য ভালো লাগে নাকি গ্রামের সৌন্দর্য ভালো লাগে?? সবার কাছ থেকেই এই উত্তরটা আমি জানতে চাই। কিছুদিন আগে আমাদের বাড়িতে শহর থেকে অনেক মেহমান আসছিল অর্থাৎ আমার ফুপি এবং মামাদের পরিবারের সবাই এসেছিল। তাদের আগমন নিয়ে অনেকগুলো পোস্ট শেয়ার করেছি এবং বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম সেগুলো আপনাদের মাঝে ইতিমধ্যে তুলে ধরেছি।



20221228_091355.jpg

20221228_091400.jpg

20221228_092943.jpg



আমার ফুফাতো বোনদের সাথে আমি অনেক ক্লোজ, একদম আপন ভাইবোনদের মতো। ওরা আসার আগেই অনেক গুলো প্ল্যান করেছিল যে প্রথম দিনের পিকনিক করবো এবং পরবর্তী দিনে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাব সেগুলো নিয়ে। আসার পরের দিন নাঈমা আপু প্ল্যান করেছিল আমরা সবাই মিলে সকালবেলায় আখের রস খেতে যাব। সকালবেলা উঠে সবাই হালকা নাস্তা করে নিলাম। কারণ খালি পেটে তো আর আখের রস খাওয়া যায় না কেমন জানি লাগে। হালকা নাস্তা করে আমরা কয়েকজন মাঠের দিকে বেরিয়ে পড়লাম। যাওয়ার পথেই দেখতে পেলাম সূর্যটা আস্তে আস্তে আলো ছড়াচ্ছে। মাঠে তখনো ঘাসের উপরে শিশির ফোঁটা গুলো জমে আছে। আমরা যেখানে রস খেতে যাব সে জায়গাটা প্রায় মাঠের মাঝ অংশে অবস্থিত। সবাই মিলে হাঁটতে হাঁটতে সেখানে পৌঁছালাম। আখ মাড়াই করে সেটা থেকে যে রস পাওয়া যায় তার মাধ্যমে আখের গুড় তৈরি করা হয়। আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় সেই জায়গাকে বলা হয় খুলা। আমরা সেখানে পৌঁছানোর পর সবাই মিলে একটা সেলফি নিলাম।



20221228_093017.jpg

20221228_093024.jpg

20221228_093034.jpg

20221228_093041.jpg

20221228_093047.jpg

20221228_093050.jpg

20221228_093053.jpg

20221228_093058.jpg

20221228_093102.jpg



উপরের ছবিগুলো দেখেই বুঝতে পারছেন যে জমি থেকে আখ সংগ্রহ করে সেগুলোর গা থেকে খোসা ছাড়িয়ে রাখা হয়েছে। সকাল বেলা আখ গুলো জমি থেকে কেটে এনে এভাবে পরিষ্কারের রাখা হয় আর একজন লোক আখ গুলো মেশিনের মধ্য দিয়ে মাড়াই করে রস সংরক্ষণ করে। মাটির মধ্যে একটা ড্রাম পুঁতে রাখা হয়েছে আর আখের রস সেখানে গিয়ে জমা হচ্ছে। পরবর্তীতে সেই রস একজন লোক চাকরি দিয়ে সেখান থেকে ছেকে তুলে নিচ্ছে। আখ মারাই করার পরে যে খোশাগুলো থাকছে সেগুলো আবার রোদে শুকিয়ে রস জ্বালানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ছবিতে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন বেশ কয়েকটি জায়গায় এই খোশাগুলো শুকিয়ে রাখা হয়েছে আর এগুলো দিয়েই আখের রস জ্বালিয়ে আখের গুড় তৈরি করা হয়। আমরা সবাই মিলে একটি পাত্রের মধ্যে কিছু রস তুলে নিলাম। আমরা খাওয়ার জন্য রস তুলবো বলে লোকটি বেশ কয়েকটি ভালো আখ মেশিনে মাড়াই করার জন্য দিল আর সেখান থেকে যে রস বের হলে সেগুলো আমরা আলাদা করে খাওয়ার জন্য নিলাম। আসলে সকালবেলায় ঠান্ডা আখের রস খুব বেশি খাওয়া যায় না আমি মাত্র ২ গ্লাস খেয়েই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলাম। যদিও অন্যরা সবাই এক গ্লাস বা দের গ্লাস করে খেয়েছিল তবে আমি সর্বোচ্চ দুই গ্লাস খেয়েছিলাম। যাইহোক উপরের ছবিগুলো ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন কিভাবে আঁখ মাড়াই করা হয়। মূলত প্রাচীন এই ঐতিহ্যটি এখন আর আগের মত নেই কারণ আগের তুলনায় আখ চাষ অনেকটাই কমে গিয়েছে। মূলত এই পদ্ধতি গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আজকে এই পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।



20221228_093112.jpg

20221228_093244.jpg

20221228_093310.jpg

20221228_093315.jpg

20221228_093325.jpg

20221228_093328.jpg

20221228_093342.jpg

20221228_093345.jpg

20221228_093351.jpg

20221228_094442.jpg

20221228_094454.jpg



এবারে আখের রস থেকে গুড় তৈরি করার বিষয়টি সম্পর্কে বলা যাক। ছোট্ট ঘরের নিচে আখের রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। যারা সাধারণত গ্রামে থাকে তারা গরম আখের গুড়ের টেষ্ট বুঝতে পারে। আমরা সবাই আখের রস খাওয়ার পর আমাদের এক চাচার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম কারণ তিনি এখান থেকে আমাদের জন্য কিছু আখ দিবে আর যেটা ফুপি বাসায় নিয়ে যাবে। অনেক সময় পরে আমাদের সেই চাচ্চু আসলো এবং আমাদের জন্য কিছু আখ নিয়ে আমাদেরকে দিলো। ছবিতে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন আখের রসে তাপ দেওয়ার ফলে আখের রস উতলাচ্ছে। এভাবে দীর্ঘ সময় তাপ দেওয়ার পরে ধীরে ধীরে আখের রস থেকে আখের গুড়ে পরিণত হয়। আবার ছবিতে যে ছোট কুঁড়েঘর দেখছেন এখানে রাতে নাকি দুজন লোক থাকে আর এখানকার যে আসবাবপত্রগুলো থাকে সেগুলো পাহারা দেয়। যে মাটির হাড়িগুলো দেখছেন সেগুলোর মধ্যে আখের গুড় রাখা হয়েছে। আমরা অনেক সময় ধরে এগুলো দেখলাম এবং ছবি তুললাম। পরবর্তীতে আমি বাড়ির জন্য কিছুটা আখের রস নিয়েছিলাম আর আমাদের সাথে যে ছোট্ট পিচ্চিগুলো ছিল তাদের কাছে আখ গুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। ছবিগুলোতে অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন ছোট্ট পিচ্চি গুলো আছে নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

প্রতিবছর এই এরকম সকালে এসে আখের রস সহ গরম আখের গুড় খাওয়া হয়।এর আগে তো একদিন বাসা থেকে সরাসরি টাটকা মুড়ি নিয়ে এসেছিলাম আর গরম গুড়ের সাথে মাখিয়ে খেয়েছিলাম। সেই টেষ্ট এখনো যেন মনে পড়ে। এই বছরে খাওয়া হয়নি তবে যদি এরকম গরম গুড়ের সাথে মুড়ি মাখিয়ে খাই তাহলে আপনাদেরকে দেখাবো এবং একটু লোভ লাগিয়ে দেব হা হা হা।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়জানুয়ারি,২০২৩



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 3 years ago (edited)

প্রথমে আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিব। আমার কাছে শহর থেকে গ্রামের পরিবেশ ভালো লাগে। আর এখন তো সবাই সরষে খেতে ছবি তোলার জন্য পাগল থাকে। আমিও তাই করতে চাই। কত বোন নাইমা আপু সহ সবাইকে নিয়ে বেশ ভালই আখের রস খেলেন আর ঘুরাঘুরি করলেন। ভালোই মজা করেছেন ভাইয়া।

 3 years ago 

যাক তাহলে বোঝা যাচ্ছে আপনি গ্রামের সৌন্দর্যের টাই বেশি ভালোবাসেন। এখন বাকিদের প্রশ্নের জবাব পাওয়ার অপেক্ষায়।

 3 years ago 

আপন ভাইবোন ছাড়াও কিছু কিছু কাজিনেরা আছে যারা কিনা আপন ভাই বোনের মতোই হয় ঠিক তেমনি আপনি আপনার ফুফাতো বোনের সঙ্গেই আপন ভাই বোনের মতোই দেখছি। যাইহোক সকালবেলা সকলের সঙ্গে আখের রস খেতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে গিয়ে আখের রস খেয়েছেন সকাল সকাল ব্যাপারটা জেনে নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছে সেই সাথে লোভ লাগছে বটে। সকালবেলা আখের রস খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনাদের সুন্দর এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

লোভ লাগলে কিছু করার নেই, অনেক দিন আগে খেয়েছিলাম তাই এখন আপনাকে ভাগ দিতে পারবো না।

 3 years ago 

এটা জেনে ভীষণ ভালো লেগেছে যে আপনি এবং আপনার ফুফাতো বোন খুবই ক্লোজ। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার কারণ আপন ভাই বোন ছাড়া ও অনেক কাজিন রয়েছে খুবই ক্লোজ হয়ে থাকে। আমার কাছে গ্রামের সৌন্দর্য ভীষণ ভালো লাগে। আপনারা তো দেখছি কয়েকদিন আগে থেকে কি কি করবেন তা সব ভেবে ফেলেছিলেন। যাইহোক পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

তারা আমার কাছে একদম আপন বোনের মতোই।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন যারা সাধারণত শহরে থাকে তাদের কাছে গ্রামের সৌন্দর্য একটু বেশি ভালো লাগে। আপনি এবং আপনার ফুফাতো বোন দেখছি খুবই ভালো ক্লোজ। একেবারে বেস্ট ফ্রেন্ড এর মত। আপনি আপনার ফুফাতো বোনসহ দেখছি আখের রস খেয়েছেন এবং ঘোরাঘুরি বেশ ভালোই করেছেন। পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে ধন্যবাদ সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 3 years ago 

হ্যাঁ আমরা অনেক ফ্রেন্ডলি।
আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.035
BTC 110448.16
ETH 4414.59
USDT 1.00
SBD 0.83