📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ২৮|| প্রকৃতির সৌন্দর্য ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য) by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেমঃ@kazi-raihan।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব। প্রকৃতির সৌন্দর্য গুলো ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরতে খুব ভালো লাগে। আর সেই ভালোলাগা কে কেন্দ্র করে যে ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম সেগুলো শেয়ার করেছি। চেষ্টা করি প্রতি সপ্তাহে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে আর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকে এই ফটোগ্রাফি পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। এই সপ্তাহে মোটামুটি ঘোরাঘুরি করা হয়েছে আর তাই এই সপ্তাহের ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি। টুকটাক ঘোরাঘুরি করলে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ক্যাপচার করা যায় আর তাই ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করতে কষ্টটাও কম হয়। তবে আমি প্রতি ফটোগ্রাফি পর্বেই কিছু পুরাতন অ্যালবাম থেকে ফটো সংগ্রহ করার চেষ্টা করি এক কথায় নতুন পুরাতন কম্বিনেশন করে শেয়ার করি। ওই যে সেই একই কথা আবারও বলছি যে এখন ফটোগ্রাফি করা নেশা হয়ে গিয়েছে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলে প্রকৃতির কোন সৌন্দর্য চোখে পড়লে অটোমেটিকলি সেটার ছবি তুলতে ইচ্ছে করে। কতটা সুন্দরভাবে সেই প্রকৃতির সৌন্দর্যের ছবি তুলে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি সেটা জানি না তবে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করি। আজকে যে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করব সেগুলো নিচে দেওয়া আছে।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে প্রতিদিন সকালে সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে আর পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। সূর্য অস্ত যাওয়ার আসল সৌন্দর্য দেখতে হলে সমুদ্রের তীরে যেতে হবে। যেমন আমাদের দেশের কুয়াকাটা বা কক্সবাজারে গেলে সূর্য অস্ত যাওয়ার আসল সৌন্দর্যটা লক্ষ্য করা যায়। আমাদের বাসা থেকে সমুদ্র সেই অনেক পথ তাই আর সব সময় সমুদ্রের মাঝে সূর্য অস্ত যাওয়ার যে একটা দৃশ্য চোখে পড়ে সেটা দেখা হয় না তবে নদীর তীরে সূর্য অস্ত যাওয়ার যে সৌন্দর্য সেটা মাঝেমধ্যেই দেখা হয়। গত শুক্রবার উপলক্ষে বন্ধুদের সাথে প্ল্যান করেই ঘুরতে বের হয়েছিলাম আর বন্ধুর বাসায় রাত্রেবেলা খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। যাইহোক খাওয়া-দাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে আর আপনাদেরকে লোভ দেখাবো না হা হা হা। এই ছবিটা তোলা হয়েছিল গড়াই নদীর তীর থেকে, গড়াই নদীর পাশে গিয়ে অনেক সময় বসে ছিলাম। যখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল তখন এই ছবি তুলেছিলাম।

• উপমহাদেশের প্রথম ছাপখানা। ছাপাখানাটি আজও আছে কুমারখালির কুণ্ডুপাড়ায় কাঙাল কুটিরে। আর এটি এখন কাঙ্গাল হরিনাথ জাদুঘর নামে বেশি পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই ছাপাখানা টি চালু হয় আর ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার এটি জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা দেয়। তিন থেকে চার মাস আগে সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকার কারণে ভেতরে ঢুকতে পেরেছিলাম না। গড়াই নদীর তীর থেকে ঘুরে এসে সেখানকার কিছু সৌন্দর্য আমরা দেখতে পাই যেমন জাদুঘরের ভেতরের কিছু সৌন্দর্য যেগুলো আমি পরবর্তী একটি পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। কাঙ্গাল হরিনাথের স্মরণে সেখানে একটি মূর্তি তৈরি করা আছে যেটা আমি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।

• নদী কেন্দ্রিক অঞ্চল গুলোতে নদীর মাছের আনাগোনা প্রচুর পরিমাণে হয়। ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন নৌকার উপরে একজন লোক বসে আছে আসলে সে হচ্ছে গড়াই নদীর মাঝি। তার কাছ থেকে জানতে পারলাম সে নদী পার করার পাশাপাশি রাত্রিবেলায় গড়াই নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে আর সেখানে বিভিন্ন রকমের নদীর মাছ পাওয়া যায়। তার সাথে আমাদের বিকেলবেলা দেখা হয়েছিল যার কারণে মাছের ছবিগুলো আর তোলা হয়নি কারণ মাছ তো রাত্রিবেলায় ধরে। তবে এই ফটোগ্রাফি টা সবচেয়ে সুন্দর লাগার কারণ হচ্ছে পিছনে সূর্য অস্ত যাচ্ছিল আর সূর্যের আলো গড়াই নদীর পানির উপরে পড়েছিল আর সেই আলোতে পানিটা কিছুটা লাল দেখা ছিল। পানির উপরে সূর্যের অবস্থান ছিল, পানির উপরে তাকালে মনে হচ্ছিল যেন পানির ভিতরেও সূর্য উঁকি দিচ্ছে।

• আগেই বলছি আমি প্রতিটা ফটোগ্রাফি পারবে কিছু পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে তুলে ধরি। এই ফটোগ্রাফিতে আমার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। ছবিটা তোলা হয়েছিল প্রায় দুই মাস আগে। ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় একটি প্রাইভেট কার এগিয়ে আসছে। আমিও যখন বাইকে রেখে রাস্তার উপরে দাঁড়ালাম তখন একটি প্রাইভেট কার বা একটি প্রাইভেট গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যারা টুকটাক ফটোগ্রাফি করেন তারা অবশ্যই বুঝে গিয়েছেন আমি কেন বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় একটি প্রাইভেট গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম?? বৃষ্টি ভেজা রাস্তার সাথে একটি ছোট প্রাইভেট গাড়ির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্যই মূলত অপেক্ষা করছিলাম তবে এই অপেক্ষা আর দীর্ঘ সময় করতে হয়নি। দেখলাম দূর থেকে একটি মাইক্রো আসছে আর আমি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলাম কারণ বৃষ্টি ভেজা ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি বেশ দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। যথাসময় গাড়িটা আমার পাশে আসার সাথে সাথে আমি ফটো তুলে নিয়েছিলাম।

• এই ছবিটাও আমার পুরনো অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। ফটোগ্রাফিটা দেখেই বুঝতে পারছেন আকাশে মেঘ জমেছে নিশ্চয়ই কিছু সময়ের মধ্যে বৃষ্টি নামবে। হ্যাঁ এই ছবিটা বর্ষাকালে তোলা হয়েছিল। আমি আম্মুকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম, আম্মুর দাঁতের সমস্যা হওয়ার কারণে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। সকালবেলা দশটার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম আর তখন থেকেই আকাশে হালকা মেঘ ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে সিরিয়াল দিয়ে বসলাম আর আমাদের সিরিয়ালের অপেক্ষায় রইলাম। আসলে অপেক্ষা করা কতটা যে বিরক্তিকর একটা কাজ সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিছু সময় বসে থাকার পরে আম্মুকে বললাম আমি বাইরে থেকে ঘুরে আসি। আমি বাইরে গিয়ে চায়ের দোকানে বসলাম এবং চা খেলাম। চায়ের দোকানে বসে মেঘের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর দেখলাম আকাশের অবস্থা আরো অবনতি হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো বৃষ্টি শুরু হবে। এই ভেবে আমি পকেট থেকে ফোন বের করে এই মেঘলা আকাশের একটি ছবি তুলেছিলাম। আর ফটোগ্রাফিতে যে বিল্ডিং দেখা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে একটি স্কুল যেখানে আমি এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম।

• রাত্রিবেলায় চাঁদের সৌন্দর্যটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। তবে শীত চলে আসার কারণে এরকম পরিস্কার চাঁদ আর খুব বেশি দেখা যাবে না। এই ছবিটা প্রায় একমাস আগে তুলেছিলাম। সেদিনে আমি হেঁটে বাজারে গিয়েছিলাম সাধারণত প্রতিদিন বাজারে গেলে বাইক নিয়ে যাই। সম্ভবত বাইক ধুয়ে পরিষ্কার করেছিলাম তাই ধুলা পড়বে বলে রুমে রেখে গিয়েছিলাম। রাত্রিবেলা যখন বাড়ি ফিরব তখন গাড়ির জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করলাম কিন্তু কোন গাড়ি পেলাম না হয়তো আরো কিছু সময় অপেক্ষা করলে পাওয়া যেত। তবে বাজার থেকে আমাদের বাসা খুব বেশি দূরে নয় হেটে গেলে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় লাগে। ভাবলাম একটু হেঁটে হেঁটে এগোতে থাকি কারণ শরীরটাও পাতলা হবে। সন্ধার পরেই রাতের আকাশে অসম্ভব সুন্দর চাঁদ উঠেছিল। চাঁদের আলোয় আর ফোনের ফ্লাশ জ্বালাতে হয়েছিল না এতটা পরিষ্কার ছিল চাঁদের আলো। কিছু সময় হাঁটার পরে ফাঁকা জায়গা থেকে তাদের সৌন্দর্যটা একদম স্পষ্ট চোখে পড়ছিল আর তাই নাইট মুডে চাঁদের ছবি তুলেছিলাম । সেদিনও হয়তো ছবি তুলে রেখেছিলাম বলে আজকে এই সৌন্দর্য টা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে পারলাম।

• ছবিতে যে গাছটি দেখছেন সেটা হচ্ছে একটি ফুলের গাছ আর এই ফুল গাছের নাম হচ্ছে জেসমিন। অনেকের কাছে এই ফুল গাছের নাম অজানা হতে পারে তবে এই ফুল গাছটা সবার কাছেই অতি পরিচিত। এই ফুল গাছের ছবি তোলা হয়েছিল কুমারখালী গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত ইকো পার্ক থেকে। গত শুক্রবারে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে বের হয়েছিলাম সে কথা আগেই আপনাদেরকে বলেছি, পার্কে গিয়ে আমরা বসলাম আর আমাদের মাঝ থেকে একজন কিছু বাদাম নিয়ে আসলো আর সেটা সবাই মিলে একসাথে বসে খাচ্ছিলাম। আর সত্যি কথাটা বলেই দিই, আমাদের পাশেই তিনটা মেয়ে শাড়ি পড়ে ছবি উঠছিল তাদের মধ্যে দুইটা সৌন্দর্য চোখে পড়ার মতো। আসলে সবকিছু তার খুলে বলতে হয় না আপনারা বুঝে নেবেন হা হা হা। একটা মেয়েকে ভালোই লেগেছিল তাই একটু কাছে এগিয়ে গেলাম তখন তারা আমাদের দিকে তাকাতেই আমি ফটোগ্রাফি করার ভান করে জেসমিন ফুল গাছের ছবি তুলেছিলাম। তবে মেয়েগুলোর দৌলতে একটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম আর সেটা এখন কাজে লেগে গেল হি হি হি।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।