হঠাৎ রাতে হালিমের খোঁজে || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -৮ই জ্যৈষ্ঠ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | গ্রীষ্মকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



png_20230522_090616_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



পারিবারিক কারণে অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি তাই কমিউনিটিতে ঠিকঠাক সময় দেওয়া হয় না। তবে নিজের ব্যস্ততা কমলেই আবার ইনশাআল্লাহ সুপার অ্যাক্টিভ লিস্টে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করব। যাই হোক এখন তাহলে মূল টপিকে ফিরে আসি। ঈদ উপলক্ষে সবাই বাড়ি এসেছিল তাই ঈদের আনন্দটা সবার সাথেই উপভোগ করতে পেরেছিলাম তবে এই পোষ্ট অনেক আগে শেয়ার করার কথা ছিল কিন্তু মাঝে পড়ে গিয়েছিল বলে শেয়ার করা হয়নি। মূলত ঈদের এক সপ্তাহের মধ্যেই সবার ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যায় তবে আমার বন্ধুদের মাঝে ঈদের সেই ছুটি শেষ হতে হতে প্রায় দশ দিন কেটে গিয়েছিল। তবে ঈদের ছুটি যখন শেষ হয়ে গেল তখন মনে হচ্ছিল খুব দ্রুতই যেন ঈদের ছুটি কাটিয়ে ফেলেছে তাই চলে যাওয়ার আগের দিন রাত্রেবেলা বাজার থেকে আমরা সবাই প্লান করলাম আজকে রাত্রে আপাতত একটা প্রোগ্রাম করা উচিত। কারণ সকাল হলেই তো সবাই ঢাকায় চলে যাবে। তবে কি প্রোগ্রাম করবো সেটা তখনও ঠিক করা হয়নি। রাত আটটা পার হয়ে যাওয়ার পরে মনে হলো সবাই মিলে আজকে হালিম খাওয়া যাবে। নান রুটি আর হালিম খাওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা সবাই হুটহাট করে বাইক নিয়ে কোন প্ল্যান ছাড়াই বেরিয়ে পড়লাম। আমরা চার টা বাইক নিয়ে দশজন বেরিয়ে পড়লাম কুমারখালীর উদ্দেশ্যে।



20230503_212149.jpg

20230503_224842.jpg



বাজার থেকে বেরিয়ে কুমারখালী পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের ততক্ষণে রাত নয়টা বেজে গিয়েছে। তাতেও কোন সমস্যা ছিল না তবে কুমারখালী যাওয়ার পরে আমারে যে দোকান থেকে হালিম খাব সেখানে গিয়েই সমস্যা হল। গভীর রাতে গেলেও যে দোকানে হালিম পাওয়া যায় আসলে ওই দোকানটা বন্ধ ছিল আর বাকি যে দোকানগুলোতে খোঁজ করলাম গভীর রাত হওয়ায় দোকানগুলোতে হালিম শেষ হয়ে গিয়েছে। সবার ইচ্ছা ছিল নান রুটি আর হালিম খাবে কিন্তু নান রুটি ছিল হালিম ছিল না। সবাই একসাথে হয়ে আবার প্লান করা হচ্ছিল আসলে কি করা যায়। পরবর্তীতে আবার খোকসায় একটি রেস্টুরেন্টে ফোন করে খোঁজ নেওয়া হল সেখানে হালিম আছে কিনা। ভাগ্যবশত সেখানে হালিম ছিল আর রেস্টুরেন্টের মালিক ছিল আমাদের এলাকার একজন বড় ভাই তাই আমরা খুব সহজেই ফোন করে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছিলাম আর আমরা যে আসছি সেজন্য আয়োজন করার কথা বললাম। রাত সাড়ে নয়টার পরে আসলে রেস্টুরেন্ট গুলো গুছিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাই আগেভাগেই ফোন করে যোগাযোগ করে নিয়েছিলাম।



20230503_214209.jpg

20230503_214211.jpg

20230503_214233.jpg

20230503_214145.jpg

20230503_214017.jpg



কুমারখালী থেকে খোকসার দূরত্ব ১২-১৩ কিলোমিটার হবে। আমরা আবার বাইক নিয়ে খোকসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। যখন খোকসা পৌছালাম তখন রাত দশটা বেজে গিয়েছে আর এসে দেখলাম আমাদের জন্য হালিম আবার পুনরায় গরম করা হচ্ছে। রেস্টুরেন্টের যে কর্মচারী তারা সবাই চলে গিয়েছে শুধু আমাদের এলাকার বড় ভাই আর তারা একজন সহযোগী ছিল আর তারা দুজন মিলেই আমাদের জন্য আয়োজন করছিল। আমরা যখন পৌছালাম তখন দেখলাম সবে নান রুটি তৈরি করা হচ্ছে তখনই বুঝতে পারলাম হয়তো আরও অনেক সময় দেরি হবে সেই সুযোগে আমি রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন নিয়ে কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। প্রথম যে ছবিটা দেখছেন সেটা রাতের বেলায় রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে তোলা আর পরবর্তী ছবিগুলো রেস্টুরেন্টের ভেতরের অংশের ছবি। তবে নিজের এলাকায় রেস্টুরেন্ট হওয়ার পরেও আমি সেদিনই রেস্টুরেন্টে প্রথম গিয়েছিলাম।যাই হোক তখনো খাবারের কোয়ালিটি সম্পর্কে কোন ধারণা হয়নি তবে খাবারের কোয়ালিটি যেমনই হোক ডেকোরেশনটা বেশ ভালই লাগছিল তারপর নিজের এলাকার বড় ভাইয়ের রেস্টুরেন্ট তাই খাবার কোয়ালিটি একটু নিম্নমানের হলেও তো আর বদনাম করা যায় না। সেক্ষেত্রে আবার নিজের এলাকারই বেশি বদনাম হবে হা হা হা।



20230503_214341.jpg

20230503_213634.jpg

20230503_213931.jpg



ভেতরে সৌন্দর্যটা বেশ ভালো লেগেছিল তবে পুকুর পাড়ে অর্থাৎ পিছন সাইডে যে আরো সৌন্দর্য আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেটা আমি তখনও বুঝতে পারিনি। পিছন দিকে কিছুটা গিয়েই দেখতে পেলাম পুকুর পাড়ে আলো জ্বলছে আর পুকুরের উপরে বসার জায়গা করা হয়েছে। লাইটিং করায় জায়গাটা আরো সুন্দর লাগছিল মূলত দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলায় এই রেস্টুরেন্টের পুকুরের উপরের সৌন্দর্যটা ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। যেহেতু আমি রেস্টুরেন্টে আজকেই প্রথম এসেছি তাই সেখানে বসে একটা ছবিও তুলেছিলাম। সেখানে কিছু সময় ঘোরাঘুরি করার পরে আবার ভিতরে গিয়ে ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করলাম যে আমাদের অর্ডার তৈরি হতে কত সময় লাগবে তখন ভাইয়া বলল আর কিছু সময় ওয়েট করো সবকিছু ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম গরম করছি আর নান রুটি গুলো আবার নতুন করে তৈরি করছি। তবে সেখানে গরুর মাংসের হালিম তৈরি ছিল যার কারণে হালিমের ছবি শেয়ার করিনি। আমাদের মাঝে একজন হিন্দু বন্ধু থাকায় তার জন্য অবশ্য আমরা চিকেন অর্ডার করেছিলাম।

খাবারটা যখন আমাদের মাঝে পরিবেশন করা হলো তখন রাত প্রায় পৌনে ১১ টা বাজে। সবার পেটেই অনেক ক্ষুধা তাই দেরি না করে সবাই খাওয়া শুরু করে দিল তাই ছবি তোলার তেমন কোনো সময় পাইনি। বন্ধুদের মাঝে আবার একটা সমস্যা হয় যখন খাবারগুলো সামনে রেখে ছবি তুলতে যাই হুট করে দেখি আমার প্লেট থেকে কিছু খাবার চুরি হয়ে গিয়েছে তাই এবার আর সেই ভুল করিনি আগে পুরোটা খাবার শেষ করে নিয়েছি তারপরে অন্যের প্লেটে হামলা দিয়েছি হা হা হা। হালিমের টেস্ট মোটামুটি ভালোই ছিল। যাইহোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই মিলে বিল পেমেন্ট করলাম। রেস্টুরেন্টের মালিক যে বড় ভাই ছিল সে আমাদেরকে বলল এলাকা থেকে আসছো চলো তোমাদের একটু আপ্যায়ন করি তাই সে আমাদেরকে আবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে লেবুর চা খাওয়াতে নিয়ে গেল। তবে লেবুর চাটা একদম জোস ছিল। হালিমের টেষ্ট মনে নেই তবে লেবুর চায়ের টেষ্ট এখনো মনে আছে।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়মে,২০২৩



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 last year 

বন্ধু সেদিনের মজাটা সত্যি অসাধারণ ছিলো মনে থাকবে। চিরুনি অভিযান টা সফল করতে পেরে ভালো লাগছিলো। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।

 last year 

হালিম খাওয়ার অনুভূতি সত্যি খুব অসাধারণ। রাতে হালিম খাবার সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার হয়েছে। এত দুর্দান্ত পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

ভাই বেশ বুদ্ধি করে এলাকার বড় ভাইকে বদনামের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলেন। রেস্টুরেন্টের খাবারের মান যেরকমই হোক না কেন, তা নিয়ে কোন কথা বলা যাবে না। কেননা কথা বলতে গেলে তো আপনারই এলাকার বদনাম হয়ে যাবে। তবে ভাই খাবারের মান যেরকমই হোক,রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন কিন্তু দারুন ছিল। যাই হোক ভাই, নান রুটি হালিম ও লেবুর চা খেয়ে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন, আর সেই সম্পর্কে পোস্ট উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 66407.66
ETH 3025.92
USDT 1.00
SBD 3.69