কাপড় কেনার অভিজ্ঞতা||২৪-০৪-২০২২||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
একজন মুসলিম হিসেবে স্বার্থ অনুযায়ী যাকাত দেওয়া ফরজ। প্রতিবছর এ রমজান মাসে যাকাত দেওয়া হয়। সেহেরী খাওয়ার পর আব্বু আমাকে বলল ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠতে হবে আমি আব্বুকে জিজ্ঞাসা করলাম ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে কি করব?? আব্বু আমার প্রশ্নের উত্তরে বলল ভোরবেলা উঠে সকাল সকাল পোড়াদাহ যেতে হবে।আমি জিজ্ঞাসা করলাম কেন?? আব্বু বললো যাকাতের কাপড় কিনতে যাবো। গত বছরেও আব্বুর সাথে আমি গিয়েছিলাম তাই এ বছরেও আব্বু আমাকে সাথে নিয়ে যেতে চাইলো।আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে সকালে যাওয়া যাবে। সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম আর ঠিক ৬:৩০ এর দিকে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। চোখ থেকে ঘুম যেন যাচ্ছিল না তার জন্য ভাবলাম গোসল করে নিই তাহলে একটু ফ্রেশ লাগবে। সকালবেলায় ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলাম আর একদম ফ্রেশ অনুভব করছিলাম।
গোসল শেষ করে এসে জামাকাপড় পড়ে রেডি হলাম। ততক্ষনে আব্বু রেডি হচ্ছিল আমি রুম থেকে মোটরসাইকেল বের করে বাইরে নিলাম। কিছু অপেক্ষা করার পরে আব্বু আসলো এবং আমাকে বলল বাইক চালাও। আমি আব্বুকে বললাম আপনি চালান আমি আসার সময় আমি বাইক চালাবো। আমি আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলাম সকালবেলা যেহেতু পোড়াদহ যাব তাহলে এই পোড়াদহ যাওয়া নিয়ে একটা ভ্রমণ কাহিনী লেখা যাবে। সেই সুবাদে আব্বুকে বাইক চালাতে বললাম যাতে আমি বাইকের পিছনে বসে বসে ছবি তুলতে পারি। বাসা থেকে ঠিক ৭:১৭ মিনিটে রওনা হলাম। সকালবেলার আকাশটা একটু মেঘলা ছিল কখনো রোদ উঁকি দিচ্ছিল আবার কখনো মেঘলা আকাশে রোদ হারিয়ে যাচ্ছিল। গরমের সময় ঠাণ্ডা বাতাস তো ভালো লাগে আর সকালে ঠান্ডা বাতাস খুব উপভোগ করছিলাম। যাত্রাপথে বাইকের পেছনে বসে থেকে ছবি তুলেছিলাম আর সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।
যাত্রা শুরু।
what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding
পোড়াদহ পৌঁছালাম।
what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding
আমাদের বাসা থেকে পোড়াদহের দূরত্ব প্রায় ৪০-৪২ কিলোমিটার। বাইক নিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগলো। পোড়াদহ কাপড়ের বাজারে প্রবেশ করার আগেই দেখলাম গাড়ির প্রচণ্ড চাপ। সকালবেলায় জ্যাম লেগে গিয়েছে। অনেক কষ্টে বাজারের ভেতরে একটি পার্কিং স্পটে মোটরসাইকেল পার্কিং করলাম। মোটরসাইকেল পার্কিং শেষে ৫১নং টোকন দেওয়া হলো আর আমাদের বাইকের সিট কভার এর উপর ৫১ নাম্বার লিখে দেওয়া হলো। বাইক রেখে আমরা পোড়াদহ কাপড়ের প্রধান বাজারের দিকে এগোতে থাকলাম। এসে দেখতে পেলাম ট্রাক থেকে একের পর এক কাপড় আনছে আর স্থানীয় কুলিরা সেগুলো মাথায় করে তাদের মালিক এর দোকানে নিয়ে যাচ্ছে। ছবি দেখলে বুঝতে পারবেন কিভাবে ট্রাক থেকে কাপড় নামিয়ে তাদের মালিকের দোকানের উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছে। আমরা পরবর্তীতে একটি বড় দোকানে গেলাম এবং দোকানের কর্মচারীরা আমাদেরকে স্বাগত জানাল এবং জিজ্ঞাসা করলো আমরা কি নিতে চাই। আব্বু তাদেরকে বলল আমরা ৫০ পিস কাপড় নিব। একজন কর্মচারী আমাদেরকে দোতালায় নিয়ে গেল।
কাপড়ের দোকান।
what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding
দোতালায় গিয়ে দেখতে পেলাম শুধু কাপড় আর কাপড়।। উনি আমাদের কে বলল আপনাদের যেগুলো পছন্দ হয় সেগুলো বেঁছে পছন্দ করুন। আমি এর আগে এত কাপড় একসাথে দেখিনি তাই একটা ছবি তুললাম। পরবর্তীতে আব্বু বলল এখানে এসে বসে কিছু কাপড় বাছাই করতে। দেখলাম আব্বু কিছু কাপড় বাছাই করেছে আর সেখানে লেখা আছে "চাই পাই" আর আমিও "চাই পাই" লেখা কাপড় গুলো বাছাই করতে থাকলাম। ভালো কালার দেখে চোখের দর্শনের যেগুলো ভালো লাগলো সেগুলো পছন্দ করলাম। ২৫পিস করে আলাদা আলাদা দুইটি বান্ডিল করা হলো। সব মিলিয়ে ৫০ পিস কাপড় বান্ডিল করে নিয়ে আসা হলো। কাপড় গুলো আলাদা বান্ডিল করে আমাদের নাম উল্লেখ করে একটি টোকেন ঢুকিয়ে সাইডে রাখা হলো আর দাম দর করে তার বিল পেমেন্ট করা হলো। দোকানদারকে বলা হলো আমাদের আরও কিছু কেনাকাটা আছে এই কাপড় বান্ডেল গুলো আপনি সাইডে রেখে দিন তো উনারা টোকেন ঢুকিয়ে সাইডে রাখলো আর বলল স্লিপ দেখিয়ে নিয়ে যাবেন। আমরা আরও কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বের হলাম।
আব্বুর জন্য পাঞ্জাবি কেনা।
what3words address.
https://w3w.co/justifies.roomful.expanding
আব্বুর জন্য একটি পাঞ্জাবি কেনার জন্য পাঞ্জাবি ঘরের দিকে গেলাম। আব্বুর যেহেতূ একটু বয়স হয়েছে তাই ভাবলাম তার জন্য সাদা পাঞ্জাবী কিনবো। কয়েকটি কালারের পাঞ্জাবি দেখার পরে এই পাঞ্জাবীটা আমারও পছন্দ হলো আবার আব্বুরও এই পাঞ্জাবি পছন্দ হলো। পাঞ্জাবির সাথে পায়জামার সেট ছিল যার কারণে দাম একটু বেশি। একদরের দোকান বলে কোন দামদার করতে পারলাম না। বডি রেট ছিল পুরো সেট ১৯০০ টাকা। পাঞ্জাবীটা ভালোভাবে উল্টেপাল্টে দেখলাম এবং দোকানদার কে বললাম এটা প্যাকেট করে দিন। দোকানদার পাঞ্জাবি প্যাকেট করে দিল আর আমরা ১৯০০টাকা পেমেন্ট করলাম এবং কেনাকাটা প্রাথমিকভাবে শেষ করলাম।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।আর দোয়া করবেন যেন যাকাতের কাপড় গুলো ঠিক ঠাক গরীব দুঃখী মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতে পারি।
ধন্যবাদ,
@kazi-raihan
🥰🥰🥰
খুব ভালো লাগলো ভাই আপনার উদ্যোগটি। আসলে এইরকম আমাদের সবার উচিৎ যাকাত দেওয়া। এতে করে গরিব -ধনী ভেদাভেদ কমে যায়। অনেক পরিবার এই কাপড়ের জন্যই অপেক্ষা করে। খুব ভালো লাগলো ভাই। আর আপনি খুব সুন্দর করে যাকাতের কাপড় কেনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথেই শেয়ার করেছেন। আর আসলে সকালে ঘুম থেকে উঠলে আমারো সেম অবস্থা হয়। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
নতুন পোশাকের সঙ্গে সবার মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া। দোয়া করবেন ভাই যেন প্রতিবছর এই উদ্যোগ নিয়ে গরীবের পাশে দাঁড়াতে পারি।
আপনার ঈদের কেনাকাটার পোস্ট দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে ঈদের সময় কেনাকাটা করতে মনের মধ্যে খুব অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। আপনার আব্বুর জন্য পাঞ্জাবি কিনেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। যাত্রাপথের ফটোগ্রাফি গ্রুপে দুর্দান্ত হয়েছে। এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ভাইয়া আপনি বোধহয় মূল টপিকস টা মিস করেছেন।
যাই হোক মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি কখনো আমার বাবার সঙ্গে শপিং করতে যাইনি ভাই। আমার মার সঙ্গে অনেকবারই গিয়েছি।বাবার সঙ্গে একই বাইকে করে শপিং করতে যাওয়ার মজাই অন্যরকম। আমাদের বগুড়াতে পোড়াদহ নামে একটি বাজার রয়েছে। আপনার শপিং করার মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
যাকাত উপলক্ষে আপনার কাপড় কিনার অভিজ্ঞতা গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো ।ভালো একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ভাই ।আমাদের সবার উচিত অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো ধন্যবাদ আপনাকে।।
আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। যাকাত এর কাপড় যেন সবার মাঝে বিতরন করতে পারেন তার জন্য অনেক দোয়া রইল। আমাদের যাদের নেসাব পরিমান সম্পদ আছে তাদের সকলের উচিত এমন করে যাকাত দেয়া। গরিবের হক আদায় যেন সকল মুসলিম করতে পারে তার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য ও তোফিক চাই। আমিন
মূলত ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী যাকাত দেওয়া হয়।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
পোড়াদহ যাওয়ার পথে বাবাকে মোটরসাইকেল চালাতে দিয়ে পিছন থেকে কিছু ছবি তোলা ,মিষ্টি রোদ উপভোগ করা এবং শপিংয়ের মুহূর্তগুলো ছিল বেশ সুন্দর এবং গোসাল। বাবার জন্য পাঞ্জাবি কেনা এবং পরিবারের সবার জন্য ঈদ শপিং করা সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ।ধন্যবাদ আপনার।
আসলে ভাইয়া মূলত যাকাতের কাপড় কেনার জন্য যাওয়া হয়েছিল।
আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ
রমযানে যাকাত দেওয়াটা আসলে ভাইয়া ভালো। অনেক বিত্তবান লোক যাকাত দিতে চায়না। যাকাত দিলে হয়তো আমাদের সমাজে গরিব-ধনীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকতো না। পোড়াদাহ থেকে ভাইয়া মনে হয় পাইকারী রেটে কাপড় বিক্রি করে? আপনার বাবার পাঞ্জাবিটাও সুন্দর হয়েছে। পড়লে মানাবে। তবে আপনার জন্য কিছু কিনেননি?
অসহায় মানুষ গুলোর ঈদের আনন্দ অনেক বেড়ে যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনি অনেক সুন্দর একটি পাঞ্জাবি কিনেছেন আপনার আব্বুর জন্য। পাঞ্জাবি কে দেখতে খুবই চমৎকার লাগছে। অনেক সুন্দর একটি পাঞ্জাবি কিনেছেন আপনি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কেনাকাটার কিছু মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
হুম পাঞ্জাবি টা অনেক সুন্দর ছিল। আমরা দুজনই পছন্দ করে কিনেছিলাম। ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ করার জন্য।