📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ২৭|| প্রকৃতির সৌন্দর্য ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য) by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেমঃ@kazi-raihan।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব। প্রকৃতির সৌন্দর্য গুলো ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরতে খুব ভালো লাগে। আর সেই ভালোলাগা কে কেন্দ্র করে যে ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম সেগুলো শেয়ার করেছি। চেষ্টা করি প্রতি সপ্তাহে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে আর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকে এই ফটোগ্রাফি পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করলে কিছু চোখ ধাঁধানো ফটোগ্রাফি সংগ্রহ করা যায় তবে অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহটা আর তেমন ঘুরাঘুরি করা হয়নি তবে আশা রাখছি সামনে সপ্তাহে আবার একটু বের হতে পারবো। এ সপ্তাহে যেগুলো ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছি তার প্রায় সবগুলোই আমার পুরনো অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। শুধু প্রথম দুটি ফটোগ্রাফি এই সপ্তাহে সংগ্রহ করা। সকালবেলা হাঁটতে বের হলে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতের সৌন্দর্যটা লক্ষ্য করা যায় আর সেটার ফটোগ্রাফি শুধু এই সপ্তাহ সংগ্রহ করেছিলাম। সত্যি বলতে ইদানিং ফটোগ্রাফি করার জন্য মাঝে মাঝে সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বের হই কারণ সকালের সৌন্দর্যটা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• প্রকৃতির সবুজ সৌন্দর্যে যে কেউ মুগ্ধ হবে এটা স্বাভাবিক। আমাদের এলাকায় মোটামুটি ধান চাষ ভালোই হয়। মাঠের মধ্য দিয়ে একটি রাস্তা আর রাস্তার দুই পাশ দিয়ে সবুজ ধানে ভরপুর শুধু চোখ বন্ধ করে এই সৌন্দর্যের মুগ্ধতা একটু ফিল করুন। আচ্ছা যদি ফিল করে থাকেন তাহলে এবার এই ফটোগ্রাফির সৌন্দর্য একটু দেখুন। চোখ বন্ধ করে যেটা ফিল করেছেন সেটার সাথে এই ফটোগ্রাফিটার কতটুকু মিল আছে বলুন তো। আমার তো মনে হচ্ছে পুরোপুরি মিল রয়েছে। ধান গাছের পাতা গুলো এখনো সবুজ আছে আর ধানগুলো সবে পাকতে শুরু করেছে হালকা বাদামি রং পড়েছে। এটাই হচ্ছে গ্রামের অপরূপ সৌন্দর্যের একটি অংশ বিশেষ। তবে এই ফটোগ্রাফির আরো একটি সৌন্দর্য হচ্ছে উপরের আকাশের সৌন্দর্যটা। আকাশের সৌন্দর্যের সাথে সবুজ ধান খেতের সৌন্দর্য মিলিয়ে অনেক সুন্দর ছিল।

• এই ছবিটাও একই জায়গা থেকে তোলা তবে দুইটা ফটোগ্রাফির মধ্যেও পার্থক্য হচ্ছে একটা ফটোগ্রাফিতে পুরোপুরি দৃশ্যটা তুলে ধরা হয়েছে আর এই ফটোগ্রাফিতে শুধু ধান খেতের সৌন্দর্য টা কাছে থেকে তুলে ধরা হয়েছে। ধান গাছের যে সবুজ পাতা তার পেছনে রয়েছে সূর্য, আর সূর্য হালকা উঁকি দিচ্ছে এজন্যই দেখতে আরো বেশি ভালো লাগছে। আজকে রুপক ভাই একটি পোস্ট শেয়ার করেছে যেখানে গ্রামের সৌন্দর্যটা তুলে ধরা হয়েছে আর এই জন্যই আমি গ্রামের চিকন রাস্তায় সকালবেলা হাঁটতে বের হই যাতে সকাল বেলার সৌন্দর্যটা ক্যামেরা বন্ধ করা যায়। যদিও আমি যখন ফটোগ্রাফি করেছিলাম তখন কুয়াশার রেস টা সূর্যের আলোর জন্য কমে গিয়েছিল।

• প্রতি সপ্তাহেই কুষ্টিয়া যাওয়া হয় তবে গড়ায় ব্রিজের নিচে কখনো নামা হয়নি। গত সপ্তাহে ছোট বোন বলল ভাইয়া কুষ্টিয়া গেলে আমাকে সাথে নিয়ে যেও আমার কিছু কেনাকাটা আছে এর জন্যই যাবো। আমি কুষ্টিয়া যাওয়ার আগের দিন ওকে বললাম সকালবেলায় কিন্তু আমি কুষ্টিয়া যাবো তুই যেতে চেয়েছিলে এর জন্যই তোকে বলছি যদি যাস তাহলে রেডি হয়ে থাকিস আমি তোকে নিয়ে যাবো। সকাল বেলায় আমরা দুজন কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম যদিও প্রতিদিন একটু ভোর বেলায় রওনা দেই তবে ঐদিন সাথে চাচাতো বোন ছিল বলে একটু দেরি করে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। ও আমাকে আগে থেকে বলেছিল ভাইয়া আমি গড়াই ব্রিজের নিচে কোনদিন যায়নি আজকে একটু নিয়ে যাবা। আমি ওকে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে আমি নিজেও তো কখনো যাই নাই আজকে নিচে গিয়ে ঘুরে আসবো। ওর কথা মতো গড়াই ব্রিজে নিচে গেলাম কিন্তু তেমন সুন্দর কিছু দেখতে পেলাম না। হয়তো বা নদী ভরা থাকলে সৌন্দর্যটা আরো ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। সেখানে গিয়ে শুধু গড়াই ব্রিজের একটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম যেটা এখন আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।

• গত সপ্তাহে যে ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করেছিলাম সেখানে একজন মাছ বিক্রেতার ছবিও শেয়ার করেছিলাম। গত সপ্তাহে যে মাদ্রিদকে তার ছবি শেয়ার করেছিলাম তিনি শুধু ইলিশ মাছ বিক্রি করেন। আমাদের বাজার থেকে পদ্মা নদীর দূরত্ব ৩-৪ কিলোমিটার যার কারণে আমাদের বাজারে সব সময় কম বেশি নদীর মাছ পাওয়া যায়। আজকের ফটোগ্রাফিতে যে মাছ বিক্রেতার ছবি শেয়ার করেছি সেই লোকটি শুধু নদীর কিছু ছোট মাছ বিক্রির জন্য বসেছিল আর সামনের দিকে যে লোকটি বসেছিল সে হচ্ছে তার ক্রেতা। ফটোগ্রাফিটা খুব কাছ থেকে ভালোভাবে দেখলে বুঝতে পারবেন মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে সামনে বসে থাকা লোকটি মাছ কিনেছে। যার জন্যই তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলছে এবং মাছ বিক্রেতা টাকা গুনছে তার ক্রেতাকে টাকা ফেরত দেবো বলে। মূলত মাঝেমধ্যে রাতের বেলায় মাছ বাজারে গেলে এমন সৌন্দর্য লক্ষ্য করা যায়।

• ফটোগ্রাফিতে যে ফলটি দেখছেন সেটা হচ্ছে আঙ্গুর ফল। আঙ্গুর ফলের নাম শুনলেই আমার শেয়ালের গল্পটি মনে পড়ে যায় যে আঙ্গুর ফল খেতে না পেরে নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য সে বলেছিল আঙ্গুর ফল টক হা হা হা 😆 এই ছবিটা আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে তোলা। আমি আমার চাচাতো বোনের বাসায় ঘুরতে গিয়েছিলাম আর সেখানে দেখলাম ওদের বাসার ছাদের উপরে আঙ্গুর ফলের গাছ লাগানো হয়েছে এমনকি সেখানে কয়েকটি আঙ্গুর ফল ধরেছে। আমি আর আমার চাচাতো বোন বিকেল বেলায় ছাদে গেলাম মূলত বাসার ছাদে উঠেছিলাম আমার ছোট্ট ভাগ্নি আয়েশার ছবি তোলার জন্য। ভাগ্নির ছবি তোলার পরে আমার আপু বলল দেখ রায়হান আমাদের আঙ্গুর ফল গাছে আঙ্গুর ফল ধরেছে। আর আমার তো আগে থেকেই অভ্যাস কিছু দেখতে গেলে সেটার ছবি তোলা। সেদিনের ছবি তুলে রেখেছিলাম আর আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

• রাত্রিবেলায় চাঁদের সৌন্দর্যটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। তবে শীত চলে আসার কারণে এরকম পরিস্কার চাঁদ আর খুব বেশি দেখা যাবে না। এই সপ্তাহের হ্যাংআউট পুরোপুরি শোনা হয়নি তবে গত সপ্তাহের হ্যাংআউট এ পুরোপুরি ছিলাম। রাত এগারোটার পরে হ্যাংআউটের কার্যক্রম গুলো শেষ হলো আর তখন টব বারান্দায় গিয়ে দেখলাম বাইরে দারুণ চাঁদ উঠেছে।। সমস্যা হচ্ছে টপ বারান্দা থেকে চাঁদের সৌন্দর্যটা পুরোপুরি ফোন ক্যামেরায় আসছিল না তাই বাধ্য হয়ে বাইরে যেতে হয়েছিল। বাইরে গিয়ে দেখলাম চাঁদের সৌন্দর্যটা প্রায় দিনের আলোর মতই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সত্যি বলতে এমন চাঁদনী রাতে প্রিয় মানুষের হাত ধরে হেঁটে বেড়াতে অনেক ভালো লাগে। তবে আমি সিঙ্গেল মানুষ তাই আমার ওইসব চিন্তা থেকে দূরে থাকাই ভালো। আমি শুধু আমার নিজের শখ পূরণ করার জন্য চাঁদের ফটোগ্রাফি করেছিলাম এতোটুকুই বড় বিষয়। গাছ গুলোর ডালের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো যেন আমাকে আলোকিত করছিল আর সেই সৌন্দর্য টাই আমি ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে ক্যাপচার করেছিলাম যেটা এখন আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি।

• এর আগে বৃষ্টি ভেজা ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে একটি পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাবে গত মাসে আমাদের অঞ্চলে কিছুটা বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আমি যখন বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় ফিরছিলাম তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল।তখনো শীতের আমেজ শুরু হয় নি।আমি বাইক থামিয়ে ব্রিজের উপরে দাড়ালাম আর বৃষ্টি ভেজা গড়াই ব্রিজের কিছু ছবি তুললাম। কিছু কিছু গাড়ি বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় তাদের লক্ষ্য ছুটে চলেছে।আমি বাম পাশে বাইক রেখে ডান পাশে গেলাম একটি ট্রাকের ছবি তোলার জন্য। মূলত ঐ দিন রাস্তায় গাড়ির চাপ অনেক কম ছিল তাই ট্রাক আসা দেখেই আমি ছবি তোলার জন্য রাস্তা পার হলাম। ফোন ব্রিজের উপরে রেখে ট্রাকের ফটোগ্রাফি করেছিলাম আর সেটাই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।