"আমার জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি" প্রতিযোগিতা - ২০||১০ % লাজুক খ্যাকের জন্য।|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ৩০শে আষাঢ় | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ|বৃহস্পতিবার| বর্ষাকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি কাজী রায়হান, আমার ইউজার নাম @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


people-2589047__480.jpg

Source

মাঝেমাঝেই আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আর এবারে জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি কে কেন্দ্র করে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। @rme দাদাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাঝে এতো সুন্দর প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। আজকে ২০ তম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব বলেই আপনাদের মাঝে এই পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। একদিকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আমার জীবনের প্রথম প্রেম কাহিনী শেয়ার করতে পারছি তার পাশাপাশি দাদার আয়োজন করা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারছি।


চলুন শুরু করা যাক



people-2597454__480.jpg

Source

প্রথম প্রেমের অনুভূতি



বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সবার জীবনে প্রেম ভালোবাসা আসে। আমার জীবনে ও প্রেমের ছোঁয়া লেগেছিল আর জীবনের প্রথম প্রেমের ছোঁয়া লাগা সেই অনুভূতি আজকে তুলে ধরার জন্য আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। সব ছেলে মেয়েদের একটা বয়স আসে যখন তারা একে অপরের সাথে কথা বলার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় আর তখনই একটা ছেলে এবং একটা মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঈদ উপলক্ষে অনেক সুন্দরী মেয়েদের সাথেই তো দেখা হলো কিন্তু জীবনের প্রথম ভালোলাগা মেয়েটির সম্পর্কে মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভালবাসার গল্পটি এখনো যেন সতেজ আছে। সেই প্রথম প্রেমের গল্পটির বর্ণনাই আগে আপনাদের মাঝে তুলে ধরি

সেই ২০১৪ সালের ঘটনা। মার্চ মাসে আমাদের স্কুলে স্পোর্টস হত আর সেই অনুষ্ঠানে আমার থেকে এক বছরের জুনিয়র একটি মেয়ের সাথে চোখে চোখে দুই একটা কথা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম যার কারণে পুরো এক সপ্তাহ স্কুলে যাওয়া হয়নি আর তার সাথে কোন দেখাই হয়নি। মনের ওই অনুভূতিটা অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিল কিন্তু যখন সুস্থ হয়ে আবার স্কুলে ফিরলাম তখন মেয়েটির সাথে আবার দেখা হয়েই মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অনুভূতিগুলো আবার নতুন করে জেগে উঠলো। আমি তখন নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের স্টুডেন্ট আর মেয়েটি ক্লাস এইটে পড়ে।সে জেএসসি পরীক্ষার্থী বলে স্কুলের শিক্ষকেরা তাদেরকে একটু প্রেসারের মধ্যে রাখতো। যাইহোক একমাস শুধু দেখাদেখি আর চোখের ইশারায় কথা হল কিন্তু সামনাসামনি গিয়ে কোন কথা বলা হয়নি। আসলে অনেক ছোট থেকেই আমি একটু ভীতু টাইপের ছিলাম যার জন্য সাহস করে কথা বলা হয়নি। মেয়েটির নাম ছিল সুমি, দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর, স্কুল ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে হিজাব পড়ে আসতো তার জন্য দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগতো। দীর্ঘদিন চোখে চোখে কথা বলার পরে একদিন হঠাৎ করেই আমার বন্ধুর হাতে দেখলাম একটা চিঠি লিখে দিয়েছে আর বলেছে এটা রায়হানের কাছে দিবেন। আমার বন্ধু সোহেল আর পলাশ এসে আমাকে চিঠি দিয়ে বলল সুমি তোকে দিয়েছে, আমি তো একদম অবাক হয়ে গেলাম। প্রথম চিঠি পাওয়ার পরেই মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল আর চিঠিটা যত সময় যাবত পড়তে পারছিলাম না তত সময় মন শান্ত হচ্ছিল না।লুকিয়ে চিঠি পড়ার জন্য স্কুলের ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা লক করলাম আর মেয়েটির মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সব অনুভূতিগুলো চিঠির মাধ্যমে জানতে পারলাম। চিঠিতে অনেকগুলো প্রশ্ন করেছিল আর সেগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্যই স্কুল ছুটির পরে দ্রুত বাসায় ফিরে গেলাম আর খাওয়া দাওয়া করে দরজা আটকায় দিয়ে চিঠিতে যে প্রশ্নগুলো করেছিল সেগুলোর উত্তর দিলাম। মজার বিষয় হচ্ছে যখনই সুযোগ পাচ্ছিলাম তখনই মেয়েটির লেখা চিঠি বের করে পড়ছিলাম। এভাবে চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমেই আমাদের প্রথম ভালবাসার শুরুর দিনগুলো ভালোই কাটছিল।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সুমির জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয় এবং সে এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। যত দিন যাচ্ছিল আমাদের দুজনের মধ্যেকার ভালোবাসা আরো গভীর হচ্ছিল। তবে আমাদের কারোর স্মার্ট ফোন ছিল না যার কারণে প্রতিদিন তিন থেকে চার পৃষ্ঠার পর্যন্ত চিঠি লিখতাম আর স্কুলের টিফিন টাইমে আমরা দেখা করতাম আর গল্প করতাম। আমাদের স্কুলের পাশে প্রথম যেদিন দেখা করেছিলাম সেদিন মনের মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল আর আমার হাত পা কাপছিল কারণ এর আগে কোন অপরিচিত মেয়ের সাথে কথা বলিনি বা দেখাও করিনি। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সম্ভবত পাঁচ মিনিট কথা বলেছিলাম আর ভয়ে ভয়ে তাড়াতাড়ি কথা শেষ করে স্কুলে ফিরে আসি। তারপর থেকে আস্তে আস্তে মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভয়ভীতি গুলো অনেকটাই কমে গিয়েছিল। স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেক কথা বলতাম তখন আর তেমন ভয় হতো না।

people-2561053__480.webp

Source

এই ঘটনাটি ২০১৫ সালে ঘটেছিল। একটু সকাল সকাল স্কুলে গিয়েছিলাম কারণ আমরা মাঝে মাঝেই স্কুলের দোতলায় বসে গল্প করতাম। নবম শ্রেণী এবং দশম শ্রেণীর ক্লাসরুম ছিল পাশাপাশি আর দোতালায় ক্লাস রুমের সামনে আমরা বসে বসে গল্প করতাম। আমরা দুজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম হঠাৎ সে রেলিং এর উপর হাত রাখল আর আমি তার হাতের উপরে হাত রাখলাম। তার হাত ধরার পরপরই আমার ভেতর কেমন যেন নার্ভাস ফিল হচ্ছিল আর আমি প্রচুর পরিমাণে ঘামছিলাম। তবে এই প্রথম কোন মেয়ের হাত ধরলাম আর মেয়ে মানুষের হাত যে এতটা নরম হয় সেটা আগে জানতাম না 🙈 দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের একজন শিক্ষক এই দৃশ্য দেখে ফেলে আর যখন ল্যাবরেটরীতে আমাদের ফিজিক্স ক্লাস হচ্ছিল তখন ঐ শিক্ষক আমাকে দাঁড় করিয়ে সবকিছু জিজ্ঞাসা করে এবং বলে আর যেন দ্বিতীয়বার এই মেয়ের পাশে তোমাকে না দেখি। মন তখন উড়ু উড়ু শিক্ষকের কথা কী আর কানে যায়?? আমরা তাও দেখা করতাম কথা বলতাম, এই মাঝে আমি আমার এক বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলাম আর বলেছিলাম এটা সুমির কাছে পৌঁছে দিতে,মূলত সুমিদের বাসা আর আমার ঐ বন্ধুদের বাসা একদম পাশাপাশি। সে একটু অসুস্থ ছিল যার কারণে দুই দিন স্কুলে আসতো না আর আমি আমার বন্ধুর কাছে চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলাম যাতে সে বর্তমানে কেমন অবস্থায় আছে সেটা জানতে পারি। আমার বন্ধু যখন সুমির কাছে চিঠি পৌঁছে দিতে গিয়েছিল তখন সুমির ছোট চাচা বিষয়টি ধরে ফেলেছিল এবং আমার লেখা চিঠি পড়েছিল। হঠাৎ আমি বিকাল বেলায় প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছি আর সুমির চাচা আমাকে ডেকে বলল এই ছেলে শুনো। আমি কাছে যাওয়ার পরই সে আমাকে বিষয়গুলো সম্পর্কে বলল এবং আমাকে সতর্ক করলো প্রয়োজনে সে আমার পরিবারের কাছে জানাবে। আমি ছোট থেকেই অনেক ভীতু ছিলাম যার কারণে অনেক ভয় পেয়েছিলাম। তবে যখন সুমি সুস্থ হয়ে আবার স্কুলে ফিরে আসলো তখন আমাদের মধ্যে কথাবার্তারা হওয়ার ফলে সব ভয় ভীতি দূর হয়ে গেল। একদিন আমাদের ফিজিক্স টিচার ক্লাসে এসে সবার সামনে আমাকে দাঁড় করিয়ে ব্যাত দিয়ে রীতিমতো পেটালো আর বলল আবার যদি আমি শুনেছি ওই মেয়ের সাথে কোন কথাবার্তা হয়েছে তাহলে সোজাসুজি তোমার বাবার কাছে বিষয়গুলো জানিয়ে দিব। পরে জানতে পারলাম সুমির চাচা আমাদের ফিজিক্স টিচারের সাথে বিষয়গুলো শেয়ার করেছে আর যার কারণেই স্যার আমার উপর এতটা ক্ষেপেছে। ঘটনার কিছুদিন পরেই আমাদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য টেস্ট পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষার মধ্যে শুধু দেখা হতো আর কথা হতো চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে, যেটা খুবই সতর্কভাবে আদান প্রদান করতাম।

heart-529607__480.jpg

Source

আমাদের টেস্ট পরীক্ষার পর থেকে আর স্কুলে ক্লাস হতো না যার জন্য স্কুলে যাওয়া হতো না আর সুমির সাথেও ঠিকমতো দেখা হতো না। সপ্তাহে একটা চিঠি লিখতাম আর সেখানেই মনের কথাটা তুলে ধরার চেষ্টা করতাম। হঠাৎ একদিন একটি চিঠিতে সে আমাকে বলেছিল যেহেতু কিছুদিন পরে তোমার এসএসসি পরীক্ষা তাই এখন এই বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে একটু লেখাপড়ার বিষয়ে সিরিয়াস হও। আমিও লেখাপড়ার মনোযোগ দিলাম আর বেশ ভালোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা শেষ করলাম তবে আমি তার কোন রেসপন্স পেতাম না। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট মোটামুটি ভালো হওয়ায় বাসা থেকে নতুন ফোন কিনে দিল। ২০১৬ সালে১২৫০০ টাকা দিয়ে samsung j সিরিজের J2 ফোন কিনেছিলাম। নতুন ফোন কেনার পরেই সুমির বাসার নম্বর জোগাড় করলাম এবং একদিন বিকেল বেলায় ফোন দিলাম। সুমি ফোন রিসিভ করল এবং আমি পরিচয় দেওয়াতে সে ফোন কেটে দিল। আমি আবারো ফোন দিলাম এবার সে ফোন রিসিভ না করেই ফোন কেটে দিল। এভাবে কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরে সে আবার ফোন রিসিভ করে আমাকে বলল আমি যেন তাকে ডিস্টার্ব না করি তার ফোনে যেন আর ফোন না দেই এই বলে আবার ফোন কেটে দিল। সে ফোন কেটে দেয়ার পরে আমি আবারো ফোন দিলাম আর দেখলাম নাম্বার ব্যস্ত দেখাচ্ছে কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরে বুঝতে পারলাম হয়তো সে আমার নম্বর ব্ল্যাকলিস্ট করে রেখেছে। আমি মাঝে মাঝেই তার ফোনে ফোন দিতাম কিন্তু দেখতাম সে আমার নম্বর ব্ল্যাকলিস্ট করেই রেখেছে।

school-design-1727572__480.webp

Source

আমি পাংশা সরকারি কলেজে এডমিশন নিলাম এবং সেখানে মেস নিয়ে নিয়মিত কলেজে ক্লাস করতাম আর লেখাপড়ায় মনোযোগ দিলাম। যদিও মাঝে মাঝে সুমির নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতাম তবে নাম্বার ব্ল্যাকলিস্ট করে রাখার কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হতো না। একদিন আমার রুমমেট প্লাস বন্ধুর ফোন নিয়ে সুমির নাম্বারে ফোন দিলাম এবং সে ফোন রিসিভ করার পরে আমি পরিচয় দিলাম। তবে দুঃখের বিষয় ছিল সে আমার পরিচয় জানার পরে আমাকে অনেক রাগ করে, আমি কেন তাকে ফোন দেই তাকে কেন ডিস্টার্ব করি এসব কথা বলে কিন্তু আমি তার কথায় কোন উত্তর দিতে পারিনি শুধু চুপচাপ তার কথাগুলো শুনেছিলাম। তার মনের মধ্যে থাকা সব রাগ আমার প্রতি প্রকাশ করার পরে সে নিজে থেকেই ফোন কেটে দিল আর তারপরে আমি আর তাকে ফোন দিইনি বা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করিনি।

তবে হঠাৎ বিকেল বেলায় দেখলাম আমার নম্বরে সে দুইবার ফোন দিয়েছে। এই দেখে আমি তার নম্বরে কল ব্যাক করলাম। সে প্রথমে ফোন ধরে আমাকে জিজ্ঞাসা করল কেমন আছো?? আমি তো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম যে মানুষটা সকালবেলা আমাকে এত কথা বলল আর আমি তাকে ডিস্টার্ব করি বলে সে আমাকে বকাঝকা করল আর এখন সে নিজেই ফোন করে আমাকে জিজ্ঞাসা করছে আমি কেমন আছি!! আমি সরল মনে বললাম আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি তুমি কেমন আছো?? সে উত্তর দিল আমি ভালো নেই কারণ সকালে তোমার সাথে খুব খারাপ বিহেভ করেছি আর যার জন্য মনের কাছে খুব খারাপ লাগছে। অনেক সময় দুজন দুজনের মনের মধ্যে থাকা সব কথাগুলো একে অপরের সাথে শেয়ার করলাম। সুমি বলল আচ্ছা আজকে অনেক কথা বলেছি আবার সময় পেলে কালকে ফোন দিব তবে তুমি কিন্তু আমার ফোনের অপেক্ষায় থাকতে পারবা না। আসলে ওর কথা কেমন যেন মনে হচ্ছিল হঠাৎ করেই হারিয়ে গিয়েছিল আবার হঠাৎ করেই ফিরে আসলো আমি ঠিকমত কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।



love-2587456__480.jpg

Source

সুমির কোন পার্সোনাল ফোন ছিলনা যার কারণে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন আমরা কথা বলতে পারতাম। আর এভাবে কথা বলার মাধ্যমে আমাদের সেই থেমে যাওয়া ভালোবাসা আবার নতুন করে চলতে শুরু করে। আবারো একে অপরের প্রতি দুর্বলতা সৃষ্টি হয়। একদিন বিকেলে আমি ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলাম আর ফোন রুমে রেখে গিয়েছিলাম। রুমে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল আর সন্ধ্যার পরে রুমে এসে দেখতে পেলাম শুনে আমাকে ৪২ বার ফোন করেছে এবং ওর ফুফাতো বোন চারবার ফোন করেছে। আমি তো এতবার ফোন করা থেকে ভয় পেয়ে গেলাম। দ্রুত সুমিকে কল ব্যাক করলাম আর সে ফোন রিসিভ করেই বকাঝকা করা শুরু করল আমি কোন উত্তর দিলাম না কারণ সে এতবার ফোন দিয়েছে নিশ্চয়ই মনের মধ্যেও অনেক রাগ জমে আছে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুক। সুমির রাগ একটু কমে যাওয়ার পরে আমাকে জিজ্ঞাসা করল কোথায় গিয়েছিলে তুমি?? আমি বললাম ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলাম। তখন সে আবার আমাকে একটু রাগ করল এবং বলল তুমি জানো না আমি ফোন দিতে পারি আর এতবার ফোন দেয়ার পরেও যখন রিসিভ করোনি তখন আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম কি না কি হয়েছে।সে বলল যখন যেখানে যাবে অন্তত ফোনটা কাছে রাখবে।

এভাবেই আমাদের দুজনের ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো বেশ ভালোই কাটছিল। মাঝে মাঝে মজার মজার খাবার রান্না করে সে তার ফুফাতো বোনের মাধ্যমে আমার কাছে পাঠাতো।২০১৯ সালের শেষের দিকে তার বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য প্রেসার দিতে থাকে, কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না কারণ আমি তখনো বেকার। বাড়িতে এই বিষয়ে কথা বলার মতো সাহস নেই।সব জল্পনা কল্পনা শেষে ২০২০ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তার বিয়ে হয়ে যায় আর আমাদের ভালোবাসার অবসান ঘটে। তবে তার প্রতি ভালোবাসা আর রেসপেক্ট একটু ও কমে নি।তার বিয়ের পর সে আমাকে ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করেছিল কিন্তু আমি তাকে বুঝিয়ে ছিলাম বাস্তবতা এমনই হয়। ঈদের আগের দিনও সে আমাকে ফোন করেছিল আমি কেমন আছি কি করছি সবকিছু জিজ্ঞাসা করেছিল। তবে প্রথম ভালবাসাটা সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকে আর প্রথম ভালবাসার অনুভূতিটা আজও মনের মধ্যে জেগে আছে বলেই আর দ্বিতীয় কোন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত জড়াতে পারিনি। ভালো থাকুক প্রিয় মানুষগুলো আর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে উঠুক এই কামনাই করি।



এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan

আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি জীবন কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 2 years ago 

😍💚😍

 2 years ago 

আসলে ভালোবাসার মানুষগুলো এভাবে হঠাৎ ই ফোন দিয়ে অবাক করে দেয়। বেশ ভালো ছিল আপনার প্রথম প্রেমের গল্পটি ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

কস কি বন্ধু এত প্রেম ছিল তোমাদের মাঝে এগুলো তো আগে কখনো শুনিনি। ভাগ্যিস এই কনটেস্টের মাধ্যমে তোমার প্রেম কাহিনী জানতে পারলাম। দুঃখ নিও না ভেঙে পরোনা অনেক ভালো কিছু পেতে পারো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66244.62
ETH 3320.00
USDT 1.00
SBD 2.70