ঢাকায় এক সন্ধ্যা ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -২০ই মাঘ | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শীতকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



20230203_150316_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



ঢাকা গিয়েছিলাম সেই বিষয় নিয়ে অলরেডি আপনাদের সাথে একটি পোস্ট শেয়ার করেছি তবে সেটা ছিল প্রথমবার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যাওয়াকে কেন্দ্র করে। নিজের ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা গিয়েছিলাম আর মামার বাসায় গিয়ে মাত্র একদিন ছিলাম। আমার একটা মামাতো ভাই আছে তার নাম হচ্ছে আবির। আবির বর্তমানে নবম শ্রেণীর ছাত্র। আমি ঢাকায় পৌঁছেছিলাম প্রায় বিকাল চারটার দিকে আর বাসায় গেলাম তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। বাসায় পৌঁছানোর পরে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম আর ততক্ষণে মামি ইলিশ মাছ, ডাল আর সিম ভর্তা দিয়ে ভাত রেডি করে রেখেছে। আমি খাওয়া-দাওয়া কমপ্লিট করলাম আর বিছনার পরে শুয়ে টিভি দেখছিলাম আর রেস্ট করছিলাম। ছোট মামাতো বোন মিমকে জিজ্ঞাসা করলাম আবির কোথায় গিয়েছে তখন মিম বলল ভাইয়া নিচে খেলতে গিয়েছে হয়তো সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসবে। আমি টিভি দেখেছিলাম তখন কলিংবেলের শব্দ শুনে বুঝতে পারলাম হয়তো আবির এসেছে। দরজা খুলে দেখতে পেলাম আসলেই আবির দাঁড়িয়ে আছে। সে আমাকে সালাম দিল আর আমি সালামের উত্তর দিয়ে বললাম কি খবর ভাইজান কেমন আছো?? সে উত্তরে বলে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আপনি কেমন আছেন ভাই?? আমিও উত্তর দিলাম। বাইরে থেকে খেলাধুলা করে এসে সে ফ্রেশ হয়ে নিল এবং কিছু সময় পরে আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো ভাইয়া নিচে ঘুরতে যাবেন?? ভাবলাম বাসায় থেকে আর কি করব সন্ধ্যা তো হয়ে গিয়েছে নিচে থেকে একটু ঘুরে আসি তাই আবিরের কথামতো একটু বাইরে বের হলাম।



20230128_183102.jpg

20230128_184639.jpg

20230128_184703.jpg

20230128_184657.jpg

20230128_185242.jpg

20230128_185221.jpg



আমি আশায় মামা বাড়তি কিছু বাজার করার জন্য নিচে গেল। ভাবলাম মামার সাথে একসাথে বাইরে যাই কিন্তু আবিরের রেডি হতে একটু দেরি হয় আমরা একটু বেশি লেট করে ফেললাম। যাইহোক রাত্রেবেলা শহরের অলি গলি দিয়ে হাঁটতে ভালো লাগে। গলির মাঝ দিয়ে আমরা সোজা হাইওয়ে রাস্তার দিকে গেলাম। যারা রায়েরবাগ এই অঞ্চল দিয়ে আসা-যাওয়া করেন তারা হয়তো জায়গাটা চিনবেন। রায়েরবাগ ওভারব্রিজ পার হয়ে আমরা দুজন রাস্তার বিপরীত পাশে গেলাম। ও আপনাদের কাছে তো একটি কথা বলা হয়নি, আমি যখন বাসায় যাচ্ছিলাম তখন বিকেল টাইম, সূর্য অনেকটাই হেলে পড়েছে আর সেই সময় ওভার ব্রিজের পাশে একটি জিলাপির দোকানে গরম জিলাপি ভাজি করা হচ্ছিল। তখনই আমার জিলাপি খেতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু সাথে মামা ছিল তাছাড়া দীর্ঘ পথ জার্নি করে এসেছি এর জন্য আর সেখানে দাঁড়ানো হয়নি। যাইহোক আমি আর আবির সোজা জিলাপির দোকানে গিয়ে জিলাপি খাওয়ার উদ্দেশ্যেই ওভারব্রিজ পার হয়ে এই পারে এসেছি। ওভার ব্রিজের উপর থেকে আমি কিছু ছবিও তুলেছিলাম কারণ ওভারব্রিজের উপর থেকে রাতের বেলায় বা সন্ধ্যার পরে ঢাকা শহরের হাইওয়ে গুলোর সৌন্দর্য কি রকম দেখায় সেটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।



20230128_190817.jpg

20230128_191026.jpg

20230128_185440.jpg

20230128_190853.jpg

20230128_191610.jpg



যাইহোক এবার খাওয়ার প্রসঙ্গে আসা যাক। তবে আগেই বলে রাখছি এটা কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে খেয়েছি তাই এখন খাবারের প্রতি লোভ দেখিয়ে কোন লাভ নেই। আমার এখন আর পেট খারাপ হবে না হা হা হা। শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে মিনি চাইনিজের দোকান থাকে আর সেখানে তেলে ভাজা সব মজার মজার খাবার পাওয়া যায়। স্বল্প টাকায় এমন মজাদার খাবার আসলে অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। একই জাতীয় খাবার আপনি যদি রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে চান তাহলে দ্বিগুণ পরিমাণে টাকা গুনতে হবে। এবার তাহলে মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। ওভারব্রিজ থেকে নেমেই একটি মিনি চাইনিজ এর দোকান দেখলাম। আবিরকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম এখান থেকে কিছু খাবা?? আবির তখন বলল ভাইয়া চিকেন রোল খাওয়া যায়। যাই হোক তখন আমি ওর জন্য চিকেন রোল অর্ডার করলাম। তবে মজার বিষয় হচ্ছে মাত্র ৪০ টাকায় চিকেন রোল পাওয়া যায়। চিকেন রোল খাওয়া শেষে আবিরকে বললাম এবার গরম জিলাপি খাবো। তবে কেউ হ্যাংআউটে যে জিলাপি পাওয়া যায় সেই জিলাপির কথা মনে করবেন না কিন্তু হি হি হি। জিলাপির দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম মামা জিলাপি কি গরম?? দোকানদার বলল এক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে গরম জিলাপি হচ্ছে। আসলেই দেখলাম জিলাপি গুলো সবেমাত্র তেলে ছেড়ে দিচ্ছে আর সেই জিলাপি খাওয়ার জন্যই একটু দাঁড়িয়ে থাকলাম। তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম সেটা হচ্ছে দোকানটায় অনেক বেচা কেনা হয়। হয়তো এই জিলাপির টেষ্ট ভালো এই জন্যই এতো ভিড় জমেছে। জিলাপির দাম জিজ্ঞেস করার পরে দোকানদার বলল প্রতি কেজি জিলাপি বিক্রি করছি ১৬০ টাকা কেজি ধরে। আমরা দুজন মিলে কিছু জিলাপি খেলাম আর বাকিটা বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্যাকেট করে নিলাম। আবার সাইডে ভাপা পিঠা তৈরি করছিল। সেখানে গিয়ে ১০ টাকা পিস ভাপা পিঠা খেলাম। তবে ভাপা পিঠার সাথে নারিকেল দেওয়ায় বেশ মজা লাগলো। আপাতত হালকা পাতলা খাওয়া-দাওয়া কমপ্লিট করে বাসার উদ্দেশ্যে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। যাওয়ার সময়ে ওভার ব্রিজের উপরে একজন দোকানদারকে বসে দেখেছিলাম তাই ভাবলাম তার ছবি তুলে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। অল্প টাকায় বিভিন্ন প্রোডাক্ট তিনি বিক্রি করেছিলেন।



20230128_192925.jpg

20230128_193048.jpg

20230128_212421.jpg



অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল তাই সোজা বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। যাওয়ার পথে যদিও আমার ফোনের কাভার কেনার জন্য একটি দোকানে গিয়েছিলাম তবে দুঃখের বিষয় দোকানে Samsung galaxy A52 এই ফোনের কোন কাভার ছিল না। বাইরে থেকে ভরপুর ফাস্টফুড খেয়েছিলাম যার কারণে একটু কোমল পানীয় খেলে অনেকটাই স্বস্তি হতো। বাসায় ফেরার পথে গলির এপাশ থেকে আমরা দুজন ছবি তুলছিলাম তখন একটি বিষয় লক্ষ্য করলাম যে আমাদের দুজনের ছায়া রাস্তার উপরে রয়েছে আর আমি সেটার ছবিও তুলেছিলাম। যাইহোক বাসায় পৌঁছানোর কিছু সময় আগে মামার ফোন থেকে ফোন আসলো আর রিসিভ করার পর মিম বলে উঠলো ভাইয়া আপনি বাসায় ফিরবেন কখন?? আমি বললাম এইতো প্রায় বাসার কাছাকাছি চলে এসেছি। নিম তখন বলল ভাইয়া আমার জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসবেন। আসলে ঢাকার শহরের শীত অনেকটাই কম যার কারণে সব সময় কম বেশি আইসক্রিম পাওয়া যায়। মিমের জন্য ৮০ টাকা দিয়ে আইসক্রিম নিলাম তখন আবির আবার বলল ভাইয়া তাহলে হালকা কিছু কোমল পানীয় কিনলেও ভালো হয়। দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করলাম কোকাকোলা আছে কিনা। দোকানদার বলল কোকাকোলা নেই কিন্তু পেপসি আছে। তখন দুজন দুটা পেপসি নিলাম। তার পর গল্প করতে করতে আমরা বাসায় পৌঁছে গেলাম।

ঢাকা শহরে অনেক স্মৃতি আছে তবে রায়েরবাগ এলাকায় এই জীবনের প্রথম আসা হয়েছে আর সন্ধ্যার পরে এলাকাটা টুকটাক ঘুরে দেখা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে যতটুকু সময় ঘোরাফেরা করেছিলাম তার পুরোটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। রায়েরবাগ এই এলাকায় যদি কেউ থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন কারণ সামনের সপ্তাহে আবার মামার বাসায় যাওয়া লাগতে পারে। যদি যাই বা জানতে পারি আমাদের কমিউনিটির কেউ সেখানে থাকেন তাহলে তার সাথে দেখা করা যাবে।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়ফেব্রুয়ারী,২০২৩



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 2 years ago 

আপনি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা গিয়েছেন পোষ্টটি দেখেছি আমি। এবার ঢাকা গিয়ে সন্ধ্যার মুহূর্ত খুব সুন্দর করে উপভোগ করলেন। পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো। শীতের সন্ধ্যায় গরম গরম ভাপা পিঠা খাওয়ার অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

হ্যাঁ হালকা শীতে গরম ভাপা পিঠা খুব মজা করে খেয়েছিলাম। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

একমাত্র শহরাঞ্চলে গেলে ব্যস্তময় দৃশ্যপটগুলো ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়। শহর সব সময় ব্যস্ত কেন্দ্রিক হয়ে থাকে যেটা মানুষের কর্ম ক্ষেত্রে প্রধানস্থল। আপনি যে কাজের জন্য গিয়েছিলেন সেটা যেন সফলভাবে সম্পন্ন হয় সেটাই প্রত্যাশা করি।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই শহরে প্রতিটা মানুষ ব্যস্ত ভাবে সময় পার করে কারণ গ্রাম থেকে তাদের কাজের খোঁজে শহরে যায়। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনি প্রথমবার পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা এসেছেন নিশ্চয়ই অনেক ভাল লেগেছে। ঢাকার রায়েরবাগ ত আমার অনেকটা কাছেই ওয়ারী চলে আসেন আড্ডা দেয়া যাবে। রায়েরবাগ ওভারব্রিজে দাড়িয়ে তোলা দৃশ্য গুলো সুন্দর লাগছে। আপনি ভাপা পিঠা, রোল খেয়েছেন দেখে আমারও খেতে ইচ্ছে করছে। এখানে রোল একেক জায়গায় একেক দাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

এই সপ্তাহে আবার ঢাকা আসতে পারি যদি আবার ঢাকা আসি তাহলে আপনাকে ইনভাইট করে চিকেন রোল খাওয়াবো ইনশাল্লাহ।

 2 years ago 

নিশ্চয়ই ভীষণ ভালো লেগেছিল কারণ আপনি প্রথমবার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন।দেখেই বুঝতে পারছি বেশ ভালই কেটেছে কিন্তু সন্ধ্যাটা। এভাবে মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আমার কাছে তো এরকম পোস্টগুলো পড়তে একটু বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে ঘুরাঘুরির পোস্ট একটু বেশি ভালো লাগে সম্পূর্ণটা পড়ে ভীষণ ভালোই লেগেছে সেই সাথে ফটোগ্রাফি গুলো দেখেও ভীষণ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

অনেকেই পদ্মা সেতুতে উঠে ছবি দিয়েছিল কিন্তু আমি শুধু দেখেছি তবে এবার আমি নিজেও পদ্মা সেতু পার হয়েছি অনুভূতিটা বেশ ভালো ছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59500.17
ETH 2654.95
USDT 1.00
SBD 2.41