গল্প থেকে শিক্ষা | ১০% লাজুক খ্যাঁক এর জন্য
আশাকরি সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। সেই সাথে আশা করি আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি গল্প এবং গল্প থেকে বাস্তবতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।
কুদ্দুস গ্রামে বসবাস করে। সে খুবই চালাক প্রকৃতির এবং কৃপণ ও মানুষ ঠকানোর ওস্তাদ। সে যে কোন কাজে চালাকি করতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। সেইসাথে কৃপনতাতো আছেই। আর চালাকির কারণেই সে মানুষ ঠকানোর চেষ্টা করতো। সে মানুষ ঠকানো কি একটা আর্ট মনে করত। মানুষকে ঠকাতে পারলে সে মনে মনে স্বস্তি পেতো। মানুষ ঠকাতে পারলে সে তৃপ্তির ঢেকুর দিতো। তাই সে যেখানেই যেত সেখানে ফন্দি বের করত! কিভাবে কৃপণতা করা যায় এবং সেইসাথে মানুষকে ঠকানো যায়। তাই তার অঞ্চলে সে কিপ্টা কুদ্দুস নামে পরিচিত ছিল। এবং সেইসাথে অনেকে থাকে ফটকা কিংবা ঠকবাজ বলেও কানাঘুষা করত।
যাই হোক একবার কুদ্দুস সিদ্ধান্ত নিল একটি ছাগল কিনবে। ছাগল কিনে সে এটা লালন পালন করবে এবং অনেক দামে বিক্রি করবে। তাই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে একটি হাঁটে গেল। হাঁটে যাবার আগে অবশ্য সে একটি পাটের বস্তা এবং কিছু রশি নিয়ে গিয়েছিল। সে হাঁটে অনেক ঘুরাঘুরি করল কম দামে কোন ছাগল পাওয়া যায় কিনা। ছাগলের বাজারে গিয়ে দেখল দাম অনেক বেশি। তাই সে কয়েক ছাগলের দাম নিয়ে অনেক দামাদামি করেছিল। কিন্তু কিনতে পারেনি। সে অপেক্ষা করতে থাকলো শেষ সময়ে একটি ছাগল কিনবে। কারন শেষ সময়ে দাম কিছুটা সস্তা থাকে। তাই কুদ্দুস সারাদিন না খেয়ে হাটে ঘুরাঘুরি করল এবং শেষ বিকেলের দিকে একটি ছাগল কিনলো।
কুদ্দুস ছাগল কিনে অনেক চিন্তায় পড়ে গেল। কারণ কুদ্দুস যে হাঁটে থেকে ছাগল কিনেছে সে হাঁটে হাসলি তথা ট্যাক্স দিতে হয়। তাই কুদ্দুস চিন্তা করতে থাকলো কিভাবে হাসলি দেয়া থেকে বাঁচা যায়। সে অনেক চিন্তা-ভাবনা করার পর তার সঙ্গে নিয়ে আসা পাটের বস্তা বের করল। সে চিন্তা করল বস্তার ভিতরে ছাগল পুরে বাসায় নিয়ে যাবে। যেই চিন্তা সেই কাজ। কুদ্দুস ছাগলটিকে বস্তার ভিতর রেখে মাথায় করে নিয়ে হাটা শুরু করল। অনেকেই বস্তার ভিতরে কি আছে তা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দিল মিষ্টি আলু। কেউ সন্দেহ করল না কিংবা তাকে কোথাও চাঁদা দেয়ার জন্য আটকালো না। সে বাসায় এসে জোরে তার বউকে ডাকা শুরু করলো। বলল বউ গো বউ এসে দেখো কত বড় মিষ্টি আলু বাজার থেকে নিয়ে এসেছি। সেইসাথে ফাঁকি দিয়ে হাসলি থেকে বেঁচেছি।
কুদ্দুস এর বউ কিছু বুঝার আগেই কুদ্দুস বস্তাটি মাথা থেকে নামালো। বস্তাটি মাথা থেকে নামানোর সময় খেয়াল করল বড় মিষ্টি আলু কোন নড়াচড়া করছে না। সে বাঁধন খুলে দেখল বড় মিষ্টি আলু অনেক আগেই মারা গেছে এবং শক্ত হয়ে আছে। তখন কুদ্দুস এর বউ চিৎকার করে বলল একি করলা তুমি? এত বড় মিষ্টি আলুকে তুমি মেরে ফেললে। এজন্যই তোমারে বারবার বলেছিলাম! মানুষ ঠকানো বাদ দাও না হয় একদিন নিজেই ঠকে তাইবা। আজ দেখলা তো কি কারবারটা হইল।
গল্পের বাস্তবতা
আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক রয়েছে যারা হয় অতি কৃপনতা করে। আর না হয় মানুষ ঠকানোর চিন্তা করে। কিছু মানুষের স্বভাব হচ্ছে মানুষ ঠকানো। তারা মানুষ ঠকাতে পারলে তৃপ্তির ঢেকুর গিলে। এই সকল লোক গুলো মানুষ ঠকাতে ঠকাতে একসময় নিজেই বিশাল পরিমাণে ঠকে যায়। সত্যি বলতে আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা মানুষকে ঠকাতে ঠকাতে একসময় নিজেই বিশাল পরিমাণ ঠকে যায়। আমি অনেক দেখেছি যে লোক গুলো মানুষকে ঠকায় সে লোকগুলোকে সৃষ্টিকর্তা অন্যদিক দিয়ে ঠকায়। হতে পারে এই ঠকানোর ক্ষেত্রটা নিজের ক্ষেত্রে কিংবা অর্থের ক্ষেত্রে কিংবা পরিবারের কোনো সদস্য দের ক্ষেত্রে তারা বিশাল পরিমাণ ঠকে যায়। সত্যি বলতে প্রকৃতি আমাদের কখনো ছাড় দেয় না। তাই আমাদের মানুষ ঠকানোর মিছে আনন্দ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
বাহ বেশ চমৎকার শিক্ষনীয় একটি গল্প আপনি লিখেছেন, কোন মানুষের এই কৃপণতা করা ঠিক নয় এবং মানুষকে ঠকানো ঠিক নয়, সামান্য কিছু টাকা বাঁচাতে গিয়ে সে নিজেই ঠকে গেল। যদিও এটি গল্প তবুও প্রাণীটি মারা গেছে এই মানুষটার কৃপণতার জন্য এ বিষয়টি খুবই খারাপ লাগলো।
বেশ চমৎকার ছিল আপনার গল্পটি এবং এর থেকে ছোট্ট একটি ম্যাসেজ আপনি আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য
আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো ।আমাদের সমাজে কুদ্দুসের মত চরিত্র অনেক আছে। তারা প্রতিনিয়ত মানুষকে ঠকানোর চিন্তায় ব্যস্ত কিভাবে অন্যকে ঠকাবে এবং নিজে লাভবান হবে সেই চিন্তায় মগ্ন থাকে কিন্তু একদিন তার নিজেই তার জালে পা দেয় এবং নিজের ক্ষতি সাধন করে। আপনি খুব সুন্দর একটি উদাহরণের মাধ্যমে আমাদের বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছেন এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনি আমার লেখা গল্পটি পড়েছেন এবং বাস্তবতার আলোকে সুন্দর মন্তব্য প্রদান করেছেন।
ঠকবাজেরা ঠকে বেশী, সমাজ এদেরকে সবসময় ছোট ভাবে,। হবে এরা সহজে মানুষের সাথে মিশে যেতে পারে।
ঠিক বলেছেন ঠকবাজরা সহজে মানুষের সাথে মিশে যেতে পারে। ধন্যবাদ
আমাদের সমাজে এমন একজন লোক রয়েছে ভাই যার কাজকর্মে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। যাইহোক খুব ভাল লেগেছে আপনার এই সচেতনমূলক গল্পটা পড়ে। আশা করি অনেকেই উপকৃত হবে এই গল্প পড়ার মধ্য দিয়ে।
ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য এবং শেষে আপনার সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য।