গল্প থেকে শিক্ষা | ১০% লাজুক খ্যাঁক এবং ৫% এবিবি-স্কুল
আশাকরি সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। সেই সাথে আশা করি আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি গল্প এবং গল্প থেকে বাস্তবতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।
এক জঙ্গলে ৩ টি হরিণ বসবাস করত। তারা যে জঙ্গলে বসবাস করত সেখানে অন্য কোন হিংস প্রাণীর বসবাস নেই। তাই তারা এই জঙ্গলে স্বাধীনভাবে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াতে পারে। তাই তাদের জীবনযাপন অনেকটাই নিরাপদ ছিল। তারা তিন ভাইবোন। মা-বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। এই জঙ্গলে তাদের অনেক সুবিধা থাকলেও একটাই অসুবিধা ছিল। আর সেটা হচ্ছে তাদের এখানে খাবারের অপ্রতুলতা। খরা এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখানে খাবার তুলনামূলক কম ছিল।
তাদের এই জঙ্গলে পাশে রয়েছে একটি নদী এবং নদীর পরবর্তী অংশে রয়েছে আরও একটি জঙ্গল। যেখানে অনেক খাবার রয়েছে এবং আরও রয়েছে হিংস্র প্রাণী। অবশ্য হিংস্র প্রাণী সম্পর্কে তারা অনেক গল্প শুনেছে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে। ওই জঙ্গলে গেলে হিংস্র প্রাণী তাদের খেয়ে ফেলবে এমন ভয় দেখাতো তাদের মা-বাবা। কিন্তু আজ তারা অনেক বড় হয়ে গেছে। তাই তাদের জঙ্গলে যে খাবার রয়েছে সেই খাবারে তাদের তৃপ্তি মিটে না। তাই তারা পাশের জঙ্গলে গিয়ে পেট পুরে খাবার খেতে চায়। যদিও তিনটি হরিণের মধ্যে দুটি রাজি এবং সবচেয়ে ছোটটি রাজি ছিল না। বাকি দুজন ছোট হরিণকে অনেক বুঝালো এবং বলল তাদের মা-বাবা তাদেরকে মিছে গল্প শুনিয়েছে। তারা যেন সেই জঙ্গলে না যায়। তাছাড়া আমরা চুপিচুপি যাব এবং খাবার খেয়ে আবার লুকিয়ে চলে আসব। এভাবেই ছোট হরিণকে তারা রাজি করালো।
*কথামতো হরিণ তিনটি লুকিয়ে লুকিয়ে নদী পার হয়ে পাশের জঙ্গলে গেল এবং অনেক খাবার দেখে তারা দিশেহারা হয়ে পরলো। তারা পেটপুরে খাবার খেলো এবং চলে আসলো। এভাবে তারা দিনের পর দিন লুকিয়ে লুকিয়ে পাশের জঙ্গলে যাওয়া শুরু করলো এবং পেট ভরে খাবার খাওয়া শুরু করলো। তারা খাবারের প্রাচুর্যতা দেখে দিনের-পর-দিন লোভী হতে শুরু করল। তাদের এই লোভ দীর্ঘস্থায়ী হলো না। হঠাৎ তারা ধরা পড়লো কিছু হিংস্র প্রাণী তথা বাঘ এর কবলে। এবং সর্বশেষ তারা বাঘ এর খাবারে পরিণত হলো।
বর্তমানে আমাদের স্বভাব এমন হয়ে গেছে যে আমরা যতই সুখে থাকি না কেন আমাদের অর্থের চাহিদা কখনো পূরণ হয় না। আর সেই চাহিদা পূরণের জন্য আমরা পা বাড়াই অজানা এক ভয়ঙ্কর পথে। যে-পথ আমাদেরকে সব সময় বিপদের দিকে নিয়ে যায় এবং আমাদের লোভী করে ফেলে। আজ আমরা সকলেই জানি লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু । আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা অনেক ভালো থাকার পরেও তাদের লোভের কারণে তারা ভুল পথে পা বাড়ায়। এবং এই লোভ তাদেরকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। তাই আমাদের যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে সব চাহিদা পূরণ হতে নেই। সকল চাহিদা পূরণ করতে চাইলে সেই জন্য আমাদের ভুল পথে পা বাড়াতে হবে এবং সেটা আমাদেরকে ধ্বংসের দিকে কিংবা আমাদের অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।
কে আমি
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক এবং ব্যক্তিগতভাবে দুই সন্তানের বাবা। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
চমৎকার শিক্ষামূলক একটি গল্প আপনি শেয়ার করেছেন। আসলে মানুষ জন্মগতভাবেই লোভী। তবে সেই সত্তিকারের মানুষ যে তার ইন্দ্রিয়কে বশীভূত করতে পারে। যে মানুষ অল্পে সন্তুষ্ট হতে পারে সেই বিজয়ী। বেশি লোভ করলে তার পরিণতি কখনো ভালো হবে না। ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা সত্য মানুষ জন্মগতভাবেই লোভী। এর কারনেই আমরা নিজেদের বিপদ নিজেই ডেকে আনি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে বাস্তব জ্ঞান পেয়েছি। বর্তমান সমাজের মানুষ এমনই হয়েছে। আপনি বর্তমান সময়ে মানুষের কর্মকান্ড পেশা ইত্যাদি অন্যান্য সাইট আলোচনা করেছেন। আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লেখাগুলো পড়ার জন্য এবং আপনার সুন্দর মন্তব্য প্রদান করার জন্য।
আসলেই এখন এটি হয়ে গেছে আমাদের বর্তমান অবস্থা আমাদের যত কিছু থাক না কেন আমরা সব সময় লোভ করতে থাকি আরো পাবার জন্য। তাই আমি মনে করি প্রত্যেকটি মানুষই লোভী। আমাদের সবার উচিত এই নন থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা।