আমাদের অহংকারের কিছুই নেই!

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

ব্যক্তিজীবনে আমরা সকলেই কম বেশি অহংকারী। সময় এবং সুযোগ পেলেই আমাদের নিয়ে অহংকার করতে পিছপা হইনা। বর্তমানে সমাজে কিংবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অহংকার একটি মারাত্মক ব্যাধি। অহংকার আমাদের এতটাই নিচে নামিয়ে দেয় যে আমরা নিজেরাও টের পাই না। অর্থাৎ অহংকার আমাদের মনকে কলুষিত করে ফেলছে।

যে কোন ধর্মের নীতিমালায় অহংকার একটি ঘৃণিত শব্দ। মুসলিম ধর্মে অহংকার সম্পর্কে বলা আছে যার হৃদয়ে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ আমরা প্রতিনিয়তই অহংকার করে থাকি। আমাদের রুপ কিংবা সৌন্দর্য কিংবা সম্পদ কিংবা পদমর্যাদা কিংবা বংশমর্যাদা কিংবা যেকোনো কিছু নিয়েই আমরা অনেক সময় অহংকার করে থাকি। অথচ আমরা সকলেই জানি এগুলো কোনটাই স্থায়ী নয়।

istockphoto-1227322369-612x612.jpg

ছবির উৎস

গতকাল একটি ছবি দেখলাম যেখানে একটি সিএনজি এর ভিতরে একটি লাশ পলিথিন কাগজে প্যাচিয়ে সিএনজিতে থাকা গ্রিলের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। সম্ভবত লোকটি করোনা ভাইরাসে মারা গেছে। তাই এই লাশটির কোন যত্ন নেই। তাই লাশটিকে বাসায় নেয়ার জন্য বেশি টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করাচি সিএনজিতে নিয়ে যাওয়াটাই উত্তম মনে করেছে লাশটির আপনজনেরা।

আমাদের ক্ষেত্রেও এমন হবে না তা কখনও বলা যায়না। অথচ আমরাই জীবিত থাকা অবস্থায় আমাদের রুপ, আমাদের সৌন্দর্য , আমাদের অর্থ, আমাদের পদমর্যাদা নিয়ে সবসময় গর্ব করে থাকি। অথচ এক সময় সকল কিছু মূল্যহীন।

আমরা সকলেই জানি, মৃত্যু আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। যেকোনো সময় মৃত্যু আমাদের ওপর চড়াও হতে পারে। আর আমাদের মৃত্যু হয়ে গেলে শূন্যতা ছাড়া আমরা কিছুই আমাদের সাথে নিতে পারবো না। এই নীতি বাক্য গুলো আমরা সকলেই জানি। অথচ আমরাই সময়ের ব্যবধানে আমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে গর্ব করা শুরু করি।

একটি বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি, আমাদের এলাকায় একজন প্রচুর ম্পত্তির মালিক ছিলেন। তিনি তার শ্যালক কে একসাথে প্রায় দুইশত থেকে আড়াইশো শতাংশ জমি উপহার দিয়েছিলেন। কারণ তার শ্যালক গরিব ছিল। যাইহোক ব্যক্তি পর্যায়ে তারা অনেক অহংকারী ছিল। তাদের পরিবারে দুই রকম খাবার রান্না করা হতো। এক ধরনের খাবার শ্রমিকের জন্য যা নিম্নমানের ছিল। এমনকি এই খাবারে অনেক সময় কুকুর-বেড়াল মুখ দিতে এবং সেই খাবারই শ্রমিকদের খাওয়ানো হতো। আর ভালো মানের খাবার তাদের পরিবার খাওয়ার জন্য রান্না করা হতো। অথচ ওই লোকের স্ত্রী জীবিত অবস্থায় মানুষের বাড়ি থেকে তোলা খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করে গেছেন।

ঘটনাটি বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের গর্বের কিছুই নেই। আমাদের জীবনে কোন কিছুই স্থায়ী নয় । আজ আমরা যা নিয়ে গর্ব করি আগামীকাল তা আমাদের নাও থাকতে পারে। আসলে আমরা সকলেই জানি, সকালবেলা ধনী তুমি বিকেলবেলা ফকির । তাই আমাদের উচিত হবে, গর্ব করা থেকে বিরত থাকা। অন্তত আমাদের এই চেষ্টাটুকু করা উচিত। ধন্যবাদ সকলকে।

Sort:  
 3 years ago 

মানুষ সত্যিই খুব বেশী অহংকারী, যতই বোঝানো হোক এটা বুঝতে চায় না কিছুই।

 3 years ago 

জ্বী ভাই। আমরা অনেক সময় এমন কিছু নিয়ে অহংকার করি যা বাস্তবে এই নিয়ে আমাদের অহংকার করার কিছুই নেই। ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।

 3 years ago 

এরকম একটা বাস্তবিক হৃদয় বিদারক ঘটনা তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

 3 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

 3 years ago 

এরকম একটা বাস্তবিক হৃদয় বিদারক ঘটনা তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

 3 years ago 

আমরা জানি অহংকার পতনের মূল কারন। ভাল লিখেছেন শুভ কামনা।

 3 years ago 

ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 57428.63
ETH 2425.69
USDT 1.00
SBD 2.34