ফড়িং এবং ফড়িংময় শৈশবের স্মৃতি
আমরা যে সময়টাকে সবচেয়ে বেশি মিস করি সেটা হচ্ছে আমাদের শৈশব। চিন্তাভাবনা হীন ছুটে চলা এবং শেষ হবে দূরন্তপনা এই বিষয়গুলোই যেন বারবার আমাদের পিছু টানে এবং শৈশবের সময়টাতে ফিরে যাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আজ আমরা অনেক বড় হয়ে গেছি কিন্তু শৈশবের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলো মাঝেমধ্যে আমাদের সামনে চলে আসে অতীতের কোনো স্মৃতি চোখের সামনে পড়ে গেলে। যেমন ফড়িং তাদের মধ্যে অন্যতম। শৈশবে ফড়িং এর পিছু পিছু ছুটে যায়নি এমন মানুষের সংখ্যা কম বললেই চলে।
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
শৈশবের দুরন্তপনা মধ্যে ফড়িং-এর পিছু পিছু ছুটে চলা অন্যতম। বিশেষ করে যারা গ্রাম অঞ্চলে বেড়ে উঠেছে অর্থাৎ যাদের শৈশব গ্রামের পরিবেশের সাথে জড়িয়ে আছে তাদের বেশির ভাগ মানুষের ফড়িং নিয়ে শৈশব স্মৃতি জড়িয়ে আছে। গ্রামের পরিবেশে আমার ও শৈশব এবং কৈশোর সময় কেটেছে । তাই ফড়িং এর সাথে কিছু স্মৃতি রয়েছে যা এখনো ফড়িং দেখলে সেই শৈশব স্মৃতি মনে পড়ে যায় এবং মনে চায় শৈশবের মতো ফড়িংয়ের পিছু পিছু ছুটে চলি এবং এটি ধরার জন্য বৃথা চেষ্টা করি।
ফড়িং এবং আমার ছেলেবেলা
শৈশবে সহপাঠী কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ফড়িং ধরার জন্য ফড়িং এর পিছু পিছু ছুটে যেতাম। আমাদের এলাকায় কাফীলা নামক একটি গাছ দেখা যেত। যে গাছের মধ্যে কস (একধরনের আঠালো পদার্থ ) পাওয়া যেত। এই কস পাট গাছের লাঠির আগায় ( লাঠির এক প্রান্তে) কিংবা ধইঞ্চা গাছের লাঠির আগায় কিংবা কোন লাঠির আগায় লাগিয়ে ফড়িংয়ের লেজের মধ্যে লাগিয়ে দিতাম। আর ফড়িং এই আঠালো পদার্থের মধ্যে আটকে যেত। এভাবে শৈশবে ফড়িং ধরতাম। এ চালাব যখন ফ্রি খুব নিচে বসে থাকত তখন চুপিসারে হাতের আঙ্গুলগুলো বাড়িয়ে দিতাম এবং ফড়িংয়ের লেজের দিকে নিয়ে যেতাম। বারবার ব্যর্থ হতাম কিন্তু সেটাও একটা আনন্দের ছিল। অনেক সময় ফড়িং ধরতে দেখলে সহপাঠীরা কিংবা বন্ধুরা ফড়িং কে উদ্দেশ্য করে বলতো ফড়িং তোর লেনজাত মানে লেজে ধরে।
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
তখন ফড়িং ধরতে যখন ব্যর্থ হতাম তখন ভাবতাম তাদের ওই কথার কারণে ফড়িং বুঝে গেছি আমি একে ধরতে এসেছি এবং তাই এটি উড়ে চলে গেছে এবং আমি ধরতে ব্যর্থ হয়েছি। তাই তাদের সাথে রেগে যেতাম। যখন দুই একটা ধরতে পেতাম তখন কতটা খুশি হতাম সেই সময়টাই বলে দিত! তারপর মনের আনন্দে সেগুলো নিয়ে খেলা করতাম কিন্তু এদের একটি মারা গেলে সেগুলো কে মাটিতে রেখে অনেক পিঁপড়া জড়ো করতাম এবং পিঁপড়াকে খাওয়াতাম।
বর্তমানে এগুলো কেবলই স্মৃতি। আজও বাড়ির উঠোনে কিংবা রাস্তায় হাটার সময় যখন ফড়িং এর উড়ে চলার দৃশ্য কিংবা বসে থাকার দৃশ্য দেখি তখন তাই সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়। শৈশবে ফিরতে না পারলেও আমার অবলা মন ঠিকই তখন শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যায়। ক্ষণিকের জন্য মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি এবং ভালোলাগা কাজ করে।
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
Device Name : Samsung Galaxy J7
এখন বর্ষাকাল। আর এই সময়টাতে বাড়ির উঠোনে কিংবা রাস্তার আশেপাশে ছোট ছোট গাছগুলোতে কিংবা খুঁটির ওপর বিভিন্ন প্রজাতির ফড়িং বসে থাকার দৃশ্য চোখে পড়ে। আবার মাঝেমধ্যে শূন্যে ভাসমান অবস্থায় কিছু ফড়িংকে ভাসমান অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। যা যে কোন মানুষকে মুগ্ধ করে। কিছুদিন আগে বিকেল বেলা যখন রাস্তায় হাঁটার উদ্দেশ্যে দেয়া হই তখন রাস্তার পাশে গাছ গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফড়িং বসে থাকতে দেখি। যা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল এবং সেইসাথে শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গিয়েছিল। তাই একটি ফড়িংয়ের ফটোগ্রাফি করে নিলাম।
এই ছবি গুলো আমার নিজের তোলা এবং লেখাগুলো সম্পূর্ণই প্লেজিয়ারিজম মুক্ত। কোন ওয়েবসাইট কিংবা কারো কাছ থেকে চুরি কিংবা কপি করা নয়।
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক এবং ব্যক্তিগতভাবে এক সন্তানের বাবা। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
ফটোগ্রাফি খুব সুন্দর হয়েছে
ধন্যবাদ