ক্লান্তিময় একটি দিন এবং ফিরে আসা নিজ অবস্থানে | ১০% লাজুক খ্যাঁক এর জন্য
আশাকরি সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। সেই সাথে আশা করি আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ক্লান্তিময় একটি দিন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসা সম্পর্কে লিখব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
একটানা ৪০ দিন ছুটি কাটিয়ে আবার ফিরে আসতে হলো নিজ প্রতিষ্ঠানে। লম্বা একটি ছুটি কাটিয়ে আবার নিজ গ্রাম থেকে ফিরে আসতে হলো অনেক দূরের পথ বান্দরবনে। যেখানে এক বছরের জন্য আমি এক জন প্রশিক্ষণার্থী। তাই গতকাল দিনটি ছিল আমার কাছে একটি ক্লান্তিময় এবং কিছুটা খারাপ লাগার দিন। দীর্ঘদিন ছুটি কাটানোই কিছুটা অলসতা কাজ করছিল এবং সেইসাথে পরিবার পরিজন ছেড়ে আসার কারণে মানসিকভাবে কিছুটা অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। কিন্তু কিছু করার নেই। জীবিকার সন্ধানে আমাদের দূর থেকে দূর যেতে হয় এবং সকল বিধি-বিধান মেনে চলতে হয়। এটাই স্বাভাবিক।
গতকাল ছিল শুক্রবার। তাই সকালে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমাদের এখান থেকে বান্দরবানের গাড়ি রাত ছাড়া পাওয়া যায় না। তাই সকালে অন্য গাড়িতে করে প্রথমে চট্টগ্রাম যেতে হয়। তাই চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য একটি গাড়িতে উঠে পড়লাম। কিন্তু গাড়িটি কিছুটা ধীর গতিতে চলা এবং বিভিন্ন বিরতির পর দীর্ঘ সময় পর চট্টগ্রামে গিয়ে পৌঁছলো। অবশ্য রাস্তায় কয়েকবার বৃষ্টির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি কিছু অঞ্চলে তখন টর্নেডো শুরু হয়েছিল। তারপর চট্টগ্রামে পৌঁছে সেখানে ট্র্যাফিক জ্যামে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়েছে। গাড়িতে থাকতে থাকতে দুপুরের খাবার খাওয়া হয়নি। বিকেলে যখন গাড়ি থেকে নেমে ছিলাম তখন নাস্তা খেয়ে দুপুরের খাবার শেষ করতে হয়েছিল। তারপর চট্টগ্রামে বিভিন্ন গাড়িতে চড়ে সর্বশেষ জ্যাম থেকে মুক্ত হয়ে কর্ণফুলী নতুন ব্রিজের সামনে এসে পৌঁছলাম। তখন অনেকটাই সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। গতকাল এতটাই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম যে খুব বিরক্ত লাগছিল। বিশেষ করে আমরা যে হোস্টেলে থাকি সেই হোস্টেল রাত নয়টার দিকে বন্ধ করে দেয়া হয়। তা কিছুটা শঙ্কা হচ্ছিল ওই সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারবো কিনা! কারণ তখনো রাস্তায় কিছুটা জ্যাম কিংবা ট্রাক থাকার কারণে গাড়ি অনেক কম গতিতে চলতে হয়েছিল
গাড়ি থেকে কর্ণফুলী ব্রীজের নিচে নদীতে থাকা বিভিন্ন জাহাজ এবং নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলাম। কারণ তখন গাড়ি চলমান ছিল। আসলে গতকাল ক্লান্তি বোধ করার কারণে ফটোগ্রাফি করতে বিরক্ত লাগছিল। সবশেষে আমরা রাত ৯ টার আগে পৌঁছতে পেরেছিলাম। তখন হোটেলে এসে রাতের খাবার খেয়ে হোস্টেলে প্রবেশ করলাম। এসে দেখি রুম অনেক ময়লা হয়ে আছে। যদিও দরজা-জানালা সব কিছু বন্ধ ছিল।
তবে দীর্ঘদিন না থাকার কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানে চারপাশে ঘাসগুলো অনেক বড় হয়ে উঠেছে। আশেপাশে অনেক ময়লা জমে আছে। এমনকি আমাদের ক্রিকেট খেলার পিচ দূর্বাঘাস ভরে উঠেছে। সেই সাথে খেয়াল করলাম আমাদের ব্যালকনিতে কিছু বোলতা বাসা বেধেছে। এবং আজ তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। দুপুরে গোসল করার পর যখন বেলকুনিতে কাপড় শুকানোর জন্য রশিতে দিয়েছিলাম এবং রুমে প্রবেশ করছিলাম এমন সময় একটি বোলতা আমার হাতে হূল বিধিয়ে দিল। সাথে সাথে মারাত্মক ব্যথা শুরু হলো। এমনকি দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় মনে হয়েছিল আমার বাম হাতের অর্ধেক ভীষণ ব্যথা করছে। এবং সেইসাথে ফুলে গেছে। এখনো অনেক ফুলে আছে। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠানে দেশে সবচেয়ে যে দিকটি ভালো লাগলো সেটা হচ্ছে চারপাশ সবুজ হয়ে উঠেছে। গাছে গাছে অনেক ফুল ফুটেছে। খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
ভাইয়া আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার চোখে পানি চলে আসছে। কিছুদিন আগে ঈদের ছুটি কাটিয়ে বাসা থেকে শহরে চলে আসছি। এখনো গ্রামের মায়া ছাড়তে পারিনি। কিছু করার নেই ভাইয়া কোন একটা কাজ তো করতে হবে। ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছে। ভাইয়া আমি আশা করি এমন পোষ্ট আপনি আবার আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। আপনার জন্য রইল অনেক অনেক ভালোবাসা।
আসলে ভাই ঠিকই বলেছেন অনেক দিন ছুটি কাটালে একটু অলসতা ঘারে বসে এজন্য আসলে কম সময় ছুটি কাটানোর ভালো। আর অনেক সময় জার্নি করলে একটু খারাপ লাগে এবং পরিবারের সাথে যদি অনেক সময় কাটানোর পর হঠাৎ করে দূরে চলে আসা হয় তাহলে তো আরো অনেক বেশি খারাপ লাগে। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য