মেস লাইফের সেই খাবার গুলো

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম!
আমি ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে @kawsar

আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন, আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজ আমি আপনাদের মাঝে প্রতিদিনের মতো আরও একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আসলে মেসে থাকতে আমি কিরকম খাবার খেয়েছি, খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করবো এটা আসলে আমার জীবনে অনেক মজার মজার কিছু কথা আবার কষ্টের কিছু কথা। তো আশা করি সব মিলিয়ে আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগে।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


খাবার নিয়ে ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক বেশি অনীহা ছিল। এটা খাব না তো ওটা খাব তো এরকম ভাবে আসলে মা আমাকে নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় থাকত। সবসময় ই কোন সবজিতে খেতে যেতাম না। হয়তো ডিম মাছ মাংস এসব দিয়েই সব সময় খেতে চাইতাম। আর যদিও তা ভাল রান্না না হত তাহলে কিন্তু মোটেও খেতে যেতাম না। আমার মা সবসময় আমারে আবদার গুলো মেনে এরপরে রান্না করার চেষ্টা করত।


কিন্তু আসলে আমি যখন এসএসসি পরীক্ষার পরে ঢাকায় আসি তখন আমি মাদ্রাসায় পড়ার জন্য ঢাকায় এসেছিলাম। আর আমি দারুন্নাজাতে পড়াশোনা করেছি। তো সেখানে যে রান্না হতো এটাও মোটামোটি খেতে পারতাম। হয়তো প্রথম প্রথম খেতে অনেক বেশি কষ্ট হতো, কিন্তু আস্তে আস্তে সেটা খাওয়ার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। সেই জন্যই আসলে তেমন একটা কষ্ট হতো না। তবে সেই সময় তো বাড়ি যেতাম খুবই তাড়াতাড়ি আবার আসতাম। অনেক বেশী বাড়ি যাওয়া হতো যে কারণে সেই খাবার খেয়ে বাড়ি যেয়ে ভালো খাবার খেলে ,ওটার কথা ভুলে যেতাম।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


যখন লেখাপড়া শেষ হলো আর যখন আমি মেসে থাকতে শুরু করলাম। তখন আসলে খাবার খেতে গেলেই আমার অনেক বেশি অসহ্য দিত। আর এই খাবার যা আমি কোনদিন খেতে পারবো তাও ভাবতাম না। যদিও সেই মেসের খাবারগুলো খেতে খেতে একসময় ম্যাচুয়েট হয়ে গিয়েছিলাম। তবুও আজ ও সেই খাবারের কথা মনে পড়ে তাহলে আমার আসলে এখনও বমি আসে। আর আমার মনে হয় যে সেই খাবারগুলো আমার সামনে যদি এখন আসে তাহলে হয়তো আমি সেটা ছুঁয়েও দেখব না।


আমার ছোট ভাই ছিল আমার থেকেও বেশি খাবারে পরিপাটি ছিল। তো আমরা একটা মেসে আমি আর আমার ভাই থাকতাম সেই মেসে যে দিন মুরগির মাংস রান্না করা হতো আমার ভাই আগে থেকে বলে রাখত আমি কিন্তু মুরগির মাংস খাব না ,আমাকে একটি ডিম ভাজি দেন। আসলে মানুষ কখন মুরগির মাংস রেখে ডিম ভাজি খেতে চাই সেটা আসলে বুঝতেই পারছেন। আসলেই মেসের রান্না গুলোর কথা আর কি বলব তারা অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করে আবার এই রান্নাগুলো যে কেন এমন হয় তা বুঝিনা।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


আসলে অনেকদিন যাবতই আমার স্ত্রী আমাকে কৈ মাছ নিয়ে আসতে বলে কিন্তু আমি নিয়ে আসি না ,কারণ আমি এটার প্রতি অনেক বেশি বিরক্ত কেননা আমার মেসে থাকতে এক খালা এই কৈ মাছ এমন ভাবে রান্না করতো যে সেটা দেখলেই আমার বমি আসত। আমি ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি যে যেকোন মাছ আসলে আমরা তেলে ভেজে এরপরে সেটা রান্না করে। কিন্তু সে এই কৈ মাছ এমন ভাবে রান্না করতো যে দেখেই বোঝা যেত এটা খেলে মুখে গন্ধ আসবে।


আর খেতে তো মোটেই ভাল লাগবে না সেই থেকে এর পর আমি আসলে অনেক বেশি বিরক্ত। সেজন্য আমার স্ত্রী অনেক বার বললেও আমি এই মাছ বাসায় আনি নি কিন্তু সে আমাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলে যে তুমি আগে নিয়ে আসো আমি রান্না করি খেতে ভালো লাগে তাহলে খাবে না হলে আর কোনদিন নিয়ে আসতে বলবো না। সে জন্য নিয়ে আসছিলাম আর খেয়ে তো আমি অবাক যেটা খেতে তো আসলেই খুবই সুস্বাদু। কিন্তু আমি সেই সময়ে বিরক্ত ছিলাম এই কথাটা আমার স্ত্রীকে বললাম সে শুনে আসলেই অবাক হয়েছিল।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


আর বলেছিল যে মেসের রান্না আর বাসার রান্না এক না। এভাবেই আসলে আমার অনেক খাবারের প্রতি অনেক অনেক অনীহা আছে। এই ম্যাচে খাবার জন্য এখানে আসলে এমন খাবার মানুষকে খেতে দেওয়া হয় সেই খাবার আসলে আমি মনে করি অনেক মানুষই বিরক্ত হয়। যদিও নিজের টাকা খাই তবুও কিন্তু সেই খাবারগুলো নিজের ইচ্ছামত খেতে পারি না। বর্তমানে আমার ছোট ভাই বিয়ে করেনি সে ঢাকায় থাকে কিন্তু সে মেসে খায় না নিজে রান্না করে খায়। হয়তো সে অতটা ভালো রান্না করতে পারে না কিংবা সে কোন ভালো খাবার খায় না কিন্তু তবু যে যা খায় তার নিজের ইচ্ছামত খায়।


সে বলে যে আমি মেসের মুরগির মাংস খেতে চাই না। তার থেকে বাসায় বসে ভর্তা খাবো তবুও নিজের ইচ্ছামত খাব। আর মজা লাগলো লাগবেনা আবার লাগবে তবুও ভালো লাগবে। আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তো খেতে চাই। আসলে আমার মনে হয় যে এই মেসের খাবারের প্রতি অনেকেই বিরক্ত। আমার খাবার নিয়ে আরও অনেক কথা ছিল তবে আজ আর লিখব না ।


আশাকরি আপনাদের কাছে আমার এই আজকের পোস্ট ভাল লেগেছে। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন আজকের মত এখানেই শেষ করছি আগামীকাল আরো কোন বিষয়ে পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবে।



image.png

Sort:  
 2 years ago 

আসলে ভাইয়া মেসের আর বাসার খাবার কখনো এক হয় না। আমি তো কখনো মেসে থাকিনি তবে আমার বান্ধবীর কাছ থেকে শুনেছি মেসের খাবারের সম্বন্ধে। মেস লাইফের সেই খাবারের কথা এখন মনে পড়বে স্বাভাবিক। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

জি আপু মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

মেসের রান্না খুব একটা খাওয়া হয়নি আমার। তবে আমার বন্ধুর সুবাদে দু একবার খেয়েছিলাম। সেখানের ডাল খেয়ে আমি হতাশ হয়েছিলাম। তরকারিও কেমন কম কম দেয়।

 2 years ago 

ডালের তো তুলনাই হয় না, ডাল খাচ্ছি না পুকুরের পানি খাচ্ছি সেটা বুঝা মুসকিল

 2 years ago 

আমার জীবনে সর্বোমোট ৭ বছর হবে আমি মেসে কাটিয়েছি । কিছু সুখকর অভিজ্ঞতা আছে আবার কিছু বিরক্তিকর খাবারের স্বাদ ও নিতে হয়েছে । ছোট বেলার প্রিয় খাবার খিচুড়ি মেসে যেয়ে আমি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম ।, মনে হতো লবণ আর হলুদ ছাড়া এতে আর কিছু যেন নেই । খিচুড়ি হলেই সেদিন আমার মিল অফ করে দিতাম । তেলাপিয়া মাছ খেতে খেতে মোটামুটি অতিষ্ট ছিলাম তখন । তবে বন্ধুরা সবাই একসাথে থাকার আনন্দটাও কিন্তু এখনো মিস করি অনেক ।

 2 years ago 

আসলে ভাই এটা ছিল মজার যে সবাই মিলেমিশে থাকা

 2 years ago 

আসলে ভাই অনেক মানুষ আসছে যাদের ছোটবেলা থেকেই খাবার নিয়ে একটু বাঁচাবাশি থাকে যেমনটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে ।তবে ম্যাচ জীবনে আমাদেরকে এই সকল জিনিস মানিয়ে নিতে হয় কারণ সেখানে সবকিছুই আমাদের খেতে হয় ভালো লাগলো ম্যাচ জীবনের কথা শুনে। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68492.14
ETH 2699.27
USDT 1.00
SBD 2.72