ভালো থাকুক সব বাবারা- ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁককের জন্য
আমি ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে @kawsar ।
আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন, আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি আজও আপনাদের সাথে আরো একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে কিন্তু আমি কোন মোটিভেশন পোস্ট শেয়ার করবো না। আজকে আমি এমন একটি ঘটনা শেয়ার করব না যেই ঘটনারই আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। আসলে আমাদের জীবনে আমাদের বাবার অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই ঘটনার মাধ্যমে আমি এটা তুলে ধরার চেষ্টা করব। কালকে সন্ধ্যা থেকে ত আমি ঢাকা মেডিকেলে ছিলাম। কালকে সন্ধ্যায় গিয়া আজকে দুপুর বেলা বাসায় এসেছি। আসলে আমার সময়টা খুবই ভালো কেটেছে তা কিন্তু নয় এই ঘটনার সাথে শেয়ার করব আশা করি।
আমাদের বাংলাদেশ অনেক পরিবারই আছে, যেই পরিবার একজন পুরুষের উপরে নির্ভর করে থাকে। এটা যদি আমি উপলব্ধি করি তাহলে আমি আমার পরিবার থেকেই দেখতে পারি যে আমার পরিবারও কিন্তু আমার বাবার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন আমার বাবা আয় করতো , সেটাই কিন্তু আমরা উপভোগ করতাম। আমার এক ফুফাতো ভাই আছে ঢাকায় থাকে। সে ব্যাংকে চাকরি করে। আমার মা আমাকে ফোন দিয়ে বলল যে সে নাকি খুবই অসুস্থ ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি এবং তার কোন হুশ নেই।
তারও কোন আপনজন ঢাকায় নেই। তার দুই ভাই তারা বরিশালে থাকে। আর তার মা-বাবা তার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে সবাই গ্রামের থাকে। আমার খুবই খারাপ লাগলো ,কিন্তু আমার সকাল বেলা খুবই জরুরী একটা কাজ ছিল। এজন্য আমি যেতে পারিনি। তাই আমি আমার মাকে বললাম যে মা আমি সন্ধ্যায় যাব ইনশাআল্লাহ। সারাদিনের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে আমি রওনা দিলাম। যাওয়ার পরে আমি ঢাকা মেডিকেলে গেলাম গিয়ে দেখলাম তার কাছে তার স্ত্রীর বোনের জামাই ছিল। সে একজন ছিল আমি তো দেখি একদমই অবাক হয়েছিলাম।
কারণ তার কাছে কোনো তার আপনজন ছিল না আর যেটা বিশেষ কথা সেটা হলো সে খুবই অসুস্থ ছিলো। আমার খুবই ভয় লাগতেছে। সে হয়তো আর ভাজবে না ,আর নিজের কাছে খুব খারাপ লাগতেছে যে তার কিন্তু তিনটি ছেলে মেয়ে। দুটি মেয়ে একটি ছেলে- বড় মেয়ে হয়তো ক্লাস নাইনে পড়ে আর ছেলেটা হয়তো ওয়ান এ। এরকম অবস্থায় যদি তার কিছু হয়ে যায় তাহলে কিন্তু সেই পরিবারের অবস্থা কি হবে সেটা কিন্তু বুঝতেই পারছি। হয়তো তাদের পরিবার এখন খুবই ভালো আছে, ভালো অবস্থানে আছে। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ তার ওপর নির্ভর করে।
যদি তার কিছু হয়ে যায় তাহলে সেই পরিবারের কি হবে সেটাই আমি ভাবছিলাম। আর খুবই খারাপ লাগছিল। আসলে আমাদের পরিবারের আমাদের বাবাদের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা যখন তারা পৃথিবী থেকে চলে যায়, তখন কিন্তু আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু যখন তারা পৃথিবীতে বেঁচে থাকে তখন আমরা বুঝতে পারি না। তাই কথাগুলো মনে করে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগতেছিল। আর আমি যতটুকু পারছিলাম তার খেদমত করছিলাম। ও আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি যে সে অসুস্থ সেই কথা শুনি কিন্তু তার স্ত্রী তার ছেলেমেয়েকে রেখে এরপরে রহনা দিয়েছিল।
ঢাকা আসার জন্য তো এষেও গিয়েছিল। গিয়ে দেখেছিলাম তার স্ত্রী প্রথম অনেক ভয় পেলেও আস্তে আস্তে সে রাতে ডাক্তার যে ওষুধগুলো খাওয়ার পরে ঘুম থেকে উঠে সকালবেলা মোটামুটি সুস্থ। কিন্তু আসলে একেবারে সুস্থ হয়ে গিয়েছে সেটা কিন্তু নয়। কারণ তারা লিভার নাই বলতে চলে। এজন্য বেশি খারাপ লাগতেছিল যে আসলে তার পরিবারের কি হবে। আগে তো তার কোন হুঁশ ছিলোনা কিন্তু আজকে সকালে যখন তার হুশ ফিরল তখন সে তার ছেলেকে দেখে শুধু আর ভিডিও কলে কথা বলছিল আর কাঁদে। খুবই খারাপ লাগছিল কারন তার ছেলে খুবই ছোট। কোন কিছু হয়তো তাকে নিয়ে চিন্তা করছিল।
আর তার মেয়েরা মোটামুটি বড় , তবুও কিন্তু এটা অনেক চিন্তার বিষয়। ডাক্তার তাকে বলেছে যে হয়ত দুই থেকে তিন মাস বাঁচতে পারে। বাচামারা তো আমরা সবাই জানি যেটা আল্লাহর হাতে সে যখন যাবে তখনই যাব কিন্তু ডাক্তার কিছু হলেও কিন্তু বুঝতে পারে। সেজন্যই হয়তো সে অনেক ভয় পেয়েছিল। কারণ আমরা যদি জানি যে আমাদের মৃত্যু খুবই সন্নিকটে। আমরা যখন অসুস্থ থাকে তখন কিন্তু আমরা বুঝতে পারি যে আমরা হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবো না। তখন কিন্তু আমাদের কাছে খুবই খারাপ লাগে। আরো বেশি খারাপ লাগে তখন যখন আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা থাকে। তখন ভাবি যে তাদের কি অবস্থা হবে। হয়তো এই জন্যই তার বেশি খারাপ লাগছিল।
এরপরে যখন দুপুর হয়তো একটা থেকে দুইটা বাজতে চলেছে তখন তার ভাই চলে এসেছে। তো আমি তো সারারাত ঘুমাইনি ,আর আমি খুবি টায়ার্ড ছিলাম তাই বলছিলাম যে আমি একটু বাসায় যাবো। তো এজন্যই বাসায় এসে পড়েছিলাম। কিন্তু আপনাদের সাথে এর কোন পিকচার শেয়ার করতে পারিনি। কেননা এমন খারাপ পরিস্তিতি ছিল। যেখানে ছবি তোলা সম্ভব ছিল না।
আর আমি আমার পরিবারকেও তেমন একটা কল দিতে পারিনি। কারণ আমার বাসায় শুধু আমার স্ত্রী আর আমার একটা ছোট বাচ্চা ছিল। রাতে একাই বাসায় থেকেছে। তাদের কাছে আমি বেশি ফোন দিতে পারেনি পরে হয়ত সরি বলে নিয়েছি। কারণ এত অবস্থা খারাপ ছিল যে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগছিল। আর ফোন দেওয়ার কোন মন-মানসিকতায় আমার ছিলনা।
এই ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করে আমার কাছে আসলে খুব ভালই লাগলো কারন মনের কথা যদি একটু শেয়ার করা যায় লিখেও প্রকাশ করা যায় তাহলে কিন্তু ভালো লাগে। আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাবেন। আজ এই পর্যন্তই সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এই কামনা করে শেষ করছি।
@kawsar