উড়িষ্যার চাঁদিপুরে সুসজ্জিত মন্দির ও বিনোদন পার্কে কিছুক্ষণ

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

চাঁদিপুরে অবস্থিত রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও বিনোদনমূলক পার্ক


🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷🪷


IMG_20240617_095042_886.jpg

আজ আপনাদের সামনে উড়িষ্যার এক নতুন গন্তব্যের ঠিকানা তুলে আনবো। যে জায়গায় বহু পর্যটক ও মানুষের ভিড় নেই, অথচ আছে অনুপম সৌন্দর্য। চারপাশের পরিবেশ এতই মনোরম, যা পর্যটকদের টেনে রাখে। সম্প্রতি ঘুরে এলাম সেই গন্তব্য থেকে। উড়িষ্যার সৈকত শহর চাঁদিপুরে। সেখানে পুরী দীঘার মত অসংখ্য মানুষের ভিড় নেই। সৈকত জুড়ে দোকানের ঘনঘটা নেই। হাজারে হাজারে গজিয়ে ওঠা হোটেল নেই। কিন্তু সেখানে দ্রষ্টব্য স্থান প্রচুর। এবং তা ভীষণ আকর্ষণীয়ও বটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাঁদিপুর সৈকতের কাছেই একটি রাধাকৃষ্ণ মন্দির। যা আমার আজকের ব্লগের উপজীব্য বিষয়।

FunPic_20240626_184359311.jpg

চাঁদিপুর থেকে ফিরে আসার দিন সকাল সকাল গিয়ে পৌঁছোই সেই মন্দির চত্বরে। এমন সুন্দর পরিবেশে মন্দির এবং তার আশপাশের সুন্দর ব্যবস্থাপনা আমি সচরাচর কোথাও দেখিনি। প্রথমত মন্দিরে ঢোকবার টিকিট হলো ৫ টাকা। এই জিনিসটি আমাকে প্রথমে অবাক করেছিল। কারণ কোথাও কোন ধর্মস্থানে নগদ অর্থ টিকিট আমি কখনো দেখিনি। কিন্তু কিছু সময় পরে মন্দিরটি দর্শন করার পরে ওই পাঁচ টাকার টিকিটের কথা আর মনেও পড়েনি। কারণ মন্দিরের সঙ্গে লাগোয়া চত্বরে সেখানে আছে মনোরম জলাশয়, শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক পার্ক এবং আশপাশে চড়ে বেড়াচ্ছে হাঁস, পাখি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ছোট জীব জন্তু। দেখতে দেখতে কয়েক ঘন্টা কোথা দিয়ে যেন পার হয়ে গেল।

FunPic_20240626_183922849.jpg

প্রথমত মন্দিরের স্থাপত্য ও সূক্ষ্ম কারুকার্য দেখবার মত। অসাধারণ শিল্পকর্মের প্রকাশ দেয়ালের গায়ে গায়ে ফুটে উঠেছে চারদিকে। সম্পূর্ণ মন্দিরটি অবস্থিত একটি জলাশয়ের উপর। আর সেই জলাশয় অসংখ্য মাছ। তার মধ্যেই চলে বোটিং। আধ ঘন্টায় মাত্র ৯০ টাকার বিনিময়ে সপরিবারে বোটিং করা যায় সেই জলাশয়ে। আর মাছেদের কথা নতুন করে কি বলবো। আপাত নিরীহ জলাশয়টিতে ছোট ছোট দানা খাবার ছুড়ে দিলে হাজারে হাজারে মাছ ভিড় করে সেই খাবার নেবার জন্য। সে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য। আমি চেষ্টা করেছি ভিডিওর মাধ্যমে সেই দৃশ্য আপনাদের সামনে তুলে আনার। চোখের সামনে থেকে না দেখলে সেই দৃশ্যের সৌন্দর্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা কঠিন।


মন্দির লাগোয়া জলাশয়ে মাছেদের খেলা (ভিডিও সৌজন্যে ইউটিউব)

এছাড়াও আছে বিনোদনমূলক পার্ক। সেখানে বিভিন্ন ধরনের রাইড রয়েছে সকলের মনোরঞ্জনের জন্য। প্রতি রাইডের ভাড়াও খুব কম৷ মাত্র জনপ্রতি ২০ টাকা৷ শিশু থেকে বড়, সকলের জন্য উন্মুক্ত এই পার্ক৷ সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে পরিবার সমেত সকলে আনন্দ করতে পারে অনেকক্ষণ। সুতরাং মন্দির হলেও সেখানে রয়েছে কয়েকটি ঘন্টা আনন্দে কাটাবার বিভিন্ন আয়োজন৷ এতো মনোরম ও সাজানো মন্দির খুব কম দেখা যায়। সাধারণত মন্দির বলতে আমরা বুঝি পূজারী ও ব্রাহ্মণদের উপস্থিতি, ভক্তসমাগম আর আশপাশে পূজার দ্রব্যাদি বিক্রিবাট্টা, চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পূজার উপকরণ, ফুল পাতা ইত্যাদি৷ কিন্তু এই মন্দিরে এসবের বালাই নেই৷ এখানে সবকিছুই একদম পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন। আমি ছবির মাধ্যমে কিছু দৃশ্য আপনাদের সামনে তুলে আনার চেষ্টা করলাম। চোখের সামনে না দেখলে এই মন্দিরের অনুপম সৌন্দর্য অনুভব করা সম্ভব নয়। তবু সাধ্যমতো সেইটুকু কলম ও ক্যামেরার মাধ্যমে হাজির করবার চেষ্টা করলাম আপনাদের সামনে। এই মন্দিরের নয়নাভিরাম পরিবেশ আগাগোড়াই আমায় মুগ্ধ করেছে। সেদিনই ট্রেনের সময় কাছে চলে আসায় আমাদের সেখান থেকে ফিরে আসতেই হয়। নাহলে সেখানে আরও কিছু সময় থাকার ইচ্ছে ছিল৷

বিনোদন পার্কের কিছু মুহূর্ত

IMG_20240617_102651_701.jpg

IMG_20240617_102049_449.jpg

IMG_20240617_101009_193.jpg

(চিত্রগ্রহণ - ইনফিনিক্স হট ৩০ মোবাইল)

images__27_-removebg-preview.png


--লেখক পরিচিতি--

IMG_20240303_181107_644.jpg

কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার সহ সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।


Sort:  
 2 months ago 

মন্দির ও তার আশেপাশের স্থাপত্য দেখে বেশ ভালো লাগলো দাদা। জলাশয়ে মাছের খেলা দেখেও বেশ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

আপনার মন্তব্য উৎসাহব্যঞ্জক। মন্দিরের যে দৃশ্য ও বর্ণনা তুলে আনবার চেষ্টা করলাম, তা আপনার ভালো লাগায় আমি আপ্লুত৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59087.19
ETH 2580.56
USDT 1.00
SBD 2.47