মঙ্গল শোভাযাত্রায় হোক,সার্বজনীন মঙ্গলের নিশ্চয়ন।১০% প্রিয় লাজুক শেয়ালের জন্য।
আসসালামু অলাইকুম/আদাপ,
কেমন আছেন সবাই,আশা করছি ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।কর্মজীবনে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় থাকার কারণে,প্রাণের প্ল্যাটফর্মে অনেকটাই অনিয়মিত হয়ে গেছি।যাই হোক দোয়া ও ভালোবাসা চাই,সফল প্রশিক্ষণ শেষ করে দ্রুততম সময়ে যেন কর্মে যোগদান করতে পারি।
গত সপ্তাহে বাঙালি জাতির প্রাণের অনুষ্ঠান নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলা একাডেমী থেকে সার্বজনীন মঙ্গল নিশ্চয়নে প্রতিবারের ন্যায় এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়েছে।নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে আজকে থাকছে থাকছে বিশেষ আলোচনা।আশা করি ভালো লাগবে।
বাংলা নববর্ষ।বাঙ্গালিদের অন্যতম একটি প্রাণের অনুষ্ঠান।শুধু বাংলাদেশেই নয় বাঙালি সকল ভাষাভাষীদের নিকট একটি জনপ্রিয় উৎসব হচ্ছে পহেলা বৈশাখ।উইকিপিডিয়া বলছে,বাংলা পঞ্জিকা মাসের প্রথম দিন নববর্ষ কিংবা পহেলা বৈশাখ হিসেবে পরিচিত।উৎসবটিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা,পান্তা-ইলিশ,বৈশাখী মেলা,হালখাতা ইত্যাদির আয়োজন করা হয়ে থাকে।বাঙালি জাতির লোকউৎসব হিসেবেও এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
প্রথম দিনটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা একাডেমি চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।বিশাল জনসমাগমে সার্বজনীন মঙ্গল কামনায় মঙ্গল এই শোভাযাত্রা২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত হয়।কথা হলো সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে।মঙ্গল কথাটা নিতান্তই দারুন অর্থবোধক। আক্ষরিক অর্থে মঙ্গল মানে ভালো কিছু।আর শনি বলতে বুঝায় খারাপ কিংবা দুর্দশা।আমরা অনেক সময় কারো ভাগ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে শনি কিংবা মঙ্গলে কথা বলে থাকি।মঙ্গল একটি উৎকৃষ্ট শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ বলতে ভাল কিছু বুঝায়।সেই ভালো সমাজের,রাষ্ট্রের,মানুষের বা অন্য যেকোন বিষয়ের উপরে বলা যেতে পারে।শান্তির বার্তা বাহকই হচ্ছে মঙ্গল।প্রায় প্রতিটি ধর্মেই মঙ্গলের ব্যাপার নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।অন্যের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনা কিংবা অন্যের জন্য ভালো কিছু করা এটাই হচ্ছে মঙ্গল।
তার পরেও ধর্মের বাইরে এসে সার্বজনীন মঙ্গল এর প্রয়োজনীয়তা কি?
চমৎকার এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতেই পারে ধর্ম-বর্ণ, জাতি,নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মঙ্গল কামনাই হচ্ছে সার্বজনীন মঙ্গল।প্রতিবছরই বৈশাখের প্রথম দিনে বাংলা একাডেমি চত্বর থেকে বিশাল লোকবল নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়ে থাকে।মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করার উদ্দেশ্য হচ্ছে সার্বজনীন মঙ্গল নিশ্চয়নের নতুন একটি ডাক দেওয়া। প্রতিবছরই আমরা এটি করে থাকি কিন্তু সত্যিকার অর্থেই কি সার্বজনীন মঙ্গল নিশ্চিত হওয়া গেছে।আর যদি নিশ্চিত হয়েই থাকে তবে বারবার কেন সার্বজনীন মঙ্গলের ডাক দেওয়া হয়।উত্তরে অবশ্যই আসবে,না।জমকালো এমন আয়োজনের মধ্য দিয়েও যদি সার্বজনীন মঙ্গল নিশ্চিতকরণের শুভ প্রত্যয় ব্যক্ত না করা যায় তাহলে,জাতি হিসেবে লজ্জা বোধ করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই থাকবে না।
গত সপ্তাহেই আমাদের দেশে পহেলা বৈশাখ পালন করা হলো খুবই কলোরবে।পালন করা হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা।তবে তারমধ্যেও থেমে নেই দেশের আনাচে-কানাচে অমঙ্গল অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যাওয়া।হাট থেকে ঘাট,সমাজ থেকে রাষ্ট্র।প্রায় প্রতিটি জায়গায় চলছে অস্থির প্রতিযোগীতা।আমি ভাবি,কি করে আমার দ্বারা মঙ্গল নিশ্চয়ন করা সম্ভব হবে? আমিতো মানুষকে মূল্যায়ন করা শিখি নাই,আমি এখনো সুযোগ পেলে ওজনে কম দিয়ে থাকি।আমি সুযোগ পেলেই রাস্তায় উল্টোপাশে বাইক চালাই।আগ্রহ নিয়ে থাকি কখন নিয়ম ভেঙ্গে আমি সামনে এগিয়ে যাব।চিন্তা করি ভালো-মন্দ তোয়াক্কা না করেই বিত্তবান হতে।পাশের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করার সময় আমার হয়ে ওঠেনা।আমি অর্থের লোভে বিত্তবান হতে মানবিক কাজের পাশে থাকিনা।আমি ধর্মের টানে কটাক্ষ করতে পিঁছপা হইনা।আমার ভাবনায় সাম্প্রতিক সম্প্রীতির বন্ধন কখনো উঠে আসে না।আমি সব সময় চিন্তা করি আমার স্বার্থ নিয়ে আমার ভালো-মন্দ নিয়ে আমার লাভের অংশ নিয়ে। এরূপ চিন্তা চেতনা নিয়ে যদি বছরের প্রতিটা দিনই সার্বজনীন মঙ্গল কামনায় ঢাকঢোল পিটিয়ে মিছিল মিটিং করে শান্তির বার্তা দিতে চাই,তাহলে কখনই সার্বজনীন শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
আমি মনে করি,সার্বজনীন মঙ্গল কিংবা সম্প্রীতির বন্ধন শক্ত করতে আমাদের প্রয়োজন নিজেকে পরিবর্তন করা।নিজের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করা।মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা।নিজেকে মানবিক এবং মানবতার কাতারে শামিল করা। যতক্ষণ না নিজেকে স্বঘোষিত দেশ প্রেমিক কিংবা ভালো মানুষ করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমার দ্বারা কখনোই কোনো শান্তির বার্তা সার্বজনীন হতে পারে না।
আমি চাই সকল বাঙালি জাতিসত্ত্বার মানবিক বিকাশ ঘটুক। রাজনৈতিক সামাজিক পারিবারিক অর্থনৈতিক তথা সামগ্রিক ক্ষেত্রে বিবেকের জাগরন ঘটুক।সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রার সর্বত্রই মঙ্গল নিশ্চিত হোক, এমনটাই প্রত্যাশা।
বিষয় | নববর্ষ |
---|---|
বর্ণনায় | @kamrul8217 |
ডিভাইস | Samsung A32 |
লোকেশন | w3w |
তারিখ | ২০ এপ্রিল ২০২২ |
এতক্ষন সাথে যুক্ত ছিলাম আমি @kamrul8217
পেশায় একজন সাংবাদিক,উপস্থাপকও ক্ষুদ্রলেখক।আশেপাশে যা পাই তাই কলমে লিখে প্রকাশ করি।জ্ঞানের জগতে আমি ক্ষুদ্র একজন শিক্ষনবিশ ছাত্র।জ্ঞান আহরণে অবিরাম পথচলা।একজন মানবিক মানুষ হয়ে মানবিক পৃথিবী গড়তে আপ্রান প্রচেষ্টা।আমার জ্ঞানের পরিসীমাকে বাড়িয়ে দিতে পাশে অকৃত্রিম বন্ধু হয়ে আছে,দুইবাংলার একপ্রাণ @amarbanglablog.
প্রথমে পহেলা বৈশাখের আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই।
মঙ্গল শোভাযাত্রা আলোকচিত্র দেখে খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দর আপনি আলোকচিত্রগুলো করেছেন। আপনার লেখনি খুবই অসাধারণ হয়েছে। আসলে সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনুক এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা ও ভালবাসা রইলো শ্রদ্ধেয়।
আমি কোনো মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশ্বাসী নই। রঙ মেখে রাস্তায় বের হলে আবার মানুষের মঙ্গল কেমনে হয় আমি বুঝি না। মঙ্গল মানুষের কর্মের মাঝে নিহিত থাকে।
বিষয়টা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছি।যদি সময় থাকে একটু পড়ে নিবেন।আশা করি আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়ে অনুধাবন করবেন।সত্যিই আমাদেরকে পরিবর্তন না করতে পারলে শোভাযাত্রা দিয়ে মঙ্গল আনা একেবারেই অসম্ভব। ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়।
আপনাকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা রইল। আপনার এই মঙ্গল সভা যাত্রা দেখে ভালো লাগলো। আপনি মঙ্গল সভা যাত্রা ফটোগ্রাফি গুলো খুবই আকর্ষনীয় হয়েছে। এই সভা যাত্রা সবার মঙ্গল বয়ে আনুক এই কামনা করি।
শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিজেদের পরিবর্তন খুবই জরুরি। নিজেদের মনুষ্যত্ব বিকাশের মঙ্গলের বিকল্প আর কি হতে পারে।ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় এমন চমতকার মন্তব্য করার জন্য।
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা সনের প্রচলন হয় কৃষকদের কর বা ট্যাক্স দেওয়া এবং দোকাদারদের হালখাতা করা এইসব উদ্দেশ্যে কিন্তু একসময় এটাকে কেন্দ্র করে অনেক মেলা হতো। মেলা থেকে হতো আনন্দ শোভাযাত্রা। এখন সেই আনন্দ শোভাযাত্রা মঙ্গল শোভাযাত্রায় পরিণত হয়েছে। বেশ সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন।।
আপনি অনেক চমৎকার করে বলেছেন যে জমিদারদের আমলে হালখাতা হিসেবে পরিচিতি পায়। সময়ের সাথে পরিবর্তন ঘটে আজকের এই উৎসব। চমৎকার এমন মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য। দীর্ঘদিন পরে আপনার পোস্ট পড়ে ভালোই লাগলো ।
উৎসব আমার, উৎসব আমাদের
ঘৃণা নয় , ভালোবাসো ।।
সত্যিই বলেছেন ভাইয়া, ব্যক্তিগত কারণেই আমি অনিয়মিত হয়ে পড়েছি। নববর্ষ নিয়ে লেখার অনেকটা পরিকল্পনা ছিল। সময়ের অভাবে তেমন করে লেখা হয়নি। তবে আপনার কথায় একমত হয়ে আমিও বলতে চাই, সকল উৎসবে যেন আপনার আমার সকলের। উৎসবে মেতে ওঠে শান্তির জয়ধ্বনিতে বিশ্ব মুক্তি পাক অমনীষার আঁধার থেকে। ভাবনায় ভেবে উঠুক, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
চমৎকার এমন মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইলো শ্রদ্ধেয়।