আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,

হ্যালো আমার প্রিয় স্টিমিট পরিবারের বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই আশা করছি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের ব্লগের বিষয় হলো ডাই প্রজেক্ট। আশা করছি আমার আজকের ডাই প্রজেক্টেটি আপনার কাছে অনেক ভাল লাগবে।

আপনারা সবাই জানেন যে,আমাদের প্রিয় কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগে- ৪২ তম প্রতিযোগিতা চলতেছে। আর সেই প্রতিযোগিতার বিষয় হলো কাগজ দিয়ে ফুল তৈরি করা। ডাই কন্টেস্ট গুলো আমাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। সাদা কালো ও রঙিন কাগজ কেটে অনেক প্রকার জিনিষ তৈরী করা যায়। সেই দিকে লক্ষ রেখেই আমাদের সম্মানিত এডমিন মডারেটর ভাইবোন গন ডাই কন্টেস্ট নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন।

আমি আজকে রঙিন কাগজ দিয়ে একটি ইউনিক ফুলের তোড়া তৈরী করেছি। অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমি এই ফুলের তোড়াটা তৈরী করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাগজ কেটে ছোট ছোট ফুল তৈরী করতে অনেক সময় লাগে। আমি দুইদিন চেষ্টা করে আমার ফুলের তোড়াটা বানাতে সক্ষম হয়েছি। প্রথমে একটি কাগজ দিয়ে কোন আইসক্রিমের আদলে একটি ঠোঙ্গা তৈরী করেছি। তারপর ছোট ছোট ফুল তৈরী করে সেটাতে আঠা দিয়ে লাগিয়ে তোড়াটা তৈরী করেছি। খুবই সুন্দর ও আকর্ষনীয় একটি ফুলের তোড়া হয়েছে। আমি নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করে আপাদের দেখাচ্ছি।

ফুলের তোড়া তৈরীর প্রয়োজনীয় উপকরন-

• রঙিন অফসেট পেপার
• কাঁচি
• কার্টার
• কলম
• আঠা
• কার্ডবোর্ড

এবার ধাপে ধাপে ফুলের তোড়া তৈরীর ধাপ গুলো শেয়ার করছি-

ধাপ-০১

প্রথমে একটি রঙিন পেপার নিয়ে তার মধ্যে আঠা লাগিয়ে কোন আইসক্রিমের আকৃতিতে একটি ঠোঙ্গা তৈরী করলাম। তারপর ঠোঙ্গাটা হাতে নিয়ে যেন চেঁপে না যায় তার জন্য ভিতরে কিছু কাগজ দিয়ে দিলাম। পুরাতন কাপড় দিলেও সমস্যা নেই।

ধাপ-০২

তারপর কার্টার দিয়ে ঠোঙ্গার মুখের সমান মাপ নিয়ে একটি কার্ডবোর্ডের টুকর কেটে নিলাম। কার্ডবোর্ড কাটা খুবই রিক্স,তাই সাবধানে কাটতে হবে।

ধাপ-০৩

তারপর সেই কার্ডবোর্ডের টুকরার সমান একটি রঙিন অফেসেট পেপারের টুকরা কেটে নিলাম। সেটাতে আঠা লাগিয়ে নিলাম। আমার আঠা গুলো একটু পাতলা শুকাতে দেরি হয়।

ধাপ-০৪

অফসেট পেপারের টুকরাটার মধ্যে আঠা লাগিয়ে কার্ডবোর্ডের সাথে লাগিয়ে নিলাম। তারপর সেই অংশটা ঠোঙ্গার মুখে লাগিয়ে দিলাম। যার ফলে ভিতরের কাগজ গুলো আর দেখা যাচ্ছে না। আপনারা আবার আইসক্রিম মনে করবেন না,হে হে হে।

ধাপ-০৫

এখন ছোট ছোট ফুল তৈরী করতে হবে। তার জন্য প্রথমে কার্টার দিয়ে চার কোণা কাগজ কেটে তারপর কাঁচি দিয়ে কোণা ‍গুলো কেটে রাউন্ড করে নিলাম। এসব কাজের মধ্যে একজন অ্যাসিসটেন্ট থাকলে খুব ভাল হয়। আমার অ্যাসিসটেন্ট আমার বউ,হি হি হি।

ধাপ-০৬

এখন আবার ফুল বানানোর জন্য প্রথমে অফসেট পেপারের মাঝখান দিয়ে কেটে পরে আবার সাইট দিয়ে রাউন্ড ডিজাইন করে কেটে নিলাম। কারন একটু ডিজাইন না থাকলে সুন্দর দেখা যায় না।

ধাপ-০৭

কাগজ কাটাকাটির কাজ শেষ এখন ফুল বানানোর পালা। একটি কাগজ হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে ফুল বানানো শুরু করলাম। আমার থেকে আমার অ্যাসিসটেন্ট বেশি দক্ষ। তবে সেটা আমি বুঝতে দেয় না।

ধাপ-০৮

এই ফুল গুলো বানাতে আমাকে অনেক বড় ধৈর্যের পরিক্ষা দিতে হয়েছে। একবার এমনে করি আরেকবার অন্যভাবে করি। একবার ফুল ছোট হয়ে যায় বড় না, অবার বড় হয়ে যায় ছোট হয় না,বিধী কি কঠিন পরিক্ষা দিচ্ছি। অনেক চেষ্টার ফলে অবশেষে ফুল গুলো বানাতে সক্ষম হয়েছি। না পারলে আবার অ্যাসিসটেন্ট থেকে খুঠা শুনতে হবে যে।

ধাপ-০৯

এবার ফুল ‍গুলো লাগানোর পালা। তার জন্য ধীরে ধীরে সেই কার্ডবোর্ডের উপরে আঠা লাগিয়ে দিলাম। অ্যাসিসটেন্ট রেখেছি শুধু ফটো তুলার জন্য।

ধাপ-১০

তারপর একটি একটি ফুল নিয়ে ধীরে ধীরে ফুল গুলো আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিলাম।

ধাপ-১১

সাতটি ফুল লাগিয়ে দিলাম। দেখতে কিন্তুু দারুন লাগছে। মোটামুটি ফুলের তোড়ার একটি ভাব চলে আসছে। এটা দিয়ে কাউকে প্রপোজ করলে রাজি হবে ১০০%।

ধাপ-১২

এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। মাপ নিয়ে কার্টার দিয়ে আবার কাগজ কেটে নিলাম। তারপর সমান করে সেই কাগজ ভাঁজ করে নিলাম।

ধাপ-১৩

তারপর কলম দিয়ে মার্ক করে নিলাম। যেন কাটার সময় কোন জামেলা না হয়। তারপর মাপ অনুযায়ী কাঁচি দিয়ে ধীরে ধীরে কেটে নিলাম। কাগজ কাটাকাটি আমি তেমন পারি না। তাই সতর্কতার সাথে কাজ করি।

ধাপ-১৪

তারপর কাটাঁ অফসেট পেপারের টুকরোটার দুইটা মাথা আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিলাম। মাঝ খানে আবার সাদা একটি পুতি বসাতে হবে।

ধাপ-১৫

আরো আছে, আবার আরেকটু আংশ কেটে নিলাম ফিতা বানানোর জন্য। তারপর কয়েকটি লাভ বানাবো। তার জন্য কাগজ কেটে কলম দিয়ে মার্ক করে নিলাম। মার্ক করে কাটলে সুন্দর হয়।

ধাপ-১৬

তারপর ছোট বড় ও ম্যাডিয়াম সাইজের তিনটি লাভ কেটে নিলাম। এবার একে একে আঠা দিয়ে লাভ,ফিতা গুলো ফুলের তোড়ার সাথে লাগিয়ে নিলাম।

ধাপ-১৭

এবার উপরের মাথার মধ্যে ছোট ছোট ফুল গুলো লাগিয়ে ফুলের তোড়ার কাজ শেষ করে দিলাম। চিন্তা করতেছি এটা নিয়ে বিকালে ছাদে গিয়ে কাউকে প্রপোজ করবো। বউ জানলে কপালে মাইর আছে,হা হা।

উপস্থাপনা-

বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের আয়োজন। সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করছি আপনাদের কাছে অনেক ভাল লাগবে। এমন সুন্দর একটি কন্টেস্ট আয়োজন করার জন্য এডমিনও মডারেটর ভাইবোনদের ধন্যবাদ জানাই। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।