চিন্তা করুন শ্রমিকদের বর্তমান মজুরি নিয়ে, তারা কত বড় ধোকার শিকার হচ্ছে।।

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে খুবই গুরুত্ব পূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি সবার সাপোর্ট পাবো।

Link

২০১৮ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি করা হয়েছিল ৮ হাজার টাকা তথা ৯৫ ডলার। যা বর্তমানে এখন বহাল রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে পড়ে ৮ হাজার টাকা দিয়ে কিভাবে মানুষ সংসার চালাচ্ছে সেটা আমার বুঝে আসে না। বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে পাঁচ বছর পর পর। সে হিসাবে ২০২৩ সালে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কথা রয়েছে। সেটা নিয়ে শ্রমিক এবং মালিক পক্ষ কয়েকবার বৈঠক করছে। বৈঠকে শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা চেয়েছেন। আবার শ্রমিকদের সংগঠনগুলো ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম বেতনের প্রস্তাব করেছেন।

কিন্তুু মালিক পক্ষ সেখানে গেইম খেলছে। তারা বিদ্যুৎ, গ্যাস, তুলা, সুতা-সহ বিভিন্ন পণ্য ও কাঁচামালের যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে সেটা দিতে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তুু শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার সময় তাদের মুখ শুকিয়ে আসে। যাদের রক্ত ঘামের পয়সায় তারা এসি গাড়িতে চলে, এসি বাড়িতে থাকে তাদের বেতন দেওয়ার সময় সমস্ত সমস্যা এনে দাড় করায়। গার্মেন্টস মালিক পক্ষ শ্রমিকদের জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব করেছেন ১০ হাজার ৪০০ টাকা তথা ৯৫ ডলার।

এখানে একটি বিষয় চিন্তা করেন ২০১৮ সালেও শ্রমিকদের মজুরি ৯৫ ডলার ছিল। বর্তমানেও তারা ৯৫ ডলারই রাখছে। তখন ৯৫ ডলারে বাংলাদেশি টাকায় আসতো ৮০০০ টাকা। আর বর্তমানে বাংলাদেশের টাকার মান কমে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সেটা হয়েছে ১০ হাজার ৪০০ টাকা হয়েছে। এই পাঁচ বছরে শ্রমিকদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তারা যে লাভ করেছে, সেটার ভাগ শ্রমিকদেরকে দিবে না। ২০১৮ সালে বাংলাদেশি টাকায় ডলারের মূল ছিল ৮৩.৮৭ পয়সা। বর্তমানে বাংলাদেশি টাকায় প্রতি ডলারের দাম ১১০ টাকা। সুতরাং ১১০*৯৫=১০৪৫০ টাকা। এখান থেকেও আবার ৫০ টাকা কমিয়ে দিচ্ছে। চিন্তা করেন শ্রমিকদের সাথে কত বড় ধোকাবাজি হচ্ছে।

যদি আমরা বিশ্বের কয়েকটি রিপোর্টের দিকে লক্ষ করি তাহলে দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মজুরি দেওয়া হয় ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গে মাসিক ২ হাজার ১৪০ ডলার। এরপর দ্বিতীয় স্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া, সে দেশের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২ হাজার ২২ ডলার,ভিয়েতনামের ন্যূনতম মজুরি ১৬২ ডলার,ফিলিপাইনের ন্যূনতম মজুরি ১৪১ ডলার,ইন্দোনেশিয়ার ন্যূনতম মজুরি ১৭৩ ডলার।

মানে মালিক পক্ষ কৈ মাছের তেল দিখে কৈ মাছ ভাজি করতে চায়। তারা নিজের লাভের অংশ থেকে শ্রমিকদের কিছু দিবে না। শুধু ডলারের মূল্যবৃদ্ধিটুকু এডজাস্ট করে দিতে চাচ্ছেন। তারা একবার চিন্তা করে না যে আমরা যাদের মাধ্যমে আজকে কোটি পতি হয়েছি তাদেরকে বেচে থাকার মত ন্যূনতম মজুরি প্রদান করি। তারাও তো মানুষ। তাদের তো সংসার আছে,ছেলে মেয়ে আছে। বর্তমানে বাজারে আশি টাকার নিচে কোন তরকারি নেই। ৩০০ টাকা কেজির নিচে কোন মাছ নেই। মাংসের কথা স্বপ্নেও চিন্তা করতে পারে না। গরীবের জাতীয় মাছ পাঙ্গাসও এখন শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। যায়হোক আশা করি সম্মানিত মালিক পক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা তাদের শ্রমিকদেরকে ন্যূনতম মজুরি ১৩৬ ডলার তথা ১৫০০০ হাজার টাকা দিতে রাজি হবে।

এই টাকা তো তাদের নিজের পকেট থেকে দিবে না। এগুলো শ্রমিকদের ইনকাম থেকেই দিবে। অনেক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক যাদের কিছুই ছিল না। তারা আজকে ব্যাংকের মালিক হয়ে গেছে। বিদেশের বিভিন্ন দেশে তাদের বাড়ি আছে। বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে তাদের মিলিয়ন মিলিয়ে ডলার জমা আছে। দুই দিনের দুনিয়ায় এত টাকা দিয়ে কি করবে। মারা গেলে তো এসব টাকা পয়সা কবরেও নিয়ে যেতে পারবে না। তার চেয়ে বরং একজন মানুষের উসিলায় যদি হাজার হাজার মানুষ একটু ভালো খেতে পারে,একটু শান্তিতে থাকতে পারে তাহলে অন্তর থেকে দোয়া আসবে। আর এটাই হবে শেষ সম্বল। সবাইকে ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।