খুলনার শিক্ষার্থীদের মত ‘বিনা লাভের দোকান’ প্রতি জেলা উপজেলায় দরকার।।
সাজাও মন রাঙাও হৃদয় বাংলা ভাষার রঙে -
বর্তমান বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান সমস্যা হলো দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারা। বর্তমানে এটা সব থেকে বড় ইস্যু। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টারা বাজার নিয়ন্ত্রন করতে হিমশিম খাচ্ছে। তার কারন হলো বাজারের সিন্ডিকেট। তদারকি করে দেখা গেছে যে একটি পণ্য কৃষকের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতার হাত পর্যন্ত আসতে পাঁচ থেকে সাতবার হাতবদল হয়। যার ফলে ২০ টাকার পণ্য ১০০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। আর এই সিন্ডিকেটের পিছনে রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, এলাকার ক্যাডার, স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা বিভিন্ন জাগায় বিভিন্ন নামে বেনামে চাঁদা তুলে দ্রব্যমূল্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে। একটি রিপোর্টে দেখা গেছে এক ব্যাক্তি এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়িতে ডিম তুলে দেওয়ার বদৌলতে প্রতি ডিমে ৬০ পয়সা করে বাড়িয়ে মেমো তৈরী করছে। চিন্তা করেন খাঁমারের মালিক ইচ্ছা করলে নিজেই গাড়ি দিয়ে বাজারে এনে ডিম বিক্রয় করতে পারতো। কিন্তুু এলাকার প্রভাবশালীরা রাস্তা আটকে প্রথম গাড়ির ডিম নামিয়ে দ্বিতীয় গাড়িতে তুলে প্রতি ডিমে ৬০ পয়সা করে বাড়িয়ে মেমো তৈরী করে। এভাবেই পাঁচ থেকে সাত জাগায় বিভিন্ন পন্যের দাম বাড়তে বাড়তে ক্রেতা পর্যন্ত পৌছতে পৌছতে জিনিষের দাম বেড়ে আকাশে চলে যায়।
এই সিন্ডিকেট ভাঙতে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিনা লাভের দোকান পরিচালনা করার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। আর তাদের এই উদ্যোগটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে জানা যায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলায় জেলায় টাস্কফোর্স গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই টাস্কফোর্সের একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন হৃদয় ঘরামী নামের একজন ছাত্র। সে বাজার তদারকি করতে গিয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন হাত বদলের কারনে অস্বাভাবিকভাবে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সে জন্য হৃদয় নিজেই এই সমস্যার সমাধান খোঁজে বের করেন। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়ে চালু করেন ‘বিনা লাভের দোকান’। অর্থাৎ,পণ্য সংগ্রহ করে লাভ ছাড়াই বিক্রির উদ্যোগ নেন তাঁরা।
বিভিন্ন ছাত্ররা মিলে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে গ্রামীন কৃষকদের থেকে বিভিন্ন শাক সবজি সহ আলু, ডাল, তেল নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিষ দোকানে তুলেন। আর সে গুলো তারা বিনা লাভে বিক্রয় করা শুরু করেন। প্রথম আলোর রিপোর্টে দেখা যায় সোর্স তারা প্রতি কেজি মসুর ডাল ৯৯ টাকা, আলু ৫০, লালশাক ২৫, ভারতীয় ও দেশি পেঁয়াজ যথাক্রমে কেজিপ্রতি ৬৫ ও ১০০, লাউ ৩০ থেকে ৪০ এবং ডিম ১২ টাকায় বিক্রি করেন। আর তারা তাদের এই উদ্যোগে প্রচুর সারা পেয়েছেন। মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে তাদের সব পন্য বিক্রয় শেষ হয়ে যায়। তারা নিজের পকেট থেকে ত্রিশ হাজার টাকার পন্য কিনে আবার বিক্রয় করে ত্রিশ হাজার টাকাই পেয়েছে। তারা ইচ্ছা করলে কিছুটা লাভ করতে পারতো। কিন্তুু তারা সেটাও করে নাই।
এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে সবাইকে এক সাথে হয়ে কাজ করতে হবে। শুধু অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপর ছেড়ে দিলে চলবে না। তাদের উপদেষ্টারাই বা কয়জন। আর জেলা উপজেলাতে যে ডিসি, ইউএনও আছে তারাও এলাকার প্রভাবশালীদের কারনে কিছু করতে পারে না। এখন দায়িত্ব নিতে হবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে। কারন তারাই দেশকে পরিবর্তন করতে পারবে। তাদের দ্বারা সব কিছু সম্ভব। খুলনার শিক্ষার্থীদের মত প্রতি জেলা উপজেলায় যদি এভাবে বিনা লাভের দোকান বা স্বল্প লাভে পণ্য বিক্রয় করা যায় তাহলে সিন্ডেকেট ভাঙতে বেশি সময় লাগবে না।
এই সিন্ডেকেটের বিরুদ্ধে কাউকে না কাউকে তো দাড়াতে হবে। আর দেশে যত পরিবর্তন এসেছে সব কিছুর মধ্যেই ছাত্রদের অবদান রয়েছে। তারাই সর্বপ্রথম অন্যাইয়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, প্রতিবাদ করেছে। সুতরাং আমরা মনে করি যদি ছাত্ররা এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে, কথা বলে তাহলে অবশ্যই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে। আমরা ছাত্রদের মাধ্যমে আরেকটি পরির্বন্ত দেখতে চাই।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
এভাবে কি আর দেশ চলে ভাই। কিভাবে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সে চেষ্টা করতে হবে আর দ্রুত জনগণের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে। হয়তো এতেই যদি দেশের স্বস্তি মেলে। বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এসবের কোন তাই কাজ হবে না। সীমিত কয়েকদিন দেখানোর মতো ছাড়া কিছুই না।
সব জাগায় যদি ছাত্ররা উদ্যোগটা কাজে লাগাতে পারে। তাহলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধন্যবাদ।
শুধু খুলনা না ভাই বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গাই এমনটা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা খামারি রা তাদের পণ্য সঠিক দামে বিক্রি করছে। সত্যি বলতে সিন্ডিকেট ভাঙতে গেলে এখন এইটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।
জী ভাইয়া সিন্ডেকেট ভাঙতে হলে এছাড়া আর কোন উপায় দেখতেছি না। ধন্যবাদ।