অফিস থেকে ঈদ সামগ্রী উপহার পাওয়ার অনুভূতি।।

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমাদের অফিস থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী পাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।

আমি চাকরিতে জয়েন করেছি ২০১৫ সালের মে মাসের ১০ তারিখে। আমার চাকরি জীবন প্রায় দশ বছর হতে চললো।এই দশ বছর যাবৎ একই অফিসে একই সেকশনে সৎ ও নিষ্ঠার সাথে চাকরি করে যাচ্ছি। এই ১০ বছরে আমি অফিসের অনেক উত্তান পতন দেখেছি। কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। কত মানুষের হাসি কান্নার সাক্ষী হয়েছি। কত মানুষ চাকরি ছেড়ে চলে গেছে,আবার কত নতুন মানুষ চাকরিতে জয়েন করেছে। মানুষ চলে গেছে কিন্তু তার ব্যবহৃত চেয়ার টেবিল, তার ডেস্ক,তার স্মৃতি এখনো রয়ে গেছে। এই দশ বছরে অফিসের মধ্যে অনেক নিয়ম-কানুন পরিবর্তন হয়েছে। পুরাতন নিয়মকানুন বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার নতুন নিয়ম কানুন প্রবর্তন করা হয়েছে।

গত দুই বছর যাবত আমাদের অফিসে নতুন একটি নিয়ম করেছে। আমাদের অফিসের এমডি স্যার একটি দারুন উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি প্রতিবছর রমজান মাসে ঈদের আগে সবাইকে ঈদ সামগ্রী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। গতবছরের ঈদ সামগ্রী পাওয়ার অনুভূতি আপনাদের নিকট শেয়ার করা হয়নি। তাই ভাবলাম এবছর আপনাদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করা যাক। ঈদ সামগ্রী হাতে পেয়ে মানুষ যখন একটি হাঁসি দেয়, সে হাঁসির দাম লাখ টাকা। ঈদ সামগ্রী লাখ টাকার না হলেও মানুষের খুশির দাম ঠিক লাখ টাকা হয়েছে। সবার মন আনন্দে ভরে গেছে।

মিডিয়াম সাইজের একটি কার্টনের মধ্যে ঈদের দিন কাজে লাগবে এমন কয়েক প্রকারের পণ্য একসাথে প্যাকেট করা হয়েছে। আপনারা উপরে গিফট সামগ্রীর কার্টনটি দেখতে পাচ্ছেন। কার্টনের গায়ে আমাদের অফিসের নাম সহ ঈদ উপহার সামগ্রী লেখা রয়েছে। এই উদ্যোগটির মাধ্যমে শ্রমিক কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে অফিসের ম্যানেজমেন্টের একটি ভালোবাসার সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে। সবার নাম ডেকে ডেকে একটি করে প্যাকেট উপহার দেওয়া হয়েছে।

মোড়কের মধ্যে যা যা ছিল সবকিছুই বিখ্যাত ফ্রেশ কোম্পানি থেকে আমদানি করা। আপনারা সবাই জানেন যে ফ্রেশ কোম্পানির পণ্য মোটামুটি অনেক ভালো। মোড়কটি খুলে প্রথমে আমি দুই প্যাকেট চিনিগুড়া সুগন্ধি চাল পেয়েছি। প্রতিটি প্যাকেট ১ কেজি করে মোট ২ কেজি সুগন্ধি চিনি গুড়া চাল দেওয়া হয়েছে। এই চাউল গুলো অনেক ভালো, পোলাও বিরিয়ানি সহ অনেক প্রকারের রেসিপি করা যাবে।

উপরের ফটোগ্রাফিতে দুই প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই দেখতে পাচ্ছেন। এই সেমাই হলো ঈদের মূল পণ্য। অন্যান্য সময় সেমাই না খাওয়া হলেও ঈদের সময় সবার ঘরেই অল্প একটু হলেও সেমাই রান্না করা হয়। আর সেমাই খেতে ভীষণ ভালো লাগে। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন ধরনের সেমাই বের হয়েছে। এখানে প্রতি প্যাকেটে ২০০ গ্রাম করে মোট ৪০০ গ্রাম সেমাই রয়েছে।

উপরের ফটোগ্রাফিতে আপনারা তিনটি পণ্য দেখতে পাচ্ছেন। এখানে রয়েছে এক কেজি চিনি, ৫০০ গ্রাম গুঁড়ো দুধ আর এক লিটার সয়াবিন তেল। সবগুলো পণ্য ফ্রেশ কোম্পানি থেকে আনা হয়েছে। দুধ, চিনি, তেল সবকিছুই আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। সবগুলো ফটোগ্রাফি আমি আমার অফিসের ডেস্কের উপরে রেখে নিয়ে ছিলাম।

বন্ধুরা কোন উপহারের মূল্য ধরতে নেই, এখানে কত টাকার পণ্য রয়েছে এটা হিসাব করার বিষয় নয়। আমি দেখেছি বিভিন্ন জেলা উপজেলা প্রতিযোগিতায় গিফট হিসেবে সামান্য একটি চকলেট দেওয়া হয়েছে। চকলেটের দাম ৫ টাকা ১০ টাকা হলেও গিফটের দাম লাখ টাকা। এখানে আমি কোন কিছুর মূল্য নির্ধারণ করছিনা বা এগুলোর মূল্য নিয়ে আলোচনা করছি না। বলতে চাচ্ছি যে এ সামান্য উপহার পেয়ে আমি মানুষের মধ্যে যে খুশি দেখেছি, সেটা লাখ টাকা দিয়েও কেনা যাবে না। মানুষ এক একটি প্যাকেট হাতে নিয়ে খুশি মনে তাদের পরিবারের কাছে নিয়ে গেছে। আমাদের এমডি স্যার নিজে বলেছে প্রত্যেক বছর এভাবে সবাইকে ঈদ সামগ্রী উপহার দেওয়া হবে। এমডি স্যারের এই উদ্যোগকে ছোট বড় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সাধুবাদ জানিয়েছে। আমরা সবাই অন্তর থেকে এমডি স্যারের জন্য দোয়া কামনা করি। স্যার যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঈদ সামগ্রিক গুলো গিফট করেছে আল্লাহ যেন স্যারের মনের নেক মাকসাদ পূরণ করে দেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।