শৈশবের শীত।।
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে শৈশবের শীত নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি পড়লে আপনাদেরও শৈশবের স্মৃতি মনে পড়বে।
গত এক সাপ্তাহ ধরে রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে শীতের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কালকে ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি আজকে কিছুটা বেড়ে ১৬ ডিগ্রি হয়েছে। উত্তর বঙ্গের দিকে তাপমাত্রা ১০/১১ টে নেমে গেছিলো। তবে আজকে সব খানেই তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী এই সাপ্তাহ পুরোটাই এমন থাকবে। জানুয়ারীর বিশ তারিখের পরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। আমি যে এলাকায় বসবাস করি সেটা কিছুটা উষ্ণ এলাকা। তীব্র কুয়াশা আর শীত ছাড়া তেমন শীত লাগে না। তবে গত কালকে সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। ঠান্ডা বাতাসের সাথে ভালোই শীত পড়েছে। যারা শীতের পোষাক কে আয়রন করে বনবাসে রেখেছিল তারাও সবাই সেই শীতের পোষাক বের করে গায়ে দিয়েছে। যায়হোক এখন মূল কথা শুরু করি।
আমরা যখন ছোট ছিলাম,তখন আমাদের শরীরে তেমন ভাবে শীত লাগতো না। এমন মোটা মোটা শীতের পোষাক আমরা পড়ি নাই। হয়তো বেশি শীত পড়লে দুইটা গেঞ্জির উপরে একটা শার্ট পড়তাম। তখন তো দৌড়ের উপরে থাকতাম। পাচঁ মিনিট ধৈর্য ধরে কোথাও বসা বা দাড়াতাম না। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে মকতবে পড়তে যেতাম। তখন কিছুটা শীত অনুভব করতাম। যেদিন বেশি কুয়াশা পড়তো সেদিন মকতবেও যেতাম না। ছেলেরা সবাই মিলে কিছু কাগজ পত্র আর ফায়ার বক্স নিয়ে খালি জমিতে চলে যেতাম। সেখানে কাগজ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে গরম ভাপ নিতাম।
যখন নিজেদের কাগজ শেষ হয়ে যেতো তখন বিল বা চকের জমিতে জমিয়ে রাখা ধানের খড় দিয়ে আগুন জ্বালাতাম। আগুন শেষ হয়ে গেলে সেই ছাই নিয়ে এখানে সেখানে উড়াতাম। দৌড়াদৌড়ি করতাম। কি যে আনন্দ করতাম। তখন তো শীতকে শীত মনে করতাম না। পুকুরের পানি যতই ঠান্ডা হোক আমাদের দাবড়ানির ফলে পুকুরের পানিও গরম হয়ে যেত। রাস্তা দিয়ে পথিকেরা যাওয়ার সময় মন্তব্য করতো,তোদের কি শীত লাগে না...। সত্যিই তখন আমাদের গায়ে শীত লাগতো না।
মাঝে মাঝে পাড়ার অন্য ছেলেদের সাথে মকতব ফাঁকি দিয়ে গরুর ঘাস কাটতে যেতাম। তখন আমাদের কোন গরু ছিল না। ঐ ছেলো গুলোই জমিতে আগুন জ্বালানোর কথা বলে আমাদেরকে নিয়ে যেতো। ঘাস কাটার নাম করে কত বনজঙ্গলে ঘুরতাম তার কোন হিসাব নেই। আর শীতের সময় তো কুল বা বরই এর মৌসুম থাকে। কার বাড়িতে কোন ধরনের বরই আছে সেটা ঘুরে ঘুরে দেখতাম। সুযোগ পেলেই যার তার গাছে ঢিল মারতাম। ঘনকুয়াশায় দুরের জিনিষ দেখা যেতো না। সেই কুয়াশা কে কাজে লাগিয়ে মানুষের গাছের কত ফল পেরে খেতাম তার কোন হিসাব নেই।
শীতের সময় খালি জমিতে আগুনের ভাপ নিতে গিয়ে খেলার ছলে কখন যে বারোটা বেজে যেতো বুঝতেই পারতাম না। যখন মসজিদে যোহরের আজান দিতো তখন খেয়াল হতো স্কুলের টাইম চলে গেছে। তখন আবার মায়ের মারের ভয়ে বাসায় ফিরতাম না। সারাদিন এখানে সেখানে টই টাই করে ঘুরে সন্ধার দিকে ভয়ে ভয়ে বাড়ি ফিরতাম। সারাদিন কোন খাওয়া দাওয়া নেই। মা হয়তো জানে খাবার খায়নি কিন্তুু পেট তো খালি থাকতো না। কত গাছের কত রকমের ফল যে পেটে আছে সেটা তো মায়ের খবর নেই। সন্ধার আগেই মা বাশঁঝাড় থেকে কাচাঁ বেত নিয়ে ঘরে রাখতো। যেদিন দাদা দাদি বাড়িতে থাকতো সেইদিন মায়ের হাতের মার থেকে রক্ষা পেতাম। আর যেদিন দাদাদাদি বাড়িতে না থাকতো সেদিন আর বেতের বাড়ি থেকে রক্ষা পেতাম না। এভাবেই শীত কালটা অতিক্রম করতাম।
আজ কয়েকদিন যাবৎ বাসায় গ্যাস নেই। একদিন পর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করছি। আর শৈশবের সেই স্মৃতি গুলো মনে করছি। শীত কিন্তুু আগের মতই আছে। কিন্তুু আমাদের স্থান এবং সময়টা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
শীতকালের ছোট বেলার স্মৃতি গুলো খুবই মধুর ভাইয়া। শীতকালে তো গ্রামে যেহেতু থাকতাম অনেক কুয়াশা পড়তো শীতকালে। মকতবে যাওয়ার জন্য অনেক মোটা কাপড় পড়তাম। বেশ ভালই লাগতো যেতে। যেহেতু অনেক শীত ছিল গা কেঁপে কেঁপে ছোট ছোট পায়ে হাঁটতাম আর কোনরকম মকতবে পৌঁছে যেতাম। আপনি ঠিক বলছেন আজ কয়েকদিন যাবত অনেক বেশি শীত। তাপমাত্রা কমে গেছে অনেক।
জী আপু ছোট সময় কনকনে শীতে ধান সিদ্ধকরার চুলার পাশে বসে থাকতাম,হা হা হা। ধন্যবাদ।
শৈশবের শীত নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট দিয়েছেন আপনি ভাইয়া। নষ্টালজিক। আগুন জ্বালিয়ে ভাপ নেয়ার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। এই আগুন জ্বালানো নিয়ে আমিও কম বকুনি খাইনি,বাড়ীর বড়দের থেকে!! আহা সেই দিন গুলো! তবে এবার অনেকদিন পর ঢাকায় এরকম তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
জী এই বছর ঢাকায় গ্রামের শীত অনুভব হচ্ছে। ধন্যবাদ।
ভাই গতকালকে আপনাদের ঢাকায় ১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল আর আমাদের এখানে ছিল দশ ডিগ্রির মত। এই কয়েকদিন ধরে দেখছি সব জায়গায় বেশ ঠান্ডা পড়েছে। তবে আজ একটু কম ঠান্ডা আছে। ছোটবেলায় ভাই আমাদের কারোরই শীত লাগতো না। গ্রামে থাকতে মোটা কাপড়েরও দরকার পড়তো না। পাতলা কাপড় পরেই ঘুরে বেড়াতাম। পুকুরের জলে স্নান করতাম এই শীত। ঠান্ডা ব্যাপারটা তখন এত বেশি কাজ করত না, যতটা এখন করে।
জী ভাইয়া ছোট সময় শরীরে শীত লাগতো কম। সে গুলো মধুর স্মৃতি। ধন্যবাদ।
ছোটবেলায় আমাদের রক্ত বেশি গরম থাকত, এই জন্যই শীত কম লাগতো শরীরে । সময়ের সাথে সাথে আমাদের সেই গরম রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই জন্যই এখন বেশি ঠান্ডা লাগে।