পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন-প্রথম পর্ব ( যাত্রা পথের ফটোগ্রাফি )
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি পবিত্র মাহে রমজানের রহমত নিয়ে সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুল্লিহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন-প্রথম পর্ব শেয়ার করবো। আজকে যাত্রা পথের কাহিনী দিয়ে ভ্রমন পর্বটি শুরু করতে যাচ্ছি। আশা করি পর্ব গুলো পড়লে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে আমাদের অফিস থেকে প্রতি বছর বনভোজনের আয়োজন করা হয়। এই বছরও বন ভোজন করা হয়েছে। তবে এই বছর আমাদের কয়েক জনের প্লান ছিল দুরে কোথাও গিয়ে ঘুরে আসার। তবে অধিকাংশ মানুষের দুরে যাওয়ার মতামত না থাকায় আমরা ঢাকা জেলার ভিতরেই বনভোজন করেছি। আর সেই বনভোজন নিয়ে আপনাদের সাথে দুইটি ব্লগ শেয়ার করেছিলাম। ঐ বনভোজনের পরেই আমরা কয়েক জন স্টাফ মিলে চিন্তা করলাম দুরে কোথাও ঘুরতে যাবো। সেই চিন্তা অনুযায়ী কোথায় যাওয়া যায়,সেটা নিয়ে প্লান করতে লাগলাম। প্রথমে কক্সবাজার যাওয়ার প্রোগ্রাম ছিল,তারপর সেটা বাতিল হয়ে বান্দরবন যাওয়ার প্লান হলো। সেটাও বাতিল হয়ে অবশেষে রাঙামাটি যাওয়ার প্লান ফিক্সট হলো।
এখন কারা কারা রাঙামাটি যাবে সেটা নিয়ে আরেক জামেলায় পড়লাম। একদিনে এত দুরে গিয়ে ফিরে আসা একটু কঠিন। তাই অনেক কল্পনা জল্পনার পরে অবশেষে আমরা দুই জন স্টাফ রাঙামাটি যাওয়ার প্রস্তুুতি নিতে লাগলাম। এখন আমরা মাত্র দুইজন যদি যায়,তাহলে যাওয়া আসা অনেক টাকা খরচ হবে। তাই আমরা একটি ট্রাভেল গ্রুপের সাথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। অবশেষে অনেক খোঁজাখুজির পরে “ভ্রমন প্রিয় পর্যক” নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য টিকেট বুক করলাম। যাওয়ার তারিখ পড়লো ২৯শে ফেব্রুয়ারি রাত ১০ টা। গাড়ি ছাড়বে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে। আর আমরা উঠবো সাইনবোর্ড থেকে।
সবাই গ্রুপের এডমিনের সাথে যোগাযোগ করে কে কোথায় থেকে বাসে উঠবে সেটা জানিয়ে দিলো। ১০টার সময় গাড়ি ছাড়ার কথা থাকলেও রাত নয়টার সময় গ্রুপে ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিলো যে চিটাংরোড থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তায় জ্যাম লাগছে। গাড়ি ছাড়বে ১১টার সময়। আমি ততক্ষনে বাসা থেকে বের হয়ে গেছিলাম। অবশেষে আমার কলিগ সনির আখড়া থেকে উঠবে,আমিও সনির আখড়া চলে গেলাম। সেখানে রাস্তার পাশে দোকানে বসে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। ঘড়ির কাটা ১০ টা পার হয়ে,১১টা,১২টা পার হয়ে গেছে, গাড়ি আর আসে না। আমরা বসে বসে চায়ের সাথে মশার কামড় খাচ্ছি আর মশা মারছি। অবশেষে ১২টা পয়তাল্লিশ মিনিটে গাড়ি আসলো। আমরা প্রায় একটার দিকে সনির আখড়া থেকে গাড়িতে উঠলাম।
গাড়িতে উঠে দুইটি সেলফি তুলে সিটে বসে পড়লাম। আমাদের সিট ছিল-C-3,4 অর্থাৎ তিন নাম্বার সারিতে। গাড়ি মোটামুটি ফুল ছিল। চিটাংরোড থেকে চারজন উঠেছিল,আর কুমিল্লা থেকে দুইজন উঠেছিল। বাকি সব ঢাকা থেকেই উঠে এসেছে। আমাদের সাথে কয়েকটা ফেমিলি ছিল। দুই তিনটা কাপল ছিল। বাকি সব সিংগ্যল। ছেলে মেয়ে মিলিয়ে পয়তাল্লিশ জন নিয়ে গাড়ি রাঙামাটির উদ্যেশ্যে চলতে লাগলো। চিটাংরোড পার হয়েই গাড়ির সাউন্ড বক্সে গান শুরু হলো। একটি মেয়ে আর কয়েকজন ছেলেপুলে নাচানাচি করলো। কুমিল্লার সীমানায় প্রবেশ করেই নাচানাচি বন্ধ করে দিলো। সবাই ক্লান্ত হয়ে সিটে বসে ঘুম দিলো।
আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লা কালাকচুয়া এসে খন্দকার ফুড গ্যালারীতে গাড়ি থামলো। এখানে ২০ মিনিট টাইম দেওয়া হলো,সবাই যার যার মত খাবার দাবাড় সহ প্রাকৃতিক কাজ শেষ করলো। আমর কলিগ বাসা থেকে নুডুলস রান্না করে নিয়ে গেছিলো। দুইজন মিলে নুডুলস খেয়ে নিচে নেমে প্রাকৃতিক কাজ শেষ করলাম। খন্দকার ফুড গ্যালারীর এড়িয়াটা বিশাল বড়। বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা গাড়ি এখানে স্টোপিজ দিচ্ছে,যে যার মত খাবার খাচ্ছে। আমি কিছু বাস দেখলাম,রংপুর থেকে,রাজশাহী থেকে, সিরাজগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসেছে। আমাদের বাসটা তেমন ভিআইপি না আবার এত নরমাল ও না। ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ গামী তিশা বাস ছিল। ড্রাইভার মোটামুটি গাড়ি ভালোই চালিয়েছে। ড্রাইভার আবার পুরাতনই অনেক বার রাঙামাটি গিয়েছে।
কুমিল্লার কালাকচুয়ার খন্দকার ফুড গ্যালারী থেকে বের হয়ে সবাই ঘুম দিলো। বাসের সব লাইট অফ করে দিলো। তবে আমি গাড়িতে তেমন ঘুমাতে পারি না। চোখ বন্ধ করে রাখি তবে তেমন ঘুম হয় না। ড্রাইভারের সাথে হেলপার দরজার পাশে দাড়িয়ে ডানে বামে বলে ড্রাইভারকে দিক নির্দেশনা দিতে লাগলো। সেই সাথে ড্রাইভারের যেন ঘুম না আসে বিভিন্ন কথা বার্তা বলে,পানি সহ এটা সেটা খেতে দেয়। এই দুই জন বাদে সবাই না ঘুমালেও চোখ বন্ধ করে রাখলো। কুমিল্লা ফেনী পার হয়ে চট্রগ্রামের সীমানায় প্রবেশ করে ঘন্টা খানেক গাড়ি চালানোর পরে,সূর্যদয় হলো। আমি তো গাড়িতে ঘুমায় না। কখন কোন স্টেশন আসলো এগুলো দেখি আর ফটোগ্রাফি করি।
আমাদের বাসটি চট্রগ্রাম শহরে না গিয়ে ভাটিয়ারী বাস্ট্যন্ড দিয়ে হাটহাজারী হয়ে রাউজান দিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলো। ভাটিয়ারী যখন অতিক্রম করছিলাম তখন পুরোপুরি সূর্যদয় হয়ে গেছে। আমি ভাটিয়ারী ও রাউজন থেকে কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। আমি আমার কলিগকে জাগানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তুু সে ঘুমাচ্ছিলো। আমি ড্রাইভারের সাথে বসে রাঙ্গামাটির আঁকা বাঁকা রাস্তার কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। সে গুলো পরের পর্বে দেখতে পারবেন.....।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন-প্রথম পর্ব ( যাত্রা পথের ফটোগ্রাফি )।। |
স্থান | সনির আখড়া,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৯ /০২ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে ঘুরাঘুরির মধ্যে অনেক মজা। প্রতি বছর অনেকগুলো ট্যুর দেয়া হয়। এবারও কিছুদিন আগে ঘুরে আসলাম বান্দরবান কক্সবাজার। রাঙ্গামাটি দুইবার যাওয়া হয়েছে। আপনি আপনার স্টাফদের সাথে রাঙ্গামাটি ঘুরতে যাচ্ছেন। যাত্রা পথের মুহূর্তটা অনেক সুন্দর ছিল। এই অনুভূতিটা জীবনের সেরা অনুভূতি ভালো লাগলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া আপনাদের বান্দরবান কক্সবাজার ভ্রমন সম্পর্কে জেনেছি। ভ্রমন করতে সত্যিই আনন্দ লাগে। ধন্যবাদ।
রাঙ্গামাটি আমি বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে ভাটিয়ারী যে রাস্তা করে আসতে পারে রাস্তাটা বেশ চমৎকার। পরবর্তী পোস্টে রাঙামাটির সৌন্দর্য দেখতে পাব বলে আশা করি।
জী ভাইয়া ভাটিয়ারী হয়ে রাঙামাটির দিকে রাস্তাটা দারুন লাগে। ধন্যবাদ।
আপনিও ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করেন জেনে বেশ ভালো লাগলো ভাই। সত্যি বলতে ভ্রমন করার মাঝে আলাদা একটি মজা খুঁজে পাওয়া যায়। অফিসের কয়েকজন মিলে রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে যাচ্ছে এটা বেশ ভালো ব্যাপার সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনাদের ভ্রমণ শুভ হোক। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই দারুন একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া অবশেষে রাঙামাটি ভ্রমন শেষ করে ফেললাম। ধন্যবাদ।
ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনেই আমার অনেকটা ভালো লেগে উঠলো। আসলে আমি নিজেও করতে যেতে খুবই পছন্দ করি। তবে আপনাদের অফিসের অন্য কেউ না গেলেও আপনারা দুজন মিলে প্ল্যান করে বেশ ভালোই করেছেন। তবে গাড়িটা আসতে দেখছি অনেক দেরি করে ফেলল। মনে হচ্ছে জ্যামে পড়ায় এই অবস্থা হয়েছে। তবে দেখছি আমাদের ফেনীর উপর দিয়ে গেলেন। রাঙ্গামাটি গিয়ে কি কি করলেন সেগুলো পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
জী আপু জ্যামের কারনে গাড়িটা লেইট করেছে। ধন্যবাদ।
রাঙ্গামাটি জেলাটি শুনেছিলাম অনেক বেশি সুন্দর, কিন্তু কখনো সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। যাওয়া না হলেও আর সমস্যা নেই কারণ আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে রাঙ্গামাটি সম্বন্ধে সব তথ্য জানতে পারবো এটা আশা করছি। তবে কয়েকজন মিলে বা আপনারা দুজন মিলে রাঙ্গামাটি কোথায় এত দূরের রাস্তা গেলে অনেক বেশি খরচ করতে হতো তাই আপনারা " ভ্রমন প্রিয় পর্যক” পেজ এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে অন্যান্য সকলের সাথে অল্প খরচেই যেতে পেরেছেন। আর বাসটি এত বিলম্ব করায় বুঝতেই পারছি আপনাদের অনেকটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল। আসলে এতটা ধৈর্য্য কেবলমাত্র তাদেরই থাকতে পারে যারা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির। যেটা হবে আপনাদের দেখে বোঝা যাচ্ছে ভাইয়া। আশা করছি আপনার পরবর্তী পর্বগুলো থেকেই রাঙ্গামাটি সম্বন্ধে নতুন নতুন বিষয় জানতে পারবো। শুভকামনা রইল ভাইয়া ভ্রমণ সময়।
জী ভাইয়া রাঙামাটি সত্যি অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ।
রাঙ্গামাটি আমিও বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি। আসলো প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে হলে অবশ্যই আপনাকে পাহাড়ে যেতে হবে। যদিও রাঙ্গামাটি যাওয়ার গল্প শেয়ার করেছেন। আশা করি সামনের পর্বতে পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য দেখতে পারবো। বন্ধুদের সাথে এভাবে ট্রাভেলিং করার মজায় অন্যরকম। সামনের পর্ব গুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
জী ভাইয়া সামনের পর্বে আঁকা বাঁকা রাস্তার ফটোগ্রাফির ছবি দেখতে পারবেন। ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের অসম্ভব সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে রাঙ্গামাটি একটি। এখানে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু জিনিস রয়েছে যা দেখার জন্য মানুষ প্রতিনিয়তই যায়। আপনিও এই ভ্রমণের প্রথম পর্বের মাধ্যমে রাঙামাটি ভ্রমণের খুব সুন্দর কিছু সময় উপভোগ করেছেন, তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন৷ আশা করি পরবর্তী পর্বের মাধ্যমে আরো অনেক কিছু সুন্দর সুন্দর বিষয় দেখতে পারবো৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷